Golperjogot

Golperjogot

lover naki villain season 2 part 16

লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ১৬ থ্রিলার গল্প | মনা হোসাইন

লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২

Mona Hossain { পর্ব ১৬ }


আকাশ কি করে এত বদলে গেল সেটা বুঝার ক্ষমতা মেঘলার হয় নি।সেই হিসাব মিলানোর চেস্টাও মেঘলা করছে না।
মেঘলা কাঁদতে কাঁদতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল।

মেঘলাঃ আমাকে জানতে হবে আকাশ এমন কেন করল?যে করেই হোক ভাইয়াকে ছাড়াতে হবে। কিন্তু আমি তো কাউকেই চিনি না বাসায় গিয়ে বাবাকে সব বলতে হবে এটা ভেবেই মেঘলা তাড়াহুড়ো করে বাসায় ফিরে তার বাবাকে মাকে সব খুলে বলল।

মেঘলার বাবা মা প্রথমে বিশ্বাস করতে পারল না আকাশ এমন করেছে। মেঘলা সব খুলে বলার পর মেঘলার বাবা মা আর মেঘলা জেলে গেল।

নাবিলকে অনেক মারা হয়েছে কিন্তু নাবিল তার বাবা মাকে শান্তনা দিতে কিছু বলল না।বরং তাদের সাহস দিল কিন্তু মেঘলা কিছুই শুনতে রাজি না সে কেঁদেই চলেছে।

মেঘলাঃ ভাইয়া এমন কেন হল?

নাবিলঃ ধুর বোকা কিছুই হয় নি এভাবে কাঁদছিস কেন বোকা আমার কিছুই হয়নি।আর এমন কোন জেল নেই যেখানে নাবিলকে আটকে রাখা যায় আমি খুব তাড়াতাড়ি এখান থেকে বের হব।তোরা চিন্তা করিস না।
বাসায় যা মেঘলা, সাবধানে থাকিস আর বাবা মার দিকে খেয়াল রাখিস বলে নাবিল ভিতরের সেলে চলে গেল।

জেল থেকে বেরিয়ে নাবিলের বাবা মা মেঘলা সবাই মিলে উকিলের কাছে গেল। সাময়িক জামিনের আবেদন করার জন্য।

উকিল সব কাগজ রেডি করে ফেলেছে ঠিক তখনি
কিছু গুন্ডা টাইপের লোক এসে উকিলকে বলল জানের ভয় নাকি? আকাশ ভাইয়ের নিষেধ আছে শহরের কোন উকিল এই কেস নিবে না আপনি কোন সাহসে কেস নিচ্ছেন। আকাশ ভাইয়ের হুকুম এই জামিন হবে না।

উকিল অবাক হল সাথে মেঘলারাও...

আকাশের বাবাঃ পুলিশে দিয়েছে তো দিয়েছে আবার জামিন হতেও দিবে না? আকাশ এমন কেন করছে?

গুন্ডা গুলি ফোনে আকাশের সাথে উকিলের কথা বলিয়ে দিল।আকাশ হুমকি দেওয়ায় উকিল ভয়ে কেস টা নিল না।

মেঘলার বাবাঃ আমি তো বিশ্বাস করতে পারছি না আকাশ এমন করছে... মেঘলা তুই তোর মাকে নিয়ে বাসায় যা আমি আকাশের সাথে দেখা করতে যাব।

মেঘলাঃ আমিও যাব।

মেঘলারা সবাই মিলে আকাশের অফিসে গেল।

আকাশ ওদের দেখে রেগে গেল
আকাশঃ আপনারা এখানে?কি চাই?

মেঘলার বাবাঃ এমন কেন করছিস আকাশ? নাবিল কি করেছে?

আকাশঃ খুন করেছে..

মেঘলাঃ মিথ্যা কথা আমি দেখেছি তুমি ভাইয়াকে ডেকে নিয়ে গিয়েছো। এমন কেন করছো আমাদের সাথে?

পড়ুন  মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ১০ | মোনা হোসাইন

আকাশঃ আংকেল আমাকে খারাপ ব্যবহার করতে বাধ্য করবেন না বাসায় যান এই ব্যাপারে আমি কারো সাথে কোন কথা বলতে চাই না।

মেঘলা আকাশের কলার টেনে বলল সমস্যা কি তোমার?আমাদেরকে কি পাগল মনে হচ্ছে তোমার?ভাইয়া তোমার জন্য কি কি করেছে সব ভুলে গেছো?

আকাশ নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল ভাল কথা ভাল লাগে না তাই না? এই কে আছিস আংকেল আন্টিকে নিয়ে যা এরা যতক্ষন বাইরে থাকবে ততক্ষন ঝামেলা করবে।

কয়েকটা ছেলে এসে বলল ম্যাডামকেও নিয়ে যাব?

আকাশ রাগি চোখে তাকিয়ে বলল ওর গায়ে কোন ছেলে টাচ করবে না যতটুকু বললাম ততটুকুই কর আংকেল আন্টিকে নিয়ে যা।

মেঘলাঃ এসব কি হচ্ছে? বাবা মাকে ছাড়ো ছাড়ো বলছি আকাশ তুমি এত খারাপ কি করে হলে বলতে বলতে মেঘলা গিয়ে ছেলেগুলিকে ছাড়ানোর চেষ্টা করল।

আকাশ মেঘলার হাত ধরে বলল কি বল্লাম? কথা কানে যায় নি? কোন ছেলে তোকে টাচ করবে না তুই কাওকে টাচ করবি না বুঝেছিস?
এই যা তোরা...

মেঘলার বাবা আকাশের ব্যবহার দেখে হতবাক হয়ে গেল।

মেঘলার বাবা মাকে ছেলেগুলি নিয়ে গেল।

মেঘলা ছটফট করছে। তাতে আকাশের কিছু যায় আসল না?সে মেঘলাকে টানতে টানতে গাড়িতে নিয়ে গেল।তারপর নিজেই ড্রাইভ করতে শুরু করল।






আকাশ মেঘলাকে নিয়ে বাসায় গেল...

আকাশঃ খুব বার বেড়েছিস তাই না? যখন যেখানে ইচ্ছা চলে যাচ্ছিস আমাকে বলার প্র‍য়োজন মনে করিস না?আমার কলার ধরার আগে বুক কাঁপে না?পড়াশুনা আছে ভুলেই গেছিস তাই না?

মেঘলা হতবাক হয়ে আকাশের কথা শুনছে একদিনের মধ্যে মানুষ এত বদলে যায় কি করে?

আকাশঃঘরে গিয়ে চুপচাপ পড়তে বসবি...

চেঁচামেচি শুনে আকাশের বাবা বাইরে এসে বলল এসব কি করছিস আকাশ? তুই নাকি নাবিল কে পুলিশে দিয়েছিস?নাবিলের মা বাবাকে আটকে রেখেছিস এখন আবার মেঘলাকে ধরে এনে বলছিস পড়তে বসতে তোর মাথা আদো ঠিক আছে তো?

আকাশঃ অবশ্যই ঠিক আছে, নাবিল দিন দিন আমার প্রতিদ্বন্দি হয়ে উঠছে তাই ওকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলাম।আংকেল ঝামেলা করছিল তাই উনাকে থামিয়ে দিলাম আর এটা তো সারাজীবন আমার কাছেই ছিল এখনো আমার কাছেই থাকবে...পরিক্ষা আছে তাই পড়তে বসবে...!!

কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কোন সাহসে? বল্লাম না পড়তে বসতে যা বলছি ধমক দিয়ে বলল আকাশ।

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ৩৯ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

মেঘলা কাঁদছে....

আকাশের বাবাঃ এই অবস্থায় কেউ পড়তে পারে?

আকাশঃ কেন পারবে না? আর এত কান্নার কি আছে? ওরা তো মেঘলার জীবনে ছিলই না এখনো নেই এটা নিয়ে এত ভাবার কি আছে? এই কদিন যা হয়েছে সব মাথা থেকে বের করে দিলেই হয়।শোন মেঘলা তোর কোনোদিন কেউ ছিল না,এখনো নেই আর থাকবেও না বুঝেছিস?

যদি বেশি বাড়াবাড়ি করিস মা বাবার মরা মুখ দেখতে হবে। পারবি তো সেটা সহ্য করতে? যদি পারিস তাহলে যা মন চায় তাই কর আর যদি না পারিস তাহলে আমি যা বলব তাই করবি।আমার কথার বাইরে একচুল উনিশ বিশ হলে কি হবে বুঝতেই পারছিস।

মেঘলাঃ আকাশ...

আকাশঃ এখুনো কথা বলছিস দাঁড়া মজা দেখাচ্ছি বলে মেঘলাকে টানতে শুরু করল।

আকাশের বাবাঃ আরে জানুয়ার কি করছিস? মেয়েটাকে ছাড়।

আকাশঃ বাবা আমার কথার বাইরে একটা শব্দও আমি শুনতে চাই না বুঝেছো। নিজে নিজের বিপদ ডেকে এনো না।

আকাশের বাবাঃ ক্ষমতা তোকে নষ্ট করে দিয়েছে আকাশ আমি ভাবতেও পারছি না তুই এত নিচে নেমে গেছিস। ছি ছি ছি....

আকাশ তার বাবার কথার গুরত্ব না দিয়ে উপড়ে চলে গেল আর মেঘলাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেল দিল।

আকাশঃ ফ্রেশ হয়ে এসে যেন দেখি পড়তে বসেছিস তা না হলে কি যে করব নিজেই যানি না.... বলে আকাশ ওয়াশরুমে চলে গেল।

মেঘলাঃ আমাকে পেয়েছে টা কি? আমি এখনি চলে যাব এখান থেকে বলে মেঘলা বেরিয়ে পরল।

আকাশ ফিরে এসে দেখল মেঘলা পড়তে বসা তো দুর ঘরের কোথাও সে নেই।আকাশ বুঝল মেঘলা চলে গেছে। মেঘলাকে দেখতে না পেয়ে আকাশ রেগে গেল. জেদ... আমাকে জেদ দেখাস? আজ তোর কি অবস্থা হবে তুই জানিস না।
আকাশ তাড়াতাড়ি এসে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল আর কিছু দুর যাওয়ার পরেও মেঘলাকে দেখতে পেল।

মেঘলা আকাশ কে আগে ভয় পেলেও এখন আর ভয় পায় না তাই মেঘলা স্বাভাবিক ভাবেই বলল আপনি আবার চলে এসেছেন?

আকাশ কোন কথা না বলে গিয়ে মেঘলাকে ঠাস করে থাপ্পড় মারল মেঘলা ছিটকে পড়ে গেল।

মেঘলা আকাশের এই রুপ আগে কখনো দেখে নি আকাশ মারলেও তাতে একটা মায়া থাকত কিন্তু আজ আকাশকে ভয়ানক লাগছে।আকাশকে দেখতে হিংস্র মনে হচ্ছে।

থাপ্পড় টা খাওয়ার পর মেঘলা আকাশকে রীতিমতো ভয় পাচ্ছে।

আকাশ মেঘলার চুলের মুটি ধরে টেনে বলল পালানোর সাহস হল কি করে?

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ২১ থ্রিলার গল্প | মনা হোসাইন

মেঘলাঃ আহ আহ আ আকাশ আমার লাগছে...

আকাশ আরো জোরে টেনে বলল সেটা পালানোর আগে বুঝা উচিত ছিল না? শোন মেঘলা ভালই ভালই বলছি আমার কথার বাইরে কিছু করবি না আমাকে আর রাগাস না।

আকাশ মেঘলাকে নিয়ে ফিরে আসল।
মেঘলাকে ঘরে নিয়ে হাতে বই দিয়ে বিছানায় পড়তে বসতে বলল আকাশ।আর নিজেও বিছানার একপাশে বসে ফোন টিপছে।

আকাশঃ কিরে পড়ছিস না কেন?

মেঘলার চোখ থেকে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে।

মেঘলাঃ আ আ আ...

আকাশঃ আজকাল বইয়ে আহ ইহ উহ এগুলা লিখা থাকে বুঝি?দাঁড়া বেত টা নিয়ে আসি।
বলে আকাশ উঠে গেল আর আকাশ একটা বেত এনে মেঘলার হাত টেনে ঠাস ঠাস করে ২ বার আঘাত করল। আঘাতের তীব্রতায় মেঘলা কেঁপে উঠল।

মেঘলা হতবাক হয়ে গেল আকাশের এমন ব্যবহারের কারন সে বুঝতে পারছে না কিন্তু এইটুকু বুঝে গেছে এই আকাশ আর আগের আকাশ নেই পুরোপুরি ভিলেন হয়ে গিয়েছে তাই ভয়ে পড়তে শুরু করল।

আকাশ বসে বসে মোবাইল টিপছে আর মেঘলা পড়ছে।

মেঘলা বারবার আড় চোখে আকাশ কে দেখছে।

আকাশঃ ফোনের দিকে মুখ রেখেই বলল আমি সিনেমার হিরো নই আমাকে এভাবে দেখার কিছু নেই।পড়ায় মন দে নাহলে মেরে পিঠের চামড়া তুলে নিব।



এদিকে নাবিলের দলের একজন ফোন করে থানায় একজন সিপাহিকে খবর দিল।

সিপাহির সাথে নাবিলের অনেক আগে থেকেই ভাল সম্পর্ক ছিল।তাই সিপাহি গিয়ে নাবিলকে বলল আকাশ তার বাবা মাকে আটকে রেখেছে আর মেঘলাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে।

কথাটা শুনামাত্র নাবিলের পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেল।

নাবিলঃ কি ভাবছিস আকাশ? নাবিল কে আটকে রাখার ক্ষমতা এই জেলের আছে?
তুই কি ভুলে গেছিস নাবিল কি? এত সাহস হয় কি করে তোর? আকাশ সব সীমা পেরিয়ে গেছিস তুই...আর সহ্য হচ্ছে না
প্রস্তুত হ আকাশ, নাবিল আসছে সবকিছুর হিসাব মিলাতে নাবিল আসছে...

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top