Golperjogot

Golperjogot

Bekar Sela Bangla Valobashar Golpo Last Part 7

বেকার ছেলে পর্ব 7 – ভালোবাসার গল্প অন্তিম পর্ব | Bekar Sela

Bekar Sela

M.T Minhaz { Part 7 }


অফিসে কাজ করছি, হঠাৎ পরিচিত গলার আওযাজ শুনতে পেলাম, সামনে তাকিয়ে দেখি আরুফা দাড়িয়ে আছে, আমাকে এখানে দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে, আমি এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি আরুফার দিকে, অনেক দিন পর আরুফাকে দেখে মনটা শান্তি পেলো, মন টা চাই এখনি গিয়ে আরুফাকে জরিয়ে ধরি,কিন্তু এই অধিকার তো নেই ।

কিছুক্ষন তাকিয়ে আরুফা চলে গেলো, দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমাকে ছাড়া ও ভালো আছে, আমি কাজে মন বসাতে পারছিনা সারাক্ষণ শুধু আরুফার কথা মাথাই ঘুরপাক খাচ্ছে, সেদিনের মতো কাজ করে বাসাই এসে পরলাম, বাসাই এসে কিছুই ভালো লাগছে না, শুধু আরুফার কথা ভাবতে লাগলাম।

কয়েকদিন পর….

বিকালে বাসাই বসে আছি হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো, দেখলাম নাহিম ফোন দিয়েছে, তারপর রিসিভ করলাম...

আমিঃ হুম বল।
নাহিমঃ তুই কোথায় আছিস,
আমিঃ বাসাই বসে আছি, কেন।
নাহিমঃ এদিকের খবর কি জানিস নাকি।
আমিঃ না বললে কেমনে জানবো।
নাহিমঃ আরে কাল আরুফার বিয়ে, আর তুই এখনো জানিস না এই কথা।

নাহিমের কথা শুনে মনে হয় আকাশ থেকে পরলাম।

নাহিমঃ কিরে কথা বলছিস না কেন?
আমিঃ হু, তুই কেমনে জানলি কাল আরুফার বিয়ে ?
নাহিমঃ জেনেছি কোন এক ভাবে।
আমিঃ হয়ছে ফোন রাখ এখন।

এই বলে আমিই ফোন কেটে দিলাম। এখন কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে, আরুফা তো আমাকে তার নিজের থেকে বেশী ভালোবাসে তাহলে কেমলে পারবে এই বিয়ে করতে।

সিদ্ধান্ত নিলাম আজ রাতেই তাদের বাসাই যাবো,যদি ওর এই বিয়েতে মত থাকে তাহলে আর ওর পথের কাটা হয়ে দাড়াবো না, এসব ভাবতে ভাবতে রাত হয়ে গেলো।

রাত ১০ টার সময় বাসা থেকে বেরিয়ে চলে গেলাম,আরুফাদের বাসাই, বাসার সামনে এসেই চোখে পরলো সাজানো বাড়ি টা, লাল নিল লাইট চারদিকে ঘেরাও করে রেখেছে বাসা টা। বিয়ে বাড়ি তাই যার যার কাজে ব্যস্ত আছে সবাই, এই সুযোগে বাসাই ঢুকে আরুফার রুমে চলে আসলাম, দেখলাম হলুদ শাড়ি পরে বসে আছে বিছানাই। আমি গিয়ে আরুফার সামনে বলতে লাগলাম....

আমিঃ তুমি কি আমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবে( কেঁদে কেঁদে)

আমাকে দেখে আরুফা চমকে উঠলো, বললো...

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ২০ | মোনা হোসাইন

আরুফাঃ তু তুমি এখানে (অবাক হয়ে)
আমিঃ অন্য কাওকে আশা করছিলে নাকি তাহলে।
আরুফাঃ হুম, কিন্তু বেইমানরা যে আমার রুমে কখনই ভাবেনি।
আমিঃ প্লিজ এভাবে বলো না, আমার যে কষ্ট হয় ( ওর হাত ধরে বললাম)

ও হাত ছাড়িয়ে বলতে লাগলো...

আরুফাঃ তাহলে তুমি যে আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে তখন আমার কতটা কষ্ট হয়েছিলো তুমি জানো, তা তুমি জানবে কি করে তুমি যে এত লোভি আমি কখনই ভাবিনি, কি করে একটা লোভি মানুষকে ভালোবেসেছিলাম নিজেও জানিনা (রাগে ফুলতে ফুলতে বললো)

আমিঃ বিশ্বাস করো আমি নিরুপায় ছিলাম, চাকরি টা যদি না করি তাহলে আমার পরিবার সহ রাস্তাই থাকতে হতো, এতদিনে তোমাকে ভুলতে পারিনি, আর পারবোনা কখনই ভুলতে তোমাকে।

আরুফাঃ পরিবারের জন্য ভেবে এত সহজে আমাকে ছেরে দিবে তাহলে।
আমিঃ তখন আমার কিছুই করা ছিলো না।

আরুফাঃ এখন তোমাকে ভালোবাসি না, কাল বিয়ে হচ্ছে আমার ভালোবাসর মানুষের সাথে,যদি আমার হবু বর জানে তুমি এখানে তাহলে তোমাকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিবে।

আমিঃ তোমার কি এই বিয়েতে মত আছে নাকি।
আরুফাঃ কেন মত থাকবেনা, ভালোবাসার মানুষের সাথে বিয়ে হচ্ছে এর চেয়ে খুশির খবর কি হতে পারে
আমিঃ তাহলে সত্যি সত্যি এই বিয়েটা করতে যাচ্ছো।
আরুফাঃ হুম।

আমিঃ আচ্ছা, এই কথা তোমার মুখ থেকে শুনতে চেয়েছিলাম আর বিরক্ত করবো তোমাকে ভালো থেকো।

এই বলে সেখান থেকে চলে আসলাম, চোখে পানি যে বাধা মানছে না, চোখ দিয়ে অজরে পানি পরতে লাগলো, গেইট পর্য়ন্ত আসতেই আরেকবার বিয়ে বাড়িটা দেখে নিলাম।

তারপর রাস্তাই বের হয়ে গেলাম রাস্তা দিয়ে হাটতে লাগলাম, আর সিগারেট খেতে লাগলাম, এই নিকোটিনের ধোয়াটা আজ শান্তি লাগছে, সিগারেট টানছি আর রাস্তা দিয়ে হাটছি, হঠাৎ আমার পাশে এক গাড়ি দারালো আমি বুঝে উঠার আগেই আমার হাত ধরে টেনে গাড়ির ভিতরে নিয়ে গেলো, যে ব্যক্তিটির মুখ টা দেখে চমকে গেলাম, আরুফা ৷

আরুফা বলতে লাগলো....

আরুফাঃ অবাক হলে নাকি, নিশ্চয় অবাক হবারি কথা, কেননা কাল আমার বিয়ে এখন বাসা ছেরে এখানে কি করছি তাই তো।
আমিঃ হুম, হঠাৎ এই ভাবে আমাকে গাড়িতে তুললে কেন?
আরুফাঃ আমার হবু বর যে আমার ওপর রাগ করে চলে যাচ্ছে তাই রাগ ভাঙ্গাতে আসলাম।
আমিঃ মানে কি বলছো এসব, কাল তোমার বিয়ে এখনি মাথা নষ্ট হয়ে গেছে নাকি।
আরুফাঃ না নষ্ট হয় নাই।

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৫ | মোনা হোসাইন

আমিঃ তাহলে এখানে কেন,,,
আরুফাঃ আসলে বিয়েটা তোমার সাথেই ঠিক করেছে বাবা।
আমিঃ মানে (অবাক হয়ে)
আরুফাঃ হুম।
আমিঃ কিভাবে।

আরুফাঃ সেদিন তোমার আর বাবার কথা গুলো দরজার আড়াল থেকে সব শুনেছি, এসব শুনার পর যে আমার মাথার আকাশ ভেঙে গিয়েছিলো, তারপর তোমাকে বুঝতে দেইনি যে আমি এসব কথা জেনে ফেলেছি।

যখন তুমি আমাকে চাকরির জন্য ছেরে গিয়েছিলে তখন নিজেকে ঠিক রাখতে অনেক কষ্ট হয়েছে, প্রতিদিন রাতেই কান্না করি তোমার জন্য, আর আল্লার তায়ালার কাছে সবসময় দোয়া করতাম তুমি একদিন আমার কাছে ফিরে আসো, সেদিন আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করে নিয়েছে তাই আজ তুমি আমার পাশে আছো।

তুমি তোমার বন্ধুদের নিয়ে সেদিন রেস্তুরেন্টে গিয়েছিলে তার আগেই আমি আর আমার কাজিন সিহাব প্লান করে তোমার সামনে প্রেমের অভিনয় করেছিলোম যেন তুমি কষ্ট টা অনুভব করতে পারো, এরপর অনেক দিন কেটে গেলো। প্রতিদিন তুমি ফিরে আশার অপেক্ষা করতাম, আজ তুমি সত্যিই ফিরে এসেছো (চোখের পানি মুছতে মুছতে বললো)

আমিঃ আর আমাদের বিয়েটা কেমনে ঠিক হলো।

আরুফাঃ কয়েকদিন আগের কথা, বাবা আমাকে বললো, আমার বিয়ে ঠিক করেছে, তখন আমি তোমার কথা বলেছি, বাবা প্রথমে রাজি হয় নাই তারপর অনেক বুঝিয়ে বাবাকে রাজি করিয়েছি, তারপর তোমার বাবার সাথে কথা বলে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করলো, কাল বিয়ের আমাদের।

আমিঃ আব্বুকে আর আম্মুকে দেখে তো বুঝাই যায়নি আমার বিয়ে কাল, আর ওরা তো কিছুই বললো না।

আরুফাঃ আসলে আমি ওদের কে বলতে না করছি যেন বিয়ের কথা তোমাকে না বলে। আমার কথাই তোমার বাসা সাজানো হয়নি, আমাদের বাসা সাজিয়েছি তোমাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য।

আমিঃ এত কিছু হয়ে গেলো অথচ আমি জানিনা।
আরুফাঃ সরি, আর হবে না।
আমিঃ আমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছো।
আরুফাঃ বললাম তো সরি।
আমিঃ ভালোবাসো তো আমায়।
আরুফাঃ নিজের থেকেও বেশী।

আরুফাকে জরিয়ে ধরলাম, গাড়ি ঘুড়িয়ে আবার আরুফাদের বাসার সামনে থামলো।

পরেরদিন আমার আর আরুফার বিয়েটা হয়ে গেলো, বাসর ঘর টা সাজিয়েছে শশুর বাড়িতেই আরুফার রুমে।

রাত ১১ টা বাজে সাদে বসে বসে শালিদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি, হঠাৎ আম্মু এসে বলতে লাগলো...

পড়ুন  Romantic Bangla Valobashar Golpo Tomar Amar Prem Part 3

আম্মুঃ কিরে তুই এখনো এখানে বসে আছিস দেখ কয়টা বাজে।
শালি গুলোঃ সেই কখন থেকেই বলছি বাসর ঘরে থেকে যেতে, আপনার ছেলে ভয় পাচ্ছে তাই যাচ্ছে না।(বলেই ৩২ টা দাঁত বের করে হাসতে লাগলো)

আমিঃ আরে আম্মু ওরা মিথ্যা বলছে, সেই কখন থেকে বলছি আমি রুমে যামু কিন্তু ওরা আমাকে যেতে দিচ্ছে না।
আম্মুঃ হয়েছে এবার রুমে যা সেই কখন থেকে বউমা বসে আছে।

আমি যাওয়ার জন্য উঠে পরলাম, পিছন থেকে একজন শালি ডাক দিয়ে বললো...

শালিঃ দুলাভাই বিড়াল টা কিন্তু মারতে হবে।( হাসতে হাসতে শেষ )

আম্মুর সামনে কথা টা বললো, মানসম্মান কিছুই রাখলো না আমি বললাম...

আমিঃ তোমাদের জন্য দোয়া করলাম, তোমাদের জামাই তোমাদেরকে সকালে পিটাবে, দুপুরে পিটাবে, রাতে পিটাবে।
শালিগুলোঃ এত বড় দোয়া দাড়ান আপনার কপালে দুঃখ আছে।

এই বলে ওরা আমার কাছে আসতে লাগলো আমাকে মারার জন্য,

আমি দৌড়ে রুমে আসলাম, যাক বাঁচলাম...

আরুফা আমাকে দেখে খাট থেকে নেমে আমাকে সালাম করলো, তারপর তাকে বুকে জরিয়ে ধরলাম, দুইটা জায়নামাজ বিছিয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পরলাম আমি আর আরিফা। অবশেষে পূর্নতা পেলো আমাদের ভালোবাসা।

গল্পটা কেমন হয়েছে জানাবেন সবাই।

About The Author

3 thoughts on “বেকার ছেলে পর্ব 7 – ভালোবাসার গল্প অন্তিম পর্ব | Bekar Sela”

    1. আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। গল্পের জগৎ এর পাশেই থাকবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top