Bekar Sela
M.T Minhaz { Part 3 }
আরুফাঃ আমি চাচ্ছি তুমি আমার বাবার অফিসে চাকরি করো।
আমিঃ কিন্তু তোমার বাবা আমাকে চাকরি দিবে।
আরুফাঃ আমি আজ গিয়ে বাবার সাথে কথা বলে তারপর তোমাকে জানাবো।
আমিঃ আচ্ছা।
আরুফাঃ চলো না ফুসকা খায় দুজন মিলে।
আমিঃ আমার কাছে তো টাকা নেই।
আরুফাঃ তোমার কাছে টাকা চেয়েছি নাকি ?
আমিঃ না, আমি টাকা না দিয়ে তুমি টাকা দিবে এটা কেমন দেখায়।
আরুফাঃ মানুষ কি দেখলো আর না দেখলো সেসবে কান না দেওয়াই ভালো।
আমিঃ অন্য দিন খাবো নে (নরম সুরে)
আরুফাঃ তুমি যাবে নাকি এটা বলো।( রেগে গিয়ে)
আমিঃ হুম যাবো।
আরুফাঃ চলো এবার।
যে পরিমান রেগে গেছে এখন কথা না বাড়ালেই আমার জন্য ভালো হবে, বড়লোকের মেয়ে, কখন যে কি করে বসে বলা যাই না।
তারপর ফুসকা ওয়ালার কাছে চলে গেলাম ফুসকা খেতে। আরুফা ৪ প্লেট, আমি ১ প্লেট। আমিও ফুসকা খেতে পছন্দ করি, আজ কেন যানি ফুসকা খেতে ভালো লাগছেনা তাই আর খেলাম না। তারপর আমি আরুফা চলে আসলাম সেখান থেকে। আরুফাকে তাদের বাসাই নামিয়ে আমি বাসাই চলে আসলাম।
আরুফা ভেতরে গিয়ে তার বাবার সামনে গেলো, তারপর তার বাবা বললো...
বাবাঃ কিছু বলবি মা।
আরুফাঃ হুম, বাবা আসলে আমার এক ফ্রেন্ডের চাকরি দরকার, তাই বলছিলাম তোমার অফিসে তাকে চাকরি দেও, আর আমার ফ্রেন্ড অনেক ভালো ছেলে।
বাবাঃ কিন্তু অফিসে তো এখন আর লোক দরকার নেই, কয়েকদিন আগে বলতি।
আরুফাঃ প্লিজ বাবা, একটু চেষ্টা করে দেখো, আর ওদের পরিবারের অবস্থা ও বেশী একটা ভালো না, কয়েকদিন পর তার বাবার চাকরি চলে যাবে তখন কি করবে।
বাবাঃ তুই যখন বলছিস তখন ভেবে দেখবো।
আরুফাঃ থ্যাংকু বাবা।
বাবাঃ ছেলেটার নাম কি?
আরুফাঃ মিনহাজ।
বাবাঃ তাকে আমার সাথে দেখা করতে বলিস একদিন।
আরুফাঃ ওকে বাবা।
তারপর খুশিতে আরুফা রুমে চলে গেলো।
এদিকে....
আমি রুমে যেতেই আমার ফোন বেজে উঠলো, দেখলাম আরুফা কল দিয়েছে তাই রিসিভ করতেই....
আরুফাঃ বাবাকে বলেছি তোমার চাকরির কথা।
আমিঃ তা কি বলেছে তোমার বাবা।
আরুফাঃ বলেছে আমাদের অফিসের আর লোক দরকার নেই, তবুও আমি অনেক কথা বলে রাজি করিয়েছি, বাবা তোমার সাথে দেখা করতে চাই।
আমিঃ কবে দেখা করতে বলেছে।
আরুফাঃ তোমার ইচ্ছে।
আমিঃ কাল দেখা করি তাহলে।
আরুফাঃ তাহলে বিকেলে আমাদের বাসাই এসো।
আমিঃ হুম।
আরো কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দেই। আল্লাহকে মনে মনে ডাকছি, যে এইবার চাকরিটা যেন হয়ে যায়।
পরেরদিন বিকেলে, রেডি হচ্ছি আরুফাদের বাসাই যাওয়ার জন্য, হঠাৎ আমার মোবাইল বেজে উঠলো, তাকিয়ে দেখলাম আরুফা ফোন দিয়েছে, তারপর রিসিভ করলাম, রিসিভ করতেই আরুফা বলতে লাগলো....
আরুফাঃ কোথায় তুমি। (রেগে)
আমিঃ এই তো বের হচ্ছি বাসা থেকে, এত রেগে কথা বলার কি আছে।
আরুফাঃ রেগে কথা বলবো না তো কিভাবে কথা বলবো, সব কাজে তোমার দেরি করতে হয়।
আমিঃ আচ্ছা সরি,
আরুফাঃ তারাতারি আসো।
আমিঃ হুম।
তারপর ফোন কেটে দিয়ে বের হয়ে গেলাম আরুফাদের বাসার উদ্দেশ্যে। কিছুক্ষন পর আরুফাদের বাসাই চলে আসলাম, দরজার কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে দিলো, দেখলাম আরুফা দরজা খুলে দিয়েছে, মনে হয় এতক্ষন দরজার পাশে দাড়িয়ে ছিলো আমার জন্য। হঠাৎ আরুফা বললো...
আরুফাঃ কি হলো বাহিরে দারিয়ে থাকবে নাকি, ভিতরে এসো।
আমিঃ হুম।
তারপর ভিতরে গেলাম। আরুফাদের বাসা বাহির থেকে যতটা সুন্দর ভিতর থেকে দ্বিগুন সুন্দর। দেখলাম সোফায় বাবার বয়সি একজন লোক বসে আছে, আর নিউজ পড়ছে, বুঝে ফেললাম এটাই আরুফার বাবা। আমি বললাম...
আমিঃ আস্সালামুলাইকুম, ভালো আছেন স্যার।
আরুফার বাবাঃ অলাইকুমআস্সালাম, আলহামদুলিল্লাহ। তুৃমি কেমন আছো।
আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
আরুফার বাবাঃ বসো।
আমিঃ হুম।
তারপর সোফাই বসে পরলাম, আবার আরুফার বাবা বলতে লাগলো..
আরুফার বাবাঃ আরুফা যা কফি নিয়ে আয়।
আরুফাঃ হুম, বাবা।
তারপর চলে গেলো আরুফা কফি আনতে, স্যার আমাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো....
আরুফার বাবাঃ আমি আরুফার কাছ থেকে সব শুনেছি তোমার কথা, কিছুদিন পর তোমার বাবার চাকরি টা চলে যাবে।
আমিঃ হুম।
আরুফার বাবাঃ তুমি এই বছরে অনেক গুলো ইন্টারভিউ দিয়েছো একটাতেও পাশ করতে পারনি।
আমিঃ হুম (মাথা নিচু করে)
আরুফার বাবাঃ আরে মাথা নিচু করলে কেন? এদিকে তাকাও।
স্যারের দিকে তাকালাম, তারপর বললো...
আরুফার বাবাঃ আচ্ছা, তোমাকে দুটো অপশন দিবো, যেকোনো একটা বেছে নিতে হবে তোমাকে।
আমিঃ বলেন স্যার।
আরুফার বাবাঃ তুমি চাকরি চাও নাকি আমার মেয়েকে চাও।
আমিঃ মানে (অবাক হয়ে)
আরুফার বাবাঃ মানে হলো, তুমি যদি আমার মেয়ের পরিবর্তে চাকরি চাও তাহলে এটা মেনে নিবো, আর চাকরির পরিবর্তে আমার মেয়েকে চাও তাহলে এটা কোন দিন আমি মানবো না। এবার বলো কোনটা তোমার চাই।
আমিঃ চাকরির সাথে আরুফাকে জড়াচ্ছেন কেন?
আরুফার বাবাঃ তোমরা দুইজন দুইজনকে ভালোবসো এটা আমি জানি, কিন্তু আমার মেয়েকে এসব বলে লাভ হবে না, তার মা মারা যাওয়ার পর তাকে কোন কষ্ট দেই নি, তার সব চাওয়া পাওয়া আমি পূরন করে দিয়েছি, যা করার তোমাকে করতে হবে। এবার বলো তুৃমি কোনটা চাও।
তারপর...............