Bekar Sela
M.T Minhaz { Part 1}
শরিলে অনেক জ্বর,সকাল ৯ টা বাজে কিছুতেই বিছানা থেকে উঠতে পারতেছিনা, সারা শরিল ব্যাথা। শুয়ে আছি, হঠাৎ পাশের রুম থেকে আব্বু চিৎকার করে বলতে লাগলো।
আব্বুঃ তোমার আদরের ছেলে কোথায়?
আম্মুঃ ও শুয়ে আছে ঘরে।
আব্বুঃ শুয়েই থাকবেই সারাদিন, ২ বছর ধরে বসে আছে, আর কয়েকদিন পর আমার চাকরিটা গেলে তখন কি করে খাবে, এসব চিন্তা আছে ওর, ২ বছর ধরে ইন্টারভিও দিয়েই চলেছে একটাতে পাশ করতে পারেনি,আল্লাহ তায়ালাই জানে এই বাদর টা চাকরি পাবে কিনা (রাগি সুরে)
আম্মুঃ আরে আস্তে বল ও শুনতে পাবে,আর ছেলেটার কি দোস মিনহাজ তো আর কম চেষ্টা করেনি।
আব্বুঃ আমরা চাকরি করি না নাকি, তাই বলে ২ বছরে একটাও চাকরি পাবে না। মিনহাজকে বলে দিও চাকরি করা লাগবেনা সারাজীবন যেন আমার ঘাড়ে বসে থাকে, আমি বাহিরে গেলাম ফিরতে দেরি হবে
এই বলে আব্বু চলে গেলো বাহিরে।
আমি শুয়ে শুয়ে এসব কথা শুনছিলাম আর চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো, কিন্তু কি করবো চাকরির জন্য চেষ্টা তো আর কম করিনি, অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু চাকরি হচ্ছে না। কথায় আছেনা বর্তমান ঘুগে মামা খালু ছাড়া চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন, আমারো এই অবস্থা।
হঠাৎ করে আম্মু রুমে এসে বলতে লাগলো,
Short Story
আম্মুঃ কিরে এখনো শুয়ে আছিস, তারাতারি উঠে ফ্রেস হয়ে আয়, খাবার রেডি করছি।
আমিঃ আম্মু তুমি যাও আমি আসছি।
আম্মুঃ এখনি উঠবি তুই।
এই বলে আমার হাতে ধরে উঠাতে লাগলো, আর বলতে লাগলো....
আম্মুঃ তোর শরিলে তো অনেক জ্বর,
আমিঃ এসব কিছু না ঠিক হয়ে যাবে।
আম্মুঃ জ্বরে শরিল পুড়ে যাচ্ছে আর তুই বলছিস এসব কিছু না, এখানে শুয়ে থাক পানি ডেলে দিচ্ছি।
আমিঃ হুম
তারপর আম্মু মাথাই পানি ঢেলে দিচ্ছে, কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি মনে নেয়।
ঘুম থেকে উঠে দেখি ফোন বাজছে, স্কিনে তাকাতেই আরুফা নাম বেজে উঠলো, তারপর রিসিভ করতেই আরুফা বলতে লাগলো......
আরুফাঃ কোথাই তুমি, তারাতারি পার্কে আছো দেখা করতে।
আমিঃ আচ্ছা তুমি ওয়েট করো ১০ মিনিটের ভিতরে আসছি।
এই বলে ফোন কেটে দিলাম, শরিলে জ্বর এখনো কমেনি আগের মতোই আছে, এই জ্বর নিয়ে কিভাবে যাবো, এখন দেখা না করলে উল্টাপাল্টা শুরু করে দিবে আরুফা। তবুও একটু কষ্টে চলে গেলাম তার সাথে দেখা করতে, গেট পর্য়ন্ত যেতেই আম্মু বলতে লাগলো.....
আম্মুঃ এই জ্বর নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস।
আমিঃ একটু বাহিরে যাচ্ছি।
আম্মুঃ এই জ্বর নিয়ে কোথায়ও যাওয়ার দরকার নেই,যা রুমে গিয়ে শুয়ে থাক।
আমিঃ আম্মু না করো না, প্লিজ।
আম্মুঃ আচ্ছা যা, তারাতারি ফিরে আছিস
আমিঃ হুম।
তারপর বেরিয়ে পরলাম আরুফার সাথে দেখা করতে।
আপনাদের পরিচয় টা দিয়ে ফেলি, আমি মিনহাজ, বাবা-মায়ের বেকার ছেলে ৷ আব্বু চাকরির জন্য প্রতিদিন এসব কথা শুনাই আমাকে, আজ কি শুনালেন জানলেন তো, বাবা সরকারি চাকরি করে আব্বুর বয়স হয়েছে তো তাই যেকোনো সময় চাকরিটা চলে যেতে পারে, আর ভাবছেন আরুফা কে, আরুফা আমার গার্লফ্রেন্ড আমাদের ৩ বছরের রিলেশন।
এবার গল্পে ফিরা যাক…….
পরিচয় দিতে দিতে পার্কে চলে আসলাম, অনেক কষ্ট করে এসেছি অসুস্থ শরিল নিয়ে, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৩০ মিনিট লেট হয়ে গেছে, তারপর গেলাম আরুফার কাছে, যেতেই বলতে লাগলো..
আরুফাঃ এই জায়গা আসতে এতক্ষন লাগে, কয়টা বাজে দেখো, আর কয়টাই আসার কথা ছিলো।(রেগে)
আমিঃ সরি, আসলে.
আরুফাঃ আর একটা কথা বলাবানা একদম চুপ, ভাবছিলাম তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো তার আগেই মুড টা নষ্ট করে দিলে, আজ আমি যাই...
এই কথা বলে আরুফা চলে যেতে লাগলো, আমি গিয়ে আরুফার হাত ধরে ফেললাম, আমার হাতের স্পর্শ পেয়ে আমার দিকে কিছু্ক্ষন তাকিয়ে রইলো, অবশ্যই এর আগে অনেক বার হাত ধরেছিলাম, কিন্তু আজ যেভাবে তাকিয়ে আছে এমন ভাবে আর কোনদিন তাকাইনি।
কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আরুফা আমার কপালে মুখে হাত দিয়ে বলতে লাগলো.......
আরুফাঃ তোমার তো অনেক জ্বর, জ্বরে শরিল পুড়ে যাচ্ছে, আমাকে আগে বলবানা।(মন খারাপ করে)
আমিঃ এসব কিছুই না ঠিক হয়ে যাবে।
আরুফাঃ এত ভাব নিতে হবেনা চলো ডাক্তারের কাছে।
আমিঃ আরে থাক লাগবেনা ।
আরুফাঃ ওই ব্যবহারের জন্য সরি,প্লিজ রাগ করো না,
আমিঃ আরে রাগ করিনি।
আরুফাঃ অনেক হয়েছে, এবার চল।
আমিঃ না গেলে হয় না।
আরুফাঃ কোন কথা নয় চলো বলছি।
Related Story
অবশেষে আরুফার জুরাজুরিতে ডাক্তারের কাছে গেলাম, ডাক্তার জ্বর মেপে ঔষুধ লিখে দিলো কিছু।
আরুফাকে বাসাই পাঠিয়ে দিলাম, আমি বাসাই চলে আসলাম। এসে দেখলাম আব্বু বাসাই চলে এসেছে, আমাকে দেখতে পেয়ে বলতে লাগলো....
আব্বুঃ কি নবাব সাহেব কোথায় গিয়েছিলেন।
আমিঃ একটু বাহিরে গিয়েছিলাম আব্বু।
আব্বুকে ছোট বেলা থেকে ভয় পাই, আজ পর্যন্ত আব্বুর মুখের উপর কথা বলিনি।
আব্বুঃ তাহলে সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন, চাকরির চেষ্টা না করে।
হঠাৎ আম্মু এসে বললো....
আম্মুঃ আবার শুরু করলে এসব,
আব্বুঃ আমি বললেই ভালো না, তোমার ছেলেকে তুমিই সামলাও
এই বলে আব্বু রুমে চলে গেলো, আমার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো,আম্মু বললো...
আম্মুঃ আয় খেয়ে নে।
আমিঃ আমি খাবোনা এখন।
এই বলে রুমে আসলাম, অনলাইনে চাকরির খবর দেখতে লাগলাম, দেখতে দেখতে একটা পেয়ে গেলাম, যদি ইন্টারভিউয়ে পাশ করতে পারি তাহলে চাকরি হবে।
পরেরদিন সকালে ফ্রেস হয়ে, ব্রেকফাস্ট করে চলে গেলাম ইন্টারভিউ দিতে, সেখানে গিয়ে দেখি..............