Golperjogot

Golperjogot

বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ১৩ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

Beporoya Valobasha

Mona Hossain { Part 13 }

হুট করে ঘুম ভেঙে গেল আদিবার। কেমন যেন অস্বস্তিবোধ হচ্ছে, মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। হটাৎ ঘুম ভেঙে গেলে যেমন হয়। তবে শুধু শুধু ঘুম ভাঙেনি,ঘুমের মধ্যে আদিবার মনে হলো কেউ যেন তার পরনের শাড়ির ভাঁজ খুলছে, পেটের দিকে দুটি হাত বিচরন করছে। হাত দুটো ক্রমশো পেট থেকে উপড়ের দিকে উঠছে। আদিবা হুট করে কিছু বুঝে উঠতে পারল না কারন চোখ থেকে এখনো ঘুম বিদায় নেয় নি।পরক্ষনে পেটের একপাশে ক্ষীন ব্যাথায় সমস্ত ঘুম উবে গেল। আদিবা তাড়াতাড়ি উঠতে চাইল কিন্তু পারল না তার উপড় ভারি কিছু চেপে আছে। আদিবা এমনিতেই বিষ্ময়ের মধ্যে ছিল তারমধ্যে তাকে আরাও অবাক করে দিয়ে পেটের ডানপাশটাতে কেউ স্বজরে কামড় বসিয়ে দিলো৷ আদিবা এবার ভয়ে চিৎকার করতে নিল। কিন্তু তার আগেই মুখটা চেপে ধরে এক জোড়া চোখ তার দিকে তাকিয়ে কড়া গলায় বলল,

-“একদম ন্যাকামি করবি না।

-“আ আ আদি ভাইয়া আ আ আপনি..?

-“অন্য কেউ হলে খুশি হতি..?

-“কথা ঘুরাবেন না,কি করলেন এটা..?

-“না বুঝার মত কিছু করেছি?

আদিত্যের অদ্ভুত কান্ডে অবাক হয়েছে। আদিবা কিছুক্ষন আগেই বাচ্চাটাকে ঘরে নিয়ে এসে শুয়িয়ে দিয়ে বাচ্চার পাশে নিজেও শুয়ে ছিল। কখন যে চোখ লেগে গেছে বুঝতে পারে নি হটাৎ কারোর অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শে ঘুম ভেঙেছে।

অনুগল্প

-“এসব কী ধরনের অসভ্যতা? যখন তখন গায়ে হাত দেন কেন?

-“ভাল লাগে তাই..

-“ভাল লাগে মানে কী..?

-“ভাল লাগার আলাদা কোন মানে হয় নাকি..?

-“লজ্জা বলতে কিছু নেই আপনার.? এসেছেন থেকে অসভ্যতা করে চলেছেন। আমরা আর ছোট নেই আপনি কী বুঝেন না?

-“আমি যতদূর জানি এসব শুধু প্রাপ্তবয়স্করাই করতে পারে ছোট বাচ্চারা করে জানতাম না তো..

-“লজ্জা করছে না আপনার? শেষবারের মত সাবধান করে দিচ্ছি যখন তখন গায়ে হাত দিবেন না।

-“এখন তাহলে দিনক্ষন ঠিক করে গায়ে হাত দিতে হবে? আচ্ছা প্রতিদিন রাতে দিব ঠিক আছে..?

-“আপনি কিন্তু সীমা পেরিয়ে যাচ্ছেন।

-“তোর সাবধান বানী তোর কাছেই রাখ। একটা কথা কান খুলে শোনে রাখ আমি তোর সাথে যা ইচ্ছে তাই করব তুই চাইলেও করব না চাইলেও করব।

-“আপনি কী ভুলে যান আমি আপনার বোন হই।

-“সরি সরি, কি হোস তুই আমার?

-“এখন কী সেটাও অস্বীকার করবেন?

-“অস্বীকার করছি না কিন্তু তুই হয়ত জানিস না আমি তোকে কোনদিনি বোনের চোখে দেখিনি দেখতে পারবও না।

-“পা*গলের হয়ে গেছেন আপনি।

-“আট বছর আগেই হয়েছিলাম যেদিন তোকে অন্য ছেলের সাথে দেখেছিলাম।

কথাটা বলতে বলতেই আদির মুখভঙ্গি বদলে গেল। চোখ দুটি যেন ভিতরের সব রাখ উগ্রে দিতে চাইছে আদি নিজেকে কন্ট্রোল করার প্রচেষ্টায় আদিবাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে বসল। আদিবা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে নিচু গলায় বলল,

-“ভাইয়া সেদিন…

আদিবা পুরো কথা শেষ করতে পারল না তার আগেই আদি তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,

-“শুনতে চাইনি, তোর প্রেমকাহিনি শোনার কোন ইচ্ছে আমার নেই।

-“আপনি ভুল…

-“বল্লাম না কোন কথা শুনতে চাইনি। উঠে কাপড় ঠিক কর বাচ্চাটাকে দিয়ে আসতে হবে।

-“আমাকেও যেতে হবে?

-“আদিবা আমাকে রাগাস না..

বলে বেরিয়ে গেল আদিত্য।-“আজব একটা মানুষ নিজে যা বুঝবে সেটাই ঠিক বাকি সব ভুল। একটা ছেলে এত বদমেজাজি কী করে হয়?

ভাবতে ভাবতে আদিবা শাড়ি ঠিক করতে নিল।কুচি ঠিক করতে যেই আয়নার সামনে দাঁড়াল পেটের দিকে কা**ড়ের দাগ জ্বলজ্বল করে উঠল।আদিবা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করল। আদি এসেছে পরে থেকে তাকে নানাভাবে হ্যারেস করে চলেছে এটা তারেও প্রমাণ৷ কোনভাবে দাগ ঢাকা গেল না তাই শাড়ি ছেড়ে জামা পরে নিল সাথে সাথে বাইরে থেকে আদির গলা ভেসে আসল

-” আদিবা তোর এখনো হয়নি..? একটা শাড়ি ঠিক করতে এতক্ষন লাগে?

আদিবা আবারও লম্বা নিঃশ্বাস ফেলল।বাচ্চাকোলে বেরিয়ে আসতেই আদিও উঠে হাঁটা দিল। এতরাতে দুজন মিলে বাইরে যাচ্ছে দেখে পার্টিতে আসা অনেকেরই ব্যাপারটা হজম হল না। সবাই অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে দেখে আদির মা এগিয়ে এসে প্রশ্ন করলেন

-“এতরাতে তোরা কোথায় যাচ্ছিস?

আদির সোজাসাপটা জবাব,-“আমি নিশ্চুই ছোটবাচ্চা নই মা, যে কোথায় যাচ্ছি তার কইফত দিয়ে যেতে হবে।

আদির কথার ধরন দেখে আদিবা তাড়াতাড়ি বলে উঠল,-” ভাইয়ার বন্ধুর বাচ্চাকে দিতে যাচ্ছি কাকিমনি। ভাইয়া বাচ্চা নিয়ে ড্রাইভ করবে কিভাবে তাই আমি যাচ্ছি এখনী চলে আসব।

আদি একবার আদিবার দিকে তাকাল কিন্তু কিছু বলল না। চুপচাপ হাঁটা দিল আদিবাও পিছন পিছন গেল। বাসা ভর্তি মেহমান ছিল তারমধ্যে একজন বলেই উঠল,

-“রেহানা তোমার ছেলের জন্য বউ খোঁজার কী দরকার? ছেলে তো নিজেই বউ পছন্দ করে নিয়েছে।

-“ভাবী কি বলছেন এসব? আদির সাথে আদিবার তেমন সম্পর্ক নেই।

-“চোখ থাকতেও যদি অন্ধ হয়ে থাকতে চাও তাহলে তো কিছু বলার নেই বোন।

কথাগুলোতে আদির মা বেশ অপমানিত বোধ করলেন এদিকে ঘড়ির কাঁটা ১২ এর ঘর পেরিয়েছে। আদিরা বাচ্চাটাকে এতিমখানায় দিয়ে ফিরে আসছিল হটাৎ মাঝরাতে গাড়ি থেমে গেল।আদিবা প্রশ্ন করল,

-“কী হল গাড়ি থামালেন কেন..?

-“গাড়ি থেকে নাম..

-“নামব মানে কী?

-“নামবি মানে আমি তোকে নিয়ে যাব না।

-“মাথা ঠিক আছে আপনার?

-“নামবি নাকি জোর করে নামাতে হবে

আদিবা যতদূর সম্ভব তর্কাতর্কি করল কিন্তু কাজ হল না আদি জোর করে রাতের নিস্তব্ধ রাস্তায় নামিয়ে দিল আদিবাকে।

-“আপনি আমার সাথে এমন করতে পারেন না ভাইয়া। বাসায় ফিরে সবার কাছে কি জবাব দিবেন?

-“আমার জবাব আমি দিব তোকে ভাবতে কে বলেছে?

-“আ আ আপনি সত্যিই আমাকে রেখে চলে যাবেন?

-“সন্দেহ আছে?

-“আমি অন্ধকার ভয় পাই আপনি জানেন তবুও।

-“নিয়ে যেতে পারি তবে একটা শর্ত আছে।

-“কী শর্ত?

-“প্রতিদিন রাতে আমার সাথে ঘুমাতে হবে..

-“আপনি…

-“থাক তাহলে সারারাত এখানে..বলে আদি গাড়ি স্টার্ট দিতে নিল

আদিবা ভেবে দেখল এখন বাসায় ফিরা সবচেয়ে বেশি জরুরী পরে কিছু একটা করতে হবে তাই তাড়াতাড়ি বলল,

-“আমি রাজি…

-“কথা দিচ্ছিস তো…?

-“দিচ্ছি দিচ্ছি নিয়ে চলুন প্লিজ।

-“ঠিক আছে…

Related Story

আদিবারা বাসায় ফিরতে ফিরতে ১ টা বেজে গেল ততক্ষনে মেহমান মোটামুটি বিদায় নিয়েছে। বাসায় ফিরে আদি নিজের ঘরে চলে গেল আদিবাও তার ঘরে গেল। কিছুক্ষন পর পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ হয়ে গেল সবাই মোটামুটি ঘুমিয়ে গিয়েছে। সারাদিন কাজ করে সবাই ক্লান্ত তবে আদিবার ঘুম পায় নি সে লাইট অফ করে শুয়েছিল হটাৎ চুলে টান পড়ল আদিবার বুঝতে বাকি রইল না কাজটা আদির। উঠে বসল,

-“কি বলবেন বলুন..

-“এক কথা কতবার বলতে হবে হ্যা..? তোকে বলেছিলাম না আমার সাথে ঘুমাতে।

-“আমি পারব না।

আদির মুট শক্ত হয়ে এল চুলে টান পড়েছে

-“আহ কি করছেন লাগছে তো…আরে আরে করছেন কী।

আদিবার কথায় কান দিল না আদি চুল ধরে টানতে টানতে নিজের ঘরে নিয়ে গেল।

-“একটা শব্দ করবি তো আমি তোকে মে**রে আবার নিরুদ্দেশ হব।

আদির কথায় আদিবা কিছুটা ভয় পেল এই ছেলের মতিগতির কোন ঠিক নেই যখন যাখুশি করতে পারে। আদি আর কোন কিছু না বলে আদিবাকে আঁশটে পিঁশটে জড়িয়ে শুয়ে পড়ল।

-“অন্তত একটু সরে শোন প্লিজ আমি এভাবে ঘুমাতে পারি না।

-“বিয়ের পর কি করবি..? দেখা গেল তোর বর জড়িয়ে ধরা ছাড়া ঘুমাতে পারে না তখন..?

-“পরের টা পরে দেখা যাবে এখন ছাড়ুন

-“আদিবা সারাদিন অনেক দখন গিয়েছে ঘুমাব ডিস্টার্ব করিস না।

-“ভাইয়া আমাকে ছাড়ুন প্লিজ।

আদি এবার আদিবার আরও কাছে এসে ঘাড়ের চুল সরিয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল। আদিবার সারা শরীর কেঁপে উঠল।

-“ক ক ক কী করছেন।

আদির পক্ষ থেকে উত্তর আসল না সে আদিবার মাঝে ডুব দিয়েছে অনেক আগেই।

-“ভ ভ ভাইয়া আমার কেমন যেন লাগছে.. এমন করবেন না ছা ছা ছাড়ুন….

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

6 thoughts on “বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ১৩ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন”

  1. মোনা হোসাইন আপি বেপরোয়া ভালোবাসার পাঠক পাঠিকারা অধৈর্য হয়ে থাকে তোমার গল্পের জন্য আমার ফেসবুক গ্রুপে গল্পটার লিংক দিচ্ছি, ওয়েব সাইড থেকে পড়াটা একটু সমস্যা হলেও ওরা সব কিছু উপেক্ষা করে তোমার গল্পের জন্য গল্পের জগতে ছুটে আসছে😄 আর আমি নেক্সট পার্ট চাওয়া কমেন্টের স্তুপে চাপা পরে বেদিশা😄, গল্পটা আসলেই অসাধারন, অনেক অনেক অভিনন্দন আর ভালোবাসা, ১৪ পার্টের অপেক্ষা দির্ঘ করোনা প্লিজ🌺🌺

    Reply
  2. বেপরোয়া ভালোবাসা গল্পের ১৪ নাম্বার পার্ট কবে দেয়া হবে?

    Reply
  3. বেপরোয়া ভালোবাসা গল্পের ১৪ নাম্বার পার্ট কবে দেয়া হবে? এখানে গল্প রেগুলার কেনো দেয়া হয়না? এভাবে কি গল্প পড়তে ভালো লাগে?

    Reply
    • amader team er pokkho theke amra akant vabe dhukkito. apu beporoya valobasha bade baki golpo gula regular asea . amader writer mona hossain aktu somoy niye lekhe . porer part taratari dibo.

      Reply

Leave a Comment