Valobashi Dujone
Imtihan Imran ( Part – 3 )
ফারিনকে বিরবির করতে দেখে সিজান জিজ্ঞেস করে,
” নিজে নিজে কী বিরবির করছিস? কিছু কি হয়েছে?
“কিছু না।
সিজানন কলেজ গেইট দিয়ে ঢুকতেই অনেক মেয়েরা এসে সিজানের সাথে হাই হ্যালো বলে কথা বলতে চাই। যেটা ফারিনের একদম সহ্য হচ্ছে না।সে রাগী চোখে ইমরানের দিকে তাকায়।
” আল্লাহ! আমার জামাইরে বাঁচাও। কাল নাগিনীরা ছোবল মারার জন্য তাকিয়ে আছে।
ফারিন,হুঠ করেই সিজানের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়। তা দেখে সিজান ফারিনের দিকে তাকায়।ভ্রু উঁচু করে ফারিনকে বলে,
” আমি কী ছোট বাচ্চা? এভাবে হাত ধরে আছিস কেন?
” তাহলে তুমি আমার হাত ধরো।
” তুই কী ছোট বাচ্চা, যে তোর হাত ধরবো?
” এতো কথা বলো কেনো? হয় তুমি আমার হাত ধরো,না হয় আমি তোমার হাত ধরি।যেকোনো একটা চুজ করো।
” বেশি ঢঙ করিস।
সিজান হাটা ধরলে,ফারিন দৌড়ে এসে সিজানের হাতে নিজের হাত রেখে এক মুচকি হাসি দেয়। সিজানও আর কিছু বলে না।
{ Valobashi Dujone Romantic Love Story Bangla }
আয়ান (সিজানের বন্ধু) এসে সিজানের সামনে দাঁড়ায়।
” মাম্মা…! তলে তলে এতোদূর। সবাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে একজন,আরেকজনের হাত ধরে হাটা হচ্ছে। ভালোবাসা দেখি একেবারে উতলিয়ে পড়ছে।
” কী করবো বল? যেভাবে মেয়েরা এরে ঘিরে ধরে, আমারে তো টেনশনে দিল যায় যায় অবস্থা হয়। ছাড়ার কোনো রিস্ক নিতে চাই না,তাই হাত ধরে রাখছি।
” শক্ত করে ধরে রাখ। ভুলেও হাত ছাড়িস না। নাহলে খাঁচার পাখি উড়াল দিবে।(হেসে)
” কী যে বলস না, পাখিকে কী সারাজীবন খাচাঁয় বন্দী করে রাখব নাকী? পোষ মানিয়ে আমার কাছেই রাখব।
” এই তোদের ঢঙের কথা বাদ দিয়ে,চল।ফাংশন শুরু হয়ে যাচ্ছে।
” হুম চল।
” ওই সিজান…
ফারিন তাকিয়ে দেখে নীলা,সিজানের বান্ধুবী।
” আইছে শাকচুন্নী টা আইছে। এখন আমার জামাইটার মাথা পুরাই খারাপ করে ফেলবে।
” বাহ! দোস্ত একদম ঝাক্কাস লাগছে তোকে। ক্রাশ না খেয়ে পারি না।
” ধন্যবাদ বান্ধুবী। (হেসে)
” দেখো দেখো কী পিরিত? কোনোদিন তো আমার সাথে হেসেও কথা বলেনা। শালার সিজাইন্না লুচু বেডা একটা।(মনে মনে)
” ফারিন তোকেও অনেক সুন্দর লাগছে।
” ধন্যবাদ।
” নীলা তোকেও আজ পরীর মতো লাগছে।(হেসে)
সিজানের কথা শুনে ফারিন সিজানের দিকে রেগে কটমট করে তাকায়।
” ওরে সিজাইন্না,ওরে সিজাইন্না। জীবনেও তো আমার একটু প্রশংসা করলি না।আর আজ এই শাকচুন্নীটাকে পরী বানিয়ে দিলি। তোর যদি আজকে খবর না করছি, আমার নামও ফারিন না। ( মনে মনে )
{ Romantic Love Story Bangla }
ফাংশনের শুরুতে প্রিন্সিপাল নবীনদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেয়।তারপর এক এক করে নাচ,কবিতা,অভিনয় বিভিন্ন অনুষ্টান শুরু হয়।
ফারিন,চেয়ারে বসে আছে। সিজানকে কোথাও দেখছে না।হয়তো গানের জন্য রিয়ের্সাল করছে।
……………………
দুপুরের দিকে ফারিনের সাথে সিজানের দেখা হয়।
” কিছু খেয়েছিস ফারিন?
” কেউ কী আছে আমার খোঁজ নেওয়ার?কারো কী কিছু যায় আসে,আমি না খেয়ে থাকলে?(অভিমানী কন্ঠে)
ফারিনের অভিমানী কন্ঠ বুঝতে একটুও সমস্যা হয়নি,সিজানের কাছে। সে মুচকি হাসি দেয়।
” আমি না কিছু খায়নি।চল কিছু খেয়ে আসি।
” তুমি খাও। আমি খাবো না।
” তুই না খেলে,আমিও খাবো না।
” আচ্ছা চলো।
সিজান হেসে ফারিনকে বলে,
” গুড গার্ল।
” আচ্ছা তুমি ক্যান্টিনে গিয়ে বসো, আমি একটু ওয়াশরুম থেকে আসি।
” ওকে তাড়াতাড়ি এসো।
Bangla Valobashar Golpo
সিজান অনেকক্ষন ক্যান্টিনে বসে আছে। কিন্তু ফারিনে এখনো আসছে না। সিজান চিন্তায় পড়ে যায়।এতোক্ষন কী করছে মেয়েটা? সিজান ক্যান্টিন থেকে উঠে ওয়াশরুমের দিকে যায়।
” প্লিজ রবিন ছাড়,ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।
” আমিও চাই খারাপ কিছু হোক।(হেসে ফারিনের শাড়ির আচঁল টেনে ধরে)
“আমি কিন্তু চিৎকার করবো।
” কর, এইসময় এইদিকে কেউ আসবে না। সবাই এখন লাঞ্চে ব্যস্ত হাহা।(শয়তানী হাসি হেসে)
এইকথা বলে রবিন,ফারিনের দিকে এগিয়ে আসে। ফারিন ভয়ে পিছাতে থাকে।ফারিন চিৎকার করছে। একসময় ফারিন দেওয়ালে আটকে যায়।রবিন লোভাতুর দৃষ্টিতে ফারিনের দিকে হাত বাড়াতেই, কেউ একজন রবিনের হাত শক্ত করে ধরে ফেলে।
রবিন পিছনে তাকাতেই দেখে সিজান হিংস্র চাহনী নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।যেকোনো সময় তার উপর আক্রমণ হতে পারে।
” কী করছিস এইসব রবিন? আজকে একটা আনন্দ অনুষ্টানের দিনে,তুই একটা মেয়ের সাথে খারাপ কাজ করতে চাইছিস?এক্ষুনি এই মুহুর্তে এখান থেকে পালিয়ে যা।
সিজানের কথা শুনে রবিন অবাক হয়ে যায়।সিজান তাকে কিছু না বলে,এমনি এমনি ছেড়ে দিচ্ছে।রবিন এইসব আর না ভেবে ওয়াশরুম থেকে এক দৌড়ে পালিয়ে যায়।
সিজান,ফারিনের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,
” নিশ্চয় অনেকদিন থেকে তোকে বিরক্ত করছে।আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করিস নি।
” আমি কখনো ভাবিনি।ও এমন কিছু করতে পারে।
” আচ্ছা ঠিকাছে বাদ দে চল যাই।
” হু।
সিজান,ফারিনের হাত ধরে ক্যান্টিন পর্যন্ত নিয়ে যায়।
তারপর অর্ডার নিয়ে খাবার খেয়ে নেয়।
Also Read Those Related Love Story
দুপুরের খাবারের বিরতির পর আবারও ফাংশন শুরু হয়।এক পর্যায়ে উপস্থাপিকা ঘোষণা দেয়।
” এখন আপনাদের মাঝে গান নিয়ে আসবেন, কলেজের সবচেয়ে সুন্দর, ডেশিং এবং সুমুধর কন্ঠস্বরের অধিকারী সিজান আহম্মেদ।
সিজান আহম্মেদের নাম শুনতেই সবাই হাততালি দিয়ে,সিটি বাজায়।মেয়েদের মুখে সিজান নামের ধ্বনিতে কলেজ মুখরিত হয়ে উঠে।ছেলেরাও তাতে যোগ দেয়।
সিজান হাসিমুখে স্টেজে উঠে।সিজানকে দেখে সবাই সমস্বরে বলে উঠে,
” সিজান! সিজান!
ফারিনের পাশে একটা মেয়ে বসেছিল।সে সিজানকে দেখে বলে উঠে,
” ওয়াও আমার ক্রাশকে যা লাগছে না। ফিদা হয়ে গেলাম। আই লাভ ইউ সো মাচ ক্রাশ। উম্মাহ।
মেয়েটা সিজানের দিকে ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দেয়।যা দেখে ফারিনের মেজাজ গরম হয়ে যায়।সে কয়েকটা কথা শুনানোর জন্য মেয়েটির দিকে ফিরে।কিন্তু কিছু একটা মনে করে,সে রাগী কন্ঠে বলে,
” এই মেয়ে এক থাপ্পড় দিবো তোমাকে। অন্যের জামাইকে এইসব বলতে লজ্জা করেনা তোমার?
কাকে কী বলছো হ্যাঁ? আর এইসব উম্মাহ টুম্মা দিতে লজ্জা করে না? আর একবার যদি আমার জামাইকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কিছু করতে দেখি, তোমার খবর আছে বলে দিলাম।
ফারিনের রাগী কন্ঠ শুনে মেয়েটা চুপসে যায়।
Also Read These Another Love Story
সিজান এবার হাতে গিটার নিয়ে,বাদ্যযন্ত্রের লোকদের ইশারায় কিছু বুঝিয়ে দিয়ে গান শুরু করে।
🌼 আমি তোমাকে আরো কাছে থেকে…
তুমি আমাকে আরো কাছে থেকে…
যদি জানতে চাও..?
তবে ভালোবাসা দেও,ভালোবাসা নেও
ভালোবাসা দেও,ভালোবাসা নেও।
🌼 নদী কেনো যায় সাগরের কাছে…?
চাতক কেনো বৃষ্টির আশায় থাকে…?
যদি বুঝতে চাও…?
আমি তোমার ঐ চোখে চোখ রেখে
তুমি আমার ঐ চোখে চোখ রেখে,
স্বপ্ন দেখে যায়…।
তবে ভালোবাসা দেও,ভালোবাসা নেও।
ভালোবাসা দেও,ভালোবাসা নেও।
সিজান নিজের হাত দিয়ে হাততালি দিয়ে বুঝিয়ে দেয়,সবাইও যেনো তার সাথে হাত তালি দেয়।
সবাই সিজানের গানের সাথে চেয়ার থেকে উঠে হাততালি দিচ্ছে,আর নিজেরা হেলেদুলে নাচছে।
সিজান, ফারিনের দিকে তাকিয়ে হাসি দেয়।ফারিনও হেসে উৎসাহ দেয়,কন্টিনিউ করার জন্য এবং ইশারা দিয়ে জানিয়ে দেয় অসাধারণ গান হচ্ছে।
🌼 কাছে এলে যাও, দূরে সরে..
কতোদিন রাখবে, আর একা করে…?
মনে টেনে নেও…
আমি তোমার ঐ হাতে হাত রেখে
তুমি আমার এই হাতে হাত রেখে,
এসো এগিয়ে..যায়।
তবে ভালোবাসা দেও,ভালোবাসা নেও।
গান শেষ হতেই সিটির আওয়াজে চারিদিক মুখোরিত হয়ে উঠে।সবাই হাততালি দিয়ে সিজানকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছে।
Click Here For Next Part- চলবে…
Writer- ইমতিহান ইমরান
Valobashi Dujone Romantic Love Story Part 3 |