Valobashi Dujone
Imtihan Imran ( Part – 7 )
” আমি না তুই বেশি কথা বলিস। বেশি ঢঙ করিস। একদম ঢঙ করবি না, চুপচাপ নতুন জামাই দের মতো থাক।
” আরে এভাবে কথা বলছিস কেনো? তোদের বাসায় এসেছি বলে অপমান করছিস?
” ও মোর জ্বালা। এতোক্ষন নতুন জামাই য়ের মতো আপ্যায়ন করতে চাইলাম। সেটা সহ্য হলো না। আর এখন একটু তুই তাকারি করলাম, অমনি এটা দোষ ধরে ফেললে? আমি কী করবো তুমিই বলে দেও।
সিজান এই কথার প্রতিউত্তরে কিছু বলল না, সে প্রসঙ্গ চেঞ্জ করতে বলল,
” হয়েছে সব বাদ, এখন এক গ্লাস পানি খাওয়া।
” আচ্ছা বসো আনছি।
ফারিন সিজানকে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি এনে দেয়। ফারিনের আম্মু এসে দেখে সে সিজানকে শুধু পানি দেয়। তা দেখে তিনি ফারিনকে বকা দেন।
” ফারিন গাধা নাকি তুই। আক্কেল জ্ঞান কিচ্ছু নাই। তুই যে সিজানকে শুধু পানি দিচ্ছিস?
” ও তো আমার কাছে পানিই চাইলো। আর কী দিবো?
” গাধা মেয়ে একটা। তোর কাছে খুঁজতে হবে কেনো? যা নাস্তা পানির ব্যবস্থা কর।
” আরে আন্টি কিছু লাগবে না। ফারিন কিছু আনা লাগবে না।
{ Valobashi Dujone Romantic Love Story Bangla }
সিজানের কথা শুনে ফারিনের আম্মু সিজানকে একটা ধমক দিয়ে দেয়।
” তুমি চুপ কর। যা ফারিন।
ফারিনের আম্মুর ধমক শুনে সিজান ভ্যাবাচেকা খায়। ফারিন খিল খিল করে হেসে সিজান কে উদ্দেশ্য করে তার আম্মুকে বলে,
” আম্মু আরো বেশি করে ধমক দেও। বেশি কথা বলে। (হেসে)
সিজান চোখ গরম করে ফারিনের দিকে তাকায়। ফারিন হেসে একটা ভেঙচি দিয়ে সিজানের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করতে যায়।
ফারিনের আম্মু সিজানের সাথে গল্প জুড়ে দেয়। ফারিন নাস্তা নিয়ে এসে দেখে সিজান তার আম্মুর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। সে সিজানের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে। সিজানের হাসি দেখে সে। ফারিন নাস্তা নিয়ে ছোট্ট টেবিলে রাখলেও তাদের গল্পের ব্যাঘাত ঘটেনি। দুজনে নিজেদের গল্পে ব্যস্ত। ফারিন তৃতীয় পক্ষের মতো দাঁড়িয়ে থেকে তাদের গল্প শুনছে আর হাসি দেখছে।
{ Romantic Love Story Bangla }
অনেকক্ষণ এভাবে চলার পর ফারিন আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। সে জিজ্ঞেস করেই বসে,
” সমস্যা কী তোমাদের? আমি যে অনেকক্ষন থেকে এখানে দাঁড়িয়ে আছি, কারো দেখি হুশ কান্ড কিছুই নাই। মা তুমি কী শুরু করছো ওর সাথে? ওর জন্য তো নাস্তা আনো, নাস্তা আনো বলে আমার ধাক্কা দিয়ে পাঠিয়ে দিলো, আর এখন নাস্তা এনেছি, তুমি গল্পে মজে আছো।
” ওহো ফারিন খেয়াল’ই করিনি। দে দে নাস্তা দে, ওকে নাস্তা দে।
নাও বাবা নাস্তা নেও, আমি একটু আসতেছি।
ফারিনের আম্মু ভিতরের রুমে চলে যায়। ফারিন ধপাস করে সিজানের পাশে বসে। ফারিনের কান্ডে সিজান ভ্যাবাচেকা খায়।
” এটা কী হলো? তুই এভাবে ধপাস করে বসলি কেনো? বেয়াদব। সুন্দর করে বসতে পারলি না।
” ওই হ্যালো মিষ্টার, বেশি কথা না বলে খাও। নাকি আমি খাইয়ে দিবে। আমার হাতে খেতে আবার সমস্যা হবে না তো?
” আমি খেতে পারবো, আমার হাত আছে। তোর কোনো সাহায্যের আমার দরকার নেই।
” করলাম না সাহায্য। আমার অত ঠেকা পড়ে নাই।
সিজান হাল্কা নাস্তা খেয়ে উঠে যেতে নিলে।
” ওই নাস্তা না শেষ করে কোথায় যাও?
” নাস্তা খাওয়া শেষ আমার?
” কী নাস্তা খেলে? সব তো রেখেই দিলে। সব শেষ করো?
” আর কতো খাব?
” যা আনছি সব শেষ করো। নাহলে এক্ষুনি আম্মুকে এনে বলবো, তুমি কিছু খাও নাই। সব রেখে দিয়েছ।
” ফারিন পেট ভরে গেছ তো, কিছুক্ষণ পরে তো আবার ডিনার করবোই।
” আচ্ছা যাও খেতে হবে না। তবে একটা শর্ত আছে।
” কী শর্ত আবার?
” আমাকে গান শুনাতে হবে।
” আচ্ছা শুনাবো।
Bangla Valobashar Golpo
সিজান হাত মুছে গিটার আনার জন্য নিজের বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিতে ফারিন সামনে এসে দাঁড়ায়।
” কোথায় যাও তুমি?
” বাসা থেকে গিটার টা নিয়ে আসি।
” তোমাকে কষ্ট করতে হবে না। আমি গিয়ে নিয়ে আসতেছি, তুমি ছাদে যাও।
” তোর কথা না শুনেও তো উপায় নেয়। যাচ্ছি ছাদেই যাচ্ছি।
ফারিন হেসে সিজানের বাসায় চলে যায় গিটার আনার জন্য।
Also Read Those Related Love Story
ফারিন গিটার নিয়ে এসে সিজানের হাতে দেয়। দুজনে দোলনায় আরাম করে বসে। সিজান তার গিটারে সুর তুলছে, ফারিন গালে হাত দিয়ে সিজানকে দেখছে সিজানের গান শুনছে। সিজানও সুর তোলার পাশাপাশি গান শুরু করে দেয়।
বলতে বাকি কতো কী,
পাব তোর দেখা কী?
আজও যেন একাকি জীবন..
তোর কথায় ভেবেছি,
পথ হারিয়ে ফেলে..ছি.
তোকে কতোটা ভালোবাসি জানে এই মন।️
তোর নামে লেখা চিঠি খুজে বেড়ায় আজ ঠিকানায়.
তোর প্রেমে হেরে জিতে চেনা যে তুই বড় অচেনা।
খুব গোপনে চেয়ে আনমনে মন পুষেছে যতনে…
দুজনে এক পৃথিবী চেয়ে দেখ ভাবছি তারে আমি অনেক..।২
ও..একটু পেতে দেখে..কতো যে বাহানা..।
বলতে যা বাকি কত কী
পাব তোর দেখা কী
আজও যেন একা-কি জীবন..
তোর কথায় ভেবেছি,পথ হারিয়ে ফেলে..ছি।
তোকে কতোটা ভালোবাসি জানে এ মন.।
দিনের আলোতে রাতেরও কালোতে দেখি তোকে আসতে..
দুহাত বাড়িয়ে রয়েছি দাঁড়িয়ে, মনটা হঠাৎ দাঁড়িয়ে।২
ও কিছু কিছু ভুল মানে না কোনো মানা..
ও.. একটু পেতে দেখা..কতো যে যাতনা..।
বলতে যা বাকি কত কী
পাব তোর দেখা কী
আজও যেন একা-কি জীবন..
তোর কথায় ভেবেছি,পথ হারিয়ে ফেলে..ছি।
তোকে কতোটা ভালোবাসি জানে এ মন.।
সিজানের গান শেষ হতেই ফারিন হেসে জোরে হাততালি দেয়।
” তোমার গান আমার এত্তো ভালো লাগে কেনো বলো তো?
” আমার গান তোমার এত্তো কেনো ভালো লাগে, সেটা তুমিই ভালো জানো।
” দারুন গাও সবসময়।
” থ্যাঙ্কিউ। (হেসে)
” এভাবে হেসো না পাগল হয়ে যাবো।
” নিয়মিত আমার সাথে ফ্লাট করছো। (হেসে)
” ফ্লাট করেও তো কিছু লাভ হচ্ছে না। তুমি তো পটছোই না। আহা কষ্ট আমার।
সিজান, ফারিনের মাথায় ছোট্ট করে একটা থাপ্পড় মারে।
…………
” চুপ কর শয়তান মেয়ে। আমাকে পটাতে এসেছে।( হেসে দিয়ে)
Also, Read These Another Love Story
সিজানের দেখা দেখিতে ফারিনও সিজানের সাথে তাল মিলিয়ে জোরে খিল খিল করে হেসে উঠে।
” আচ্ছা চলো অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে। তোমার ডিনার করার সময় হয়ে যাচ্ছে।
” আচ্ছা চল। তোর সাথে বসে গল্প করলে তো আমার হবে না। অনেক কাজ পড়ে আছে।
” ওরে আমার কাজ ওয়ালা মানুষ রে। কাজ করে উনি বিশ্ব জয় করে ফেলছে। আর কারো কাজ নেই শুধু উনার কাজই থাকে। ( ভেঙচি দিয়ে)
” আচ্ছা ফারিন এই ভেঙচি দেওয়া কে শিখাইল তোমায়। কথায় কথায় যে আমাকে ভেঙচি কাটো। এর তালিম কোথায় থেকে নিলে।
” কি জানি কোথায় থেকে শিখেছি জানি নাতো।
” এটা জানো না। কিন্তু ভেঙচি দিতে ঠিক’ই জানো।
” হ্যাঁ খুব পারি।
ফারিন আবার খিল খিলিয়ে হেসে উঠে। এবার সিজান ফারিনের হাসি দেখছে। খুব ভালো লাগছে ওর কাছে, ফারিনে হাস্যজ্বল মুখটা দেখতে।
দুজনে আর কথা না বাড়িয়ে ছাদ থেকে নেমে যায়।
সিজান ডাইনিং টেবিলে বসে দেখে বিরাট কারবার। একেবারে নতুন জামাইয়ের মতো আপ্যায়ন। নতুন জামাই এলে শাশুড়ী যেভাবে তাগাড়া করে নতুন জামাইকে ভালো মন্দ খাবার খাওয়ার। এখন সিজান জামাই না হয়ে নতুন জামাইয়ের মতো আপ্যায়ন পাচ্ছে। অবশ্য সিজানের কাছে ব্যাপার টা ভালোই লাগছে। নিজের কাছে নিজেকেই জামাই জামাই ফিল হচ্ছে।
” কী..? আমার আম্মুর সিজান বাবা, ফিলিং নতুন জামাই। (হেসে)
ফারিনের কথা শুনে সিজান মুচকি হাসি দেয়। এই পাগলী মেয়েটার কথা শুনা না হেসে সে পারে না।
Click Here For Next Part- চলবে…
Writer- ইমতিহান ইমরান
![]() |
Valobashi Dujone Romantic Love Story Part 7 |