Golperjogot

Golperjogot

Love Never Ended Emotional Sad Love Story Bangla Part 18

 

Love Never Ended

ইলোরা জাহান ঊর্মি ( Part – 18 )

বিচলিত ভঙ্গিতে সারা রুম পায়চারি করছে আভা। উত্তেজনায় অস্থির হয়ে আছে সে। কিছুতেই নিজেকে শান্ত করতে পারছে না। মাথাটা পুরো ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। ওরনার এক কোণা আঙুলে পেঁচাতে পেঁচাতে এদিক থেকে ওদিক পায়চারি করছে সে। কপালের কোণে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গেছে। দরজায় টোকা পড়ার শব্দে আভা কিছুটা চমকে উঠলো। নিজেকে সামলে নিয়ে কিছুটা উঁচু স্বরে জিজ্ঞেস করলো,

 

আভা: কে?

হিয়া: আভা দরজা খোলো। এভাবে দরজা বন্ধ করে বসে আছো কেন?

 

হিয়ার কথা শুনে আভার মুখটা থমথমে হয়ে গেল। মুহুর্তে তার চোখে মুখে একরাশ বিরক্তি আর রাগ এসে ভর করলো। সে কিছুটা উচ্চস্বরে কাঠ কাঠ গলায় বলে উঠলো,

 

আভা: ডাকা ডাকি করো না হিয়া। আমার খুব মাথা ধরেছে। এখন আমি ঘুমাবো। প্লিজ দেখো একটু,কেউ যেন ডিস্টার্ব না করে।

Sad Love Story Bangla

 

ওপাশ থেকে আর হিয়ার কোনো শব্দ শোনা গেল না। হয়তো চলে গেছে। আভা কিছুক্ষণ সেভাবেই দাঁড়িয়ে থেকে ধীর পায়ে বিছানার কাছে গিয়ে ধপ করে বসে পড়লো। দু’হাতে মুখ ঢেকে কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া অবিশ্বাস্য ঘটনা ভাবতে লাগলো।

কিছুক্ষণ আগে,

 

রাইফ আভাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে আবার অফিসে চলে গেল। রাইফকে বাসার ভেতরে যাওয়ার কথা বলার ইচ্ছেটাকে ধামাচাপা দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে আভা ভেতরে চলে গেল। কলিংবেল চাপতেই সাথে সাথে দরজা খুলে দিলো সামিদ। এই সময় সামিদকে বাসায় দেখে আভা অবাক হয়ে গেল। কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই হিয়া এসে তাড়া দিয়ে বলল,

 

হিয়া: আরে আভা,চলে এসেছো তুমি? দাঁড়িয়ে আছো কেন? তাড়াতাড়ি ভেতরে এসো।

 

বলতে বলতে হিয়া একপ্রকার টেনে-ই আভাকে দরজার কাছ থেকে ভেতরে নিয়ে গেল। আভা হিয়ার এহেন আচরণে বেশ অবাক। ভেতরে ঢুকতেই আভা আরো অবাক। ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছে একজন মোটাসোটা ভদ্রলোক আর একটা যুবতী মেয়ে। মেয়েটা বেশ সুন্দরী আর ভদ্রলোককে দেখে মধ্যবয়স্ক মনে হলেও খুব স্মার্ট। 

 

লোকটাকে খুব চেনা চেনা লাগছে আভার। মনে হচ্ছে আগে কোথাও দেখেছে কিন্তু মনে করতে পারছে না। আভাকে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভদ্রলোক হাসিমুখে প্রশ্ন করলেন,“কেমন আছো আভা?”

Bangla Love Story

 

আভার বিস্ময় আরো একধাপ বেড়ে গেল। ভদ্রলোক তার নাম জানে কীভাবে? তাহলে কী আগে কোথাও দেখা হয়েছিল। হতেও পারে। হয়তো তারই মনে নেই। আভা মুচকি হেসে উত্তর দিলো,“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনি?

 

ভদ্রলোক জবাব দিতেই পাশের সোফা থেকে আভার মা তাকে ডেকে তার পাশে বসালো। আভার মনে একটাই প্রশ্ন,“এরা কারা আর আমাদের বাসায় কেন এসেছে?” আপাতত প্রশ্নটা প্রকাশ না করে মনের মধ্যেই রেখে দিল। আভার বিস্ময়কে সপ্তম আকাশে উঠিয়ে দিয়ে ভদ্রলোক হঠাৎ নিজের জায়গা থেকে উঠে আভার দিকে এগিয়ে এসে একটু ঝুঁকে আভার বাঁ হাতটা টেনে নিয়ে রিং ফিঙ্গারে ডায়মন্ডের একটা রিং পড়িয়ে দিল। 

 

ঘটনার আকস্মিকতায় আভা হতবাক হয়ে গেল। ভদ্রলোক হঠাৎ তাকে রিং কেন পড়ালো সেটাই তার মাথায় ঢুকছে না। ভদ্রলোক হাসিমুখে আবার নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পড়লো। আভা সন্দিহান দৃষ্টিতে একবার ভদ্রলোকের দিকে তো আরেকবার নিজের মা,সামিদ-রুহির দিকে তাকাচ্ছে। আশ্চর্য! সবার চোখে মুখে হাসি। 

 

তৎক্ষণাৎ ভদ্রলোকের বলা একটা কথা কানে আসতেই আভার মাথায় যেন বজ্রপাত এসে আঘাত করলো। ভদ্রলোক আভার মাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,“তাহলে আর এক সপ্তাহ পর সামনের শুক্রবারেই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হলো। সব কথা তো হয়েই গেছে। তো এবার আমাকে উঠতে হবে। তাড়া আছে আমার।” কথাটা বলেই ভদ্রলোক আর মেয়েটা উঠে দাঁড়ালো। 

সামিদ,হিয়া আর শিরীন বেগম হাসিমুখে তাদের সাথে টুকটাক কথা বলছে। সেসব কথা আভার কানেই ঢুকছে না। লোকটার বলা কথাটাই তার মস্তিষ্কে তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে। বাকহীনের মতো স্তব্ধ হয়ে বসে আছে সে। কী থেকে কী হয়ে গেল কিছুতেই কিছু বিশ্বাস হচ্ছে না তার। সামিদ গেল ভদ্রলোক আর ঐ মেয়েটাকে এগিয়ে দিয়ে আসতে। 

 

তারা বাসা থেকে বেরোতেই শিরীন বেগম আর হিয়া হাসিমুখে এগিয়ে এসে আভার পাশে বসলো। আভাকে স্তব্ধ হয়ে বসে থাকতে দেখে হিয়া আভার কাঁধে হাত রেখে আলতো ঝাঁকি দিয়ে বলল,

 

হিয়া: আভা,কী হয়েছে? এভাবে বসে আছো কেন?

 

হিয়ার ডাকে আভার হুঁশ ফিরলো। সে কোমল চোখে শিরীন বেগমের দিকে প্রশ্নভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

 

আভা: এসবের মানে কী আম্মু?

শিরীন: কোনসব মা?

 

শিরীন বেগমের ভাবলেশহীন প্রশ্ন শুনে আভার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। এতো বড়ো একটা ঘটনা ঘটিয়ে আবার বলছে কোনসব! আভা হুট করে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে কড়া কন্ঠে বলল,

 

আভা: কোনসব মানে? তুমি বুঝতে পারছো না আমি কী জিজ্ঞেস করছি? নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করছো?

হিয়া: আরে আভা তুমি হঠাৎ রেগে গেলে কেন?

Heart Touching Love Story Bangla

 

হিয়ার কথা শুনে আভার মেজাজ আরো বিগড়ে গেল। ভ্রূকুটি করে হিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,

 

আভা: তুমি সত্যিই বুঝতে পারছো না আমি কেন রেগে যাচ্ছি? এতো বড়ো একটা ঘটনা ঘটিয়ে এখন তোমরা জিজ্ঞেস করছো আমি কেন রেগে যাচ্ছি? আশ্চর্য! কী হলো এসব? ফোন করে জরুরি তলব করে আমাকে অফিস থেকে আনলে। বাসায় এসে দেখলাম সামিদ নিশ্চিন্তে বাসায় বসে আছে। আথচ অফিস থেকে ও নাকি ওর কোন ইম্পর্ট্যান্ট কাজের কথা বলে আজকের জন্য ছুটি নিয়েছে। 

 

বাসায় ঢুকতেই ওই ভদ্রলোক আর মেয়েটার সামনে পড়লাম। কোনো কথা নেই বার্তা নেই হুট করে আমার হাত টেনে নিয়ে রিং পড়িয়ে দিয়ে বলল এক সপ্তাহ পর সামনের শুক্রবারেই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হলো। মানে কী এসবের? ড্রামা হচ্ছে নাকি?

 

শিরীন বেগম আর হিয়া অবাক হয়ে আভার দিকে তাকিয়ে আছে। কারো মুখেই কোনো কথা নেই। হঠাৎ পেছন থেকে সামিদ বলে উঠলো,

 

সামিদ: কোনো ড্রামা হচ্ছে না আভা। যা দেখেছো আর যা শুনেছো তাই হচ্ছে আর হবে। সামনের শুক্রবারেই বিয়ের ডেট ফাইনাল। সব কথা হয়ে গেছে। এখন শুধু বিয়ের প্রস্তুতি চলবে।

 

আভা: আমাকে না জানিয়ে এসব কেন করেছো? আমাকে তো একবার জিজ্ঞেস করতে পারতে। আমার মতামতের কোনো প্রয়োজন বোধ করলে না? এতো অভিনয়ের মানে কী?

 

সামিদ: আগেই বলেছি কোনো অভিনয় হচ্ছে না। আর তোমার মতামতের প্রয়োজন বোধ করি নি কারণ তুমি কখনোই এই বিয়েতে অমত করবে না সেটা আমরা সবাই জানি। সবকিছু ভেবেই এই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতিদিন তোমাদের এই এক ঝামেলা আর ভালো লাগছে না।


Also Read These Emotional Sad Love Story

  1.  Love Never Ended Part 1

  2.   Love Never Ended  Part  2

  3.   Love Never Ended Part  3

  4. Love Never Ended Part 14

  5. Love Never Ended Part 16

  6. Love Never Ended Part 17


 

আভা সামিদের কথায় আকাশ থেকে পড়লো। এ কোন সামিদকে দেখছে সে! তার জীবনের এমন কোনো কথা নেই যা সামিদ না জানে। এতোটা বছর ধরে সে দূরে থেকেও শুধু রাইফকেই ভালোবেসে গেছে। প্রতিটা মুহূর্ত রাইফের জন্য কতো কষ্ট পেয়েছে তা আর কেউ না জানলেও সামিদ জানে। 

 

সামিদ তাকে সবসময় বুঝাতো যে রাইফকে অবশ্যই ফিরে পাবে সে। সে কষ্ট পাবে এমন কথা সামিদ কোনো দিন বলে নি। সবসময় এই ছেলেটা তাকে হাসিখুশি রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। অথচ আজ সেই সামিদই তার উপর বিরক্ত হয়ে তাকে অন্য কারো হাতে তুলে দিতে চাইছে! এই মুহূর্তে বিয়ের ব্যাপারটার চেয়ে সামিদের এমন অদ্ভুত আচরণটাই আভাকে বেশি কষ্ট দিচ্ছে। আভার চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো। তবু সে চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলে নিয়ে কাঠ কাঠ গলায় বলল,

 

আভা: তোমাদের জ্ঞান দেখে আমি অবাক না হয়ে পারছি না। তোমরা ভাবলে কী করে যে হুট করে বিয়ে ঠিক করলেই আমি রাজি হয়ে যাবো? এই বিয়ে আমি কখনোই করবো না। দয়া করে ওই লোকটাকে বলে দাও যে বিয়ে কেন্সেল।

 

সামিদ কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই পাশ থেকে শিরীন বেগম শক্ত গলায় বলে উঠলেন,

 

শিরীন: এই বিয়ে হবে। সামনের শুক্রবারেই হবে। মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নে আভা। আমি এই নিয়ে আর কোনো কথা শুনতে চাই না।

 

কথাটা বলেই শিরীন বেগম দ্রুত পায়ে হেঁটে নিজের ঘরে চলে গেলেন। আভা অবাক হয়ে মায়ের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইল। পাশ থেকে সামিদও শিরীন বেগমের মতোই বলে উঠলো,

 

সামিদ: আন্টির সাথে একমত আমি। শুধু শুধু এসব নিয়ে কথা বাড়িয়ো না আভা। কারণ বিয়েটা কেন্সেল করা সম্ভব নয়।

Romantic Bangla Premer Golpo

 

সামিদও হনহন করে হেঁটে বাইরে চলে গেল। আভা হতবাক হয়ে গেল। পরিচিত মানুষগুলো হঠাৎ করেই এমন অপরিচিতদের মতো আচরণ করছে কেন তা তার মাথার উপর দিয়ে চলে গেল। হিয়া এগিয়ে এসে কিছু বলার আগেই আভা এক দৌড়ে নিজের ঘরে গিয়ে খট করে দরজা বন্ধ করে দিলো। দরজার ওপাশ থেকে হিয়া কয়েকবার ডাকলেও আভা সাড়া দিলো না। দুপুরে খাওয়ার সময়ও সামিদ আর হিয়া মিলে অনেক বার ডেকে গেছে। তবু আভা দরজা খোলে নি। মাথা ধরেছে বলে এড়িয়ে গেছে সবার ডাক।

 

সারাদিন পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। চারদিক অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। সারা শহর ইলেকট্রিসিটির আলোতে আলোকিত হয়ে উঠেছে। আভা রেলিংয়ের সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার স্থির দৃষ্টি দূর আকাশে নিবদ্ধ। আকাশটা মেঘলা হয়ে আছে। মনে হচ্ছে রাতেই ঝুম বৃষ্টি হবে। কিন্তু আভার মনের আকাশে তো সারাটা দিন ধরে একনাগাড়ে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। সেই ঝুম বৃষ্টির ঠান্ডা ছোঁয়ায় আভার ভেতরটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। চোখ দুটোও শীতল হয়ে আছে। 

 

এতোক্ষণ তার দু’চোখ দিয়ে ও বৃষ্টির ধারা নেমেছে। আজ সারাটা দিন আভা দরজা বন্ধ করে ঘরের মধ্যেই আটকে ছিল। সবাই অনেক ডাকাডাকি করে শেষে ফল না পেয়ে এখন চুপ করে আছে। আভা বিকেল থেকে এখন পর্যন্ত অনেক বার রাইফের ফোনে ডায়াল করেছে। কিন্তু ওপাশ থেকে বার বার রিং হয়ে কেটে গেছে তবু রাইফের কোনো খবর মেলে নি। সারাদিন নিজের ঘরে শুয়ে বসে কাটিয়ে অনেক ভেবে আভা রাইফের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 


Also, Visit Those  Romantic Love Story 


 

সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে মনকে শক্ত করে রাইফকে ননস্টপ কল করে গেছে। রাইফের কোনো রেসপন্স না পেয়ে আভা ভেবেছে হয়তো রাইফ তার উপর রেগে ফোন রিসিভ করছে না। কিন্তু এই মুহূর্তে রাইফের সাথে কথা বলাটা খুব দরকার। আভার কাছে আসিফ বা রুহি কারোর নাম্বারই নেই। রাইফের নাম্বারটা ও ছিল না। অফিসের কর্মচারী হামিদ সাহেবকে ফোন করে আভা তার থেকে রাইফের নাম্বারটা জোগাড় করেছে। 

 

কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে শেষে আভা কেঁদেই দিলো। কাঁদতে কাঁদতে এক সময় শান্ত ও হয়ে গেল। কিন্তু মনটাকে স্থির করা সম্ভব হচ্ছে না। আভা বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুমের দিকে পা বাড়াতেই হাতের ফোনটা স্বশব্দে বেজে উঠলো। আভা রুমে না গিয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো। রাইফ ফোন করেছে। 

আভার মাঝে একটা চাপা অভিমান জেগে উঠেছে। কিন্তু এই মুহূর্তে কোনো কিছুই পাত্তা দেয়ার সময় নেই। বিকেল থেকে হাজারটা কল রিসিভ না করলেও এখন যে নিজে থেকে কল করেছে এটাই বেশি। আচ্ছা,রাইফ কী তার ননস্টপ কল পেয়ে বিরক্ত হয়ে কড়া কথা শোনানোর জন্য কল ব্যাক করলো? ধুর,তা কেন হবে? রাইফ তো তাকে এখনো আগের মতোই ভালোবাসে। 

 

সে কখনোই তার উপর বিরক্ত হতে পারে না। তবুও আজ সকালে রাইফ যেভাবে আগের মতো গম্ভীর হয়ে কথা বলেছিল তাতে আভার কনফিউজড হওয়াটা স্বাভাবিক। সে যাই হোক,রাইফের সাথে তাকে কথা বলতেই হবে। বার কয়েক জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে আভা ফোনটা রিসিভ করে কাঁপা হাতে কানে ধরলো। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে আভার গলা দিয়ে একটা কথাও বের হচ্ছে না। 

Sad Story Bangla

 

এতো বছর পর রাইফের ফোন পেয়ে কী তার কষ্ট হচ্ছে নাকি বিকেল থেকে ফোন রিসিভ না করায় অভিমান হচ্ছে? আভার চোখ দুটো হঠাৎ জ্বালাপোড়া শুরু করলো। হয়তো এক্ষুনি আবার বৃষ্টি হবে। তার কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তাকে যে কথা বলতে হবে। কিন্তু সে তো গলা দিয়ে ‘টু’ শব্দটি পর্যন্ত বের করতে পারছে না। তাহলে কথা কীভাবে বলবে? ওপাশ থেকে হঠাৎ রাইফের শান্ত কন্ঠের সেই ভালোবাসাময় ডাক শোনা গেল।

 

রাইফ: মিসেস রাইফ যে।

 

ডাক শুনেই আভার বুকটা কেঁপে উঠলো। সেই অতি পরিচিত ডাক। আভা যখনই কোনো কারণে রাগ করে গাল ফুলিয়ে থাকতো তখন রাইফ আভাকে মিসেস রাইফ বলে ডাকতো। এই ডাকটা শুনলেই আভার মন অর্ধেক গলে যেতো। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। তার উপর আবার আজ এই মানুষটার সাথে কথা বলার জন্য সে মরিয়া হয়ে উঠেছে। 

 

মুহুর্তে আভার মনে পড়লো তাদের সেই লুকানো ফোনালাপ। আজ কতো দিন পর আবার তার ভালোবাসার মানুষটির সেই কোমল কন্ঠ শুনতে পেয়েছে সে। আভা পারলো না নিজেকে সামলাতে। বাচ্চাদের মতো হুঁ হুঁ করে সশব্দে কেঁদে উঠলো সে। ওপাশ থেকে রাইফ চমকে উঠলো। সে অস্থির হয়ে চিন্তিত কন্ঠে প্রশ্ন করলো,

 

রাইফ: আভা। কাঁদছো কেন তুমি? কী হয়েছে? বলো। এই আভা, কিছু বলছো না কেন? প্লিজ কেঁদো না। আমাকে বলো কী হয়েছে? চুপ করে থেকো না। কথা বলো প্লিজ। এবার কিন্তু আমি রেগে যাবো।

 

রাইফের কথার সাথে আভার কান্নার আওয়াজ বেড়ে গেল। রাইফ এবার চুপ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ সেভাবেই কাটানোর পর আভা কিছুটা শান্ত হলো। রাইফ এতোক্ষণ চুপচাপ ওপাশ থেকে আভার কান্নার শব্দ শুনেছে। রাইফ এবার কোমল কন্ঠে বলল,

 

রাইফ: এবার তো কিছু বলো প্লিজ।

 

আভা হেঁচকি তুলে ধরা গলায় বলল,

 

আভা: আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই রাইফ।

 

রাইফ আবার চুপ হয়ে গেল। তবে এবার আর আভাকে কাঁদতে সময় দেয়ার জন্য নয় বরং নিজেকে সময় দেয়ার জন্য। আভার মুখে আবার নিজের নাম আর তুমি সম্বোধন শুনে রাইফ থমকে গেল। আনন্দে তার চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো। আভা ওপাশ থেকে আবার নাম ধরে ডাকতেই রাইফ নিজেকে সামলে নিয়ে শান্ত স্বরে বলল,

 

রাইফ: জাস্ট ফিফটিন মিনিট সময় দাও। তার মধ্যে আমি তোমার বাসার সামনে গাড়ি নিয়ে চলে আসবো। আমি পৌঁছেই তোমাকে কল করবো। তুমি রেডি হয়ে থাকো। আমি ফোন করলেই বাইরে বেরিয়ে আসবে। জাস্ট ফিফটিন মিনিট,ওকে? আভা রাইফের কথায় সায় দিয়ে ফোন কেটে দিলো।

 Romance Golpo

 

 রাইফ আর আসিফ পুলিশ স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে পুলিশ অফিসারের সাথে কথা বলছিল। তার মধ্যে হঠাৎ ফোনটা পকেট থেকে বের করতেই আভার এতো কল দেখে অবাক হয়ে তৎক্ষণাৎ একটু সরে দাঁড়িয়ে কল ব্যাক করেছে। রাইফ কথা শেষ করে পকেটে ফোন ঢুকাতেই আসিফ এগিয়ে এসে প্রশ্ন করলো,

 

আসিফ: কার ফোন?

রাইফ: আভা। আমার সাথে দেখা করতে চাইছে। আমাকে এক্ষুনি যেতে হবে। তুই কষ্ট করে এদিকটা সামলে নে প্লিজ। দশটায় দেখা হবে। বাই।

 

বলতে বলতে রাইফ তাড়াহুড়ো করে গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিলো। আসিফ বেচারা কোনো কথা বলার সুযোগই পেলো না। সে শুধু ফ্যালফ্যাল করে রাইফের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইল।…………………

Click Here For Next Part চলবে…

 

Writer- ইলোরা জাহান ঊর্মি

Join Our FB PAGE } and { FB GROUP } For Every Single Minutes Update Of  { Golper Jogot- Largest Story Platform }. Also Please Share Our Story On Your Social Media Platform and with Your Friends. 

Leave a Comment