Beporoya Valobasha
Mona Hossain { Part 12 }
দেখতে দেখতে পুরো বাড়ি মেহমানে ভরে গেল। পার্টি বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে কিন্তু যাকে ঘিরে এত আয়োজন তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। পার্টির কোথাও আদি নেই।
আদি বাইরে যাওয়ার সময় আদিবাকে বলেছিল যেন রুমের বাইরে না যায় কিন্তু আদিবা সেই হুকুম শোনে নি সে পুরোদমে নিজের কাজ করে যাচ্ছে...
বেশ কিছুক্ষন পরে আদি ফিরল। এসে আদিবাকে বাইরে ঘুরাঘুরি করতে দেখে ক্ষেপে গেল কিন্তু তেমন রিয়েক্ট করল না আদিবার কাছে গিয়ে আদিবার দিকে একটা দুধের বাচ্চা এগিয়ে দিল । আদিবা অবাক হলেও হাত বাড়িয়ে বাচ্চাটাকে কোলে নিল।
-"বাচ্চাটা কে ভাইয়া...?
-"আমার বন্ধুর ছেলে। সাবধান একবারো কোল থেকে নামাবি না...
আদিবা কথা বাড়াল না বাচ্চাটাকে কোলে নিয়েই টুকটাক কাজ করতে লাগল। কিন্তু বাচ্চা কোলে থাকায় সব কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না তবে ঘুরে ঘুরে সবার খোঁজ খবর নিচ্ছে।
এদিকে আদির বাবা মা আদিকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়াতে ব্যাস্ত। আদিও সানন্দে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে কিন্তু তার মনে খটকা লাগছে কারন পার্টিতে বেশিরভাগেই অল্প বয়সী মেয়ে ঘুরঘুর করছে। কেউ দূর সম্পর্কের ফুফুর মেয়ে কেউ খালার মেয়ে মোট কথা এখানে যেন মেয়েদের হাট বসেছে আর তারা আদির দিকে রহস্যময়ী চোখে তাকাচ্ছে।
আদি ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টায় অরিনের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করল,
-"কাহিনি কী বলতো...
অরিন চমকে পিছনে ঘুরে জবাব দিল,
-"কিসের কাহিনী..?
"এই মেয়েগুলো কারা..?
-" মা পরিচয় করিয়ে দেয়নি..?
-"দিয়েছে কিন্তু এদের এখানে আসার কারন কী..?
-"মা বাবা তোমার বিয়ে দিতে চায় তাই পাত্রী খোঁজছে...
-"তাই বল...আমিও সেটাই ভাবছিলাম যাইহোক আদিবা কোথায় রে..?
"একটা বাচ্চা কোলে নিয়ে ঘরের দিকে গেল দেখলাম। আসলে বহুবছর হয় আদিবা কোন গ্যাট টুগেদারে যায় না তাই হয়ত আনইজি লাগছে।
-" যায় না কেন..?
-"তাত জানি না তবে আদিবা লোকজনের ভীড়ে যেতে পছন্দ করে না ইনফেক্ট কারো বাসায় ঘুরতেও যায় না। অনেক আত্মীয় তো ওকে চিনেই না।
আদিত্য অরিনের সাথে কথা বলছিল তখনী একদল ছেলে এসে আদিকে ঘিরে ধরল আদি চোখ ঘুরাতেই আনন্দে দিশেহারা অবস্থা এটা তার ছোটবেলার বন্ধুদের দল।
আদি অরিনকে বিদায় দিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে গিয়ে সবার সাথে কোলাকুলি করল
"সবাই কেমন আছিস..কতদিন পর দেখা হল বলতো..
-" আমরা তো ভাল আছি তোর কি খবর আদি? সেই যে হারিয়ে গেলি...
-"আর বলিস না ছোট বেলার পাগলামি বুঝিসেই তো...
-"পাগলামি তো বুঝলাম কিন্তু এখন সব ঠিক আছে তো..? কোথায় সেই মহারানী..?
-"উফফ ফয়সাল থামবি তুই..? একটুও বদলাস নি।
-"তুই ও কিন্তু বদলাস নি। যাইহোক একবার ডাক না আদিবাকে কতবছর দেখি না।
-"চুল সা*লা একদম নজর দিবি না বলে দিলাম
বলেই হেসে উঠল সবাই। সময় বয়ে যেতে লাগল আদির বন্ধুরা আসায় সে পার্টিটা বেশ উপভোগ করছে।কিন্তু এদিকে বাচ্চার যন্ত্রনায় আদিবার নাজেহাল অবস্থা বাচ্চাটা কিছুক্ষন আগে থেকে কান্না শুরু করেছে কিছুতেই থামছে না আদিবা তাই বাধ্য হয়ে আদির কাছে গেল।
-"ভাইয়া একটু শোনবেন...??
আদি পিছন ঘুরে আদিবাকে দেখে সরু চোখে তাকাল।
-"কী ব্যাপার তোর কোল খালি কেন বাচ্চাটা কোথায় বেশ ধমক দিয়ে প্রশ্নটা করেছে আদি।
-"সাদিয়ার কোলে দিয়ে এসেছি...
-"কেন সাদিয়ার কোলে দিবি কেন? বলেছিলাম না তীর কোল থেকে একদম নামাবি না। এখনী গিয়ে কোলে এক মিনিট তো দূর এক সেকেন্ডের জন্যেও কোল থেকে নামাবি না...
-"বলছি ওর বাবা মা কী এখনো ফ্রি হয় নি..??
কথাটা বলার সাথে সাথেই আদি চোখ গরম করে আদিবার দিকে তাকাল এর কারনটা আদিবা না বুঝলেও এটা বুঝতে পারল এত বছরেও আদির আচারনের কোন পরিবর্তন ঘটে নি সে আগের মতই হুটহাট আদিবার গায়ে হাত তুলতে পিছপা হবে না।
আদিবা অসহায় চোখে আদির দিকে তাকিয়ে রইল।
-"এভাবে তাকিয়ে আসিস কেন? আজ সারারাত বাচ্চাটা তোর কাছে থাকবে তাতে কোন আপত্তি আছে তোর..?
আদিবা উত্তর দিতে পারল না..
-"গুড এভাবে সবসময় চুপচাপ আমার কথা শুনবি তাহলে অযথা মা*র খেতে হবে না অন্যথায়....
আদিবা বুঝতে পারল কথা বাড়িয়ে লাভ নেই তাই ফিরে এসে বাচ্চাটাকে কোলে নিল কিন্তু বাচ্চার কান্না কিছুতেই থামছে না। আদিবা হেলেদুলে নানা রকম ভাবে বাচ্চাটাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।
-"এই মেয়ে বাচ্চাটাকে এভাবে কাঁদাচ্ছ কেন?
প্রশ্নটা শোনে আদিবা পিছন ঘুরে দেখল একজন ভদ্রমহিলা কথাটা বলেছেন।
-"বাচ্চাটার ক্ষুধা পেয়েছে বুঝতে পারছ না? আজকালকার মেয়েরা মা যে কেন হয় বুঝি না।
পাশ থেকে অন্য একজন বলে উঠল
-"আর বলবেন না ভাবী ফিগার খারাপ হয়ে যাবে বলে বাচ্চাকে না খায়িয়ে রাখে ভাবা যায়...? এই মেয়ে ঘরে গিয়ে বাবুটাকে একটু বু*** দুধ খাওয়াও যাও। মা হওয়ার তো যোগ্যতা নেই আবার বাচ্চা নিয়েছে।
আদিবা ওদের কথায় অবাক হল,
"আপনারা এসব কি বলছেন..?
-" একদম কথা বাড়াবে না যাও খায়িয়ে আসো বলছি...
মহিলাগুলোর কথা আদিবার বেশ খারাপ লাগল সে হনহন করে সোজা আদির কাছে চলে গেল...রাগী চোখে তাকিয়ে বলল,
-"বাচ্চাটাকে ধরুন...
-"কী বললি তুই...?
-"সবাই আমাকে কত খারাপ খারাপ কথা বলছে জানেন..?
-"কেন কে কী বলেছে..?
-"বলেছে আমি নাকি ওর মা..
-"সময়মত বিয়ে হলে এর মত কয়েকটা বাচ্চার মা হয়ে যেতি খারাপ কি বলেছে?
-"একদম বাজে কথা বলবেন না ওরা বলছে আমি নাকি ইচ্ছে করে বাচ্চাটাকে খেতে দিচ্ছি না।
-"তো দিচ্ছিস না কেন ঘরে গিয়ে খায়িয়ে আন..
-"আপনিও কী পা"গল হয়ে গেছেন? ও কি আমার বাচ্চা যে আমি দুধ খাওয়াতে পারব..?
কথাটা বলার সাথে আদি হা হা করে হেসে উঠল,
-"এভাবে হাসছেন কেন🥺
-"দুধ কী শুধু মায়ের কাছেই থাকে? কিনতে পাওয়া যায় না..? ইডিয়েট আমি বু*** দুধের কথা বলি নি ফ্রিজে দুধ আছে গরম করে খায়িয়ে আন...
আদির কথায় আদিবা লজ্জা পেল সত্যিই তী কিসব উল্টা পাল্টা কথা বলছে সে আদির সাথে আদিবা কথা ঘুরানোর জন্য তাড়াতাড়ি বলে উঠল
-"বাচ্চা কোলে নিয়ে আমি কি করে দুধ গরম করব..??
-"আমার কোলে দে আমি যাচ্ছি তোর সাথে...
-"আপনার যেতে হবে না আমি করে নিয়ে আসছি
বলে আদির কোলে বাচ্চাটা দিয়ে কোন মতে ছুটে পালিয়ে গেল আদিবা। আদির বেশ হাসি পেল হাসতে হাসতে বলল
-"তাড়াতাড়ি ফিরবি কিন্তু...
।
।
।
আদিবা দুধ নিয়ে ফিরে আসল। বাচ্চাটা হয়ত ফিডার খেয়ে অভ্যস্থ না তাই খাওয়াতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে আদি আদিবা দুজন মিলে খাওয়ানো ট্রাই করছিল তখন একজন এগিয়ে এসে বলল,
-"আদি তুই বউ বাচ্চা নিয়ে ফিরেছিস কই তোর মা তো বলল না..?
মহিলার কথায় আদিবা অবাক হলেও আদি মোটেও বিচলিত হল না।
-"যাক তবুও ভাল বিদেশিনী নিয়ে আসিস নি। তা বউয়ের বাসা কোথায়?
আদি উত্তর দেওয়ার বদলে মুচকি মুচকি হাসছে দেখে আদিবার গা জ্বলে গেল নিজেই উত্তর দিতে বাধ্য হল,
-"খালা আপনার ভুল হচ্ছে আমি আদিবা..অনেক বছর দেখা হয় না তাই হয়ত ভুলে গেছেন আমি ভাইয়ার বউ না।
কথাটা বলতেই আদির মেজাজ খারাপ হয়ে গেল...ইচ্ছে করল কষিয়ে একটা থাপ্পড় লাগাতে আদিবার গালে, কিন্তু বাচ্চার জন্য দেওয়া হল না।
-"তুই আদিবা হায় আল্লাহ কত বড় হয়ে গেছিস আমি ত চিনতেই পারি নি। আসলে আদি অন্য কারোর বাচ্চাকে কোলে করে খাওয়াবে আমি ভাবতেই পারিনি তাছাড়া তোর শাড়ি সব মিলে মনে হচ্ছে যেন যুগলবন্দী যাইহোক তোর বাচ্চা বুঝি..?
Related Story
-"খালা আমার বিয়ে হয়....
কথাটা শেষ করার আগেই আদি হ্যাচাকা টানে আদিবা নিয়ে হাঁটা শুরু করল,
-"ভাইয়া কি করছেন খালা কি ভাবল...?
আদির কানে কথা ঢুকল না সে দ্রুতবেগে হেঁটে যাচ্ছে..
-"ভাইয়া থামুন বাচ্চাটা পড়ে যাবে..
আদি বাসার পিছন দিকে গিয়ে থামল,
-'তোকে এত পকর পকর করতে বারণ করেছিলাম না..?
-"মানে..?কি বলতে চাইছেন খালা ভুল বুঝছিল আর আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকব..?
আদি কোন উত্তর না দিয়ে আদিবার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিল। আদিবা ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করেও পেরে উঠল না কারন তার কোলে বাচ্চা সেই সুযোগে বেশ অনেক্ষন পর আদি তাকে ছাড়ল।
ছাড়া পাওয়ার সাথে সাথে আদিবা ঠোঁট মুছতে মুছতে বলল
-"ক ক কী করলেন এটা...?
-"পকর পকর করার শাস্তি দিলাম..এরপরেও যদি পকর পকর করিস তাহলে কি হবে বুঝতেই পারছিস.
-"এসবের মানে কী ভাইয়া..? আজ আপনার পাত্রী খোঁজার জন্য পার্টি দেওয়া হয়েছে এখন যদি আমাকে আপনার বউ ভাবে তাহলে আপনার বিয়ে হবে কী করে..?
-"আর আমি এই বাচ্চাটাকে এতিমখানা থেকে নিয়ে এসেছি আর শাড়িটাও ইচ্ছে করেই কিনে এনেছি যাতে সবাই ভাবে তুই বিবাহিত...
-"ম ম মানে কী...??
-"মানেটা তোর গোবর ভরা মাথায় ঢুকবে না তাই চুপচাপ ঘরে যা বাচ্চাটা ঘুমিয়ে গিয়েছে আমার রুমে শুয়িয়ে নিজেও শুয়ে থাকবি একদম বের হবি না...
আপু এতো লেট করে কেনো দেন?😵😵😵এতো ওয়েট করে করে কি পড়লে ভালো লাগে বলেন??
aktu wait koren apu. porer gula taratari deoyar try korbo
Next part kobe asbe…??🙄😑
khub taratari dibo apu. next part gula fast deoyar try korbo
মোনা হোসাইন এর লেখা বেপরোয়া ভালোবাসা গল্পের ১২ এর পরের পার্ট গুলো চাই, এটা কি লেখা বন্ধ করে দিয়েছে মোনা হোসাইন আপি? একটা কাহিনী যখন পাঠক পাঠিকা পড়া শুরু করে তখন, সেটার প্রতি অত্যন্ত কৌতুহলী হয়ে উঠে শেষ টা জানার জন্য, তাই কোন গল্প যদি মাঝখানে এসে হটাৎ বন্ধ করে দেয়, এতে পাঠক পাঠিকা হতাস হয়ে যায়, মোনা হোসাইন নতুন গল্প লিখছে পুরান গল্প অসম্পূর্ণ রেখেই, যা মোটেও প্রত্যাসিত নয়,
apu aktu somoy lagse likhte . golpo bondho hobe na cholbe .
13 number part link ata – https://www.golperjogot.com/beporoya-valobasha-romantic-premer-golpo-part-13
Mona hossain is the best of all