Golperjogot

Golperjogot

বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব 8 রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

(ইহা একটি কাল্পনিক গল্প এর সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। এর স্থান কাল চরিত্র সবি কাল্পনিক)

-” আদিবা এই আদিবা কোথায় তুই কখন থেকে ডাকছি কথা কানে যায় না…?

আদিবা কাপড় বের করে দিয়ে ১ মিনিটও হয়নি নিচে এসেছে এর মধ্যেই আদির গলা ভেসে আসল।
আদির ডাকের ভংগিতে বাসার সবাই মোটামুটি অবাক হয়েছে আদিবা একটু বেশিই হয়েছে…সে একবার কাকিমনির দিকে তাকিয়ে আর কিছু না ভেবে হাতে থাকা বাটি নিয়েই ছুটল আদির ঘরে..
হাফাতে হাফাতে বলল,

-“ভাইয়া ডাকছিলেন..?

-“ডাকছিলাম যে সেটা তো এতক্ষনে পুরো শহর জেনে গিয়েছে প্রশ্ন করার কী আছে..? নিজেকে কি ভাবিস তুই..?

-“একটুও বদলান নি। একদম আগের মতই আছেন…

-“তাতে কী? তুই তো বদলেছিস

-“মানে..?

-“মানে কী সুন্দর আমার মুখের উপড় কথা বলে যাচ্ছিস…একটুও বুক কাঁপছে না যাইহোক আমাকে আপনি করে বলা শুরু করলি কবে থেকে…

আদিবা উত্তর দিল না।

-” বরপক্ষ কখন আসবে..?

-“বাসায় আসবে না রাতে রিসোর্টে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে…

-“তাই নাকি..? যাইহোক ওয়াশরুমে কাপড়গুলো ধুয়ে দে…

-“এখনী দিতে হবে…না মানে আসলে বাসায় অনেক লোকজন রান্নাটা শেষ করে এসে দেই।

-“তোর সাহস হয় কী করে আমার মুখে মুখে কথা বলার…? এখন থেকে আমার যাবতীয় কাজ তুই করবি…

আদিবা কথা না বাড়িয়ে হাতের বাটিটা টেবিলে রেখে ওয়াশরুমের দিকে গেল। ওয়াশরুমে যেতে না যেতেই কাঁচ ভাংগার শব্দে কেঁপে উঠল আদিবা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আদির গলা শোনা গেল।

-“মা…মা কোথায় তুমি…

আদিত্য ডাকতেই বাসার সবাই এসে জরো হয়েছে তার ঘরে।

-“ক ক কী হয়েছে বাবা.??

-“কী হয়নি সেটা বলো…সামান্য কাপড় ধোতে বলেছি বলে আদিবা নুংরা বাটিটা আমার উপড়ে ছুড়ে ফেলেছে…

-“কী আদিবার এত সাহস..?

আদিবা আদির এমন মিথ্যার জন্য প্রস্তুত ছিল না সে যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।

-“মা বাসায় আজ থেকে কোন কাজের লোক থাকবে না সবকাজ আদিবা নিজের হাতে করবে এটা আমার সিধান্ত। আর এই সিধান্তের উপড়ে যারা কথা বলবে হয়,তারা এই বাসায় থাকবে অথবা আমি থাকব এবার তোমাদের ইচ্ছে…!!

আদিবা এতক্ষন ওয়াশরুম থেকে সব শুনছিল এবার বেরিয়ে আসল এসে নিজেও অবাক হল আদির সারা গায়ে মসলা ছড়িয়ে আছে অথচ সে বাটি টা টেবিলে রেখে গিয়েছিল।

আদিবা বাইরে আসতেই আদির মা এগিয়ে গিয়ে বিরক্ত মুখে বলল,
-“ছেলেটা বাসায় পা দিতে না দিতেই মাথাটা চিবিয়ে খাচ্ছিস..?

আদিবা মুখ কালো করে জবাব দিল,
-“এসব তুমি কি বলছো কাকিমনি..?

-“যা বলেছি সেটা না বুঝার মত মেয়ে তুই না। একটা কথা কান খুলে শোনে নে তোর জন্য আদির যদি কোন অসুবিধা হয় আমি কিন্তু মেনে নিব না, কিছুতেই না।

-“আ আ আমি….

-“আদিবার বাচ্চা…একটাও কথা বলবি তো তোর কপালে দুঃখ আছে।

বলে চেঁচিয়ে উঠল আদি..আদিবা চোখ উল্টে আদির দিকে তাকাল। আদিত্যের মা ভিষন বিরক্তি নিয়ে বলল,

-“এমন ভাব নিচ্ছিস যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানিস না?

আদিবা বুঝতে পারল এখানে কথা বলে কোন লাভ নেই তাই উত্তর না দিয়ে আবারো ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়াল।

আদির মা রাগ নিয়ে গিয়ে আদিবার মায়ের সামনে দাঁড়াল।

-“শাহানা লক্ষন ভাল দেখছি না তোমার মেয়েকে সামলাও আর কোন রকম ঝামেলা কিন্তু আমরা সহ্য করব না।

শাহানা বেগমের অসহায় জবাব,
-“ভাবি আদিবা হয়ত বুঝতে পারেনি। না বুঝে করে ফেলেছে।

-“হ্যা তোমার মেয়ে তো কোন দোষেই করে না সব দোষ আমার ছেলের…

-“আমি তা বলিনি ভাবী… আমি আদিবাকে বুঝিয়ে বলব ।এবারের মত ক্ষমা করে দাও.. আদি বাবা তুই শার্ট টা খুলে দে আমি ধোয়ে দিচ্ছি..

-“ছি ছি চাচীম্মা কিসব বলছো তোমার ধুতে হবে কেন? আর তুমি ক্ষমাই বা চাচ্ছ কেন? এখানে তোমাদের কারোর কোন দোষ নেই দোষ যে করেছে তাকেই বুঝতে দাও তোমার কাছে আমার একটাই চাওয়া আদিবার ব্যাপারে আগলা দরদ দেখিও না তাহলেই হবে। আমার সাথে ওর ঝামেলা আছে জানো তো আমাদের ঝামেলা আমাদেরকেই মিটাতে দাও প্লিজ তোমরা এখন যাও।


আদিবা ওয়াশরুমে বসে ছিল হুট করে সেখানে আদির আগমন ঘটল। আদিবা একরাশ বিরক্তি নিয়ে আদির দিয়ে তাকাল

-“কী হল…? সং এর মত তাকিয়ে আছিস কেন?

-“আমার নামে মিথ্যা বললেন কেন..?

-“ইচ্ছে হয়েছে তাই…

-“যখন যা ইচ্ছে হবে তাই করবেন? এখনো কী আগের মত ছোট আছেন?

-“তাহলে বলছিস বড়দের মত আচারন করা উচিত?

আদিবা উত্তর দেওয়ার সুযোগ পেল না তার আগেই আদি ওয়াশরুমের দরজা লক করে দিয়ে আদিবাকে আখড়ে ধরল আদিবা অবাক হল।

-“ক ক কী করছেন এসব..?

-“বড়দের মত আচারন বলেই আদি,আদিবার ঘাড়ে মুখ ডুবাল।

আদিবা এই অপমান টা নিতে পারল না কোন মতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ঠাস করে আদির গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিল।

তাতে আদি কোন রকম রিয়েক্ট না করল না চুপচাপ গাল মুছে শাওয়ারের নিচে গিয়ে দাঁড়াল তারপর শার্ট খুলতে খুলতে আদিবার দিকে তাকাল। আদিবা ফুঁপাচ্ছিল আদির হাব ভাব তার মোটেও ভাল লাগল না তাই দরজা খোলার চেষ্টা করল কিন্তু তা সম্ভব হল না আদি তার আগেই আবারো আদিবার দখলদারি নিয়ে নিল।

নিজের খুব কাছে টেনে নিল আদিবাকে।
শাওয়ারের জল ধারায় দুজনেই ভিজে একাকার অবস্থা। আদি আদিবার স্পর্শকাতর জায়গা গুলোতেও হাত দিতে পিছপা হয় নি আদিবা এবার কেঁদেই ফেলল।

আদি শান্ত ভাবে আদিবাকে ছেড়ে দিয়ে বলল,
-“কোন সমস্যা…?

-“লজ্জা করছে না নিজের বোনের সাথে এমন করতে?

-“নাহ তো.. তুই আমার প্রথম স্বপ্নদোষের কারন ছিলি তখন থেকেই আমি তোকে অন্যচোখে দেখি আর সত্যি বলতে আমার লজ্জা করে না।

-“আমি সবাইকে গিয়ে যদি এসব বলি কি হবে জানেন…

-“জানি…কিন্তু তুই জানিস না তুই আমার বিরুদ্ধে কিছু বললে আমি তোর সাথে রা/গ দেখাব আর বাসা ছেড়ে চলে যাওয়ার অভিনয় করব আর সেটা আমার বাবা মা মানবে না কারন বাবার বয়স হয়েছে এখন সংসারের হাল ধরার জন্য আমাকে দরকার যেকোন মুল্যে ওরা আমাকে আটকাবে আর সবটা দোষ হবে তোর…

-“ব্লে*ক*মে*ই*ল করছেন?

-” অনেকটাই তাই…

আদিবা চোখ মুছতে মুছতে বলল

-“আমি আর একমুহূর্ত এখানে থাকেব না এখনী গ্রামে চলে যাব…

-“চেষ্টা করে দেখতে পারিস কিন্তু সংসার চলবে কি করে.? তুই আমার কথামত না চললে সাদিয়ার পড়াশোনা থেকে শুরু করে চাচীম্মার চিকিৎসা সবি বন্ধ হয়ে যাবে…

-“ছিঃ এতটা নিচে নেমে গেছেন…

-“আমি সবসময় নিচেই ছিলাম।

-“আমার সাথে এমন কেন করছেন..?

-“কারন তুই আমার জীবন থেকে ৬ টা বছর কেড়ে নিয়েছিস…

-“আ আ আমি…

-“তুই সেদিন কি করেছিলি সেটা আর কেউ না জানলেও তুই জানিস আর আমিও জানি তাই এখন অস্বীকার করার অভিনয় করিস না।

-“সামান্য একটা কারনে আপনি এভাবে…

-“তোকে আমি ভালবাসতাম কিন্তু আমার বেপরোয়া ভালবাসার মূল্য তুই দিতে পারিস নি। তাই এখন এগুলো সহ্য করা ছাড়া আর উপায় নেই

1 thought on “বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব 8 রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন”

Leave a Comment