Golperjogot

Golperjogot

বেপরোয়া ভালোবাসা পর্ব 3 | Bangla Romantic Premer Golpo

বেপরোয়া ভালোবাসা পর্ব 3 | Bangla Romantic Premer Golpo

Beporoya Valobasha

Mona Hossain { Part 3 }


" আমি আর ভাইয়ার স্কুলে পড়ব না কাকীমা। মাত্র কদিন তো হয়েছে স্কুলে ভর্তি হয়েছি এখন চাইলে সহজেই স্কুল বদলানো যাবে তুমি বড় চাচাকে বলে আমাকে আপুদের স্কুলে ভর্তি করে দাও প্লিজ।

আদরের মাকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলল আদিবা। আদরের মা মিনা বেগম জানেন আদর এটা সহজে মেনে নিবে না। কিন্তু আদিবার ভয় পাওয়ারো যুক্তি আছে। সামান্য একটা বিষয়ে আদিবাকে এভাবে বাথরুমে আটকে রাখা একদমি উচিত হয় না আদরের। মিনা বেগম আদিবাকে সান্তনা দিয়ে বললেন তোর চাচা বাসায় আসুক আমি কথা বলব কেমন..?

দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। আদরের বাবা আহমেদ সাহেব বাসায় ফিরেছেন কিন্তু আদর সেই যে দুপুরে বেরিয়েছিল এখনো ফিরে নি।বাসায় ফিরে আদরের ব্যাপারে সব শোনে খুব রেগে গেলেন আহমেদ সাহেব আদরের ফিরার অপেক্ষা করতে লাগলেন।

সন্ধ্যা পেরিয়েছে বাসার সবাই ড্রয়িং রুমে বসে ছিল
তখন হাতে কাগজে মোড়ানো একটা প্যাকেট নিয়ে বাসায় ঢুকল আদর।আদরকে দেখেই আহমেদ সাহেব এগিয়ে গেলেন,

আর কোন কিছু না বলে আদরের গালে ঠাস করে থাপ্পর বসিয়ে দিয়ে বললেন,
-"তোর সাহস কি করে হলো এমন একটা কাজ করার..? সবার আদর পেয়ে সাপের পিছপা দেখেছিস তাই না?

আদর কিছু বলল না মাথা নিচু করে নিল।আদরের চোখমুখ অসম্ভব লাল হয়ে আছে। আদর যখন খুব রেগে যায় তার ফর্সা মুখে রাগের লাল আভা ছড়ায়।এটা নতুন কিছু না।

আদর মাথা নিচু রেখেই আদিবার দিকে এগিয়ে আসল। অজানা আতঙ্কে কিছুটা সরে গেল আদিবা।

আদর এগিয়ে এসে আদিবার হাতে একটা প্যাকেট দিয়ে বলল,
-"আমি এই ব্যাপারে কিছুই জানতাম না আদিবা। তাই ব্লাড দেখে ভেবেছিলাম তুই ব্যাথা পেয়েছিস।

আহমেদ সাহেব আবারো চেঁচিয়ে উঠলেন,
-"ন্যাকামি বন্ধ কর ও ব্যাথা পেলে তোর কী? ও ব্যাথা পাক না পাক তুই ওকে শাস্তি দেয়ার কে..?
-"বাবা আমি....
-"আর কোন কথা শুনতে চাই না। এখনী আদিবার কাছে ক্ষমা চা...

আদর চোখ গরম করে আদিবার দিকে তাকাল। ক্ষমা চাওয়ার মত কাজ আদর কখনই করবে না সে ব্যাপারে সবাই নিশ্চিত কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে আদর বলে উঠল,

-"ক্ষমা করে দে আদিবা আর এমন হবে না...

আদরের মুখে ভুল স্বীকারমূলক উক্তি শোনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করল না আদিবার। সেকি ঠিক শুনেছে..? আদর যত ভুলেই করোক না কেন কখনো তা স্বীকার করে না আজ হটাৎ সব নিয়ম ভেঙে গেল..??

বড় চাচার কথায় আদিবার হুঁশ ফিরল, আহমেদ সাহেব কড়া গলায় বললেন,

-"যাইহোক আদিবা আর তোমার স্কুলে যাচ্ছে না তাই এবার থেকে ওর পিছনে লাগা বাদ দিয়ে নিজের পড়াশোনায় মন দাও। কদিন পরেই তোমার মাধ্যমিক পরীক্ষা।

আদর অবাক হয়ে বলল,

-"ও স্কুলে যাবে না মানে??
-"মানে ও এখন থেকে অরিনের স্কুলে যাবে।আমি কাল গিয়ে ওকে ভর্তি করে দিয়ে আসব।
-"কিন্তু কেন?
-"আমি চাই না আদিবা তোমার সাথে থাকুক।
-"আদিবাও কি তাই চায়?
-"হ্যা চায় তোমার মত ইডিয়েটের আশেপাশে কেইবা থাকতে চাইবে..?

আদর আর কিছু না বলে নিজের ঘরের দিকে হাঁটা দিল।আদিবাও নিজের ঘরে ফিরল তারপর কাগজের প্যাকেট টা খুলল, কাগজের ভিতরে এক প্যাকেট প্যাড কিছু চকলেট আর এক টুকরো কাগজ ছিল। কাগজের টুকরো টা হাতে নিয়ে আদিবা পড়তে শুরু করল।

-"মানছি আমি ভুল করেছি কিন্তু তুই ও কাজ টা ঠিক করিস নি আদিবা। আমি যখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম কিভাবে ব্যাথা পেয়েছিস? তখন আমাকে সব খুলে বললি না কেন? তুই জানিস তুই ব্যাথা পেলে আমার খারাপ লাগে তাই তোকে আগলে রাখতে চাই এটাই কী আমার দোষ..?
তুই কেন আমার সাথে সংকোচ ছাড়া কথা বলতে পারিস না? আমি কি বাইরের কেউ যে মন খুলে কিছু বলা যাবে না? তাছাড়া আমি মেয়ে না হলেও একজন মানুষ তাই কোন না কোন সময় এই ব্যাপারটা জানতেই পারতাম আর এটাই স্বাভাবিক।

পড়ুন  Heart Touching Short Story in Bangla 2021 - Valobasha

হয়ত আজ থেকে দশবছর পর বা তারো পরে সেটা তোর থেকে নাহোক বা অন্য কারো কাছ থেকে জানতে হতই তাই না..? তাহলে এখন বললে কী অসুবিধে ছিল?

যদি আমার খুব ভুল নাহয় আমার মত তুইও জানিস তোর আর আমার বিয়ে শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।আমার বাবা মা থেকে শুরু করে তোর মা সবাই চান আমাদের বিয়ে দিতে। যার মানে হল তুই সারাজীবন আমার সাথেই থাকবি। তাই আমার ক্ষেত্রে ভয়,লজ্জা এই ব্যাপারগুলো বাদ দিয়ে দে। তুই আমার সাথে যত ফ্রী হতে পারবি ততই ভুল কম করবি। ভুল না করলে শাস্তি পেতে হবে না। শাস্তি না পেলে আমাকে ভয় পেতে হবে না। আমি চাই না তুই সারাজীবন আমাকে ভয় পা।

আদিবা কাগজ টা পড়ে সাথে সাথে গুছিয়ে রেখে দিল। পৃথিবীর সবাইও যদি আদরের সাথে তার বিয়ে দিতে চায় তবুও সে এই বিয়েতে রাজি না। এই বিয়ে কিছুতেই হতে পারে না। আদরের মত রাগী ছেলের সাথে সারাজীবন থাকা অসম্ভব। আদিবা পড়াশোনা শেষ করে নিজের মত থাকতে চায় আদরের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে চায়।

যাইহোক ভবিষ্যতে কি হবে সে নিয়ে এখন না ভাবলেও চলবে আপাতত আদরের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত কারন তার জন্য আজ আদরকে তার জন্য থাপ্পর খেতে হয়েছে।

আদিবা ভয়ে ভয়ে আদরের ঘরে এগিয়ে গিয়ে বলল,
-"আদর ভাইয়া আসব..?

আদর দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-"আয়....

আদিবা এগিয়ে গিয়ে আদরে সামনে দাঁড়াল।আদর মুখ তুলে বলল,

-"শুনলাম তুই নাকি স্কুল বদলাতে চাইছিস...
-"না মানে ভাইয়া আমার জন্য তোমাকে অনেক বেগ পেতে হয় তো তাই ভাবছিলাম...
-"স্কুল বদলাবি ভাল কথা কিন্তু স্কুলে যাওয়ার জন্য হাত পা আস্ত থাকবে তো..?
- " ম ম মানে?
- "আমি কি বুঝাতে চেয়েছি তুই বুঝেছিস।
-"কিন্তু আপুদের স্কুলে পড়লে কি অসুবিধে ভাইয়া?

-"আমার তো কোন অসুবিধে নেই তুই সারাজীবনের জন্য হাঁটাচলার ক্ষমতা হারাবি তাতে আমার অসুবিধে কিসের যা অসুবিধে সেটা তো তোর।

আমি বিছানায় বসে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে কাচুমাচু মুখ করে বল্লাম,
- ভাইয়া আমি তো বলে দিয়েছি আমি আপুর স্কুলে ভর্তি হতে চাই এখন বড় চাচাকে কি বলে নিষেধ করব?

-" কিভাবে নিষেধ করবি সেটা তুই জানিস।তালবাহানা শুনার মত সময় আমার নেই।
আজকের রাত টা তোর কাছে সময় আছে হয় বাবার সিধান্ত বদলানোর ব্যবস্থা কর অন্যথায় সকালের জন্য প্রস্তুত হ...জানিস ত আমার কথার নড়চর হয় না। পা ভাংগব বলেছি মানে ভাংগবই

- ভাইয়া...

-আমার ঘরে কোন মেয়ের এতক্ষন থাকার অনুমতি নেই এখন যা এখান থেকে আমি শাওয়ার নিব।

কিভাবে কি করব বুঝতে পারছি না তবুও বাহানা বের করার চেষ্টায় লেগে পড়লাম কারন এছাড়া কোন উপায় নেই। আমি বিছানা ছেড়ে দরজার কাছে যেতেই ভাইয়া আবার আমায় ডাকল।

আমি পিছনে তাকিয়ে সাথে সাথেই আবার চোখ সরিয়ে নিলাম,কারন ভাইয়া শার্টের বোতাম খুলছে।

আমি লজ্জা পেয়েছি দেখে ভাইয়া বোতাম লাগাতে লাগাতে আমার কাছে এসে দাঁড়িয়ে দাঁত কটমট করে বলল,

-"বলেছি না লজ্জা বাদ দিতে... যাইহোক,আচ্ছা আদিবা তুই আমার নামে নালিশ করার সাহস কোথায় পেলি?
প্রশ্নটা শুনেই গলা শুকিয়ে গেল আদিবার। কি উত্তর দিবে এখন?
-'ভাইয়া আমি নালিশ করি নি...

-" নালিশ করেছিস কি করিস নি সেটা তোর কাছেই রাখ একটা কথা কান খুলে শোনে নে আজকের জন্য ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু যদি স্কুলের ব্যাপার টা ফয়সালা করতে না পারিস ওই শাস্তির সাথে এই শাস্তিটাও যোগ করে নিব বুঝেছিস?

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ২৩ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

ভাইয়ার কথার উত্তর দিতে পারলাম না চুপচাপ বেরিয়ে আসলাম। সকালেই চাচা আমাকে নতুন স্কুলে নিয়ে যাবেন যা করার আজকেই করতে হবে কিন্তু কিভাবে কি করব বুঝতে পারছি না এই বাসায় থাকলে কিছুদিনের মধ্যে আমি পাগল হব এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

অনেক ভেবে সিধান্ত নিলাম কাকীমনিকে বলব তাই নিচে গিয়ে সবার জন্য চা বানিয়ে নিয়ে সবার ঘরে ঘরে দিয়ে এসে এক কাপ চা নিয়ে কাকিমার ঘরে গেলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে আবার থমকে গেলাম কারন আদর ভাইয়া কাকিমনির ঘরে।

বিছানায় মায়ের কোলে মাথা রেখে পায়ের উপড় পা তুলে গেম খেলেছে সে। কাকিমা তার মাথায় হাত বুলাচ্ছে। ভাইয়া যতই ভুল করোক না কেন সে এই বাসায় সবার নয়নের মনি তাই কাকিমা প্রথমে থাপ্পর দিলেও এখন হয়ত ছেলের রাগ ভাংগাচ্ছেন আমি রুমে ঢুকব নাকি ঢুকব না ভাবছি। দরজার সামনে আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কাকিমা
বলে উঠলেন,

-"আরে আদিবা বাইরে কেন ভিতরে আয়।

কাকিমার কথায় ভাইয়া ফোন থেকে চোখ সরিয়ে একনজর আমাকে দেখে নিয়ে আবার খেলায় মনযোগ দিল। কাকিমা ভাইয়ার মাথার নিচে বালিশ দিয়ে সরে বসে বললেন,

-হাতে কি চা নাকি?কে করেছে?

কাকিমার প্রশ্নের জবাবে বললাম
- আমি করেছিলাম কাকিমা...

কাকিমনি অবাক হলেন,
- তুই করেছিস? কিন্তু কেন?

আমি উত্তর দেয়ার আগেই আদর উত্তর দিল,
-খেয়ে দেয়ে কাজ না থাকলে মানুষ কত কিছুই করে পতুল খেলে,শাড়ি পরে, চা করে...

আহ আদর তুই আবার ওর পিছনে লাগছিস? এত কিছুর পরেও তোর শিক্ষা হয় না..?চা করেছে খারাপ কিছু তো করেনি তাই না?

-"সেটাই, ও যাই করে সব ভালই করে...
আদিবা আজ থেকে আমার রাতের দুধ টা তুই করে দিস তো।

আমি মাথা নাড়লাম সাথে সাথেই কাকিমা বলে উঠল
-"ও দিবে কেন ও কি এসব পারে নাকি?

-"চা করতে পারে দুধ পারবে না...??
-"কাকিমা আমি পারব। আমি করে দিব ভাইয়া।

ভাইয়া মুখ বাঁকিয়ে তাছিল্যের হাসি দিয়ে খেলায় মন দিল।আমি কাকিমার কাছে এগিয়ে গিয়ে বল্লাম

-"কাকিমা একটা কথা বলতে চেয়েছিলাম।
-"হ্যা বল কি বলবি...
-"আসলে আমি ভাইয়ার স্কুলেই থাকতে চাই।স্কুল বদলানোর দরকার নেই।
-"কী? কিন্তু কেন একটু আগেই তো বলছিলি তুই অরিনের স্কুলে ভর্তি হতে চাস।
- না মানে...

কাকিমা কি ভেবে যেন ভাইয়াকে বলল,
-আদর নিজের ঘরে যা তো আমি আদিবার সাথে
একটু কথা বলব।

অন্য সময় হলে এটা বলার জন্য ভাইয়া কাকিমাকে হাজার টা কথা শুনাতো রাগারাগি করত কিন্তু আজ কোন জবাব দিল না।ভাইয়া বেরিয়ে যাওয়ার পর কাকিমা আমাকে নিজের সামনে বসিয়ে দিলেন,

-"আদর তোকে নিষেধ করেছে তাইনা..?
এই ভুলটা করিস না আদিবা, তোর চাচা যখন স্কুল বদলাতে বলছেন সুযোগ টা হাতছাড়া করিস না। স্কুল বদলালে আদরের অত্যাচার থেকে মুক্তি পাবি।

সেটা আমার চেয়ে ভাল আর কে জানে? কিন্তু স্কুল বদলালে ভাইয়া আমাকে আরও বেশি শাস্তি দিবে সেটা আমি কি করে বলব? যার নুন খাই তারেই ছেলের দুর্নাম করব কিভাবে?( মনে মনে)

মিনা বেগমের কথায় আদিবা নীরব গলায় জবাব দিল,

-"এখন থেকে আমি নাহয় একা একা স্কুলে যাব। ভাইয়ার সাথে যাব না। ওর সাথে বেশি কথাও বলব না তাহলে হবে না?

-তুই বুঝতে পারছিস না আদিবা, আদর তোকে অনেক জ্বালাবে
-তবুও আমি স্কুল বদলাতে চাই না।
-তাহলে আমি আর কি বলব দেখ ভেবে দেখ আমি তোর চাচাকে বলে দেখি।
-ঠিক আছে বলে বেরিয়ে এলাম।

পড়ুন  ভিলেন - থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 49 | Romance Love Story

রাত ১০ টা সবাই টেবিলে খেতে বসেছি কিন্তু আদর নেই। বড় চাচা চিন্তিত গলায় বললেন,

-"আদর এখনো রাগ করে আছে..?

চাচা, ভাইয়ার জন্য চিন্তা করছেন বুঝেই কাকিমা বললেন,
-"আরে নাহ রাগ করে থাকবে কেন একটু আগেই তো আদিবার সাথে সব মিটমাট হয়ে গেল। তাই না আদিবা..??

আমি অগত্যা হ্যাসূচক মাথা নাড়লাম বড়চাচা আবার প্রশ্ন করলেন,

-"তাহলে খেতে আসল না কেন?
-"হয়ত পড়াশোনা করছে।আদিবা যা তো মা ভাইয়াকে ডেকে নিয়ে আয়।

কাকিমার আদেশে খারাপ লাগলেও চাচার দুচিন্তা বাড়াতে চাই না তাই উঠে ভাইয়ার রুমে গেলাম।

ঘরে ঢুকে দেখি ঘুটঘুটে অন্ধকার। অন্ধকার আমি বড়াবড়ই ভয় পাই তাই ভয়ে ভয়ে বললাম ভাইয়া তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছো...??

মৃদুগলায় জবাব দিল,
-"আমাকে এত জ্বালাস কেন আদিবা?

ওর কথায় কিছুটা ভয় পেলেও পরক্ষনে মনে পড়ল নিচে সবাই ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করছে তাই বললাম,

-"ভাইয়া খেতে চলো...
-"খাব না।
-"সবাই অপেক্ষা করছে।
-"বল্লাম তো আমার ক্ষিধে নেই।

-"চাচা কাকিমা তোমার জন্য চিন্তা করছেন।
তুমি না গেলে ভাববে আমার জন্য খাচ্ছ না।

-"ভাবার কি আছে? তোর কি মনে হয় আমার গায়ে হাত তুলার পরেও আমি হ্যাংলার মত খেতে বসে যাব।

-"ভাইয়া আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি প্লিজ রাগ করে থেকো না। চাচা তোমাকে কত ভালবাসেন তুমি কি সেটা জানো না?

-"ওরা আমায় নয় তোকে ভালবাসে...যাইহোক এখন তুই এখান থেকে যা।
-"নিচে গিয়ে কী জবাব দিব?
-"যা যা আমি বল্লাম তাই বলবি...
-"চাচা অনেক কষ্ট পাবেন...
-"তুই কী যাবি নাকি আমাকে উঠতে হবে...

আর কথা বাড়ালাম না চুপচাপ নিচে নামতে লাগলাম। ভাইয়া আমার জন্য না খেয়ে থাকবে এটা হতে পারে না। আবার চাচাকে যদি বলি ভাইয়া রেগে আছে তাহলে বড় চাচাও কষ্ট পাবেন। ভাবতে ভাবতে নিচে নেমে আসলাম।
আমি নিচে যেতেই বড় চাচা জিজ্ঞাসা করলেন,

-"আদর আসল না...??রাগ করে আছে তাই না? আমি আমার ছেলেকে চিনি না..?

তাড়াতাড়ি বললাম,
-"না চাচা, ভাইয়া রাগ করে নি ও ঘুমিয়ে পড়েছে।
-" না খেয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছে...??
-"চিন্তা করো না চাচা তোমাদের খাওয়ার পরে আমি ভাইয়ের ঘরে খাবার দিয়ে আসব। তখন ডেকে খেতে বলব।

আমার কথা শুনে কাকিমা হেসে বললেন,

-"সেই ভাল, আয় আগে তুই খেয়ে নে। খাওয়া শেষ করে আদরের খাবার দিয়ে আসবি কেমন?

আমি হ্যা সূঁচক মাথা নাড়ালাম।খাওয়া শেষ করে সবাই একে একে উঠে গেল কাকিমা ভাইয়ার খাবার গুছিয়ে দিয়ে আমাকে এসে বলল,

-আদিবা খাবার টা একটু দিয়ে আয় কেমন।তোর সাথে আমিও যেতাম কিন্তু আজকে সিরিয়ালের লাস্ট এপিসোড না দেখতে পারলে সব বৃথা তুই তো সিরিয়াল দেখিস না আর আদরকে তো চিনিস ওকে ঘুম থেকে তুলতে তুলতে আমার সিরিয়াল শেষ হয়ে যাবে।

বলেই কাকিমা টিভির রুমে চলে গেলেন। সেখানে আপু সাদিয়া সবাই আছে। সবাই মন দিয়ে সিরিয়াল দেখছে বড় চাচা ডায়বেটিস এর রোগী তাই খাবারের পর হাঁটতে বেরিয়েছেন।
এটাই এ বাড়ির নিয়ম রাতের খাবারের পর বাড়ি একেবারে সুনশান-নিস্তব্ধ হয়ে যায়।

আমি খাবার টা নিয়ে ভাইয়ার ঘরের দিকে যাচ্ছি আর ভাবছি আমার কপালে আজ কি লিখা আছে? ভাইয়া যে রেগে আছে খাবার তো খাবেই না উল্টে আমাকে হয়ত মারবে।

যাইহোক ভয়ে ভয়ে ঘরে গেলাম ভাইয়া চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে আমি খাবার টা সাইড টেবিলে রেখে ভাইয়াকে ডাকলাম।

-ভাইয়া শুনছো...?? খাবার নিয়ে এসেছি উঠো প্লিজ

পরবর্তী পর্বের জন্য সাইটি ফলো দিয়ে সাথে থাকুন।

Click Here For Next :চলবে

Writer :- Mona Hossain

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top