বন্ধু তোকে ভালোবাসি
Ifrat Jahan Mariyam
"এই মামুন.....মামুন..এই কালা কোথাকার শুনতে পাচ্ছিস নাহ.....( জামিল)
"চিল্লায়া তো কান জ্বালাফালা করে দিলি (মামুন)
"তো কি করবো বল ? তুই তো কানে তুলা দিয়ে ছিলি, সেই কখন থেকে ডাকতেছি। কালা কোথাকারা ( জামিল )
"এরকম বকবক না কইরা বল কেনো ডাকতেছিস? ( মামুন )
"চল না মামুন ঘুরে আসি কোথাও থেকে। অনেকদিন হলো তো কোথাও যাওয়া হয় নাহ ( জামিল )
"নাহ রে আমি এখন যেতে পারবো নাহ। (মামুন)
"তোর কেনো কথা আমি শুনবো নাহ, তুই ব্যাস যাবি আমার সাথে। তোকে কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হবে নাহ। ( জামিল )
"কিন্তু.....(মামুন)
"কোনো কিন্তু নাহ। আমরা শুক্রবার এ যাচ্ছি। আর কক্সবাজারে যাবো। (জামিল)
Emotional Bangla Golpo
কলেজ ক্যাম্পাসে..
সুজন: কিরে জামিল কি খবর?
জামিল: এইতো ভালো, তোদের কি খবর?
সুজন: আছি আরকি কোনোরকম। তা তোর বন্ধু মামুন কই?
জামিল: কি আর করবে বেটা তো সারাদিন পড়াশোনা নিয়েই থাকে।
রাকিব: আসলেই। ওর মায়ের কত স্বপ্ন ওকে নিয়ে। ওর মা ছাড়া তো ওর আর কেউ নাই।
জামিল: কে বলেছে কেউ নাই আল্লাহ আছে নাহ। আল্লাহ থাকলে আর কাউকে লাগে। আর আমি আছি কি করতে?
সুজন: তুই তো মহান হৃদয়ের লোক।
জামিল: হইছে চাপা মারা বন্ধ কর। দেখ কিতনা সুন্দর একটা মেয়ে।
রাকিব: তুই তো যাকেই দেখিস তাকেই তোর পছন্দ হয়। এই পর্যন্ত না হলেও কমসে কম ৫০, ৬০ টার উপর ক্রাশ খেলি। হা হা হা।
সুজন: কিন্তু একটার সাথেও প্রেম করতে পারলো নাহ। তার আগেই ছ্যাকা খেয়ে বাকা হয়ে যায়।
জামিল: আমি ছ্যাকা খেয়েই আর প্রেমে পড়েই প্রাণ জুড়াতে চাই।( বুকে হাত দিয়ে)
সুজন, রাকিব: হা হা হা।
জামিল : মা ও মা।
আমেনা বেগম(জামিলের মা): কিরে বাবা চিল্লাচ্ছিস কেনো?
জামিল: মা আমি শুক্রবার এ কক্সবাজার যেতে চাই। (মাকে জড়িয়ে ধরে)
আমেনা: তো যা।
জামিল : ইয়ে কিন্তু....
আমেনা : বুঝছি টাকা তাইতো?
সুজন: তোমাকে দেখি বলার আগেই বুঝে ফেলো। লক্ষী মা আমার।
আমেনা: হয়েছে আর এতো আদর দেখাতে হবে নাহ। আমি তোর বাবাকে বলে দিচ্ছি।
জামিক : আচ্ছা। আমার সোনা মা।(মায়ের গালে চুমু দিয়ে)
আমেনা: পাগল ছেলে।(হেসে)
শুক্রবার সকাল......
রিতু: ওই ভাইয়া উঠ উঠ নাহ তুই কক্সবাজার যাবি? উঠ।
মামুন: এইতো উঠছি।
রিতু: ভাইয়া তুই তো এতোক্ষণ ঘুমোস নাহ। আজকে দেখি এতোক্ষণ?
মামুন: বেশি কথা বলিস নাহ। মায়ের খেয়াল নিস ঠিকমতো মায়ের কিন্তু শরীল তেমন ভালো নাহ।
রিতু: তুই আর তা বলতে, হু।
মামুন: হয়েছে ডং রাইখা সামনে থেকে সর।
বাসে বসে আছে জামিল আর মামুন। জামিল জানালার পাশে আর মামুন তার পাশে বসে আছে। প্রকূতির অনাবিল সৌন্দর্য উপভোগ করছে জামিল। সকালের প্রকৃতিটা এমনিতেই সুন্দর। ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশ। গাছেরা যেনো পিছনের দিকে ছুটছে। মামুন, বই পড়ছে সে। মামুন বই পড়াতেই মগ্ন। কখন যে কক্সবাজার চলে এসেছে তার খেয়ালই নেই।
জামিল : এই মামুন চল নাম কক্সবাজার চলে এসেছে। (ধাক্কাতে ধাক্কাতে)
মামুন: এতো তাড়াতাড়ি কীভাবে?
জামিল : তোরে বলছে এতো তাড়াতাড়ি। পাক্কা তিন ঘন্টা লাগছে।
মামুন: ওহ।
জামিল : এইবার একটু চল।
জামিল মামুন সকালের নাস্তা করে নেয় হোটেল থেকে। তারা সমুদ্রের পাড়ে হাটতে লাগে।
জামিল : এখনো তো রুম ভাড়া নেওয়া হয় নাই রে।
মামুন: পরে নিতে পারবি।
জামিল : আচ্ছা। তোর কি ভালো লাগছে নাহ?
মামুন: ভালো লাগবে নাহ কেনো?
জামিল : তো তোকে এরকম দেখাচ্ছে কেনো?
মামুন: এমনিই।
তারা আরো অনেক্ষণ হাঁটার পর সুজনের একটা মেয়েকে দেখার পর চোখ আটকে যায়। জামিল মেয়েটিকে নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সে অস্ফুষ্ট স্বরে বলে উঠে।
জামিল : সমুদ্রপরী....
মামুন: কিছু বললি?
জামিল কিছু না বলে সমুদ্রের তীরে হাঁটা মেয়েটিকে হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে মামুনকে দেখিয়ে দেয়। মেয়েটির লম্বা লম্বা চুল হাটুর নিচ পর্যন্ত চলে গেছে। হালকা গোলাপী কালারের লং গাউন পরা। মুখখানা চাঁদের মতো। তার চুলগুলো উড়ছে মাঝে মাঝে মুখের উপর আছরে পড়ছে।
জামিল : দোস্ত আমার মেয়েটিকে খুব ভালো লেগেছেরে। ভালোবেসে ফেলেছি মেয়েটাকে। কিছু একটা কর দোস্ত।
মামুন: আমি তোর সাথে নেই। তুই এই পর্যন্ত অনেক মেয়েরই প্রেমে পড়ছোস রে ভাই।
জামিল : আরে শালা এটা ভালোবাসা। সত্যিই মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলেছি। নাহ পেলে মে মারজাওয়া।
মামুন: হইছে ডং রাখ।
জামিল : চল নাহ।
জামিল দৌড়ে দৌড়ে মেয়েটার প্রায় কাছে চলে যায়। মামুন তার পিছনে পিছনে আসে। জামিল মেয়েটার কাছে যেতেই অমনি পড়ে চিৎকার দিয়ে উঠে। মেয়েটা তাকিয়ে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাওয়ার অবস্থা। মামুন দৌড়ে আসে।
মামুন: এক্কেরি কাজের কাজ হইছপ। বেশি নাচোস তুই। (হাসতে হাসতে)
জামিল অগ্নিশর্মা চোখ নিয়ে মামুনের দিকে তাকায়। মেয়েটা হাসতে হাসতে চললে যেতে নেয়। জামিল হাত উচু করে বলে:
"এই পরী তোমার নাম কি?"
"মেয়েটা হেসে দিয়ে বলে ফারিহা।"(এক দৌড়ে চলে যায়)
এর মাঝে রিতু মামুন এর কাছে ফোন করে জানায় যে মামুন এর মা খুব অসুস্থ তাকে তাড়াতাড়ি চলে যেতে। মামুন জামিলকে বললে জামিল তাড়াতাড়ি করে গাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে যায়। তাদের যেতে যেতে দুই ঘন্টা লেগে যায়। রিতু ফোন করে জানায় সে মাকে গাসপাতালে নিয়ে গেছে। এরপর জামিল আর মামুন মিলে হাসপাতালে যায়। রিতু মামুনকে দেখেই জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।
রিতু: ভাইয়ারে মায়ের কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে।
মামুন: পাগলী কাদছিস কেনো কিচ্ছু হবে না মায়ের।
মামুন আর জামিল ডাক্তারের কাছে দৌড়ে যায়। ডাক্তার বললো পাঁচ লক্ষ টাকা লাগবে। মামুন এতো টাকার কথা শুনে ধপাস করে বসে পড়লো।
জামিল : আরে চিন্তা করছিস কেনো?
মামুন: আমার মায়ের কিছু হলে আমি বাঁচবো নাহ রে। (কেঁদে দিয়ে)
জামিল : কিচ্ছু হবে নাহ।
মামুন: আমি টাকা জোগাড় করতে যাই রে।
মামুন চলে যায়। অনেক্ষণ ঘোরাঘুরির পরে মামুন মাত্র এক লক্ষ টাকা জোগাড় করতে পেরেছে। মামুনের বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠে। সে হাসপাতালে ফিরে এসে নার্স কে বলে,
মামুন: আপনারা আমার মায়ের অপারপশন শুরু করুন নাহ। আমি পরে সব টাকা পরিশোধ করে দিবে। (বিনয়ের সুরে)
নার্স: চিন্তার কোনো কারণ নেই আপনার মা অপারেশন রুমে।
মামুন: মানে?
এসময় রিতু এসে মামুনকে জড়িয়ে ধরে।
রিতু: ভাইয়া জামিল ভাই না থাকলে যে কি হতো উনি সব টাকা দিয়েছেন।
মামুনের চোখে পানি চলে আসে। মামুন জামিলের কাছে গুয়ে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।
মামুন: দোস্ত তুই না থাকলে যে কি হতো। তোর ঋণ আমি কীভাবে শোধ করবো। সত্যিই তোর মতো বন্ধুকে পেয়ে আমি সৌভাগ্যবান। তোকে খুব ভালো বাসি বন্ধু।
জামিল : আমিও রে। আরে রাখ তোর ইমোশনাল কথা । আমারে তুর ওই মেয়েটারে খুঁজে দিতে হবে, হু।
মামুন হেসে দেয়। জামিল সস্তির চোখে মামুনের দিকে তাকায় যেনো সে এই হাসিটার অপেক্ষায় ছিলো।
Writer :- Ifrat Jahan Mariyam
hello sir can i make a video with this story
sir can i make a video with this story