Love Never Ended
Elora Jahan { Part 6 }
রাইফের রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রুহি ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখলো রাইফ বিছানায় আধশোয়া হয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে একটা বই পড়ছে। রুহি ধীর পায়ে ভেতরে ঢুকে বিছানার এক কোণে বসলো। রাইফ বইয়ের থেকে চোখ সরিয়ে বুবুর দিকে তাকালো। মুচকি হেসে বলল,
রাইফ: বুবু,ভাইয়ার সাথে কথা হয়েছে?
রুহি: হ্যাঁ। মাত্রই কথা বলে এলাম।(মুচকি হেসে বলল রুহি)
রাইফ: অফিসের জন্য চিন্তা করছে?
রুহি: না। বলল তুই নাকি সামলে নিবি।
রাইফ: হ্যাঁ। এখন তো সবটাই আমার দায়িত্বে। যাইহোক,ইয়া কী ঘুমিয়ে পড়েছে?
রুহি: হ্যাঁ। অনেক কষ্টে ঘুম পারিয়েছি। জানিসই তো একদিকে চোখে রাজ্যের ঘুম থাকে আরেকদিকে ঘুমাবো না ঘুমাবো না বলে কান্নাকাটি শুরু করে।
রুহির কথায় রাইফ হেসে উঠলো।
রুহি: একটা কথা জিজ্ঞেস করবো ভাই?(একটু দ্বিধা নিয়ে বলল রুহি)
রাইফ: আমি জানি তুই কী জিজ্ঞেস করবি। আভার কথা,তাইতো?(হাতের বইটা বন্ধ করতে করতে বলল রাইফ)
রুহি: হুম।(ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল রুহি)
রাইফ: কী জানতে চাস বল।(রাইফ বইটা রেখে নড়েচড়ে বসলো)
রুহি: তুই নাকি ওকে ইচ্ছে করে চাকরি দিয়েছিস?
রাইফ: আসিফ বলেছে?
রুহি: হ্যাঁ। বিকেলে ফোন করেছিলাম তখন বলল।
রাইফ: চাকরিটা না দিলে তো কোনোদিন দেখাও হতো না আর কিছু জানতেও পারতাম না। আসিফ বলছিল ইন্টারভিউর সময় আভা খুব নার্ভাস ছিল। টেনশন করছিল যদি চাকরিটা না হয়। আসিফ ওর হাবভাব দেখে ওকে জিজ্ঞেস করেছিল ও টেনশন করছে কেন। তখন ও আসিফকে বলেছিল ওর নাকি একটা চাকরি জোগাড় করা খুব দরকার। কিন্তু কোথাও পাচ্ছে না। তাই আমি ইচ্ছে করেই চাকরিটা দিয়েছি।
রুহি: দিয়ে কী জেনেছিস?
রাইফ: বিশ্বাসঘাতকতা করেছে আমার সাথে।(বলতে বলতে রাইফের মুখে কঠিন ভাব ফুটে উঠলো)
রুহ: মানে?
রাইহ: আমাদের অফিসের কম্পিউটার অপারেটর আহম্মেদ সামিদ ওর হাসবেন্ড। মিসেস সামিদ বলতে পারিস। (বুবুর দিকে ভাবলেশহীন ভাবে তাকিয়ে বলল রাইফ)
রুহি: হোয়াট! তুই শিয়র?(বিস্মিত কন্ঠে বলল রুহি)
রাইফ: হুম।(হালকা মাথা ঝাঁকিয়ে বলল রাইফ)
রুহি: তাহলে ওর একটা চাকরি খুব দরকার কেন? সামিদ তো যথেষ্ট ভালো সেলারী পায়।
রাইফ: প্রশ্নটা আমার মাথায়ও এসেছিল। কিন্তু আভা টাকার জন্য মিথ্যা কথা বলে না। তাছাড়া চাকরির দরকার না হলে ও পিএ হওয়ার জন্য আসতো না। ওর বাবা তো ওকে ভালো কোনো চাকরি জোগাড় করাবে বলেছিল। তাহলে ও পিএ কেন হলো সেটাই বুঝতে পারছি না।
Related Story
রুহি অবাকের ওপর অবাক হয়ে গেল। আভার প্রতি তার ক্ষোভ আরো দ্বিগুন বেড়ে গেল। যার জন্য তার ভাই এতো কষ্ট পেয়েছে তাকে আর যাই হোক ক্ষমা করা যায় না। বোনের চোখে বিস্ময় আর রাগ দেখে রাইফ সব কথা খুলে বলল। সে বলল আভা আর সামিদকে সে একসাথে অফিসে আসতেও দেখেছে যেতেও দেখেছে।
আবার আভা যখন হামিদ সাহেবের সাথে কথা বলছিল তখন ও ওর আর সামিদের বাসার কথায় বলেছিল আমাদের বাসা। এমনকি সামিদকে ওর হাত ধরে রাস্তাও পার করতে দেখেছে। কথা বলতে বলতে গাল টেনে দিতে দেখেছে। নিজের কাজ শেষে আভার জন্য একঘন্টার বেশি সময় অপেক্ষা করেছে আর চিন্তিত মুখে বারবার আভার খোঁজ নিতে কেবিনের দরজার সামনে গিয়েছে।
সত্যিটা বুঝতে এর থেকে বেশি আর কী লাগে? হাসবেন্ড না হলে এতো কেয়ার কেন করবে?
রাইফ এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এটাও বলল যে আভা ওর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাই ও আভাকে তার প্রাপ্য শাস্তি দেবে। ভালোবাসে বলে ওর এতো বড় অন্যায় কিছুতেই ক্ষমা করবে না। এতো বছর ও যতোটা কষ্ট পেয়েছে ততোটা কষ্ট আভাকেও পেতে হবে। রুহি ভাইয়ের কথায় চমকে ওঠে।
সে জানে তার ভাই যে কথা বলছে তা করেই ছাড়বে। তার মানে এখন থেকে অফিসের মধ্যে নিশ্চিত কোনো ঝামেলা হবে। আর আভা যদি সত্যিই বিবাহিত হয় তাহলে ওকে শাস্তি কীভাবে দেবে? ওর হাসবেন্ড তো সবসময়ই ওর আশেপাশে থাকবে। অনিশ্চিত কোনো বিপদের আশঙ্কায় রুহির বুক কেঁপে উঠলো। সে চায় না তার ভাই আর কোনো কষ্ট পাক।
কিন্তু রাইফকে এ নিয়ে কিছু বললে ও কোনো কথাই শুনবে না।
সামিদ অনেকক্ষণ ধরে আভাকে লক্ষ্য করছে। আভা খাবার নাড়াচাড়া করছে কিন্তু মুখে তুলছে না। আনমনে কিছু ভেবেই চলেছে তখন থেকে। সামিদ কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো। সামিদ আভাকে ডাকতেই আভা নড়েচড়ে বসলো।
সামিদ: খাচ্ছো না কেন? আমার তো খাওয়া প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। আর তুমি তখন থেকে ভাবনায় ডুবে আছো।
আভা: ভালো লাগছে না সামিদ | কী থেকে কী হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না।(আনমনে বলল আভা)
সামিদ: যা হবার হয়েছে। এসব নিয়ে আর ভেবো না। শুধু কাজের দিকে ফোকাস করো।
আভা: কীভাবে করবো বলোতো? সারাক্ষণ রাইফের সামনে থাকাটা আমার কাছে কতোটা কঠিন তোমাকে বুঝাতে পারবো না আমি। ওর সামনে আমি নিজেকে বেশিক্ষণ সামলাতে পারি না।
সামিদ: পারতে হবে আভা। তোমার মায়ের জন্য পারতে হবে। ভুলে যাবে না তোমার মায়ের চিকিৎসার জন্য এখন অনেক টাকা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে অন্য কোনো কিছু ভাবলে চলবে না। আমি তো বললাম,কিছুদিন এই কোম্পানিতেই দম বন্ধ করে কাজ করো। আমি চেষ্টা করবো অন্য কোনো চাকরির জন্য। জানোই তো আজকাল চাকরি পাওয়া দুষ্কর হয়ে গেছে।
আভা: জানি সামিদ । সবই জানি। চার বছর পর ঢাকায় এসে যে আবার ওর সামনেই পড়তে হবে এটা আমি ভাবতেই পারিনি। কিন্তু ওর এই অপরিচিত রূপ আমি মানতে পারছি না সামিদ। তোমাকে তো সবই বললাম ও আমার সাথে কেমন আচরণ করেছে।
চার বছর আগে যে রাইফ আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতো আজ সে আমাকে সামনে পেয়েও আমার সাথে ঠিকমতো কথা পর্যন্ত বলছে না। জানতেও চাইছে না আমি এতো দিন কোথায় ছিলাম,কেমন ছিলাম।(বলতে বলতে আভার চোখ পানিতে ভরে গেল)
সামিদ: নিজেকে সামলাতে শিখো আভা। এসব কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও প্লিজ। হয়তো উনি তোমার থেকে ভালো কাউকে পেয়েছেন,তাই আর তোমার প্রতি আগের টানটা অনুভব করছেন না। আমার কথা শোনো,উনি যেমন তোমার সাথে অপরিচিতদের মতো আচরণ করছেন তুমিও তেমনি ওনার সাথে অপরিচিতদের মতোই আচরণ করো।
উনি যেহেতু তোমাকে ভুলে গেছে সেহেতু তোমার ওনাকে মনে রেখে এভাবে কষ্ট পাওয়ার কোনো মানে হয় না।(আভার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে কথাগুলো বলল সামিদ)
আভা: না সামিদ, ওর সাথে এই ব্যাপারে সামনা সামনি কথা না বলে আমি এমনটা করতে পারবো না। যে করেই হোক ওর সাথে আমার কথা বলতেই হবে। এই চার বছরে প্রতিটা মুহূর্ত আমি ওকে মিস করেছি। ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমি হৃদয়ে গেঁথে রেখেছি। দূরে থেকেও এই চার বছরে একটা মুহূর্তের জন্যও আমি ওকে ভুলতে পারিনি। সবসময় ভেবেছি কোনো একদিন হঠাৎ আবার ওর সাথে আমার দেখা হবে। সেদিন আমাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পাবেই।
Also Read : Bekar Sela Romantic Love Story
Also Read : Valobashi Dujone Romantic Love Story
Also Read : Shishir Bindu Sad Love Story
হঠাৎ করে দেখা ঠিকই হলো কিন্তু সম্পূর্ণ অপরিচিত রূপে। এই রাইফের সাথে আগের রাইফের যেন কোনো মিলই নেই। আমার এতো দিনের অপেক্ষা এভাবে শেষ হয়ে যেতে পারে না সামি। আমি ওর সামনে দাঁড়িয়ে ওর সাথে কথা বলবো। কেন ও আমার সাথে এমন করছে জানতে চাইবো। ও নিজের প্রতিশ্রুতি কীভাবে ভুলে গেল তার উত্তর তো ওকে দিতে হবে।
কথাগুলো বলেই আভা কাঁদতে কাঁদতে চেয়ার ছেড়ে নিজের রুমের দিকে চলে গেল। পেছন থেকে সামিদ কতোবার করে ডাকলো তবু ফিরে তাকালো না। আভা চলে যেতেই ওর মা শিরীন বেগম এগিয়ে এলেন। উনি এতোক্ষণ দূরে দাঁড়িয়ে আভা আর সামিদের কথা শুনছিলেন।
শিরীন: মেয়েটা সত্যিই কিছু বুঝতে চায় না।(চেয়ারে বসতে বসতে বললেন)
সামিদ: চিন্তা করবেন না আন্টি। আমি ওকে বুঝাবো।(শিরীন বেগমকে আশ্বস্ত করে বলল সামিদ)
শিরীন: হ্যাঁ বাবা বুঝাও।
শিরীন বেগমের সাথে খানিকক্ষণ কথা বলে সামিদ নিজের রুমে চলে গেল। শিরীন বেগম একা একা বসে পূর্বের কথা ভাবতে লাগলেন।
অতীত,
চার বছর আগে একদিন ভোররাতে আলম শিকদার শিরীন বেগমকে জাগিয়ে তুললেন। শিরীন বেগম জেগে উঠে খুব অবাক হলেন। তিনি দেখলেন তার স্বামী ব্যাগপত্র গুছিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমে শিরীন বেগম স্বপ্ন ভেবে চোখ কচলে তাকালেন। তারপর যখন দেখলেন তিনি যা দেখছেন সত্যি দেখছেন তখন অবাক হয়ে স্বামীকে প্রশ্ন করলেন এসব কী করছেন তিনি।
আলম শিকদার কোনো কারণ না বলে হঠাৎ বললেন আভাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি তৈরি হতে। তারা এক্ষুনি বেরোবে।
শিরীন বেগম হাজার জিজ্ঞেস করেও কোনো কারণ জানতে পারলেন না। উনি স্বামীকে খুব ভয়ও পেতেন। তাই সাহস করে জোরও করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে আভাকে জাগিয়ে তুলে তৈরি হতে বললেন। ভোরবেলা উঠে তৈরি হতে বলায় আভা যেন আকাশ থেকে পড়লো। সে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই তার বাবা এসে ধমক দিয়ে বলল যা করছে তাদের সবার ভালোর জন্যই করছে। এখন তারা না বেরোলে অনেক বড় বিপদে পড়তে হবে।
Short Story
বাবার কথার ওপর আর কোনো কথা বলার সাহস হয়ে ওঠেনি আভার। মনে হাজারো প্রশ্ন নিয়ে তৈরি হয়ে চুপচাপ বাবা মায়ের সাথে বেরিয়ে পড়লো। সে বারবার সুযোগ খুঁজছিল রাইফকে কল বা মেসেজ দেয়ার। কিন্তু তার আগেই আলম শিকদার মেয়ের থেকে ফোন নিয়ে সিম কার্ড ফেলে দিলেন যাতে ঢাকার কারো সাথে যোগাযোগ না থাকে।। আভা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলে আলম শিকদার কোনো উত্তর দেননি।
রাইফের ফোন নাম্বার মুখস্থ নেই ভেবেই আভার দুচোখে পানি জমে গেলেও সে আড়াল করে রেখেছে। সে এটুকু আঁচ করতে পারছে তার বাবা তাদের নিয়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাচ্ছেন। হয়তো আর শহরে ফিরে আসবে না।
আভার আনুমানই ঠিক হলো। আলম শিকদার পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম পালিয়ে গেছেন। সেখানে গিয়ে ছোটখাটো একটা চাকরি জোগাড় করে বাসা ভাড়া থেকেছেন। আভা বা শিরীন বেগম কাউকেই কখনো বলেননি যে কেন তারা পালিয়ে এসেছে। ভয়ে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করার তেমন সাহসও পায়নি। আভা দিনের পর দিন চোখের পানি ফেলেছে রাইফের জন্য। কোনো ভাবেই রাইফ বা ওর কোনো বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি।
আভার লেখাপড়া কোনোমতে চালিয়ে গেছে। প্রতিটা মুহূর্ত সে রাইফকে ভেবেছে। অপেক্ষার প্রহর গুনেছে। চট্টগ্রাম কলেজে অধ্যয়নকালীন সামিদের সাথে আভার খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়। সামিদের পরিবারে কেউ নেই। তাই সামিদ মাঝে মাঝে আভার সাথে ওর বাসায় যেতো। দুবছরের মাথায় আভার বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। তখন আভা আর শিরীন বেগম জানতে পারে আলম শিকদার নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ব্যবসায়ের সব টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে এসেছেন।
ওনার বন্ধু নাকি কোনো কারণে ওনাকে বিশ্বাস করে টাকাগুলো কয়েকদিনের জন্য জমা রাখতে বলেছিল। পুলিশ হাজার খুঁজেও তাকে পায়নি। দুই বছর পর কারো মাধ্যমে পুলিশের কাছে হঠাৎ এই খবর যায়। তখন চট্টগ্রাম পুলিশ খোঁজ খবর নিয়ে আলম শিকদারকে জেলে আটক করে।
আলম শিকদার বেশিদিন জেলে থাকতে পারেননি। অপমান সইতে না পেরে জেলেই আত্মহত্যা করেছেন। আভা আর তার মা এমনিতেই চোখে অন্ধকার দেখছিল। আলম শিকদারের জেলে যাবার পর থেকে সামিদ ওদের সামলে রেখেছে। বাবার মৃত্যুর পর আভা সামিদের সাহায্যে ছোটখাটো একটা চাকরি জোগাড় করে মাকে নিয়ে দিন কাটায়। আর সামিদ ভালো চাকরি পাওয়ায় ঢাকায় চলে আসে। কিন্তু আবার দুই বছর কোনোমতে কাটানোর পর শিরীন বেগম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চিকিৎসা করে জানা গেছে ওনার হার্ট ব্লক হয়ে গেছে। ভালো চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আভার ছোট চাকরিতে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। সে তা টাকা পায় তা দিয়ে মাকে নিয়ে কোনোমতে চালিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে আভা মাকে নিয়ে সামিদের সাথে ঢাকায় চলে আসে চাকরির জন্য। সামিদের অনুরোধে তারা ওর বাসায়ই থাকে।
সামিদের আপন কেউ নেই। তারপর আবার চার বছর ছেলেটা ওদের অনেক সাহায্য করেছে ভেবে তার কথা ফেলতে পারলো না।
নিজের বাবার প্রতি আভার ঘৃণা জন্মে গেছে। শুধুমাত্র বাবার জন্য আজ তার এই অবস্থা। বাবার জন্য সে রাইফের থেকে চার বছর দূরে ছিল। আবার এতো কষ্টে জীবনযাপনও করেছে। এসব কথা ভাবলেই আভার চোখ ফেটে জল বেরিয়ে আসে।
শিরীন বেগম স্বামীর মৃত্যুর পর আভার মুখে রাইফের কথা শোনে। কিন্তু তিনি মেয়ের কষ্ট বুঝতে পেরেও শান্তনা দেয়া ছাড়া কিছুই করতে পারেননি। সামিদও রাইফের কথা শুনেছে আভার মুখে। কিন্তু ও জানতো না যে ওর কোম্পানির চেয়ারম্যানের শ্যালক রাইফই আভার কষ্টের কারণ। আভা যেদিন ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য অফিসে গিয়েছিল ঐদিন আভার মুখে রাইফের কথা শুনে সামিদ অনেক অবাক হয়েছিল।
মাঝে মাঝে আভা ডুকরে কেঁদে ওঠে নিজের জীবনের পরিণতির কথা ভেবে। কিন্তু তার কান্না থামানোর জন্য যেই মানুষটাকে তার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেই মানুষটাই আজ তার কাছে অপরিচিত।