Love Never Ended
ইলোরা জাহান ঊর্মি ( Part 15 )
বেডে আধশোয়া অবস্থায় চোখ বন্ধ করে আছে আভা। চোখের কার্ণিশ বেয়ে টপ টপ করে অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে পড়ছে তার। মনের মধ্যের চাপা কষ্টটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কতো বড় ভুলের মধ্যে সে এতো দিন ছিল ভাবতেই তার চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু তার-ই বা দোষ কী? সে তো বার বার রাইফের সাথে কথা বলতে চেয়েছে। রাইফ নিজেই তো কোনো কথা শুনতে চায় নি। সবসময় রাগ দেখিয়েছে।
আভা ভাবছে রাইফ ওর স্ত্রীর সাথে তার সামনে বসে কথা বলেছে। সে নিজের কানে শুনেছে। এমনকি রাইফের মেয়েকেও সে দেখেছে। চোখের দেখা,কানের শোনা ভুল কীভাবে হয়? সামিদ আর হিয়া আহত দৃষ্টিতে আভার দিকে তাকিয়ে আছে। ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সামিদ বলল,
সামিদ: সবই তো শুনলে আভা। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে তুমি কেন স্যারকে ভুল বুঝলে? স্যার অন্য কাউকে বিয়ে করে সুখে আছে এমন ভুল ধারণা এলো কীভাবে তোমার মধ্যে? ঐদিন বলেছিলে তুমি নিজের চোখে দেখে প্রমাণ পেয়েছো। কী দেখেছো তুমি?
{ Love Never Ended Heart Touching Love Story Bangla }
আভা আলতো করে ভেজা চোখ জোড়া মেলে সামিদের দিকে তাকালো। তারপর মাথাটা হালকা নীচু করে বলল,
আভা: সেদিন অফিসে রাইফ আমার সামনে বসে ওর স্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলেছে। এমনকি সেদিন ও ওর মেয়েকেও সাথে নিয়ে গিয়েছিল অফিসে।
সামিদ অবাক হয়ে বলে উঠলো,
সামিদ: মেয়ে!
আভা: হ্যাঁ। আমি বুঝতে পারছি না আমার চোখের দেখা,কানের শোনা ভুল কী করে হলো? ও যদি বিয়ে না করে থাকে তাহলে স্ত্রী,মেয়ে এলো কোত্থেকে?
সামিদ এবার কিছু বুঝতে না পেরে মাথা চুলকাতে লাগলো। এরইমধ্যে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে এলো রাইফ। আভা দরজার দিকে তাকাতেই রাইফের সাথে চোখাচোখি হলো। সঙ্গে সঙ্গে আভা দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। রাইফের মুখটা গম্ভীর হয়ে আছে। রাইফের কোলে হাস্যোজ্জ্বল মুখে ইয়ানা। আভা আড়চোখে ইয়ানার দিকে ভাবুক দৃষ্টিতে তাকালো। ইয়ানা আভাকে দেখেই এক গাল হেসে হাত নাড়িয়ে আস্তে আস্তে বলে উঠলো,
ইয়ানা: হাই আন্টি। কেমন আছো তুমি?
আভা জোর করে মুখে হাসি টেনে উত্তর দিলো,
আভা: ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?
ইয়ানা: আমিও ভালো আছি। তোমাল হাতেল ব্যথা কমেছে?
আভা: না।
ইয়ানা মন খারাপ করে বলল,
ইয়ানা: জানো? তুমি হাতে ব্যথা পেয়েছো বলে লাইফ খুব মন খালাপ কলেছে।
ইয়ানার কথা শুনে আভা অবাক হয়ে একবার রাইফের দিকে আরেকবার ইয়ানার দিকে তাকালো। রাইফের মন খারাপ শুনে আভা অবাক হয় নি। অবাক হয়েছে ইয়ানা রাইফকে নাম ধরে ডাকায়। সেদিন অফিসে আভার সামনে ইয়ানা রাইফকে ডাকে নি তাই আভা শোনেও নি।
রাইফ আর ইয়ানার মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে আভা কনফিউশনে পড়ে গেছে। এদিকে সামিদ বলছে রাইফ নিজের মুখে বলেছে ও বিয়ে করে নি। তাহলে ইয়ানা কে? আর রাইফের সাথে ওর কী সম্পর্ক? আভার মাথায় এই একটা প্রশ্নই বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। সামিদ হঠাৎ রাইফের কাছে গিয়ে হাত এগিয়ে ইয়ানার উদ্দেশ্য আদুরে গলায় বলল,
সামিদ: ইয়া মামনি চলো আমরা বাইরে যাই। বড়দের কথার মাঝে ছোটদেরকে থাকতে নেই।
{ Bangla Sad Love Story | কষ্টের ভালোবাসার গল্প বাংলা }
আভা আরেক দফা অবাক হলো। সামিদ ইয়ানাকে চেনে? তাহলে তাকে বলল না কেন? পর পরই আভার মনে পড়লো সামিদকে তো ও এখনো ইয়ানার কথা বলেই নি। আভা একটু অবাক কন্ঠে সামিদকে প্রশ্ন করলো,
আভা: তুমি ইয়া কে চেনো?
সামিদ মুচকি হেসে উত্তর দিলো,
সামিদ: হ্যাঁ। ইয়া তো রওশন স্যারের সাথে মাঝে মাঝেই অফিসে যায়। অফিসের সবাই ওকে খুব ভালোবাসে। আমার সাথে ইয়ার খুব ভালো ফ্রেন্ডশিপ হয়েছে। তোমার সাথে তো বোধ হয় একদিন দেখা হয়েছিল? তুমি আসার পর ইয়া একদিনই অফিসে গিয়েছিল।
কথাটা বলতে বলতে সামিদ হঠাৎ থমকে গেল। কিছু একটা ভেবে আভার দিকে তাকিয়ে ভ্রূ কুঁচকে ফেললো। তারপর সন্দিহান কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
সামিদ: তুমি কোনোভাবে ইয়া কে রাইফ স্যারের মেয়ে ভাবছো না তো?
{ Emotional Heart Touching Love Story }
সামিদের কথায় আভা মাথা নীচু করে হাত কচলাতে লাগলো। কারণ সামিদের ধারণাই তো সঠিক। আভার নীরবতা দেখে সামিদ আভার উত্তর পেয়ে গেল। রাইফ ভ্রূকুটি করে একবার আভার দিকে আরেকবার সামিদের দিকে তাকিয়ে আশ্চর্য হয়ে বলল,
রাইফ: মানে?
সামিদ রাইফের প্রশ্নে কান না দিয়ে আভার দিকে দু’পা এগিয়ে গিয়ে হতাশ গলায় বলল,
সামিদ: এমন ভুল তুমি কীভাবে করলে আভা? তুমি যদি একবার আমাকে বলতে যে ইয়া কে দেখে তুমি স্যারকে ভুল বুঝেছো তাহলে ব্যাপারটা এতোদূর গড়াতো না।
রাইফ বিস্ময় নিয়ে কিছুটা জোরে বলে উঠলো,
রাইফ: হোয়াট!
আভা এবার মাথাটা উঠিয়ে রাইফের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো। রাইফ দ্রুত পায়ে হেঁটে গিয়ে আভার বেডের পাশে বসে পড়লো। তারপর কিছুটা রাগান্বিত কন্ঠে বলল,
রাইফ: তার মানে সেদিন আমার সাথে ইয়া কে দেখে আর ওর মায়ের সাথে কথা বলতে দেখে তুমি ভেবে নিয়েছো আমি বিয়ে করে ফেলেছি? লাইক সিরিয়াসলি! তোমার বুদ্ধি এতোটা লোপ পেয়ে গেছে? তুমি কী ভুলে গেছো চার বছর আগে যেদিন তুমি ঢাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিলে তার ঠিক দু’দিন আগে আমরা জানতে পেরেছিলাম যে বুবু প্রেগন্যান্ট? তুমি তো জানতে এ কথা। তাহলে ভুলে গেলে কী করে?
আভার এবার টনক নড়লো। ঠিকই তো। চট্টগ্রাম চলে যাওয়ার দু’দিন আগে বুবু নিজেই তাকে ফোন করে সুখবর দিয়েছিল যে সে প্রেগন্যান্ট। চট্টগ্রাম যাওয়ার পর এতো চাপের মধ্যে সে এ কথাটা একদম ভুলে গিয়েছিল। আভার এবার নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। তার ভুলো মনের জন্যই এতো দিন সে রাইফকে ভুল বুঝেছে। লজ্জায় আর অনুশোচনায় সে আবার মাথা নীচু করে ফেললো।
{ bangla love story , Bangla Valobashar Golpo }
সামিদ রাইফকে বলে ইয়ানাকে নিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল। রাইফ আভার দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। আভা মাথা নীচু করেই বসে আছে। কিছুক্ষণ সেভাবেই দুজন নীরব হয়ে বসে রইল। রাইফ হঠাৎ করেই আভার বা হাতের উপর নিজের ডান হাতটা আলতো করে রাখলো। আভা কিছুটা চমকে উঠলো।
হাতের দিকে একবার তাকিয়ে আরেকবার রাইফের দিকে একনজর তাকিয়ে আবার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। কিন্তু হাত সরিয়ে নিলো না। রাইফ আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে করুন সুরে আস্তে করে বলল,
রাইফ: আ’ম সরি আভা। এতো দিন যা কিছু হয়েছে সবকিছুর জন্য আ’ম সরি। আমি জানি সব দোষ আমার। আমি প্রথম দিনই তোমাকে ভুল বুঝেছি। সব সময় তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি। কতোবার তুমি আমার সাথে ভালো ভাবে কথা বলতে চেয়েছো কিন্তু আমি তোমাকে কোনো কথা বলার সুযোগই দেই নি।
আমি যদি তোমার সাথে ঠান্ডা মাথায় কথা বলতাম তাহলে এতো কিছু হতো না। সন্দেহটা প্রথমে আমিই করেছিলাম। সেজন্যই আমার প্রতিও তোমার সন্দেহ জেগেছে। কিন্তু বিশ্বাস করো,তোমাকে ভুল বুঝলেও তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা এতো টুকুও কমেনি। আমি সবসময় তোমাকে একই রকম ভালোবেসে এসেছি। আমি জানি তুমিও আমাকে এখনো আগের মতোই ভালোবাসো। সামিদ আমাকে সবকিছু বলেছে।
আভা মাথা নীচু করেই বসে আছে। তার চোখ দুটো ছলছল করছে। রাইফ যদি প্রথম দিন এভাবে কথা বলতো তাহলে এতো ভুল বোঝাবুঝি হতো না। রাইফের প্রতি আভার মনে অনেক অভিমান জমা হলো। আভার কোনো সাড়া না পেয়ে রাইফ উত্তেজিত কন্ঠে বলল,
রাইফ: আভা, কিছু বলছো না কেন তুমি? প্লিজ কিছু বলো। তাকাও আমার দিকে।
আভা মাথা উঁচু করলো না। চোখ ফেটে জল বেরিয়ে এলো। রাইফ কয়েকবার আভাকে ডাকলো কিন্তু আভা চুপচাপ মাথা নীচু করে চোখের পানি ফেলছে। রাইফ এবার কিছুটা বিরক্তি নিয়ে হুট করে আভার দু গালে হাত রেখে মাথাটা উঁচু করে ধরলো। সঙ্গে সঙ্গে আভার সাথে তার দৃষ্টি বিনিময় হলো।
আভার চোখে পানি দেখে রাইফ আহত চোখে তাকালো। দুহাতে আলতো করে আভার চোখের পানি মুছে দিয়ে ধরা গলায় বলল,
রাইফ: কাঁদছো কেন? চার বছর ধরে চোখের পানি ফেলে এখন আমার সামনেও চোখের পানি ফেলবে? তুমি জানো না আমি তোমার চোখে পানি দেখতে পারি না? প্লিজ কিছু তো বলো। কথা বলবে না তুমি আমার সাথে?
Also, Read Those Heart- Touching Come Back Sad Love Story
আভা এবার ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। আভার কান্না দেখে রাইফের বুকটা কেঁপে উঠলো। তার চোখ দুটিও ছলছল করে উঠলো। সে জানে এই মুহূর্তে আভার কান্না থামানো যাবে না। চার বছরের চাঁপা কষ্টের পাথর কান্না হয়ে বুক থেকে সরে যাক তা-ই ভালো। রাইফ আভার গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া পানিটুকু মুছে দিয়ে নরম কন্ঠে বলল,
রাইফ: ঠিক আছে তোমাকে কাঁদতে না বলবো না আমি। কিন্তু এবার অন্তত একটা কথা বলো আমার সাথে। তুমি বোঝো না তোমার সাথে এতো দিন কথা না বলায় আমার কতোটা কষ্ট হয়েছে? আমি জানি চার বছর কষ্ট পাওয়ার পরও এ কদিন আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি।
আমি মানছি সব দোষ আমার। কিন্তু আমি তো না বুঝে ভুল করে ফেলেছি। তুমি কী পারো না আমাকে ক্ষমা করে দিতে? এখনো আমার উপর রাগ করে থাকবে? তুমি তো জানো রাগ উঠলে মাথা ঠিক রাখতে পারি না আমি। সেজন্যই তোমার সাথে ওমন খারাপ ব্যবহার করেছি।
অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে আমার। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। একবার সব ভুলে আমার সাথে মন খুলে কথা বলো। একবার বোঝার চেষ্টা করো আমিও কতোটা কষ্ট পেয়েছি এতো দিন। আমি তো বলছি সব দোষ আমার। প্রথম দিন তোমাকে সামিদের সাথে দেখে আমার মাথা ঠিক ছিল না। তাই এই ব্যাপারটা এতোদূর গড়িয়েছে।
{ Bangla Premer Golpo }
রাইফের কথার মাঝেই আভার কান্না আস্তে আস্তে থেমে গেছে। আভা হুট করে নিজের গাল থেকে রাইফের হাত দুটো সরিয়ে দিলো। নিজের চোখের পানিটুকু মুছে ফেললো। তারপর হঠাৎ কিছুটা চিৎকার করে সামিদের নাম ধরে ডাকতে লাগলো। আভার চিৎকার শুনে কেবিনের বাইরে থেকে সামিদ,হিয়া,রুহি আর আসিফ ছুটে কেবিনের ভেতরে ঢুকলো।
আভার এহেন কাজে রাইফ অনেক অবাক হয়ে গেল। সে কিছু বুঝতে না পেরে প্রশ্নভরা দৃষ্টিতে আভার দিকে তাকালো। সামিদও কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো,
সামিদ: কী হয়েছে আভা? এভাবে চিৎকার করে ডাকলে কেন?
আভা রাইফকে দেখিয়ে সামিদের উদ্দেশ্যে বলল,
আভা: এক্ষুনি এনাকে এখান থেকে চলে যেতে বলো,প্লিজ।
কক্ষ মধ্যে সবাই আভার কথা শুনে অবাক হয়ে গেল। কারো মুখ থেকে কোনো কথা বেরোচ্ছে না। সামিদ আবার বলল,
সামিদ: এসব তুমি কী বলছো আভা?
রাইফ কিছুটা অস্থির হয়ে বলল,
রাইফ: এ কথা কেন বলছো আভা? কেন এমন করছো তুমি আমার সাথে? প্লিজ এমন করো না। আমি জানি তুমি আমার উপর রেগে আছো। তাই বলে আমাকে চলে যেতে বলতে পারো না তুমি। মাথা ঠান্ডা করো প্লিজ।
রাইফের অনুরোধ আভার কান অব্দি পৌঁছলো না। সে বারবার সামিদকে একই কথা বলে যাচ্ছে। আর রাইফ বারবার অনুরোধ করেই যাচ্ছে। আভা এবার সামিদের উপর রেগে গিয়ে বলল,
আভা: সামিদ তোমাকে যা বলছি তা কী করবে তুমি? নইলে আমি নিজেই এক্ষুনি হসপিটাল থেকে বেরিয়ে চলে যাবো।
Also Visit Those Romantic Love Story Article
কথাটা বলেই আভা বেড থেকে নামার জন্য পা বাড়ালো। রাইফ খপ করে আভার নামানো পা’টা ধরে পুনরায় বেডের উপরে রাখলো। আভার দিকে আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
রাইফ: পাগলামি করো না আভা। তুমি এখন অসুস্থ। আমি এক্ষুনি চলে যাচ্ছি এখান থেকে। শান্ত হও তুমি। তবে আমি আবার আসবো। নিজের খেয়াল রেখো।
বলতে বলতে রাইফ আভার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। তারপর হনহন করে হেঁটে কেবিন থেকে বেরিয়ে চলে গেল।
আসিফ আর রুহি ব্যস্ত হয়ে রাইফের পেছন পেছন কেবিনের বাইরে গেল। সামিদ আর হিয়া এখনো অবাক হয়ে আভার দিকেই তাকিয়ে আছে। আভা রাইফের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দু’ফোঁটা চোখের পানি ফেললো। তারপর আধশোয়া অবস্থায় মাথাটা বালিশের উপর হেলে দিয়ে চোখ বন্ধ করে চুপচাপ বেডে পড়ে রইলো।
Click Here For Next Part চলবে
![]() |
Love Never Ended Emotional Sad Love Story Part 15 |