Golperjogot

Golperjogot

চাচাতো বোন এর সাথে প্রেম – ইমোশনাল অনুগল্প | Short Story

রাস্তায় বসে আছি,এমন সময় মেঘার ফোন।
ফোন ধরতেই মেঘার কান্নার শব্দ ভেসে আসচ্ছে।কি বলবো কিছু বুজতে পারছি না, একাধারে মেঘা কান্না করেই যাচ্ছে।
আমি: মেঘা,প্লিজ কান্না করো নন,তুমি অনেক সুখেই থাকবে।

মেঘা: কুত্তা, হারামি,তুই আমারে যদি না নিয়ে পালিয়ে যাস,তো আমি আত্নহত্যা করবো।আমার মরা মুখ যেন তুই না দেখিস।

আমি: মেঘা,এই মেঘা,আমার কথা তো শুনবা নাকি?

মেঘা: কি শুনবো হ্যাঁ??ভালোবাসিস না তো স্বপ্ন দেখাইছিলি কেন?কেন ভালোবাসতে শিখাইছিলি,একাই তো ভালো ছিলাম,কেন এসেছিলি আমার জীবনে, কি দোষ আমার যার জন্য আমাকে ছেঁড়ে দিচ্ছিস?

আমি: মেঘা,শুনো তুমি বুঝতে চেষ্টা করো,তোমারা মা বাবা অনেক আশা নিয়ে এই বিয়েটা দিচ্ছে তুমি এমন কোন কাজ করো না যেন তোমার আব্বু আম্মু কষ্ট পায়,

মেঘা: আর ৫ মিনিট দেখবো,যদি না আসিস তো আমি নিজেকে শেষ করে দিব।মনে রাখিস,আর আমার মুখটাও দেখতে আসবি না বলে দিলাম।

আমি: এই এই মেঘা,শুনো।
যা কেঁটে দিলো ফোন,কেমন লাগে এখন আপনারাই বলেন।এতক্ষণ কি হলো বুঝলেন না তো।যার সাথে কথা বললাম সে হচ্ছে মেঘাতুল জান্নাত। সবাই মেঘা বলেই ডাকে।সম্পর্কে আমরা দুজন চাচাতো ভাই বোন,আমাদের ভালোবাসাটা এক অন্য রকম ভাবে শুরু হয়,আর আজকে মেঘার বিয়ে তাই মেঘা ফোন দিয়ে বলছিলো তাকে নিয়ে পালাতে।কিন্তু আমার হাত যে বাঁধা,আমি কি করে পারবো তাকে নিয়ে পালাতে।আমার যে সামনের পথ শেষ হয়ে রয়েছে।

সব বাঁধা অতিক্রম করে জীবনের একটা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি,আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলতে।আম্মুকে বলা মাত্র আম্মু কি বলবে কিছু বুঝতে না পেরে চলে যায় সেখান থেকে।কারণ একটা মেয়েকে বিয়ের আসর থেকে উঠিয়ে নিয়ে ভেগে যাওয়া কত্তটা মেয়ের বাবা মায়ের জন্য লজ্জা জনক,সেটা তারাই বুঝে,কিন্তু আমার তো কিছুই করার নেই।

মেঘা: এখন কই যাবো আমরা?পালিয়ে তো আসলাম,আমার কাছে সেরকম টাকাও নেই।

মেঘা: আমি আছি,আমার কাছে যা আছে,তা অনেক দিন চলে যাবে,তার মধ্যে তুমি একটা জব করবে তাই হবে।

আমি: মেঘা, আম্মু আব্বু চাচ্চু, চ্চাির দোয়া ছারা এটা কি কাজ হলো?
মেঘা: আমি জানি না,আর এইসব কথা শুনতে চাইনা প্লিজ।

কি হলো বুঝলেন না তো,হুমমম আমি আর মেঘা পালিয়ে াসচ্ছি,দুজন দুজনকে কাছে পেতে দুর অজানায় চলে এসেছি সবার থেকে।যদিও এখনও যেতে পারিনি,রাস্তার মধ্যে হাঁটতেছি রাতের অন্ধকারে,আমি যখন আম্মুকে বলি,আম্মু কিছু না বলে চলে গিয়ে আমার হাতে একটা ব্যাগ দিয়ে যায়,আর কিছুই বলে নি।তার পর আমি মেঘাকে ফোন করে নিচে আসতে বলি,তারপর দুজন দুজনার হাত ধরে দৌড়াচ্ছি,রাতের অন্ধকারে।জানি না যাবো কোথায়,আর উটবোই বা কোথায় এখন।

আমি: চলো ঢাকায় চলে যাই,সেখানে আমার একটা বন্ধু আছে, কিছু একটা করা যাবে।
মেঘা: আচ্ছা চলো,কিন্তু সমস্যা হবে না তো আবার?

আমি: আরে পাগলি কি সমস্যা হবে?অনেক ক্লোজ ফ্রেন্ড আমার,

তার পর মেঘাকে নিয়ে বাস স্টেশনে গিয়ে দুইটা সিট কেঁটে দুজনে উঠে পরি,জানি না এত্তক্ষণ বাড়ির কি অবস্থা হইছে,হয়তো বাড়িতে ঝড় বইছে,তাই ফোন দিলাম আম্মুকে।আম্মুকে ফোন দিতেই আম্মু যা বললো তা শুনে পায়ের রক্ত পায়ের উঠে গেছে।

ঢাকা না গিয়ে বাস থেকে নিয়ে মেঘার হাত ধরে টানতেটানতে নিয়ে যাচ্ছি বাড়ির দিকে।কি পাইছে কি চাচ্চু যা ইচ্ছে তাই করবে, আজ এর একটা বিহিত করেই ছারবো মনের ভিতর হাজারো কথা অনুধাবিত হচ্ছে,আর মেঘাকে হাত টানতে চানতে নিয়ে যাচ্ছি।

কি হইছে বুঝলেন না তো,আম্মু কি বললো এমন যার জন্য মেঘাকে নিয়ে পালিয়ে না গিয়ে আবার বাড়িতে চলে আসচ্ছি তাহলে শুনুন, আমি যখন মেঘাকে নিয়ে পালিয়ে আসি তার পর মেঘার আব্বু বাড়িতে ঝড় বইয়ে দেয়।আর যখন যানতে পারে মেঘা যার সাথে পালিয়েছে সে আমি,তখন চাচ্চু আব্বুর দিকে লাঠি নিয়ে তেড়ে আসে,আর মাথায় বাড়ি মারে,আব্বুকে নাকি হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

যাক না ভালোবাসা,তাতে কি হইছে,আমার কাছে আমার ভালোবাসার মানুষটির থেকে আমার বাবা মা আগে।তাই তো চলে আসচ্ছি সেই যায়গায়।বাড়িতে এসে মেঘাদের বাড়িতে ডুকেই মেঘাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে মেঘার আব্বুাে বলতে শুরু করি।।

আমি: মি.রফিক সাহেব, এই নিন আপনার মেয়ে,আপনার কাছে রেখে গেলাম,মরলে বা বাঁচলে আমার কিছু যায় আসে না,আর আমার আব্বুর মাথা ফাটিয়েছেন,এটাও দেখবো আমি,শুধু আব্বু হসপিটাল থেকে আসুক,

বলেই সেখান থেকে চলে আসি,মেঘা আমার দিকে এক পলকে তাকিয়ে রইছে,কথা বলার ভাষাই হারিয়ে ফেলছে হয়তো ামার এই রুপ দেখে।কিন্তু কিছুই করার নাই।যাদের কাছে আমাদের সম্মান নাই,তাদের সাথে আত্নীয় করা বোকামি ছারা কিছুই নয়,তাই তাদের মেয়েকে তাদের হাতেই তুলে দিয়েছি।

মেঘা: আব্বু তুমি ওকে থামাও প্লিজ,আমি ওরে ভালোবাসি,তুমি ওকে যেতে দিও নানা হলে আমি নিজেকে কিন্তু শেষ করে দিব।

বলা মাত্র আব্বু আমাকে থাপ্পড় মেরে চলে যায় সেখান থেকে,আম্মুর কাছে গিয়ে বলতে গেলে,আম্মুও চলে যায়,আজ কেও আমার কথা শুনছে না,সবাই পর হয়ে যাচ্ছে।সেখানেই বস বসে কান্না করতে থাকি,কখন যে বাহিরেই মাটিতে ঘুমিয়ে পরি খেয়ালই নেই,যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন দেখতে পাই আমি চার দেওয়ালের ভিতর। একটু বুঝার চেষ্টা করতেই বুঝতে পারলাম এটা হসপিটাল,কিন্তু আমি হসপিটালে কেন,কি এমন হইছিলো,মনে করতেই।কান্না চলে আসে।কি করবো আমি,আমি যে নিঃস্ব রাফসানকে ছারা,এটা কেন আম্মু আব্বু বুঝে না,কিছুক্ষণ পর আম্মু রুমে এসে আমাকে ধরে কান্না ধরে দেয়।

আম্মু: মেঘা,মা আমাদের ভুল হয়ে গেছে আমাদের ক্ষমা করে দে।

মেঘা: ছি : ছি: আম্মু তুমি এসব কি বলছো,তোমাদের ভুল হইছে মানে?

আম্মু : মা,আর রাগ করে থাকিস না প্লিজ,আমাদের বুঝতে চেষ্টা কর।রাফসান কোন চাকরি করে না,তোরে বিয়ে ারে খাওয়াবে কি পরাবে কি?আমাদের সামনে তুই কষ্টে থাকবি সেটা কি আমরা দেখতে চাই বল???

মেঘা: আম্মু, তুমি হয়তো জানো না রাফসান একটা জব করে,কিন্তু কেও জানে না,প্রতিদিনই যে রাফসান অনেক সময় করে বাড়ি থাকে না সে কোথায় যায় কি করে তোমরা কি তার খোঁজ নিছো?আর বড় কথা হলো সুখে থাকা,ভালোবাসা না থাকলে টাটা ওয়ালা বড় লোকের কাছেও সুখে থাকতে পারবো না,

আম্মু: মেঘা,তুই ভুলে যা রাফসানকে।

মেঘা: পারবো না,শেষ করে দিব নিজেকে,কেন এনেছিলে আমাতে এখানে?মরে গেলেই তো হতো।তোমাদের কথা শুনতে হতো না।(চিল্লিয়ে)
আমার চিল্লানি শুনে আশে পাশের বেডের সবাই আমার রুমের সামনে এসে ভিড় জমিয়েছে।তাই চুপ করে যাই।

আম্মু: সত্যি তুই সুখে থাকবি তো??

মেঘা: হুমমম,অনেক অনেক সুখে থাকবো।

আম্মু: আচ্ছা দারা দেখি।
তার পর আম্মু চলে যাওয়ার পর আমি একটু ঘুমিয়ে নেই।ঘুম থেকে উঠে দেখে আমি বাড়িতে শুইয়ে আছে,কিন্তু একি আমার রুম কেন ফুল দিয়ে সাজানো?কি হইছে এখানে,আর এমন ভাবে সাজানো মনে তো হচ্ছে এখানে কিছু হবে।

আমি কিচ্ছু বুজতে পারছি না,কি করবো ভেবে না পেয়ে আম্মুকে ডাক দেই।আম্মুকে ডাক দেওয়া মাত্র একটা ছেলে ভিতরে আসে।

মেঘা: রাফসান,তুমি এখানে?আর এই রকম রুম সাজানো হইছে কেন?

আমি: আমাদের বিয়ে হই গেছে তাই,তুমি এখানে,আর এরকম করে রুম সাজানো হইছে।

মেঘা: বিয়ে,?কিন্তু আমি তো কবুল বলিই নি,তাহলে কেমনে বিয়ে হলো?

আমি: তাহলে শুনো,তুমি যখন ঘুমিয়ে পরো,তোমাকে এমন এক ওষুধ দেওয়া হয় যাতে তুমি ঘুমের গোরে যা জিজ্ঞেস করা হবে তাই উত্তর দেও।তাররপর আমাদের বিয়ে পরানো হয়,আর তুমিও কবুল বলে দেও।

মেঘা: কিন্তু আমি তো তোমাকে বিয়ে করতে রাজি,তো এরকমটা করার মানে কি?

আমি: সারপ্রাইজড😁😁😁

মেঘা: তোর সারপ্রাইজডের গুষ্টি কিলাই।তোরে আমি স্বামী হিসেবে মানি না,আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তুই বিয়ে করছিস,এটা আমি মানবো না,তুই এখান থেকে চলে যা।

আমি: আমি চলে গেলে তো বাসর করবে কে?

মেঘা: 🥱🥱😒😒😒😒,তোর বাসরের গুষ্টি কিলাই।তুই আমাকে না বলে বিয়ে করলি কেন?

আমি: 😝😝😝বউ ও বউ চলো না লুডু খেলি

মেঘা: যাবি এখান থেকে?ভুলে যাইস না, আমি তোর চাচাতো বোন।

আমি: এখন থেকে বউ তুমি আমার।

তাররপর আর কি,চলে গেলাম সুখময় রাজ্য,আপনারা একটু দুরে যান,আমরা একটু লুডু খেলে নেই।

এভাবেই কেটে যায় দুইটি বছর,আজ আমাদের ঘর আলো করে আমাদের মেয়ে নেহা আসতে চলছে।খুব চিন্তা হচ্ছে কিছু হবে না তো আবার মেঘার,অনেক প্রতিক্ষার পর সব কিছু ঠিক ঠাক ছিল কিন্তু???????

কিন্তু কি?তাহলে কি মেঘা?শেষ মুহুর্তে এসে চলে গেলো?হুমমম ঠিক তাই,কিন্তু?

মেঘা: রাফসান,আমার সময় খুব কম,তুমি আমাদের মেয়েটাকে কখনও কষ্ট দিবে না বলো?

আমি: আরে পাগলি,কি বলো,তোমার কিচ্ছু হবে না,আল্লাহ এত্ত বড় ক্ষতি আমাদের করবে না,তুমি ভয় পেও না,আমি আছি তো পাগলিটাহ,

মেঘা: আমি জানি রাফসান,আমি আর বেশিক্ষণ বাঁচবো না,তুমি শুধু মিথ্যা আশ্বাস দিও……..

শেষ কথা টা আর বলতে পারলো না,চলে গেলো মেঘা না ফেরার দেশে,আমার ও নেহাকে রেখে,চলে গেলো মেঘা ামাদের রেখে দুর অজানায়,যেখানে যেতে আমাদের এই সব কিছু ত্যাগ করে যেতে হবে।কিন্তু এটা কি সম্ভব আল্লাহ না চাইলে,আমি কিছু বলতে পারছি না,কি বলবো,কি করবো,আমি স্তব্ধ হয়ে বসে রইছি পাশে মেঘার মৃত দেহ,আর তার পাশেই নেহার কান্না,আমি স্তব্ধ হয়ে বসে রইছি,কখন যে আমার পাশে আব্বু আম্মু এসে দারিয়েছে খেয়ালই করিনি,তাদের চোখেও পানির অশ্রু গড়িয়ে পরছে।

আমি মেঘাকে ধরে একটা চিৎকার দেই।তাররপর আর কিছু মনে নেই।যখন জ্ঞান ফিরে দেখতে পাই আমি আমার রুমে।আর মেঘার কথা মনে হতেই মেঘাকে ডাকি কিন্তু মেঘা কি আদৌও শুনবে?মেঘা তো আমাকে ছেরে, আমার বাচ্চাকে ছেরে চলে গেছে দুর অজানায়।মেঘা কি আসবে আবার ফিরে?আমি কি ভাবে বাঁচবো মেঘাকে ছার্,না আমাকে বাঁচতে হবে,শুধু আমার মেয়েটার জন্য, আমি যে মেঘাকে কথা দিয়েছি

কিছু ভালোবাসা সমাপ্তিতেও অসমাপ্তিই রয়ে যায়।

ধন্যবাদ এতক্ষণ ধরে গল্পটি পরার জন্য

Leave a Comment