Birthday Surprise
Asfi Jahan Iffti
"ওই নিতু দাড়া।
"কিরে আরিয়া, কি অবস্থা তোর?
"এইতো ভালো আছি। চল ক্লাসে।
"হুম চল যাই।
ক্লাসে......
নিতু: কিরে শাকচুন্নির দল কি খবর তোদের?
রিমু: আয় তোর ঘাড় মটকাতে বসে আছি ডাইনী।
আরিয়া: এই চুপ ম্যাম আসছে।
রিমু: ধ্যাত বিরক্ত লাগে ক্লাস করতে।(ফিসফিস করে)
নদী: তোর কি একা বিরক্ত লাগে, আমাদেরও তো লাগে।
নিতু: হুশ ফুস।
কিছুক্ষণ পর…
নিতু: এই আরিয়া কি পড়াচ্ছে রে?
আরিয়া: ইংরেজি ক্লাস তুই জানস নাহ?
নিতু : আরে কোথায় পড়াচ্ছে?
আরিয়া: আমিও জানি নাহ, দেখিস নাহ বইয়ের দিকে তাকাইয়া আছি, বইয়ের দিকে তাকাইয়া থাক।
নিতু: আচ্ছা।
কলেজ শেষে আরিয়া আর আরিয়ার বান্ধুবীরা বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ অনির্বাণ আসে তাদের কাছে।
নিতু: কিয়ো জিজু কি খবর?
অনির্বাণ: কি খবর আর। শালীদের ছাড়া কি ভালো থাকতে পারি।
নদী: আহা পাম কম মারেন পরে ফেটে যামু। নিজের বউ এর কথা বলতে লজ্জা পাইতাছে বলে আমাদেরকে দিয়ে সারাই দিতাছে।
অনির্বাণ: কিহ যে বলো? বিয়ে ই তো করি নাই আবার বউ।(লজ্জার অভিনয় করে)
আরিয়া এদের কথা শুনে যাচ্ছে আর হেটে যাচ্ছে।
অনির্বাণ গিয়ে আরিয়ার হাত ধরে।
নিতু: আরিয়া আমারা যাইরে। তুই প্রেম কর।(হেসে)
আরিয়া: যা ভাগ।
অনির্বাণ আরিয়ার হাতে একটা জামা দেয়।
আরিয়া: এটা কেনো?
অনির্বাণ: আজকে রাত দশটার সময় তুমি এই ড্রেসটা পরে রেডি থাকবে আমি তোমাকে নিয়ে যাবো এসে।
আরিয়া: কিন্তু কেনো?
অনির্বাণ: উহু এতো প্রশ্ন করো নাহ তো। আমার ইচ্ছা হয়েছে।
আরিয়া: আ....।
অনির্বাণ: আহ।(আরিয়ার ঠোঁটে হাত দিয়ে)
অনির্বাণ আরিয়াকে বাসায় নামিয়ে দেয়।
আরিয়া বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়।খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়ে। অনির্বাণ এর দেওয়া জামাটা খুলে দেখে।
নীল কালারের গ্রাউন। অনেক সুন্দর কাজ করা।
রাতে.....
আরিয়া পড়ছে। এমন সময় অনির্বাণ ফোন দিলো।
অনির্বাণ: আরিয়া, তুমি কি করছো?
আরিয়া: পড়তেছি।
অনির্বাণ: তোমাকে কি বলেছি মনে নেই?
আরিয়া: কি বলেছো?
অনির্বাণ: শোনো লক্ষী মেয়ের মতো রেডি হয়ে থাকো।ঢং করে।
আরিয়া: হু😒।
অনির্বাণ: হু হু কইরো নাহ। আর শোনো চুল ছেড়ে দিবে।
আরিয়া: হুহ।
আরিয়া রেডি হচ্ছে। জামাটা পরে ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক, চোখে কাজল দিল। মাথাটা সুন্দর করে আচড়ে নিল। চুল ছেড়ে দিলো। হাতে নীল চুড়ি পরলো।
নাহ খুব খারাপ লাগছে নাহ আরিয়াকে। ভালোই লাগছে।
আরিয়ার দরজায় নক পড়ে। আরিয়া দরজা খুললে অনির্বাণ ভিতরে ডুকে পড়ে।
অনির্বাণ: তুমি রেডি তো?
আরিয়া: তুমি কি কানা?
তখন অনির্বাণ আরিয়ার দিকে তাকায়।সে আরিয়ার থেকে চোখ সরাতেই পারছে নাহ। হালকা সাজে অপরুপ লাগছে আরিয়াকে। অনির্বাণ আস্তে আস্তে আরিয়ার কাছে যেতে থাকে। তা দেখে আরিয়া পিছাতে থাকে।
আরিয়া: আরে আরে কি কি করছো?
অনির্বাণ কোনো কথা নাহ বলে আরিয়ার কাছে গিয়ে, আরিয়ার কপালের চুলগুলো কানে গুজে দেয়। আরিয়া ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে। অনির্বাণ নিজের মুখ আরিয়ার কানের কাছে নিয়ে আসে এবং ফিসফিসিয়ে বলে ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি। অনির্বাণ আরিয়ার কপালে চুমু এঁকে দেয়
আরিয়ার লজ্জয় মুখ লাল হয়ে আছে।
অনির্বাণ: আহা লজ্জাবতী। এবার চলুন মহারাণী।
ওরা দুজনে রওনা দেয়।
আরিয়া: আচ্ছা, আমরা কোথায় যাচ্ছি?
অনির্বাণ: ওহ, এতো কথা বলো নাহ তো। গেলেই দেখতে পাবে।
আরিয়া: বললে কি হয়?
অনির্বাণ: উহু। বেশি কথা বলো নাহ।
আরিয়া: হুহ।
অনির্বাণ আরিয়াকে নিয়ে একটা বাংলো তে আসে।
আরিয়াকে নিয়ে সে ভিতরে ডুকে।
আরিয়া: এখানে কেনো?
অনির্বাণ: চুপ করে থাকো। তুমি এখানে একটু দাড়াও আমি আসছি।
আরিয়া: নাহ কোথাও যাবে না। এতো বড় অন্ধকার বাংলোতে আমি একা দাড়াতে পারবো নাহ।
"বেশি কথা বলো নাহ। যা বলছি তাই করো। ভয় পাবার কি আছে। যাবো আর আসবো।
"কিন্তু...
"কোনো কিন্তু নয়। যাচ্ছি।
অনির্বাণ চলে যায়। তখন সাড়ে এগারোটা বাজে। আরিয়ার খুব ভয় পাচ্ছে।
আরিয়া: ধুর। কোথায় যে গেলো।(মনে মনে)
আরো কিছুক্ষণ কেটে যায়। এবার আরিয়ার সত্যি সত্যি ভয় করতে থাকে। হাত পা কাঁপাকাপি শুরু হয়ে যায়।
আরিয়া: আজ আসুক শালা উগান্ডা। আমারে একা রাইখা হাওয়া হয়ে গেছে। তোর বারোটা বাজাবো আমি। রাত বারোটায় আমায় এখানে দাড় করে রাখানো।
হঠাৎ আরিয়ার চারপাশে আলো জ্বলে উঠে। আরিয়া ভয় পেয়ে যায়।পরে আরিয়ার সামনে একটা তারাবাজি জ্বলে উঠে এবং অনেকগুলো কন্ঠ হ্যাপি বার্থডে বলে উঠে। আরিয়া চমকে যায়। উৎসুক হয়ে উঠে। আরিয়া চারদিকে তাকিয়ে দেখে অনেকজন মানুষ বেরিয়ে আসছে। আর তারা যে আরিয়ার বন্ধু বান্ধব সেটা আরিয়া বুঝে গেছে। কিন্তু অনির্বাণকে দেখতে পাচ্ছে নাহ।
" বুলাবে তুঝে ইয়াজ আর মেরি গালিয়া।
বাস আয়ো তেরে সাং মেয়া লাগ দুনিয়া।
গানের কন্ঠ শুনে আরিয়া পিছনে তাকিয়ে অনির্বাণকে দেখতে পায়। অনির্বাণ হাঁটু গেড়ে তার দিকে একটা গিফট বক্স এগিয়ে দেয়। আরিয়া সেটা নিয়ে অনির্বাণকে জড়িয়ে ধরে।
Short Story
আরিয়া: আমি সত্যিই অনেক অবাক। অনেক খুশি। আমার বার্থডে কিন্তু আমার মনেই নেই।
নিতু: আরে পরে জড়াইয়া ধরিস আগে তো কেক কাট।
এই কথা শুনে আরিয়া অনির্বাণকে ছেড়ে দেয়।
সুজন: তুইও নাহ পারিস নিতু। রোমান্টিক মুহূর্ত টার বারোটা বাজাইয়া দিলি।
নিতু: বকিস নাহ তো তুই।রোমান্স পরে আগে খাওয়া।
রিমু: হয়েছে বন্ধ কর।
সুজন: তুই আজীবন খাওয়া খাওয়াই করলি।
নিতু: তোর সমস্যা?
নদী : আরে দুইটারে দুই থাপ্পড় দিমু খালি ঝগড়া।
অনির্বাণ: আচ্ছা চলো কেক কাটবে।
আরিয়া কেকে কাটে। সবাই হাতে তালি দিয়ে হ্যাপি বার্থডের গান গায়। প্রথমে অনির্বাণকে এবং পরে এক এক করে সবাইকে খাওয়াইয়া দেয়। সবাই আরিয়াকে গিফট দেয়া। অনির্বাণ এর বন্ধুরাও আসে। সবাই অনেক মজা করে।
অনির্বাণ: আচ্ছা আমি আরিয়াকে বাড়ি দিয়ে আসি তোরা যা।
সবাই: আচ্ছা।
যে যার বাড়ি চলে যায়। আরিয়কে অনির্বাণ বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আসে।
Writer :- Asfi Jahan Iffti