Golperjogot

Golperjogot

Bangla Short Story অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি

Bangla Short Story | অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি ভালোবাসার গল্প

অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি অনুগল্প

আসফি জাহান ইফতি

নীলা ও তার বান্ধুবীরা কলেজের ক্যাম্পাসে বসে গল্প করছে। এসময় নাবিল আসে সেখানে।

নাবিল: নীলা এদিকে আসো তো।
নদী: যা যা নীলা জিজুকে সময় দে আমাদের তো অনেক সময় দিলি। (কানে ফিসফিসিয়ে)
নীলা: ফাজিল কোথাকার( মাথায় ঠুয়া মেরে)। আমি আসিরে তোরা গল্প কর।
রিতু: হে হে যা জিজুকে পেলে তো আমাদের লাগে নাহ। (মজা করে)
নাবিল নীলার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলে,
নাবিল: ঠিক বলেছো শালিকারা। তোমরা তো দেখি সবই জানো।
রিতু: দেখ দেখ টেনে নিয়ে যাচ্ছে, জিজুর তর সইছে নাহ।
সবাই হু- হা করে হেসে দেয়।

Bangla Short Story

নাবিল: এই তুমি যে চুপচাপ হাঁটছো, তুমি তো চুপচাপ হাঁটার মেয়ে নও। (ভ্রুঁ কুচকে)
নীলা: ওই দেখুন ফুচকাওয়ালা। চলুন ফুচকা খাই।
নাবিল: চলো। (নীলার গাল টেনে)
নীলা: এই আপনি আমার গাল টানছেন কেনো? ( মুখ ফুলো করে )
“এমা মুখ দেখি কুমড়োর মতো হয়েছে। তখন তো গাল টেনেছি এবার একটু আদর দেওয়া যাক।
“এই না না, লুচু কোথাকার।

এই বলে নীলা ফুচকাওয়ালার কাছে চলে যায়। নাবিল সেখানে দাড়িয়ে হাসে।

নীলা:এই আপনি কি আসবেন নাহ?
নাবিল: ওহ আসছি।
নীলা: ওখানে দাড়িয়ে হাসছিলেন কেনো?
নাবিল: হাসছিলাম তোমার মতো একটা রাক্ষসী যে কোথা থেকে আমার কাঁধে উড়ে আসছে তাই ভেবে।
নীলা: এটার জন্য বুঝি হাসে? আর আপনি কি বললেন আমি রাক্ষসী, আমি আপনার কাঁধে উড়ে এসেছি? নিজে এসে আমাকেই দোষারোপ।(রেগে)
নাবিল: ওই একি হলো।
নীলা: কি একি হলো থাকবো নাহ আপনার সাথে, যাচ্ছি আমি।

Bangla Valobashar Golpo

নীলা যেতে নিলে নাবিল নীলার হাত হেচকা টান দিয়ে কাছে নিয়ে আসে।

নাবিল: ফুচকা খাবে নাহ?
নীলা: নাহ নাহ
নাবিল: মামা দুই প্লেট ফুচকা দিন তো।
ফুচকা দিয়ে গেলে নাবিল বলে,
নাবিল: খাও ফুচকা।

নীলা কিছু বলে নাহ মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। নাবিল নীলার মুখ টিপে খাইয়ে দিতে যায়।
নীলা: উম উম।
নাবিল: চুপ। (ধমক দিয়ে)

নাবিলের ধমক শুনে চুপচাপ খেয়ে নেয়। আর রাগ করে থাকলে তার ফুচকা খাওয়াও হবে নাহ তাই খেয়ে নেয়। আর মনে মনে নাবিলকে গালি দেয়। হঠাৎ নীলার ফেন বেজে উঠে।

অর্পা(নীলার মা): হ্যালো নীলা
নীলা: জ্বি মা বলো।
অর্পা: একটু বাড়িতে আয়।
নীলা: আচ্ছা।
নাবিল: চলো আমি দিয়ে আসি।
নীলা: হুহ।

নীলার বাড়ি চলে আসে নীলা গাড়ি থেকে নামতে নিলে নাবিল নীলাকে ধরে নীলার চুল কানে গুজে দেয়। কপালে আলতো করে একটা চুমু এঁকে দেয়।

নাবিল: যাও।
নীলা : হুহ(মুখ বাকা করে)

নীলা বাড়িতে ঢুকেই দেখে মেহমান বসে আছে। নীলার বাবা (ইয়ানাত হোসেন) নীলাকে দেখে ডেকে এনে কাছে বসায়। নীলা মেহমানদেরকে সালাম দেয়।

পড়ুন  প্রেম কাহিনী – স্কুল জীবনের প্রেমের গল্প পর্ব 6 | Love Story

Bangla Premer Golpo

নীলা: আসসালামু আলাইকুম
আলতাফ হোসেন (নীলার বাবার বন্ধু): ওয়ালাইকুম আসসালাম। তা ইয়ানাত নীলা মা তো অনেক বড়ো হয়েছে। মাশাআল্লাহ, রিহানের সাথেও খুব ভালো মানাবে। আমি কিন্তু আার দেরি করতে চাই নাহ।
ইয়ানাত: তুমি যা ভালো মনে করো।
আলতাফ : বাবা তোমার পছন্দ হয়েছে তো।
রিহান(আলতাফ হোসেনের ছেলে): হুম

নীলা এদের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়। এক মুহূর্ত ও সে সেখানে দাড়ায়নি।

আলতাফ: লজ্জা পেয়েছে নীলা মা।
ইয়ানাত: হুম
আলতাফ: আজ আসি। ফোনে তারিখ ঠিক করবো। বাই বন্ধু
ইয়ানাত : বাই।

ইয়ানাত: অর্পা তোমার মেয়েকে গিয়ে বলো, আমার কথার যেনো কোনো গোলমেল না হয়।
অর্পা : জ্বি।
অর্পা নীলার ঘরে গিয়ে দেখে নীলা অসহায় হয়ে বসে আছে। মাকে দেখে বলে,
নীলা: এসব কি মা?
অর্পা: তোর বাবা তোর বিয়ে ঠিক করেছেন। ওইযে দেখলি ওই ছেলেটার সাথে।
নীলা: বাহ, আমার বিয়ে আমাকেই জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে হলো নাহ তোমাদের আমার পছন্দ কিনা?

অর্পা: শোন মা, তুই জানিসই তোর বাবার সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত। তাছাড়া আলতাফ হোসেন তোর বাবার বন্ধু। তোর সাথে ওর ছেলের বিয়ে অনেক আগে থেকেই ঠিক করেছেন।
নীলা: খুব ভালো। আমার মতামতের তো কোনো গুরুত্বই নেই। একটা কথা কান খুলে শুনে রাখ, আমার কিছু হলে কিন্তু তোমরাই দায়ী থাকবে।
অর্পা: শোন মা তারা তোকে ভালো রাখবে, তুই সুখী হবি।
নীলা: আমি কোথায় সুখী হবো যদি সেটা ভাবতে তাহলে অন্তত আমাকে জিজ্ঞেস করতে।
অর্পা: নীলা আমি আর বেশি কথা বলতে চাই নাহ।

“অর্পা নীলার রুম থেকে চলে যায়, নীলা সেখানে বসে কেঁদে দেয়,
“আমি যে নাবিলকে ভালোবেসেছি, আমি পারবো নাহ অন্য কোনো ছেলেকে বিয়ে করতে। বাবার মুখের উপর তো কথা বলার কোনো জোঁ নেই।

“ইয়ানাত সাহেব অর্পাকে নিচে নেমে আসতে দেখে জিজ্ঞেস করে,
“নীলার মতামত কি?
“নীলা কি বলবে আর।
“ভালোই হয়েছে কিছু বলে নাই, আর বললেও তাকে এখানেই বিয়ে করতেই হতো।
“তারপরেও আমাদের কি একবারো আগে নীলাকে জিজ্ঞেস করা উচিত ছিলো নাহ।( ভয়ে ভয়ে)
“শোনো অর্পা আমি যা করেছি নীলার ভালোর জন্য করেছি। ফারদার আর এসব কথা বলবে নাহ।
“জ্বি।

পরেরদিন –
নীলা সকালে ঘুম থেকে উঠে না খেয়েই কলেজে চলে যায়। ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখে নাবিল দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। নীলা একপ্রকার দৌড়ে গিয়ে নাবিলকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। নাবিল তো অবাক হয়ে যায়। এই প্রথম নীলা তাকে জড়িয়ে ধরেছে দেখে।

নাবিল: আমি আপনার সাথে পরে কথা বলতেছি।
ওপাশ: আচ্ছা স্যার।
“এইবার নাবিল নীলার দুইগালে হাত দিয়ে বলে,
“কি হয়েছে বলো তো, নীলা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে কেনো।
“আ—মার বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। ( হেচকি তুলে)
“কীহ(রেগে)

পড়ুন  তোমার আমার প্রেম – লাভস্টোরি পর্ব 17 | Bangla Golpo

“তারপর নাবিল তাকে শান্ত করে বলে,
“তো কি হয়েছে বিয়ে করে নাও।( মজা করে )
“কিহ! আমি বিয়ে করে নিতাম। আপনি আমার জীবনে কেনো এলেন। আর এখন বলছেন বিয়ে করে নিতাম। আপনি আমার জীবনে না এলে তো আমার বিয়ে করতে কোনো আপত্তিই থাকতো নাহ। (কেঁদে রেগে রেগে)
“তুমি তো আমাকে ভালোই বাসোনা।
“হ্যাঁ ভালোবাসিনা। আমার যদি কিছু হয় নাহ আপনি দায়ী থাকবেন।

এই বলে নীলা চলে যেতে নিলে নাবিল নীলার হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে আস্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে।
“ছাড়ুন বলছি ছাড়ুন।(চিৎকার দিয়ে)
“আমি আমার পাগলীকে জড়িয়ে ধরেছি, তোমার এতো সমস্যা কোথায়?
“ছাড়ড়ড়ড়ড়ড়ুন।

নাবিলের কোনো হেলদোল নেই সে বলতে লাগে,

“আমি জানি আমার নীলা আমাকে কতোখানি ভালোবাসে। আল্লাহ ছাড়া কেউ আমার নীলাকে আমার কাছ থেকে সরাতে পারবে নাহ। নীলা আমারই হবে। এই নীলাকে পেতে আমার কতো কি করতে হয়েছে। এতো সহজে কীভাবে ছাড়ি।

Emotional Heart Touching Short Love Story

নীলা খুশি হয়ে যায়, কিন্তু প্রকাশ করেনি।
নাবিল নীলার চোখে মুখে চুমু এঁকে দেয়।
“যাও নীলা, তুমি ক্লাসে যাও। আমি একটু আসছি।

নীলা মাথা নেড়ে চলে যায়।

“দুইদিন পর নীলার বিয়ে। নাবিলকে কয়েকবার ফোনও করেছে ওও, নাবিলের কোনো পাত্তাই নেই। নীলা তাতে অনেক কষ্ট পায়।

“আজ নীলার গায়ে হলুদ। নীলার বাবা খুব বড়ো আয়োজন করেছেন। বিউটিশিয়ান আনা হয়েছে নীলাকে সাজানোর জন্যে।’

অর্পা: নীলা তোকে সাজানোর মেয়ে চলে এসেছে।
নীলা:মা বাবাকে আর কি বলবো? যাকে ভালোবাসি সে তো পাত্তাই দিচ্ছে নাহ। তাহলে কি এগুলো অভিনয় ছিলো। (মনে মনে)

“নীলা চোখের পানি মুছে নেয়। কিছুক্ষণ পর বিউটিশিয়ানরা এসে নীলাকে সাজিয়ে দিয়ে যায়। দেখতে পরীর মতো লাগলেও মুখে সেই আনন্দভাবটা নেই । গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটাও সুন্দরভাবে কেটে যায়।

পরেরদিন সকালে,
অর্পা: এই নীলা উঠ উঠ বলছি।
নীলা:আহ্ আর একটু ঘুমাই নাহ।
অর্পা: উঠ বলছি। তার নাকি আজকে বিয়ে আর সে এতোবেলা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছে।
“নীলা উঠে বসে, বিয়ের কথা শুনতেই নিজের মুখ মলীন হয়ে যায়। মোবাইল নিয়ে দেখলো নাবিল কোনো ম্যাসেজ বা ফোন দিয়েছে কিনা। কিন্তু হতাশ হলো। ”
অর্পা: আরে আরে কি ভাবছিস চল গোসল করিয়ে দিই।
নীলা: চলো।

বিউটিশিয়ানরাও এসে যায় নীলাকে সাজানোর জন্য। তারা নীলাকে সাজিয়ে দিয়ে চলে যায়।

নীলা : ভেবেছিলাম এভাবে নাবিলের জন্য সাজবো। কিন্তু এখন…(চোখ থেকে অজান্তেই পানি গড়িয়ে পড়ে)।

নীলাকে সাজিয়ে প্রায় আধা ঘন্টা বসিয়ে রাখা হলো। এর মধ্যে সবাই নিচে হৈচৈ শুরু করে দিলো। বর আসছে বলে। কিছুক্ষণ পর নীলাকেও নিচে নিয়ে যাওয়া হলো। ওকে নিয়ে সোজা বরের পাশে বসানো হলো। কিন্তু সে একবারও তাকায়নি। পাথর হয়ে বসে আছে নীলা।

পড়ুন  Romantic Bangla Valobashar Golpo School Jiboner Prem Part 4

নাবিল: কান্না করতে করতে তো দেখি নীলা পরি মুখ শুকিয়ে ফেলেছে।
নীলার মনে হলো এই কন্ঠটা তো নীলার খুব চেনা। সে পাশ ফিরে তাকাতেই অবাকের চরম পর্যায়ে চলে যায়। নাবিল নীলাকে চোখ টিপ মারে।
নীলা: আপনি?
নাবিল: কেনো অন্য কারো থাকার কথা?
নীলা: আমার তো রিহান সাহেব এর সাথে বিয়ে হবার কথা।
নাবিল: ও তার মানে তুমি ওকেই বিয়ে করতে চাও। ঠিক আছে আমি যাচ্ছি, রিহানো এখানেই আছে।

Short Love Story Bangla

নাবিল উঠে দাড়াতে নিলে নীলা নাবিলের হাত ধরে বলে,

নীলা: এই নাহ নাহ আপনি যাবেন না একদম।( কাঁদো কাঁদো হয়ে )
সবাই হেসে দেয়।
নীলা: কিন্তু কীভাবে এসব।

ফ্ল্যাশ ব্যাক
—————–
নাবিল নীলাকে ক্লাসে যেতে বলে সে নীলাদের বাড়িতে যায়। নীলার মা দরজা খুলে দেয়,

অর্পা: কে তুমি বাবা?
নাবিল কিছু না বলে নীলার বাবার সামনে গিয়ে বসে পড়ে।
ইয়ানাত: কে তুমি?(অবাক হয়ে)
নাবিল: আমি কে পরে জানবেন। আগে বলুন তো আপনি যে আপনার মেয়েকে অন্য এক জায়গায় বিয়ে দিচ্ছেন তাকে কি একবারও জিজ্ঞেস করেছেন তার পছন্দ কিনা, সে কাউকে ভালোবাসে কিনা?
ইয়ানাত: কি সব আবোল তাবোল বকছো। শুনো আমার মেয়ে আমার কথামতো চলে। আমি যা বলি সেটাই ঠিক। সে আমার কথা অমান্য করে নাহ। আর কে তুমি, তুমি এসব কেনো বলছো?
নাবিল: নীলা তো আপনাকে ভালোই প্রায়োরিটি দিচ্ছে। কিন্তু আপনি কি বাবা হয়ে দিচ্ছেন মেয়ের ইচ্ছাকে গুরুত্ব। এই নাহ হলে বাবা। একটা কথা শুনুন নীলার কিছু হলে আমি আপনাকে ছাড়বো নাহ। নীলার বিয়ে হবে নাহ।

“এই বলে নাবিল চলে যেতে নেয়।

ইয়ানাত: কে তুমি আমাকে হুমকি দিচ্ছো?
নাবিল পিছন ফিরে বলে,
নাবিল: নীলার ভালোবাসা।
নাবিল চলে যায়।

Romantic Love Story Bangla

অর্পা: ছেলেটি তো ঠিকই বলেছে। একটি মাত্র মেয়ে আমাদের। তুমি ওকে কখনো কিছু জিজ্ঞেস করে করোনি। মেয়েটি কাল থেকে কাঁদতে কাঁদতে একাকার। আর এই ছেলেটিও কোথায় খারাপ। খুব ভালো মানাবে নীলার সাথে।
অর্পা একপ্রকার দৌড়ে চলে যায়।

বর্তমান,
————-
নাবিল: তারপর তোমার কঠিন বাবা ভাবনা চিন্তা করেছেন, মন গলেছে। রিহান আর রিহানের বাবাকেও কোনোমতে বুজিয়ে সুজিয়ে দিয়েছি। আর না মানলে তো আমাকে অন্য পদক্ষেপ নিতে হতো।

নীলা: তাই বলে এই দুইদিন আমাকে এভাবে কাঁদালেন।( বুকে ঘুষি দিয়ে )
নাবিল: নাহলে কি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে পারতাম। আমার জন্য অনেক কাঁদতে হয়েছে। সরি সুইটহার্ট।
ইয়ানাত: সরিরে মা। আমি আসলে ভুল করতে বসেছিলাম। তুই নাবিলের সাথেই সুখী হবি। রিহানের সাথে হয়তো হতে পারতি নাহ।

“নীলা নীলার বাবাকে জড়িয়ে ধরে,

নীলা: বাবা আমি যে অপ্রত্যাশিত এই প্রাপ্তি এভাবে পাবো।কল্পনাও করি নাই।(কেঁদে দিয়ে )

Writer: Asfi Jahan Iffti

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top