Golperjogot

Golperjogot

beporoya valobasha romantic premer golpo part 18

বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ১৮ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

আদি নিচে বলে এসেছে আদিবাকে হাসপাতালে পাঠাবে কিন্তু এখন তা না করে আদিবার সাথে এত ভাল করে কথা বলার কারন টা আদিবার মাথায় ঢুকল না। আদিবা উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।তাকে চুপ থাকতে দেখে আদি আবার প্রশ্ন করল

-“কিরে উত্তর দিছিস না কেন? কি করে বাসায় ফিরলি বল…

আদি কথা বলছে আর প্যান্টের নিচের দিকে ভাঁজ করতে করতে উপড়ে তুলছে। আদিবা এবারেও উত্তর দিল না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।কিন্তু আদি প্যান্টের ভাঁজ একটু উপড়ে তুলতেই আদিবা আঁতকে উঠল। আদির পা থেকে রক্ত পড়ছে। আদিবা তাড়াতাড়ি দৌড়ে এসে আদির পায়ের কাছে বসে আমতা আমতা করে প্রশ্ন করল,

-“ভ ভ ভাইয়া …?

আদি হয়ত বুঝতে পেরেছে আদিবা রক্ত দেখে ভয় পেয়েছে কিন্তু সে আদিবার অবস্থাকে গুরুত্ব না দিয়ে সহসা জবাব দিল,
“” বেন্ডেজ টা করে দে তো আদিবা, করার মত এনার্জি পাচ্ছি না।

আদি কথাটা এত স্বাভাবিকভাবে বলল যেন কিছুই হয় নি। অথচ হাঁটুর নিচে দগদগে ক্ষত। এখনো রক্ত ঝড়ছে মনে হচ্ছে। এই অবস্থাতেও এত শান্ত থাকা যায়.?আদি কথাটা বলেই বিছানায় গা এলিয়ে দিল। পা ২টি বাইরের দিকে ঝুলিছে ।এবার হাঁটুর নিচে দগদগে ক্ষত টা আরও স্পষ্ট হয়ে ভেসে উঠছে। পুরো জায়গা টা রক্তে লাল হয়ে আছে দেখে চোখ কপালে উঠে গেল আদিবার । এত টা ব্যাথা পেলে সে হয়ত এতক্ষনে হাসপাতালে থাকত আদি কি করে সহ্য করছে তার মাথায় ঢুকছে না। কেন যেন আদিবার খুব কান্না পাচ্ছে। যদিও কান্নাটা করার কথা আদির কিন্তু সে শান্ত হয়ে শুয়ে আছে উল্টে আদিবা কান্না জুড়েছে। আদিবা কান্না চাপার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না সে নিজেকে ধরে রাখতে পারছে না হাওমাও করে কাঁদছে।

আদিবার কান্নার শব্দ শুনে আদি পুরো বোকা বনে গেল কারন সে আদিবার কান্নার কারন বুঝতে পারছে না তাই তাড়াতাড়ি উঠে বসল। তীক্ষ্ণ চোখে আদিবার দিকে তাকিয়ে বলল,

“” সমস্যা কি? কান্না জুরেছিস কেন? আমি ত তোকে মারি নি এমনকি বকাও দেই নি…তাহলে কাঁদছিস কেন?

আদিবা উত্তর দিল না সে একমনে কেঁদে চলেছে।

পড়ুন  ভিলেন – রোমান্টিক লাভস্টোরি পর্ব ১ | Villain Bangla Story

-“আরে যন্ত্রনা বলবি তো কি হয়েছে কাঁদছিস কেন?

-“ভ ভ ভাইয়া

-“আগে কান্না থামা তারপর বল কি হয়েছে..

-“এ্যা এ্যা…

-“কান্না থামাতে বললাম না?

“” ভাইয়া এতটা কি করে কাটল?

চোখ মুছতে মুছতে প্রশ্ন করল আদিবা।

“” ঢং করিস আমার সাথে? জানিস না কিভাবে কেটেছে?

-“আমার জন্যই এত কিছু হয়েছে তাই না…?

-“এনেছিলাম বেন্ডেজ টা করে দিতে তা না করে ঢং শুরু করেছিস? চোখের সামনে থেকে দূর হ ইডিয়েট লাগবে না তোর বেন্ডেজ করা।

“” এটা বাসায় বেন্ডেজ করার মত ব্যাথা? এখনি হাসপাতালে চলো।

“”” আমাকে ত পাগলা কুকুরে কামড়েছে হাসপাতালে যাব. বক্স টা দে বলে আদি নিজেই বেন্ডেজ করতে শুরু করল আদিবা বসে বসে দেখছে আর কাঁদছে।

“” আজব তো ইডিয়েটের মত আর কত কাঁদবি? এবার তো পানি শুন্যতা দেখা দিবে চুপ কর।

-“আপনি কি পাথায় দিয়ে তৈরি? আপনার ব্যাথা লাগছে না?

-“না লাগছে না, আমার কিসে ব্যাথা লাগে সেটা যদি তুই বুঝতি তাহলে তো কাজেই হত।যাই হোক জীবনে ত কোন কাজ করতে পারলি না এখন যা বাইরে গিয়ে খাবারের ব্যবস্থা কর। শরীর ভাল লাগছে না ঘুমাব

আদিবা আর কিছু বলল না চুপচাপ বাইরে এসেই খাবারের জোগার করতে লাগল। আদির মা দেখছেন কিন্তু কিছু বলতে পারছেন না কারন আদি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সে এখানে থাকবে না এখন কিছু বললে হয়ত এখনী চলে যাবে।

আদিবা খাবার নিয়ে ঘরে গিয়ে দেখল ঘর ফাঁকা আদি সেখানে নেই…

-“ভাইয়া ভাইয়া….

আদিবা দুবার ডাকতে আদি ওয়াশ রুম থেকে জবাব দিল।

-“শাওয়ার নিচ্ছি, একটু অপেক্ষা কর,আসছি।

আদিবা টেবিলে খাবার রেখে বিছানায় বসল। কিছুক্ষনের মধ্যেই আদি আসল। খালি গা পরনে হালকা ব্রাউন কালারের থ্রী কোয়ার্টার গলায় ঝুলছে সাদা টাওয়াল। কপালের উপড় ছড়িয়ে থাকা এলোমেলো চুল থেকে টুপটাপ পানি ঝরছে।

আদিবা নিজের অজান্তেই হা হয়ে তাকিয়ে আছে আদির দিকে।আদি ব্যাপারটা বুঝেও আদিবাকে বিব্রত করার জন্য বলল,

-“হা করে কি দেখছিস
? বড় ভাইকে দেখতে লজ্জা করে না?

আদিবা এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করল কারন সে লজ্জা পেয়েছে ভিষন রকমের লজ্জা।মুখটা ইতিমধ্যে লাল হয়ে গেছে আদিবার অবস্থা দেখে আদির খুব হাসি পেল সে উচ্চস্বরেই হেসে ফেলল।আদিবা এবার এদিক ওদিক না থাকিয়ে এক দৌড়ে সোজা নিজের ঘরে চলে গেল।



রাত বাড়ছে কিন্তু আজ ঘুমকে কিছুতেই বসে আনতে পারছে না আদিবা। বার বার আদির জন্য দুচিন্তা হচ্ছে।

পড়ুন  ভিলেন পর্ব 67 - থ্রিলার প্রেমের গল্প | Romantic Love Story

-“ভাইয়া কী ঘুমিয়েছে? ওর পায়ে ব্যাথা করছে না তো..?একবার কী গিয়ে দেখে আসব?

যেই ভাবনা সেই কাজ আদিবা উঠে বসল কিন্তু চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখল রুম পুরো অন্ধকার!
বিদ্যুৎ নেই তাই কোথাও কোন আলোর রেখা নেই কিন্তু তাতে কী আদিবার এখন আদির কাছে যেতে ইচ্ছে করছে. অন্ধকারে হাতরে হাতরে গিয়ে দাঁড়াল আদির ঘরের সামনে আর দরজাটা শব্দহীনভাবেই খুলার চেষ্টা করলো। পা টিপে টিপে ঘরে ঢুকল।

আদি মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে আছে। গভীর ঘুমে আছন্ন সত্যিই কি উনি ঘুমাচ্ছে নাকি শরীর বেশি খারাপ লাগছে? জ্বর আসে নি তো ? আদিবার ইচ্ছে হলো একবার ছুঁয়ে পরখ করতে। আদিকে এমন নিতর হয়ে পড়ে থাকতে দেখে আদিবার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। সুস্থ্য অবস্থায় তো সারাদিন আদিবাকে শাস্তি দিয়েই কুল পায়না তবুও আদিবার খারাপ লাগছে।

-“আচ্ছা আপনার শাস্তির ঝুড়ি কি কোনোদিন শেষ হবেনা? এ কেমন ভালবাসা?

আদিবা দীর্ঘনিশ্বাস নিয়ে উল্টো ঘুরে হাটা ধরতেই আদি খপ করে আদিবার হাত ধরল অন্ধকারে হটাৎ এমন কান্ডে ভয়ে চমকে উঠল আদিবা চিৎকার দিতে চেয়েছিল কিন্তু সে সুযোগ পায় নি তার আগেই আদি তাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়েছে।
এটা আদি বুঝতে পেরে দেহে প্রাণ পেল। আদির বুকে মুখ গুঁজে নিজেকে সামলাতে চাইল সাথে সাথে আদি বলে উঠল,

-“দুদিনেই অভ্যস্থ হয়ে গেলি?

আদিবা প্রেশ্নের মানেটা বুঝল না তাই মুখ তুলে প্রশ্ন করল,

-“মানে…?

এবার আদিও উঠে বসল,
-“মানে দুদিন আমার সাথে ঘুমিয়েই অভ্যস্থ হয়ে গেছিস তাই নিজেই ছুটেই এসেছিস। এতটাই অভ্যস্থ হয়েছিস যে একটা ছেলে গায়ে হাত দিলেও অস্বস্তি হয় না কি সুন্দর বুকের উপড় শুয়ে থাকতে পারিস।

-“আপনি এসব কি বলছেন?

-“যা সত্যি তাই তো বলছি।

আদিবার এখন কী উত্তর দেয়া উচিত সে জানেনা। আদি কী তাকে অপমান করছে কিনা সেটাও বুঝতে পারছে না শুধু জানে এই পরিস্থিতিটা তার খারাপ লাগছে। আমতা আমতা করে জবাব দিল

-“আপনি ভুল বুঝছেন আপনার শরীর খারাপ তাই দেখতে এসেছিলাম।

-“আদিবা তুই কী জানিস তুই আমার প্রেমে পড়ে যাচ্ছিস?

“আ আ আপনি এসব কী বলছেন?

আদি আবারও শান্ত গলায় জবাব দিল,

পড়ুন  ভিলেন পর্ব 83 - প্রেমের গল্প | Romantic Premer Golpo

-” এই ভুল টা করিস না…নিজেকে সামলা।এভাবে নিজেকে বিলিয়ে দিস না। আমি ছেলে মানুষ মেয়েদের সাথে ফুর্তি করতে আমার ইচ্ছে হতেই পারে কিন্তু তোকে সেটা মানায় না..



চলবে…!!!

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top