Golperjogot

Golperjogot

জোর করে বিয়ে – অনুগল্প | Emotional Bangla Short Story

Written by – Amrin Talokder

আজ আমার বিয়ে,কিন্তু সেটা আমার মতের বিরুদ্ধে, না পারছি কিছু বলতে না পারছি সহ্য করতে।দুচোখ বেয়ে শুধু চোখের জল ফেলা ছার্ যে আমার আর কিছু করার নেই।সময়টাও বড্ড বেহায়া।বেহায়ার মতো কত্ত তারাতারি ছুটে যাচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে অনেক ভয় কাজ করছে আমার মনে।

আপনাদের পরিচয় দিয়ে নেই।আমি মেঘা,অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। কলেজ লাইফটা অনেক ভালোই যাচ্ছিলো,কিন্তু আজ আমার মতের বিরুদ্ধে বিয়ে হচ্ছে আমি চাইতেও কিছুই করতে পারবো না।কারণ বাবা মায়ের৷ সামনে আমাকে তুলে নিয়েছে এই মানুষ নামের নর পশুটা।

আমাকে নাকি তার ভালো লাগে,ভালোবাসে নাকি সে আমাকে।আচ্ছা ভালো বাসলে কি কেও এবাবে কষ্ট দেয় তার ভালোবাসার মানুষটিকে?জীবনে রিলেশন করতে পারিনি কাওকে ভালোওবাসতে পারিনি বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে,আমি ছোট থাকতে বাবা একবার বলে ছিলো।

বাবা: মেঘা মা,জীবনে অনেক কিছুই করতে পারবি,অনেক আনন্দ উপভোগ করা যাবে।কিন্তু রিলেশন করে আই মিন প্রেম ভালোবাসা বিয়ের আগে করে নিজের জীবনকে নষ্ট করিস না,আর আমার সম্মানটা যেন না যায় সেদিকে খেয়াল রাখিস,

সেদিন বাবার চোখে দেখেছিলাম আমার প্রতি বাবার এক রাশ ভয়,ভয় হতো আমাকে নিয়ে বাবার,তাই সেদিন কথা দিয়ে ছিলাম বাবাকে।

মেঘা: আব্বু,তুমি নির্ভয়ে থাকতে পারো,আমি তোমার সম্মানের অসম্মান হবে এমন কাজ কখনও করবো না,

আমার কথা শুনে বাবার মুখের হাসির রেখা ফুটে উঠেছিল,সেদিনের হাসির রেখার দাম দিতেই জীবনের এত্তটা সময় কারো সাথে রিলেশনে জরাইনি।কিন্তু এমন নয় যে প্রপোজাল পাইনি,প্রতিদিনই আমার জন্য দুই একটা প্রপোজাল থাকতোই।দেখতে আমি ততটাও সুন্দর না হলেও আমার গঠন ছিল এমন,যে কেও আমাকে দেখে পাগল হয়ে যাবে।নিজের কথা অনেক বললাম,থাক আর নিজের গুনগান করতে চাই না হি হিহ হিহি

রাফসান: মেঘা,এই নাও শাড়ি,আর এটা পরে আসো।আর অল্প কিছুক্ষণ পরই কাজী চলে আসবে।

মেঘা: আমি এই বিয়ে করবো না(বলেই কেঁদে দেই,কি করবো বলুন,আমাকে প্রতিদিনই ডিস্টার্ব করতো,আমাকে না পেলে নাকি আমাকে তুলে নিয়ে যাবে।মেরে ফেলবে, ইত্যাদি ইত্যাদি হুমকি দিত,আর আজ সেটাই করেছে)

রাফসান: মেঘঘঘঘা,,,,,

আমি তার মুখে আমার নাম শুনে চমকে চাই,এর আগে আর একদিন এরকম করে চোড়ে ডাক দিয়ে ছিলে অনেক রাগ নিয়।সেদিন তার সামনে তার বাইকটা ভেঙ্গে ফেলে।তার রাগের কারণে সে যা ইচ্ছে করতে পারে।কিন্তু আমাকে কিছু বলে নাই,কারণ হয়তো আমাকে ভালোবাসে।আর আজ আবার সেই ভাবে ডাক দেওয়াতে থমকে গিয়েছি না জানি আজ কি ভেঙে ফেলে।

রাফসান: এই মেঘা, এই তোরে বলছি না শাড়ি পরে তৈরি হতে যদি আর একটা কথা বলিস তো আমার থেকে খারাপ আর কেও হবে না,এই রাফসান চৌধুরীকে তো ভালো করেই চিন মিস. মেঘা ইসলাম(আমার রাগটা এতই পরিমাণ যে,যখন রাগ হয় তখন কি থেকে কি করে ফেলি নিজেও বুঝতে পারি না)

তো চলুন আমার পরিচয়টা দিয়ে নেই।আমি রাফসান চৌধুরী। চৌধুরী গ্রুপ ওফ ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র উত্তরাধিকার।
আর আমার যা ভালো লাগে সেটা আমি যে কোন বিনিময়ে নিয়ে নেই।সেটা যাই হোক না কেন।আর মেঘা কে তো আমি জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি,তাকে না পেলে যে আমার জীবনই অর্ধপূর্ণ থেকে যাবে।আমি সেটা কোন ভাবেই হতে দিব না,তাই তো আজ মেঘাকে তুলে এনেছি।

কাজী বিয়ে পরিয়ে চলে যায়,নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে করলাম,মনটা চাচ্ছে তাকে আস্ত গিলে ফেলতে।কিন্তু তারইম উপর তো রাগ দুরের কথা,তার সামনে কথা বলার ভাষাই হারিয়ে ফেলি।বিয়ের কাজ শেষে আমি রাফসানের রুমে বসে আছি।ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও তার জন্য বসে থাকতে হচ্ছে।

আজ আমার স্বপ্নের রানীটা আজ চিরদিনের জন্য আমার হয়ে গেছে,আজ আমি অনেক খুশি,আমার রুম আজ আমার প্রিয় মানুষটি আমার জন্য অপেক্ষা করছে,তাই আর বেশি দেরি না করে।বাসর রুমের উদ্দেশ্য বের হলাম।

আমি রুমে ডুকে মেঘার দিকে এগুতে থাকি,আর মেঘা আমাকে দেখে ভয় পেতে থাকে।বুঝতে চেষ্ট করছে হয়তো কি হতে চলছে এখন।কি বা হবে কিছুক্ষণ পর।

মেঘা: প্লিজ আমার কাছে আসবেন না…!

রাফসান: কিন্তু কেন?তুমি তো আমার বিয়ে করা সদ্য বউটা😘।

মেঘা: আমি এই বিয়ে মানি না.

রাফসান: না মানলে জোর করে করবো(বলেই এক রহস্যের হাসি হাসতে থাকি,যেটা দেখে মেঘা আরো ভিতু হয়ে যায়,এখন কেন যেন মনে হচ্ছে এই মেয়েই নাকি সব সময় সাহসী মনে করে।আর এখন আমাকে দেখে কেমন ভয় পেয়ে গেছে।ভাবতেই হাসি পাচ্ছে)

মেঘা: দে, দে, দেখুন আপপপপনি আমমমার দিকককে এগুবেন না,আর এক পা যদদদি এগিয়ে আসেন তো?
(আমি সত্যি এখন নিজেকে আর নিজের ভিতর সাহস জোগাতে পারছি না,এমনে অনেক কিছুই বলতে পারি,মুখে কথা আসে।কিন্তু এখন কেন যেন কথা গুলো এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে,আমি কেন এত্ত ভয় পাচ্ছি, কেন আমার এরকম হচ্ছে??)

আমি মেঘার কথা শুনে আরো এগিয়ে যাই,আর আমার এগিয়ে যাওয়া দেখে মেঘা আরো ভিতু হয়ে পরে।মেঘা রিতীমত ঘেমেই চললে,রুমে ফ্যান চলছে ফুল স্পিডে,তার মধ্যে মেঘাকে এরকম ঘেমে যাওয়ায় বেশ লাগছে দেখতে।

রাফসান: আমার বউটা যে, এই ফুল স্পিডে ফ্যান চলার মধ্যে এরকম ঘেমে যাওয়ায় এরকম কিউট লাগবে যানা ছিল না।

আমার মন চাচ্ছে এই রাফসানের বাচ্চাক ধরে শূন্য তুলে আছার দিতে।একে তো আমি ঘেমে গেছি,আর তার উপর এর অত্যাচার,আর এই ভারি শাড়ি গহনা,এক কথায় নিজেকে হাতি মনে হচ্ছে।(হি হিহ হি হিহিহিহি)

রাফসান: ঘুমিয়ে পরো,তোমার কাছে জোর করে স্বামী অধিকার ফলাতে আসবো না,তবে এটা নয় যে তাতে তুমি যা মন চায় করবে,কেমন?

তার পর আমি একটা বালিশ ও একটা চাদর বের করে সোভায় শুয়ে পরি,কখন ঘুমাইনি সোভাতে, আজ ঘযমাতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে।অন্য রুমেও ঘুমাতে পারতাম,কিন্তু আমার পাগলীটা যদি পালিয়ে যায়,তাই ভয়ে অন্য রুমে যাই নি,আর পাগলীটাকে কাছে পেতে যে কোন কষ্ট সহ্য করতে পারি আমি।

তার পর রাফসান আমাকে কিছু কথা বলে তার মতো সে নিজে বিছানা করে শুয়ে পরে,আজ নিজের উপর অনেক অত্যাচার গেছে তাই আর না জেগে বসে থেকে ঘুমিয়ে পরি, ঘুম ভাঙ্গে সকালের ভোরের পাখির কিচির মিচিরে।

এই বন জঙ্গলে তার মধ্যে আশে পাশে খোলা মেলা যায়গায় পাখি আসবে কোথা থেকে তাই ভাবছি,যদিও জঙ্গলে পাখি থাকার কথা,কিন্তু এই বাড়িটার থেকে অনেক দুর চার পাশ খোলা,এক কথায় বলা যায় এটা একটা দ্বীপের মতো,চার পাশের জঙ্গলে ঘেরা মধ্যে একটা সুন্দর সাজানো গোছানো বাড়ি।যদি এখানে কখনও আসি নি।তবে কেন যেন খুব ভালো লাগছে।

বিছানা থেকে উঠে দেখি আমি যেই রুমে শুয়ে ছিলাম,তার পাশের রুমে নানান প্রজাতির পাখি খাবার খাচ্ছে।আচ্ছা এই পাখি গুলো কে দেখা শোনা করে?বা কেই বা এদের প্রতিদিন খবার দেয়।নানান প্রশ্ন জাহছে মনে।কিন্তু কোন প্রশ্নের উত্তরই অজানা,আর সেই প্রশ্নের উত্তর কখনও পাবো কিনা তাও জানি নাহ।

রাফসান: কি মিসেস. রাফসান,কি করছেন??

আমি পাখি গুলোর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে ছিলাম,কখন যে রাফসান পিছনে এসে দারিয়ে খেয়ালই করি নি।তার কথা শুনে পিছন ফিরে তাকাই।

আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি মেঘা বিছানায নেই।মনের ভিতর ভয় লাহা কাজ শুরু করে দেয়।তারাতারি করে দৌড়ে বের হতে নিলে দেখি মেঘা আমার পোষা পাখি গুলোর দিকে একনধ্যানে তাকিয়ে রইছে।কেন যেন মন টানছে মেঘাকে গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরি কিন্তু মেঘাতো এখনও আমাকে মানতে পারছে না,আমি যে চাইলেও পারছি না।
তাই পিছন থেকে কিছুটা দুরত্ব রেখে মেঘাকে ডাক দেই,আমার ডাকে মেঘা পিছন ঘযরে তাকায়।

মেঘা: জ্বি বলুন,(কিছুটা শান্ত স্বরে।)

রাফসান: কি বেপার, মিসেস রাফসান বলায় রাগ করলে না,বরং এত্ত সুন্দর ভাবে কথা বললে,তাহলে কি আমার বউটার কাছে যেতে পারি আমি?

মেঘা: চুপপপপ, করেন আপনি।আপনার সথে ভালো করে কথা এই জন্য বলছি,আমি এখন আপনার আন্ডারে আছি,আমার যদি কিছু হয় তো আপনাকেই লাগবে।যদি বিপদে পরি এই অচেনা যায়গায়?

রাফসান: শুধুই কি বিপদ থেকে রক্ষা পেতে নাকি ভালো বাসাও তৈরি হচ্ছে?

মেঘা: 🤬🤬🤬(তার দিকে রাগি মুডে তাকিয়ে সেখান থেকে চলে আসি,মন চাচ্ছে নিজেকে শেষ করে দিতে।কিন্তু আমার বাবা মা???বাবা মায়ের কত্ত আশা আমাকে নিয়ে,সেটার কি হবে।তাই নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছি,শুধু তাদের জন্য, যারা আমাকে ছোট থেকে ভালো বেসে আসচ্ছেন)

মেঘার রাগি মুড দেখে আমি হেসে দেই।তাতে মেঘা আরো রেগে গিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।আচ্ছা মেঘা কি আমাকে মনে নিছে?নাকি মেঘা কি করতে চ্ছে আমি বুঝতে পারছি না,কি এমন যার জন্য মেঘা এমন রহস্যময়ীর মতো আচরণ করছেন।না আমাকে সব সময় সতর্কতা থাকতে হবে।(এগুলো ভাবছিলাম,এমন সময় মেঘা তার কাপর চোপর নিয়ে আমার সামনে হাজির)

মেঘা: মি. তো চলুন,আমি বাসায় যাবো।

রাফসান : এই মেঘা,চুপপপ এখান থেকে এক পাও নরতে পারবে না,আর এই জঙ্গলের ভিতর তুম রাস্তাই খুঁজে পাবে না,সো চুপ করে থাকো।আর আমাকে মনে নাও।

মেঘা: কখনও আপনাকে মেনে নিব না,আপনি একটা বাঁজে লোক,আপনি একটা……

রাফসান: কি তোমার জামাই,ভুলে গেছো তো বলতে?

রাফসানের কথা শুনে কেন যে রাগ উঠে যায় তাই তার কলার ধরে বলি….

মেঘা: তুই আমার সাথে কথা বলবি না,(বলেই রাগ করে আবার রুম গিয়ে বসি)

আজ খুব কান্না পাচ্ছে।কাঁদলে নাকি কষ্টের বেথা কমে, তাই অনেকক্ষণ বসে থেকে একা একা কাঁদলাম,কিন্তু আফসোস শয়তানটা আমাকে একবারও দেখতে আসলো না,এরকম কেন হয় আমার সাথে সব সময়?
আমি কেন অভিমান করলে কেও ভাঙ্গাতে আসে না?

রাফসান: মেঘা,এই নাও খাবার,অনেক সময় ধরে কেঁদেই চলছো এখন তো কিছু খাও, না হলে কিন্তু খুদায় কাঁদতে পারবে না।

তার কথা শুনে হাসবো নাকি কাঁদবো বুজতে পারছি না,রাগে হা জ্বলে যাচ্ছে।কিছু বলছি না বলে সে আবার আমাকে বললো খেয়ে নিতে,তাও কোন কথা না বলায়, সে নিজের হাতে আমার মুখে খবার তুলে দিতে লাগলো।নাহহহ ভেবে ছিলাম মানুষটি খারাপ,কিন্তু সে খারাপ হলেও ব্যবহার গুলো অনেক ভালো,আমার সাথে কত্ত সুন্দর ভাবে কথা বলছে।

এই এই আমি এগুলো কি ভাবছি?তাহলে কি আমি তারে?? না না,সে আমাকে জোর করে বিয়ে করছে।জোর করে বাবা মায়ের থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছে।তার প্রতি আমি প্রতিশোধ নিবই।

রাফসান: প্রতিশোধ নিবে তো???আগে খাবার গুলো খেয়ে নাও।আর না খেলে তুমি শক্তি পাবে কই?

রাফসানের কথায় আমি ফিক করে হেসে দেই।তার উপর যতই প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছি ততই কেন যেন হারিয়ে যাচ্ছি।তাহলে কি এটাকেই ভালোবাসা বলে??

তার পর রাফসান আমাকে খাবার খাইয়ে দিয়ে,সে নিজেও খাবার খেয়ে নেয়।সারাটা দিন রুমে বসে থাকতে থাকতে বোর হচ্ছিলাম,মন চায় সব সময় বাবা মায়ের কাছে ছুটে যেতে।কিন্তু এই বজ্জাত লোক তো আমাকে ছারছেই না,

মেঘা: আচ্ছা আমাকে কি কখনও আপনি বাবা মায়ের কাছে নিয়ে যাবেন না?

আমি মেঘার কথা শুনে মেঘার দিকে তাকিয়ে কি বলবো ভেবে পাচ্ছি নন,সত্যি মেঘাকে অনেক বেশিই হয়তো কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।কিন্তু কি করবো,সে তো রাজি হচ্ছিলো না আমাকে বিয়ে করতে।সে নাকি তার চাচাতো ভাইকে বিয়ে করবে, তার বাবা মায়ের পছন্দ অনুযায়ী, তাই তো এত্ত সব কিছু করা,

মেঘা: কি হলো,উত্তর দেন?

রাফসান: হুমমম,নিয়ে যাবো।যখন আমাদের ছোট ছোট বাচ্চা থাকবে তখন।

মেঘা: কখনও আমি আপনাকে মানি না,।

আজ যেন আমার কি হয়ে গেলো,মেঘাকে জোরে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে তার ঠোঁটে আমার ঠোঁট ডুবিয়ে দেই।আজ খুব করে বলতে ইচছা হচ্ছে,আমি যে তোমার ভালোবাসা পেতে অপেক্ষা করছি,তুমি কেন বুঝতে চেষ্টা করছো না।খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে..

আমাকে হঠাৎ করেই চেপে ধরে ঠোঁটে কিস করায়,নিজকে ঠিক রাখতে পারি নি,আরে আপনার বুঝেন না কেন??ওইটা সেটা না হি হি হিহি,নিজেকে ধরে রাখতে পরিনি,মানে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে,চোখ দিয়ে দু ফোটা জল গরিয়ে গেলো আমার, কিন্তু তার যে ছারার নামই নেই।

মেঘার চোখের জল দেখে মনের ভিতর এক অজানা ভয় কাজ করলো তাই তাকে ছেরে দিলাম,আর…..

রাফসান: স্যরি, আসলে মেঘা তোমাকে….

মেঘা: কি আমাকে,পতিতা পল্লির মেয়েদের মতো পাইছেন নাকি, যখন যা খুশি আমাকে নিয়ে তাই করবেন?

মেঘার কথা শুনে মাথাটা গরম হয়ে গেলো।কি ভাবে নিজেকে, নিজেকে পতিতার সাথে তুলনা করে,আর আমাকে পতিতার কাস্টমার ভাবে, ছি নিজের উপর ঘুণা চলে আসচ্ছে।তাই সেখান থেকে চলে আসলাম।

তার পর সেখান থেকে চলে এসে আমি বাসায় এসে পরি,আই মিন লোকালয়ে,মেঘাকে ঘন জঙ্গলেই রেখে আসি,অন্য সময় হলে মেঘার সাথেই থাকতাম বা মেঘাকে নিয়ে আসতাম,কিন্তু মনটা খারাপ করে দিছে মেয়েটা কি ভাবে নিজেকে।তাকে ভালোবাসি বলে কি সব সময় যা খুশি বলবে,রাগে আমার রুমের সব কিছুই ভেঙ্গে চুরমার করে দিচ্ছি।

কি হলো, রাফসানের বাচ্চা আমাকে রেখে কোথায় গেলো,সে কি জানে না আমি তারে মিস করছি,সে কি বুঝে না আমি তাকে ভালোবাসি,সে কি সত্যি বুঝতে পারে নি,তখন আমার প্রচন্ড রাগ হয়েছিল,কারণ আমার দম বন্ধ হয়ে আসচ্ছিলো,আমার চোখের পানি কি সে দেখতে পারেনি।(মনে মনে ভাবছি)

আপনারা ভাবছেন তো মেঘা এত্ত তারাতারি কিভাবে রাজি হয়ে গেলো,তো চলুন,সামান্য ফ্লাস ব্যাক।

মেঘা বিয়ের পরের দিন সকালে যখন ঘুম থেকে উঠে সোভার দিকে তাকায়, রাফসানকে দেখে সেদিনই প্রেমে পরে যায়,কিন্তু সেটা তার ভালো লাগা মনে হয়ে ছিল কিন্তু সে যে তাকে ভালো বেসে ফেলেছে সে বুঝতে পারেনি,কারণ রাফসানকে ঘুমন্ত অবস্থায় অনেক কিউট লাগছিল,যা আপনাদেরকেও ভাষায় প্রকাশ করে বলা যাবে না,আপনারা যদি দেখতেন তাহলে আপনারাও রাফসানের প্রেমে পরে যেতেন।

মেঘা আস্তে আস্তে রাফসানের দিকে এগুতে থাকে,আর রাফসানকে দেখতে থাকে।কি এমন আছে তার ভিতর,কেন তার এরকম নেশা লেগে যাচ্ছে রাফসানের প্রতি।তার যে মনের ভিতর এক অজানা শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।মনের ভিতর ভালোবাসার পাখিটা উকি দিয়েছে।মেঘা যে আর পারছে না তার রাগকে সামলাতে।সে তো তাকে ভালোবেসে ফেলছে।সে কি পারবে রাফসানকে রেখে চলে যেতে।হয়তো পারবে না।

এই ছিল সেদিনের কাহিনি, আর আজ রাফসান তাকে রেখে কোথায় চলে গেলো,তার খুব ভয় হচ্ছে এই ঘন জঙ্গলে রাফসানের কিছু হলো নাতো??
রাফসান অনেক বড় ব্যবসায়ী তার পিছনে শত্রু থাকবে এগুলো ভেবে মেঘা কান্না করে দিচ্ছে।

আমি কান্না করছি এমন সময় বাহিরে গাড়ির আওয়াজ শুনে দৌড়ে জানালার কাছে যাই,দেখতে চেষ্টা করে সত্যি কি রাফসান এসেছে নাকি অন্য কেও,আর এখানে তো অন্য কেও আসার কথা না,আর যদি আসে তাহলে তো আমি তো বিপদে পরে যাবো তাই শিওর হতে জানালার কাছে গিয়ে দারাই।

গাড়ি থেকে দেখতে পাই রাফসান নামছে,রাফসানকে নামতে দেখে দৌড়ে রাফসানের কাছে একদম নিচে চলে যাই।আমাকে এভাবে দৌড়ে আসাতে রাফসান ঘাবড়ে যায়,ভাবে আমি কি করতে চলেছি,কিন্তু আমি এরকম একটা কান্ড করবো রাফসান হয়তো ভাবেনি।

আমি গিয়ে সরাসরি রাফসানকে জরিয়ে দরি,আর তাকে জরিয়ে ধরেই তার গালে ঠোঁটে গলায় ইচ্ছে রকম কিস করতে থাকি।আমাকে এরকম কিস করতে থাকা দেখে রাফসান শকড হয়ে দারিয়ে আছে।

আম্মু: বাহহহহ,রাফসান এই না হলে আমার বউমা,তোকে না দেখে পাগল হয়ে গেছে।

আমি কারো কথার শব্দে আমার ঘোর কাটে তাকে কিস করা থেকে পিছন দিকে তাকিয়ে দেখি এক জন ভদ্র মহিলা,

রাফসান: আসলে আম্মু…

আম্মু: থাক আর বলতে হবে না,আর যাও মা মেঘা তোমার বরকে ঘরে নিয়ে গিয়ে আদর করো,হাহা হাহহা হাহা হাহা

মেঘা তো লজ্জায় লাল রঙ্গা হয়ে গিয়েছে।কি বলবে ভেবে না পেয়ে দৌড়ে তাদের রুমে চলে যায়।আর রাফসানও তার পিছন পিছন চলে।

রাফসান: তুমি না আমাকে মানো না,তো এটা কি ছিল কলিজা??

মেঘা: 😪😪😪চুপপপপপ।কি ছিল দেখেন নাই???

রাফসান: তখন তো আম্মু ছিল,রেস্পেক্ট দিতে পারিনি,এখন আসো না আর একবার??

মেঘা: আমার কাছে যদি আর এক পা এগিয়ে আসেন তো ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।

রাফসান: কেন গো,তুমি তো আমার বউ,তোমার কাছেই তো আমি যাবো।তো এখানে ভালো খারাপ কোথা থেকে আসচ্ছে?

মেঘা: কি বলছি শুনেনি(কিছুটা ঝাঝালো কণ্ঠে,তাকে কথা বলায়, আজ সে ভয় পেয়ে যায়,তার ভিতু মুখটা দেখে খুব হাসি পাচ্চে,হিহিহিহি)

রাফসান: আচ্ছা যাবো না,তবে এটা তো বলো কবে থেকে মেনে নিছো আমাকে,আর আমি জানলামই না??

তার পর আমি সব কিছু রাফসানকে ভুলে বলি,আর রাফসান আমার কথা শুনে তো বোকা বনে গিয়ে পৌছায়।আর আমাকে বলে…..

রাফসান : তাহলে আমার বউটা আমাকে মেনে নিছে আমি জানতে পারলাম না,বলেই আমি মেঘার কোমর জরিয়ে ধরে মেঘার পিঠে মুখ ডুবিয়ে দেই।

মেঘার পিঠে মুখ ডুবিয়ে দিতেই মেঘার শরীরে এক রকম কারেন্ট বযে যায়,সে শিউরে উঠে,আমি আস্তে আস্তে মেঘার পেটের নিচ দিয়ে হাত দেই,আমার হাত এখন মেঘার নাভির মধ্যে গুরছে।মেঘাও আমার সাথে রেসপন্স দিচাছে।দুজনই হারিয়ে যাচ্ছি এক অজানা শিহরণে,যেখানে রয়ে আছে শুধু সুখের অনুভুতি, হারিয়ে যাচ্ছি দুজনই এক অজানা সুখের রাজ্য,আমি মেঘাকে আমার দিকে গুরিয়ে তার বুকের আচল ফেলে দিয়ে তার বুকে মুখ ডুবিয়ে দিয়ে,পাগলের মতো কিস করতে থাকি।

মেঘার আমার স্পর্শ পেয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছর।আজ মেঘার চোখে আমার জন্য রয়েছে ভালোবাসা,তার মায়াবী চোখে ভালোবাসার নেশায় সে এক অন্য জগৎ চলে আসচ্ছে।কিন্তু কিছুই হলো না,ফিরে আসতে হলো সেখান থেকে, ফিরে আসতে হলো সেই স্বপ্নের সুখের এক মিষ্পি সুখের নেশা থেকে।

আম্মু: মেঘা মেঘা।

আম্মু মেঘাতে ডাকতে ডাকতে রুমে আসচ্ছে।তাই মেঘাকে আমি ছেরে দিয়ে কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে যাই,সাথে মেঘাও।মেঘা আমার দিকে তাকাতে পারছে না,আর আমিও ভাবছি কি করতে ছিলাম দুজন,কতই না কাছে চলে গিয়েছি আমি ও মেঘা।

আম্মু: মেঘা,

মেঘা: জ্বি আম্মু,বলুন।

আম্মু: এই নাও শাড়ি,তোমাদের আবার বিয়ে দেওয়া হবে,তোমার আব্বু আম্মুও আসচ্ছে।আমি এখানে এসে তাদের সাথে কথা বলছি।

মেঘা: জ্বি আচ্ছা।

রাফসান: মেঘা??

মেঘা: জ্বি(একদম নিচু স্বরে,যেন তার মুখের ভাষা হারিয়ে গিয়েছে।কিছু সময় আগেও তারা কি করছিল, ভাবতেই মেঘার গাল দুটো লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে।

রাফসান: চলো না,আবার শুরু করি..

মেঘা: কি শুরু করবেন?

রাফসান: যা করতে ছিলাম এতক্ষণ?

মেঘা: না পারবো না আমি,পরে (লুচু একটা, বলার কি আছে,নিজে থেকে আসলে কি আর আমি না করবো,তোর আম্মুই যদি না আসতো, তাহলে আমি এত্তক্ষণ সুখের সাগরে ভাসতাম,শুধু শ্বাশুড়ির জন্য সব শেষ হয়ে গেলো।আর এখন আসচ্ছে বলতে,আমার কি এমঘোর কাটছে।কেন বুঝতে পারো না রাফসান,আসো না তুমি আমার কাছে।তোমাকে যে অনেক ভালোবাসি আমি,তোমার মাঝে হারাতে ইচ্ছে করছে এখনই।কিন্তু আমি কি আগে পারবো শুরু করতে?প্লিজ রাফসান আসো, আমার যে পুরে যাচ্ছে সব কিছু।🤭🤭হিহি হিহি হি হি হিহি,আপনারা ভাবছেন আমি রাফসানকে জোরে জোরে বলছি,আরে বোকা আমি তো মনে মনে ভাবছি,রাফসানকি পারবে আমার কথা গুলো বুঝতে)

রাফসান: প্লিজ মেঘা,আর একবার,

মেঘা: আমি জানি না।

বলেই আমি লজ্জায় চলে আসি সেখান থেকে।তার পর আর তার সামনে যাই নি,আমাদের বিয়ে হয়ে যায় বিকালের দিকে,রাত্রিতে আমি আবার নতুন রূপে রাফসানের বউ হিসেবে দ্বিতীয় বার বসে আছি।মনের ভিতর এক অন্য রকম ফিলিংস হচ্ছে আজ সিংগেল জীবনকে বলি দিব।(হিহিহিহিহিহহিহিহহিি,আপনারা চাইলে আসতে পারেন,এই না না,আমি কিন্তু দাওয়াত খেতে আসতে বলেছি,আপনারা নেগেটিভ মাইন্ডে নেন কেন??)

তার পর রাফসান বাসর ঘরে ডুকার পর তাকে পায়ে ধরে সালাম করতে নিলে সে আমাকে বযকে জরিয়ে ধরে।আর তার পর আমরা দুইজনই নফল নামাজ পরে নেয়।

মেঘা: রাফসান???

রাফসান: হুমম বলো।

মেঘা: আমার না টুইন বেবি লাগবে।আমি বলেই রাফসানের বুকে মুখ লুকাই।

রাফসান: এই পাগলী টুইন বেবি নিতে হলে লজ্জা পেলে হবে🤨,তার জন্য তো টু টুয়েন্টি সিরিজ খেলতে হবে।

মেঘা: তো খেলো মাঠ তো রেডি,ব্যাট করতে নেমে পরো, না তো কেও করেনি,হিহিহহিহিহহ।

রাফসান: সত্যি

মেঘা: হুমমম,তবে শর্ত হলো,আউট হওয়া যাবে না,পুরো ২০ অভার খেলতে হবে কিন্তু।

রাফসান: ওরে আমার কলিজা রে।আমি তো ২০ অভার থেকেও ফ্রি গিট নিয়ে ৩০ অভার খেলবো।দারাও দেখাচ্চি।

এই যে লুইচ্চা পাঠক পাঠিকারা, আপনাদের মনের ফিলিংস আমরিন বুঝতে পারে।আইমিন লেখক বুঝতে পারছে,তবে এই না যে রাফসান ও মেঘার বাসর ঘরের সব কিছু বলে দিবে।তাদের জন্য দোয়া করবেন,যেন তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়।আর আমার জন্য দোয়া করবেন,

ধন্যবাদ এত্তক্ষণ ধরে গল্পটি পরার জন্য

আল্লাহ হাফেজ

2 thoughts on “জোর করে বিয়ে – অনুগল্প | Emotional Bangla Short Story”

Leave a Comment