Golperjogot

Golperjogot

lover naki villain season 2 part 17

লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ১৭ থ্রিলার গল্প | মনা হোসাইন

লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২

Mona Hossain { পর্ব ১৭ }


যা যা ঘটে গেছে তারপরে পড়ায় মন বসা অসম্ভব কিন্তু আমাকে পড়তে হচ্ছে কারন রাক্ষস টা আমার সামনে বসে আছে...

আজব ব্যাপার পড়ছি তো পড়ছিই এই পড়া কি আজ শেষ হবে না? রাত ১১ টা বাজে তবুও পড়া শেষ করার নাম নেই। খুব রাগ হচ্ছে রেগে গিয়ে বল্লাম আপনার কাজ নেই?এখানে বসে আছেন কেন?

আকাশঃ না নেই কোনদিন থাকবেও না। আজ থেকে প্রতিদিন রাতে আমি তোকে পড়াব...

মেঘলাঃ কি..??

আকাশঃ অবাক হওয়ার কি আছে? এতদিন তো বলতি আকাশ সময় দেয় না এখন দিতে চাইছি এখন অসহ্য লাগছে কেন?

মেঘলাঃ আমি পরিক্ষা দিব না..

আকাশঃ তুই দিবি তোর ঘাড় দিবে বলে আকাশ উঠে চলে গেল।

মেঘলাঃ যাক বাবা বাঁচলাম...বই টা কেবল বন্ধ করতে যাব তখনি বাইরে থেকে আওয়াজ আসল কিরে পড়া বন্ধ হল কেন? জোরে জোরে পড় যেন এখান থেকে শুনা যায়...আমি এখুনি আসছি.

কেন যানি না আকাশের গলা শুনে ভয় পেলাম তাই আবার পড়তে শুরু করলাম কিছুক্ষন পর আকাশ এসে ১ গ্লাস দুধ মেঘলার হাতে দিয়ে বলল খা...

মেঘলার খুব রাগ হচ্ছে। আকাশ এমন ব্যবহার করছে যেন কিছুই হয় নি। এই অবস্থায় খাওয়া বা পড়ার কথা কেউ ভাবতে পারে বলেও মনে হয় না। মেঘলা রাগে দুধটা ছুড়ে ফেলে দিল আর সাথে সাথে মেঘলার পুরো পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গেল কারন আকাশ মেঘলাকে এত জোরেই থাপ্পড় মেরেছে যে মেঘলার মনে হচ্ছে যেন তার হার্টবিট থেমে গেছে ।সাথে সাথে ব্যাথা অনুভব না করলেও কয়েক সেকেন্ড পর ব্যাথা অনুভব করল বুঝল অসহ্যকর যন্ত্রনা হচ্ছে। এতই ব্যাথা করছে যে কাঁদতে ভুলে গেছে মেঘলা।

আকাশঃ এত সাহস হল কি করে নিজের হাতে দুধ গরম করে আনলাম আর তুই সেটা ফেলে দিলি..?? লায় দিতে দিতে মাথায় তুলে ফেলেছি তাই না? তুই কি বুঝতে পারছিস না আমার সাথে জেদ দেখানো যাবে না।

মেঘলা ভয়ে কুঁকড়ে গেল।মেঘলা একহাতে নিজের গালে ধরে আছে আর অন্য হাত ধরে আকাশ মেঘলাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

রান্নাঘরে গিয়ে,
আকাশঃ দুধ গরম কর,করে আমার চোখের সামনে খাবি। জেদ দেখিয়েছিস তাই এখন ২ গ্লাস খাবি।

মেঘলাঃ খাব না আমি কি করবেন?

আকাশঃ দেখতে চাস আমি কি করতে পারি? আচ্ছা তবে দেখ বলে আকাশ এসে আবারও থাপ্পড় মারল।

এবার মেঘলা কেঁদে দিয়েছে আ আ আ
মেঘলাঃ এভাবে মারছেন কেন কি ক্ষতি করেছি আপনার?

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ২২ থ্রিলার গল্প | মনা হোসাইন

আকাশঃ আকাশ কি সেটা তো তুই জানিস না?তাহলে আমার সাথে বাড়াবাড়ি কেন করছিস? যা বলছি ভালভাবে করলেই তো মার খেতে হয় না।

মেঘলাঃ আমি খাব নাকি খাব না সেটা আপনার জানার কি দরকার?

আকাশঃ ৩ গ্লাস....আবার বল খাবি না...??যতবার কথা বলবি ১ গ্লাস করে বাড়বে।

মেঘলার আর সাহস হল না তাই চোখের জল ফেলতে ফেলতে ২ গ্লাস খেল।

মেঘলাঃ বমি পাচ্ছে।

আকাশঃ পাচ্ছে তো কর মানা করেছে কে? বাকি ১ গ্লাস খেয়ে যা মন চায় কর।যত ইচ্ছা বমি কর।

মেঘলাঃ খেতেই হবে?

আকাশ ভিলিনি হাসি দিয়ে মুখের সামনে দুধ টা ধরে বলল না খেলে বেশি কিছু হবে না শুধু ২,৪ টা থাপ্পড় খেতে হবে এই আর কি।

মেঘলা আর থাপ্পড় খেতে চায় না তাই বেশ কষ্ট করে দুধ টা খেল।

আকাশঃ এবার ঘরে গিয়ে চুপচাপ ঘুমাবি।আর যদি কান্না কাটি করিস তাহলে আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না।যদি ভুলেও কাঁদিস তাহলে বিয়ের আগেই আমার সাথে এক ঘরে এক বিছানায় রাত কাটাতে হবে কথাটা মাথায় রাখিস বলে আকাশ নিজের ঘরে চলে গেল।

মেঘলা ঘরে বসে বসে ভাবছে কি হচ্ছে এসব।কেন হচ্ছে? আকাশ নিজের ঘর থেকে বলে উঠল লাইট জ্বলছে কেন? আসতে হবে নাকি...

তাড়াতাড়ি লাইট অফ করে মেঘলা শুয়ে পড়ল।

মেঘলা সকালে উঠে দেখল আকাশ চলে গেছে আজ নাকি তার মিটিং আছে। মেঘলা এসে টিভি অন করে ব্রেকফাস্ট করতে বসল
কিন্তু টিভিতে চোখ রেখে খাওয়ার ইচ্ছা মরে গেল কারন আকাশ নাবিলের পদ টা ইরাকে দিয়েছে।
আকাশ আর ইরা ২ জনের মুখেই হাসি।
আকাশ নিজের হাতে ইরাকে মালা পড়িয়ে বরণ করছে।

এই নিউজটা তাও মেনে নেওয়ার মত ছিল কিন্তু তারচেয়েও বড় ধাক্কা খেল যখন শুনল নাবিল জেল থেকে পালানোর চেস্টা করেছিল আর তাকে শুট করা হয়েছে। নিউজ টা শুনার সাথে সাথে মেঘলা সেন্সলেস হয়ে গেল।

কিছুক্ষন পর যখন জ্ঞান ফিরল মেঘলা ছুটে গেল।

আকাশ নতুন কমিটি নিয়ে ব্যস্ত তাই এখনো নাবিলের নিউজ টা পায় নি।
পার্টি অফিসে সাজ সাজ রব হাজার মানুষের ভীর।
সবার মধ্যমনি আকাশ আর ইরা।২ জনের খুশি যেন আর ধরছে না।

হঠাৎ করেই কাঁচ ভাংগার শব্দে সবাই থমকে গেল।
কারন এটা স্বাভাবিক কোন ভাংচুর না এখানে একটা কাঁচের বোতল ভেংগেছে,আর বোতলটা ভাংগা হয়েছে আকাশের মাথায় সবচেয়ে অবাক করা বিষয় কাজটা করেছে মেঘলা।

আকাশঃ কি করব বা কি বলব বুঝতে পারছি না।মুখ ফোটে বলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছি।অন্য কোথাও আঘাত করলে হয়ত এতটা আঘাত লাগত না কিন্তু মাথায় আঘাত পেয়েছি জায়গায় জায়গায় কাঁচ ঢুকে গিয়েছে।অনবরত রক্ত ঝরছে শরীর ক্রমশ অবশ হয়ে আসছে। কিন্তু আমায় মাথায় এখন শুধু একটা কথাই ঘুরছে আর সেটা হল মেঘলাকে রক্ষা করতে হবে কারন পার্টি অফিসে পার্টির কোন সদস্যের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস দেখানোটাও বিপজ্জনক তার মধ্যে মেঘলা তো আমাকে আঘাত করেছে এখুনি হয়ত সবাই ওকে ছিড়ে খাবে। এখানে ইরা ছাড়া মেঘলাকে কেউ চিনে না। আর ইরা মেঘলাকে রক্ষা করা তো দুর দরকার হলে সবার আগে ওই মেঘলাকে মারবে। মেঘলাকে রক্ষা করার ক্ষমতাও আমার নেই।কি করব আমি খোদা আমাকে শক্তি দাও আমি যেন মেঘলাকে নিরাপদ কোথাও রেখে যেতে পারি।
তুই এটা কি করলি মেঘলা করার হলে বাসায় করতি এখানে কেন? আজ তোকে কে রক্ষা করবে?

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ৩ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে মেঘলাকে আখরে ধরে কথা গুলি ভাবছিল আকাশ।

আমি মেঘলাকে আগলে রেখেছি কিন্তু কতক্ষন রাখতে পারব? আমার যে চোখ ক্রমশো বন্ধ হয়ে আসছে। বুঝতে পারছি আমি জ্ঞান হারাচ্ছি আমাকে নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই। কারন এখানে আমাকে হাসপাতালে নেয়ার মত পাবলিকের অভাব নেই কিন্তু মেঘলাকে রক্ষা করার মত কেউ নেই। আজ গনধোলাই এ মেঘলার অনেক বড় ক্ষতি হবে হয়ত মারাও যেতে পারে।চারদিকে সবাই ক্ষেপে গেছে সবাইকে বুঝানোর খুব চেস্টা করছি ওর কোন দোষ নেই কিন্তু আমার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রনা হচ্ছে।ব্লিডিং হচ্ছে।তবুও আমার চিন্তা শক্তি এখনো বিলীন হয়নি এটাই হয়ত ভালবাসা।ভালবাসার মানুষের জন্য মৃত্যুর এক মুহুর্ত আগে পর্যন্তো যুদ্ধ করা যায় যা আমি করে চলেছি।

আজ কি তবে আমাদের ভালবাসার অবশান হবে নিয়তির খেলায় ২ টি আত্মার বন্ধন ছিন্ন হয়ে যাবে?আমি যখন মেঘলাকে সামলাতে ব্যাস্ত তখনি আমার হাতে টান পড়ল। চোখ মেলে দেখলাম মেঘলাকে সবাই মিলে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

না ওরা কোন মেঘলাকে কে নিয়ে যাচ্ছে না বিশ্বাস করুন আমার কাছ থেকে আমার আত্মাটাকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাচ্ছে,

মেঘলা আমার দিকে তাকিয়ে বাচ্চাদের মত কান্না করছে।মেঘলার অসহায় চাহনি আমার ভিতরটাকে ধুমরে মোচরে দিচ্ছে। কি করে বুঝাব আমার ভিতরে যে রক্তক্ষরন হচ্ছে তা বাইরের আঘাতের চেয়ে অনেক ভয়াবজ। যানি মেঘলা আমার জন্যই কাঁদছে কিন্তু সেটা আমি ছাড়া কেউ বুঝবে না। প্রকৃতির খেলায় আজ আমি এক অসহায় পথিক যে কিনা নিজের চোখে নিজের আত্মার বিসর্জন দেখছে।ভিতরে আত্মাটা ছটফট করলেও শরীরে এক ফোঁটা শক্তি নেই মুখ ফোটে বলতে পারছি না আমার জানকে ছেড়ে দাও।
আমার আত্মার আর্তনাত কেউ শুনতে পাচ্ছে না।যানেনএই মুহুর্তে আমার কথা মনে পড়ছে? হ্যা আমার এখন নাবিলের কথা খুব মনে পড়ছে পৃথিবীতে এই একটাই মানুষ ছিল যে কিনা আমার না বলা কথা বুঝতে পারত। কিন্তু আমি নিজের স্বার্থে ওকে নরকে ঠেলে দিয়েছি।আজ ও যদি থাকত আমি নিশ্চিন্তে মরতে পারতাম আমার আঘাত টা নেহাৎ কম নয় কিন্তু মেঘলাকে এই অবস্থায় রেখে আমি যে মরেও শান্তি পাব না।
কথা গুলি ভাবতে ভাবতেই আকাশ জ্ঞান হারাল।

পড়ুন  Love Never Ended Part 14 | Come Back Sad Love Story

আকাশকে হাসপাতালে পাটিয়ে দেয়া হল কিন্তু এদিকে মেঘলার করুন অবস্থা।

মেঘলা মেয়ে বলে সবাই বলেছিল ওর গাঁয়ে হাত না তুলে পুলিশে দিতে কিন্তু ইরা তাতে সায় দেয় নি।ইরা এই সুযোগটাকে মিস করতে চায় নি তাই সে বলেছে মারের বিচার মার দিয়েই হবে।

মেঘলা অসহায়ের মত এদিক ওদিক দেখছে সবাই তাকে মারার প্লেন করছে সেটা এখনো তার মাথায় ঢুকে নি সে তো আকাশের চিন্তায় চিন্তিত রাগের মাথায় কাজটা করে ফেল্লেও আকাশের রক্ত দেখে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারছে মনে মনে হাজারবার প্রার্থনা করছে আকাশের যেন কিছু না হয়। কারন সেও যে আকাশ কে প্রানের চেয়ে বেশি ভালবাসে।

মেঘলাঃ আকাশ সত্যিই বলত আমি আসলেই বোকা কি থেকে কি করে ফেল্লাম? যানি পাপ করেছি আমি পাপি তবুও তোমার কাছে ২ হাত তুলে ভিক্ষা চাইছি খোদা তুমি আকাশ কে সুস্থ করে দাও তোমার কাছে আর কখনো কিছু চাইব না তুমি শুধু আমার আকাশ কে ঠিক করে দাও।কেউ না যানুক তুমি তো যানো আকাশকে আমি কতটা ভালবাসি। আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও আকাশকে সুস্থ করে দাও।

ইরার মুখে বিজয়ের হাসি মেঘলাকে প্রথম আঘাতটা ইরাই করল....!!
মেঘলা আকাশের হাতে মার খেলেও এমন মারের সাথে পরিচিত না এক একটা আঘাতে মেঘলা মৃত্যু যন্ত্রনা অনুভব করছে।

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top