Bekar Sela
M.T Minhaz { Part 4 }
আমি চুপ করে বসে আছি কোন কথা বলছি না, চিন্তাই শরিল ঘামতে শুরু করলো, কি বলবো বুঝতে পারতেছিনা, একদিকে পরিবার আর অন্য দিকে ভালোবাসা, কোন টা আমার জন্য ভালো হবে, পরিবারের কথা ভাবতে লাগলাম, আর আরুফাকে ছাড়া তো আমি থাকতে পারবোনা, পরিবারের জন্য হলেও নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে।
হঠাৎ করে আরুফার বাবা বলে উঠলো....
আরুফার বাবাঃ কি হলো চুপ করে আসো কেন? কিছু বলো।
আমিঃ না মানে,
আরুফার বাবাঃ কি মানে মানে করছো। বলো আমার মেয়েকে চাও নাকি চাকরি চাও।
আমি কিছুক্ষন চুপ থেকে বললাম..
আমিঃ চাকরি চাই (নিজেকে সামলিয়ে কথাটা বললাম)
আরুফার বাবাঃ এত সহজে হার মেনে গেলে।
আমিঃ স্যার, এখন যদি আমি আপনার মেয়েকে চাই তাহলে আমার পরিবারের কি হবে, নিজের কষ্ট সহ্য করা যায়, কিন্তু পরিবারের কষ্ট সহ্য করাটা মুশকিল হয়ে যাই, তাই পরিবারের কথাটা ভেবে আজ আমার ভালোবাসা কুরবানি দিলাম।(চোখে পানি চলে আসলো কথাটা বলে)
আরুফার বাবাঃ আর হ্যাঁ আমি যে তোমাকে আমার মেয়ের জীবন থেকে সরে যেতে বলছি সেটা আরুফা যেন কিছুতেই না জানে ৷ আজকের পর থেকে তুমি আরুফাকে ইগনোর করবে।
আমিঃ ওকে স্যার। (চোখ মুছতে মুছতো)
স্যার আমাকে একটা কার্ড এগিয়ে দিয়ে বললো..
আরুফার বাবাঃ এই নাও আমার কার্ড, আগামিকাল আমার অফিসে চলে আসবে।
কার্ডটি হাতে নিয়ে বললাম..
আমিঃ ওকে স্যার।
তারপর স্যারের সাথে কিছুক্ষন কথা বলতে বলতে আরুফা কফি নিয়ে আসলো। আমি কফি টা শেষ করে বললাম।
আমিঃ আরুফা আজকে আমি যাই।
আরুফাঃ আগে আমার সাথে সাদে চলো৷
আমিঃ অন্য দিন যাবো সাদে।
আরুফার বাবাঃ আরুফা যখন বলছে তখন যাও, সাদ থেকে ঘুরে আসো।
তারপর আরুফার বাবার দিকে তাকালাম, দেখলাম কিছু একটা ইশারা করে, এটাই বুঝাতে চাচ্ছে যেন আরুফার বাবা কথাগুলো আরুফা কিছুতেই না জানতে পারে।
আমি হালকা মাথা নাড়ালাম। তারপর আরুফার সাথে সাদে চলে আসলাম। চারদিকে তাকিয়ে দেখি ফুলের গাছ লাগানো, আর চারদিক থেকে ফুলের গন্ধ নাকে আসছে। ভাবলাম এখান থেকে একটি ফুল দিয়ে আরুফাকে প্রপোজ করবো, হঠাৎ আরুফার বাবার কথা গুলো মনে পরতে মুখ টা কালো হয়ে গেলো। এটা দেখে আরুফা বলতে লাগলো...
আরুফাঃ কি হলো মন খারাপ নাকি।
আমিঃ না, এমনেই (একটা মুচকি হাসি দিয়ে)
আরুফাঃ আচ্ছা চাকরির কি খবর, চাকরি দিয়েছে তোমাকে।
আমিঃ হ্যাঁ, দিয়েছে।
আরুফাঃ তাহলে তো ভালোই হলো, আমাকে আর এখন বিয়ে করতে সমস্যা হবে নাতো।
আমিঃ (নিশ্চুপ)
আরুফাঃ কি হলো কথা বলছো না কেন?
আমিঃ এখনো চাকরি পেলাম না, আর তুমি এখনি বিয়ের কথা উঠালে (একটু রাগ দেখিয়ে)
আরুফাঃ আচ্ছা, রাগ করো না, এখন আর বিয়ের কথা বলবো না তোমাকে।
আমিঃ ঠিক আছে, আজ আমি যাই তাহলে।
আরুফাঃ আরেকটু থাকো না।
আমিঃ আমার একটু কাজ আছে, তারাতারি যেতে হবে। (মিথ্যা বললাম)
আরুফাঃ আচ্ছা।
তারপর আরুফাদের বাসা থেকে চলে আসলাম। সারাটা রাস্তা আরুফার বাবার কথা চিন্তা করতে করতে বাসাই চলে আসলাম। হঠাৎ চোখে পানি এসে পরলো। চোখ মুছতে মুছতে রুমে এসে পরলাম। কিছুক্ষন পর আম্মু রুমে আসলো। এসে বললো....
আম্মুঃ কিরে সারাদিন কোথায় থাকিস।
আমিঃ একটা কাজে।
আম্মুঃ চাকরি করিস না তাহলে কি কাজ করিস।
আমিঃ আম্মু পরে বলবো, এখন যাও।
আম্মুঃ কি হয়েছে মন খারাপ নাকি।
আমিঃ না, এমনি।
আম্মুঃ ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে আয়।
আমিঃ এখন খাবো না। সময় হলে আমিই খেয়ে নিবো
আম্মুঃ আচ্ছা।
তারপর আম্মু চলে গেলো। আমি বসে বসে আরুফার বাবার কথা ভাবতে লাগলাম। আরুফাকে ছাড়া তো আমার জীবন চলবে না। আমি না হয় নিজেকে সামলে নিতে পারবো। কিন্তু আরুফা কি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে। মেয়েটার অনেক জিদ।জিদে বসে কখন কি করে ফেলে কেও জানে না।
যেভাবেই হোক আরুফাকে বুঝাতে হবে। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো। দেখলাম আরুফা ফোন দিয়েছে। তারপর রিসিভ করলাম।
আমিঃ হ্যালো।
আরিফাঃ হ্যাঁ , কোথায় তুমি।
আমিঃ ঘুমিয়ে আছি, কেন?
আরুফাঃ পার্কে আসো।
আমিঃ আমি এখন আসতে পারবোনা, তোমার সাথে বিকালে দেখা করি।
আরুফাঃ তোমার শরীল খারাপ নাকি।
আমিঃ আরে না, একটা কাজে যাবো তো তাই। তোমার সাথে বিকালে দেখা ওকে।
আরুফাঃ কিন্তু...
আরুফাকে আর কিছু না বলতে ফোন কেটে দিলাম। তারপর ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে আরুফার বাবার অফিসে চলে গেলাম। গিয়ে স্যারের রুমের দরজার কাছে গিয়ে বললাম।
আমিঃ স্যার, আসতে পারি।
আরুফার বাবাঃ আরে তুৃমি আসো আসো, কেমন আছো।
আমিঃ জি আলহামদুলিল্লাহ, আপনে কেমন আছেন।
আরুফার বাবাঃ হুম, ভালো, বসো।
তারপর একটা চেয়ার টেনে বসলাম। আরুফার বাবা বললো....
আরুফার বাবাঃ তোমার চাকরির ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আগামীকাল তোমার কাগজ পত্র নিয়ে আসবা।
আমিঃ জি স্যার। আজ তাহলে আসি।
আরুফার বাবাঃ কফি খেয়ে যাও।
আমিঃ কাল খাবো।
আরুফার বাবাঃ বসতে বলছি বসো।(একটু রেগে)
আমি স্যারের রাগ দেখে আর কথা বাড়ালাম না, চুপচাপ বসে থাকলাম। তারপর কফি খেয়ে বাসাই চলে আসলাম।
বিকালে আরুফার সাথে দেখা করতে গেলাম। গিয়ে দেখি............