Bekar Sela
M.T Minhaz { Part 2 }
ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি, আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরলাম, ৩০ মিনিট পর অফিসে আসলাম, দেখলাম আমার মতো আরো অনেক মানুষ বসে আছে ইন্টারভিউ দিতে।
আমি গিয়ে একটা চেয়ারে বসে পরলাম, এক এক করে সবাইকে ডাক দিলো, ১ ঘন্টা পর আমাকে ডাকলো...
ইন্টারভিউ দিয়ে অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে সোজা বাসাই চলে গেলাম, গিয়ে দেখি আম্মু খাবার নিয়ে টেবিলে বসে আছে, আমি গিয়ে সোজা চেয়ারে বসে পরলাম, তারপর আব্বুু বললো....
আব্বুঃ কেমন হয়েছে ইন্টারভিউ।
আমিঃ মোটামুটি ভালোই (নিচের দিকে তাকিয়ে খাচ্ছি)
আব্বুঃ এই পর্যন্ত কয়টা ইন্টারভিউ দিয়েছিস।
আমিঃ ৪০ টা।
আব্বুঃ মানুষ ৪০ টা দিয়ে পাশ করে, আর তুই তো পুরাই ফেল
আম্মুঃ আরে ছেলেটা এই মাত্র এসেছে, কিছু খেতে দেও।
আব্বুঃ হুম,
তারপর আরো কিছু কথা শুনিয়ে রুমে চলে গেলো। আম্মু বলতে লাগলো।
আম্মুঃ মন খারাপ করিস না, জানিস তো তোর আব্বু কেমন। রাগ টা একটু বেশী তাই।
আমিঃ আরে এসব নিয়ে মন খারাপ করবো কেন, ও তো আমার আব্বু অন্য কেও নাতো আবার।
আম্মুঃ হুম, খেয়ে নে এবার।
তারপর খেয়ে রুমে চলে আসলাম। এসে দেখি আরুফা অনেক গুলো কল দিয়েছে। তাই আমি কল ব্যাক করলাম, সাথে সাথে রিসিভ করলো, তারপর বলতে লাগলো.....
আরুফাঃ কোথায় ছিলে এতক্ষন, ফোন ধরছিলে না কেন? তোমার কিছু হয় নি তো।
আমিঃ আরে আবার কি হবে, আর এই মাত্র আসলাম ইন্টারভিউ দিয়ে, তাই ধরতে পারিনি।
আরুফাঃ ওহ, চাকরি হবে তো।
আমিঃ এখনো শিওর হয় নি, তারা ২ দিন পর জানাবে।
আরুফাঃ হুম তারাতারি দেখো, আর বাবা আমার বিয়ে দিতে লেগে গেছে।
আমিঃ কি বলছো এসব, এত তারাতারি তোমাকে বিয়ে দিবে।
আরুফাঃ জানিনা, তুমি একটু তারাতারি চেষ্টা করো, আমি তোমাকে ছাড়া কাওকে বিয়ে করতে পারবোনা।
আমিঃ চিন্তা করো না, আমি চেষ্টা করছি দেখি কি করা যাই।
এবাবে কিছুক্ষন কথা বলার পর ফোন রেখে দেই।
বিকালে বাসা থেকে বের হয়ে চলে গেলাম পার্কে, যখন মন খারাপ থাকে তখন এখানে এসে বসে থাকি, হঠাৎ আমার কাঁধে কে যেন হাত রাখলো, পিছনে তাকিয়ে দেখি আমার ছোট বেলার বন্ধু সাজিদ। আমি সাথে সাথে ওকে জরিয়ে ধরি, আর বলতে লাগলাম।
আমিঃ কিরে কেমন আছিস। আর এতদিন কোথায় ছিলি।
সাজিদঃ রংপুরে ছিলাম, এখন একটা চাকরি করছি।
আমিঃ ওহ, ভালো, আর বিয়ে করে ফেলেছিস নাকি?
সাজিদঃ হুম, ৬ হয়েছে বিয়ে করলাম।
আমিঃ আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেললি।
সাজিদঃ আরে রাগ করিস না, হঠাৎ করে বিয়ে হয়ে যাই তাই কাওকে জানাতে পারিনি। তুই বর্তমানে কি করছিস।
আমিঃ কি আর করবো, এখন বেকার বসে আছি, কোন চাকরি পাচ্ছি না।
সাজিদঃ ওহ।
আমিঃ বর্তমান যুগে চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন হয়েছে পরেছে।
সাজিদঃ হুম।
আমিঃ ভাবির নাম কি?
সাজিদঃ আনিসা।
আমিঃ ভালোই করলি আমাকে না জানিয়ে বিয়ে ?
সাজিদঃ আরে রাগ করিস না, শুধু তোকে কেন? আমার বাকি ফ্রেন্ডদেরও জানাতে পারিনি।
আমিঃ আচ্ছা, বিয়ে যখন খেতে পারিনি তখন তো ট্রিট ছাড়া এখান থেকে তোকে যেতে দিচ্ছি না।
সাজিদঃ আচ্ছা, চল হোটেলে তোকে ট্রিট দিবো
আমিঃ চল।
সাজিদঃ খায় খায় বাদ দিয়ে তারাতারি চল।
আমিঃ হুম।
তারপর হোটেলে চলে গেলাম সাজিদকে নিয়ে, একসাথে খেয়ে বেরিয়ে পরলাম বাসার উদ্দেশ্য, সাজিদ চলে গেলো তার বাসাই। বাসাই এসে খেয়াল করলাম পকেটে মোবাইল বাজছে। মোবাইল বের দেখলাম আরুফা ফোন দিয়েছে, তাই সাথে সাথে রিসিভ করলাম, তারপর বললাম....
আমিঃ হ্যাঁ বল
আরুফাঃ কোথায় ছিলে এতোক্ষন।
আমিঃ একটু ঘোরাঘুরি করে আসলাম বাইরে থেকে।
আরুফাঃ আচ্ছা,কি করো।
আমিঃ এইতো বসে আছি,তুমি কি করো।
আরুফাঃ আমিও সেম।
এভাবে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ফোনে রেখে দিলাম। তারপর দিলাম এক ঘুম।
আজ পাঁচ দিন হয়ে গেলো এখনো জানাইনি, মনে হয় এটাতেও ফেল হয়ে গেছি, কিছুক্ষন পর শুনতে পেলাম আব্বু চিল্লাচিল্লি করছে এসব ব্যাপার নিয়ে,
ঘুমিয়ে পরলাম, মোবাইলের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো, দেখলাম আরুফা কল দিয়েছে, তারপর ফোন রিসিভ করলাম....
আমিঃ হুম বলো।
আরুফাঃ কোথায় তুমি।
আমিঃ এইতো ঘুমিয়ে আছি।
আরুফাঃ আমার সাথে দেখা করতে পারবে।
আমিঃ কখন।
আরুফাঃ বিকাল পার্কে এসো।
আমিঃ হুম।
আরো কিছুক্ষন কথা বলে ফোন টা রেখে দিলাম। আরুফা কি বলবে সেটা আমি জানি, সে বলবে তার বিয়ের জন্য তার বাবা ছেলে দেখতেছে…..
আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারতেছিনা। একদিকে পরিবার অন্য দিকে ভালোবাসার মানুষ। বাবার চাকরিও শেষ পর্যায়ে, এরপর আমাদের সংসার চলবে কিভাবে, কিছুই বুঝতে পারতেছিনা। এখন আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা রাখতে হবে, একদিন একদিন আল্লাহ তায়ালা একটা পথ খুঁজে দিবে। বিছানা থেকে উঠে আম্মুর কাজে সাহায্য করতে লাগলাম।
বিকেলে পার্কে বসে আছি আরুফার জন্য, কিছুক্ষন পর আরুফা আসলো । এসেই বলতে লাগলো....
আরুফাঃ কেমন আছো।
আমিঃ কোন রকম আছি।
আরুফাঃ কেন কয়েকদিন আগে একটা ইন্টারভিউ দিয়েছিলে সেটার কি হলো।
আমিঃ সেটা হয়নি।
আরুফাঃ বাবা আমার জন্য ছেলে দেখা শুরু করে দিয়েছে, কি করবো বুঝতে পারতেছিনা।
আমিঃ আমি জানি তুমি এই বলতে এসেছো,
তারপর আরুফা যা বললো..........