Bekar Sela
M.T Minhaz { Part 6 }
হারামিগুলো মিলে আশেপাশে থাকা এক রেস্তুরেন্টে চলে গেলাম, গিয়ে সবাই এক টেবিলে বসে পরলাম, যখনি খাবার অডার্র দিবো, তার আগেই সাজিদ বলতে লাগলো...
সাজিদঃ মিনহাজ পাশের টেবিলে একটু তাকা।
আমিঃ কেন, কি হয়ছে।
সাজিদঃ এত কথা বলিস কেন, তাকিয়ে দেখ তারপর বুঝতে পারবি।
পাশের টেবিলে তাকিয়ে যা দেখলাম নিজেকে বিশ্বাস হচ্ছে না, আরুফা এত তারাতারি আমাকে ভুলে নতুন একজনকে পেয়ে যাবে। এসব দেখে চোখে পানি এসে পরলো আর বুক টা চিনচিন ব্যাথা করতে লাগলো, আমার অবস্থা দেখে সাজিদ বলতে লাগলো...
সাজিদঃ জানি তোর অবস্থা খারাপ, নিজের ভালোবাসাকে অন্যজনের সাথে দেখলে নিজেকে ঠিক রাখা যাই না….
আমিঃ কোথায় আমি তো ঠিকি আছি (নিজেকে ঠিক রেখে)
সাজিদঃ এবার বল কি কারনে আরুফা তোকে ছেরে অন্যজনের হাত ধরেছে কেন?
আমিঃ বাদ দে তো এসব,
নাহিমঃ কেন বাদ দিবো, আগে বল তা নাহলে তোর ট্রিট লাগবেনা আমাদের,
আমিঃ আচ্ছা বলবো, আগে খেয়ে নে তারপর বাহিরে নিরিবিরি জায়গায় বসে সব বলবো।
সাজিদঃ ওকে,
তারপর খাবার অডার্র দিলাম, হারামি গুলো সব রাক্ষসের মতো খাচ্ছে, আমি থালা নিয়ে বসে আছি খাচ্ছি না, হঠাৎ সাজিদ আর নাহিমের জুরাজুরিতে একটু খেতে হলো।
খেয়ে বাহিরে চলে আসলাম এক নিরিবিলি জায়গায়, এসে সবাই মিলে বসে পরলাম গোল হয়ে, তারপর সাজিদ বলতে লাগলো...
সাজিদঃ এবার বল, ঘটনাটা কি? কেনই বা আরুফা তোকে ছেড়ে দিলো।
আমিঃ আরুফা ছেড়ে দেইনি আমাকে, আরুফা আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতো, আমি ছারতে বাধ্য হয়েছি।
সাজিদঃ মানে..
আমিঃ তাহলে শুন।(আরুফার বাবার কথা গুলো আর আরুফার সাথে কিভাবে ব্রেকআপ করেছি সব বললাম)।
নাহিমঃ তুই কিন্তু কাজটা ঠিক করিস নাই মিনহাজ।
আমিঃ এতে আমার আর কি করা ছিলো, চাকরিটা অতি প্রয়োজন তাই এসব করতে বাধ্য হলাম।
সাজিদঃ আমাদের বলতি চাকরির কথা, তাহলে আমরা একটা ব্যবস্থা করে দিতাম।
আমিঃ তোরা নিজেরাই বেকার, আর আমার জন্য তোদের কষ্ট হবে, আমি চাইনি তোরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমার কথা চিন্তা করিস।
নাহিমঃ এখন তো তুই কষ্ট পাচ্ছিস আরুফার জন্য।
আমিঃ কোথায় কষ্ট পাচ্ছি, দেখ হাসি খুশিই তো আছি।
সাজিদঃ জানি তুই যতো কষ্ট পাসনা কেন, সবার সামনে নিজেকে হাসিখুশি রাখিস, কিন্তু ভিতর থেকে মন কাঁদে সেটা বাহিরে কাওকে দেখাস না।
আমিঃ বাদ দে এসব কথা।
আর কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে বাসাই চলে আসলাম। বাসাই এসে দেখলাম আব্বু বসে আছে, আমাকে দেখে বললো..
আব্বুঃ মিনহাজ, তোর চাকরির কথা শুনে অনেক খুশি হয়েছি।
আমিঃ তোমাদের হাসিমুখ দেখার জন্যই এতদিন চেষ্টা করছি, তার চেষ্টার ফল আজ পেয়েছি।
আম্মুঃ ফ্রেশ হয়ে আয়, খেতে দিচ্ছি তোকে।
আমিঃ আমি বাহির থেকে খেয়ে এসেছি, এখন রুমে যাবো।
এই বলে চলে আসলাম রুমে। এসে পকেট থেকে মোবাইল বের করে আরুফাকে ফোন দিতে লাগলাম। কিন্তু আরুফার ফোন অফ দেখাচ্ছে। এভাবে অনেক চেষ্টা করলাম, বারবার অফ দেখাচ্ছে মনটা অনেক খারাপ, তার উপরে আরুফার ফোন অফ। বিছানাই শরিল এলিয়ে দিলাম, কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি মনে নাই।
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম, আম্মু বসে আছে আমার পাশে। আর মাথাই জল পট্টি দেওয়া। তারপর আম্মুকে বললাম।
আমিঃ আম্মু কি হয়েছে আমার, আর মাথা জল পট্টি কেন।
আম্মুঃ রাতে তোর জ্বর এসেছিলো তাই সারারাত তোর মাথা পানি দিয়েছি, এখন মনে জ্বর কমেছে।
আমিঃ ওহ, কিন্তু আমার শরিল এখন তো পুরোপুরি সুস্থ দেখাচ্ছে,
আম্মুঃ মনে হয় সারারাত সেবা করাতেই পুরোপুরি জ্বর কমে গেছে। ফ্রেশ হয়ে আয় খেতে।
আমিঃ আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি।
তারপর আম্মু চলে গেলো, মনে মনে বলতে লাগলাম, মায়ের সাথে কোন তুলনাই হয়না, মাই হলো বেস্ট আমার।
তারপর ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম খেতে, খেতে বলতে লাগলাম।
আমিঃ আজ থেকে অফিসে জয়েন করতে হবে আমাকে।
আব্বুঃ আচ্ছা, দোয়া করি যেন মনোযোগ দিয়ে কাজ করিস।
আমিঃ তোমাদের দোয়া থাকলে আর কিছুই লাগবেনা আমার।।
তারপর খেয়ে আবার রুমে চলে আসলাম, এসে অফিসের জন্য রেডি হয়ে চলে গেলাম অফিসে। গিয়ে সবার আগে আরুফার বাবা কেবিনে চলে গেলাম।
আমিঃ আসতে পারি স্যার।
আরুফার বাবাঃ আসো, আসো, ঠিকভাবে আসতে পেরেছো তো।
আমিঃ জি, স্যার।
আরুফার বাবাঃ আচ্ছা, মেনেজারকে ডেকে দিয়ে তোমার কেবিনটা দেখিয়ে দিতে বলছি।
তারপর মেনেজারকে ডাক দিলো, কিছুক্ষন পর মেনেজার আসলো এসে আমাকে নিয়ে গেলো অন্য এক রুমে, রুমে এসে মেনেজার চাচা বলতে লাগলো.
মেনেজার চাচাঃ এটা তোমার কেবিন, আজ থেকে এখানে বসে কাজ করবে।
আমিঃ হুম।
মেনেজার চাচাঃ তোমার নাম কি বাবা।
আমিঃ আমার নাম মিনহাজ, চাচা আমি তো অফিসে নতুন তাই বলছি কিভাবে কাজ করবো, সেটা একটু শিখিয়ে দিলে ভালো হতো।
মেনেজার চাচাঃ সমস্যা নেই আমি আছি, এখন কাজ টা কি তোমাকে শিখিয়ে দিচ্ছি..
তারপর মেনেজার চাচা আমাকে কাজ গুলো শিখিয়ে দিলো, সেদিনের মতো কাজ করে বাসাই চলে আসলাম। বাসাই এসে আম্মু বলতে লাগলো...
আম্মুঃ আজ অফিসের প্রথমদিন কেমন লাগলো।
আমিঃ ভালো।
আম্মুঃ ফ্রেশ হয়ে আয়, খাবার রেডি করছি।
আমিঃ হুম।
তারপর ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে রুমে চলে আসলাম। এভাবে কেটে গেলো ৮ মাস। এই মাসে নিজেকে অনেক বদলিয়ে ফেলেছি, কিন্তু কখনোই আরুফাকে মন থেকে ছাড়তে পারিনি, সারাজীবন আরুফা নাম টা মনে গিথে থাকবে।
একদিন অফিসের কাজ করছি, একজন পরিচিত গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম, বাবা বলে ডাক দিলো, আমি সামনে তাকিয়ে দেখলাম.......