Golperjogot

Golperjogot

lover naki villain season 2 part 29

লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ২৯ থ্রিলার গল্প | মনা হোসাইন


নাবিল যখন আকাশ কে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ব্যাস্ত ঠিক তখন ইরা আর কিছু গুন্ডা এসে নাবিল আর আকাশ কে ঘিরে ধরল।

ইরাঃ তোদের কারোরি আজ আর এখান থেকে ফিরা হবে না।

নাবিল বেশ অবাক হল কারন সে জানত ইরা আর যাই হোক আকাশ কে ভালবাসে কিন্তু আকাশের এই অবস্থায় তার আচারন দেখে সে অবাক হল।

নাবিল রেগে গিয়ে বলল,কাকে কি বলছো মাথায় আছে ইরা? তোমাকে তো আমি এক তুরিতে উপড়ে পাটিয়ে দিতে পারি কিন্তু আমার হাতে এখন সময় নেই আমার সামনে থেকে সরো নিজের কপাল নিজে পুড়াতে এসো না।নাবিল এতদিন চুপ করেছিল তারমানে এই না যে সে দুর্বল হয়ে গেছে নাবিল আগেও যা ছিল এখনো তাই আছে। চুপ ছিলাম কারন এতদিন আমার বিপক্ষে ছিল আকাশ।আপনজনের বিরুদ্ধে তো যুদ্ধ করা যায় না কিন্তু এখন আর কোন পিছুটান নেই আমাকে রাগালে কি কি হতে পারে তুমি ভাল করেই যানো আর আমার সাথে তুমার এই চেলাপেলা যে পেরে উঠবে না সেটাও তুমি যানো যদি এতদিনেও না বুঝে থাকো সেটা তোমার ব্যার্থতা।সরো বলছি।

ইরাঃ তোদের এসব লীলাখেলা অনেক সহ্য করেছি আর না। এই কে আছিস এটাকে বেঁধে ফেল...
ঠিক তখনি ইরা অনুভব করল কেউ তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়েছে।

ইরা বেশ অবাক হয়ে পিছনে তাকাল আর দেখল আবির তার দিকে বন্দুক তাক করে দাঁড়িয়ে আছে।

আবিরঃ অংকে যে একটু ভুল ছিল ম্যাডাম তাই শেষ সমাধান টা হল না। সব ঠিকেই আছে শুধু ফিগারটা টেনে দিলেই অংকের ফল মিলে যাবে তবে ফল টা আপনার ইচ্ছা মত না আমার ইচ্ছামত হবে।

ইরা হতবাক হয়ে গেল।

আবিরঃ ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে যাও নাবিল ভাই আমি এটাকে সাইজ করে মেঘলাকে নিয়ে আসছি।

নাবিলঃ একে তো পরে বুঝে নিব। এখন এসবের সময় নেই তুই আমার সাথে চল বলে ইরার চেলাপেলাদের উদেশ্য করে বলল আমাদের সাথে লড়ার ইচ্ছা আছে নাকি? বলার সাথে সাথেই জায়গা খালি হয়ে গেল।তারপর নাবিল আকাশকে গাড়িতে তুলে মেঘলাকেও তুলে আবির আর নাবিল ইরাকে সেখানেই রেখে হাসপাতালের উদ্দেশ্য রওনা দিল।

হাসপাতালে যাওয়ার পর আকাশকে icu তে নেয়া হল আর মেঘলাকে নরমাল বেডে দেয়া হল। মেঘলাকে ইনজেকশন দেয়ার সাথে সাথেই মেঘলার জ্ঞান ফিরে আসল। মেঘলা মিটমিট করে তাকাল।প্রথমে শান্ত থাকলেও পরক্ষনেই চিৎকার করে উঠল।

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ১২ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

মেঘলাঃ ভাইয়া আকাশ....আমার আকাশ কই?

মেঘলাকে শান্তনা দেয়ার জন্য নাবিল বলল শান্ত হ মেঘলা আকাশ ঠিক আছে...

মেঘলাঃ আমি ওর কাছে যাব ছাড় আমাকে মেঘলাকে অনেক বাঁধা দেয়ার পরেও আটকানো গেল না সে সারা হাসপাতাল জুড়ে পাগলের মত আকাশকে খুঁজে বেরাচ্ছে।

মেঘলার অবস্থা দেখে নাবিল কাঁদছে।

আবিরঃ শান্ত হও ভাই সব ঠিক হয়ে যাবে আকাশ ভাইয়ের কিছু হবে না।

নাবিলঃ কি করে শান্ত হব বলতে পারিস আজ আমার জন্যই এতকিছু হল আমি কেন আকাশকে ভরসা করলাম না আমি যদি সেদিন জেল থেকে না পালাতাম তাহলে এত কিছু হতই না।

আবিরঃ দোষ টা শুধু তোমার না ভাই যা করেছিল ভুল করেছিল আমরা এখনো যানি না আসল কাহিনী টা কি? এসব করার কি দরকার ছিল? তোমাকে একবার বলতে পারতো তোমরা তো এতটাও দুর্বল ছিলে না যে কারোর ইশারায় চলতে হবে চাইলেই ২ জন মিলে সব সমস্যার সমাধান করে নিতে পারতে। আচ্ছা বাদ দাও চলো মেঘলাকে শান্ত করি।

আবির গিয়ে মেঘলাকে ধরল।
মেঘলাঃ ছাড়ো আমাকে... আকাশ কোথায়?

আবিরঃ এখন যে খুব দরদ দেখাচ্ছো?এতদিন দরদ কোথায় ছিল? সব ভুলে গেছো আকাশ তোমার সাথে তোমার ফ্যামেলির সাথে কি করেছিল।ভাগ্যগুনে আজ নাবিল ভাই জীবিত কিন্তু ভাগ্য যদি সহায় না হতো এতদিন নাবিল ভাইয়ের হাড়গুলিও থাকত না বুঝেছো?অন্যায় করলে তার শাস্তি পেতে হয় আকাশও পাচ্ছে শান্ত হও সব ঠিক হয়ে যাবে।আকাশ ভাই icu তে আছে খুব তাড়াতাড়ি ভাল হয়ে যাবে আশা করছি।

তখনি ডাক্তার আসল নাবিল দৌড়ে গিয়ে আকাশের ব্যাপারে জানতে চাইল।

ডাক্তারঃ অবস্থা বেশ ক্রিটিকেল ২৪ ঘন্টার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না প্রচুর রক্ত ক্ষরন হয়েছে আর বুলেট টাও বিপজ্জনক ভাবে আটকে আছে সেটা বের করতে অপারেশন লাগবে উনাকে o.t তে ট্রান্সফার করা হয়েছে।আমরা সর্বোচ্চ চেস্টা করছি বাকি টা উপড়ওয়ালার ইচ্ছা একটা কাগজ দিয়ে বলল মেডিসিন গুলি নিয়ে আসুন আর আপনারা ব্লাডের ব্যাবস্থা করুন।

কথাগুলি শুনে নাবিল মাটিতে বসে পড়ল।
আবির এসে নাবিলকে ধরল।

আবিরঃ ভাই এভাবে ভেংগে পড়বে না প্লিজ তুমি এভাবে ভেংগে পড়লে আকাশের পাশে কে দাঁড়াবে? আকাশের এখন তোমাকে প্র‍য়োজন উঠো ভাই উঠো।

পড়ুন  ভার্সিটির রাগি মেয়ে যখন বউ অনুগল্প | Romantic Love Story

নাবিলঃ পারব নারে কিছুতেই পারব না আকাশ আমার কাছে কি সেটা পৃথিবীর কাউকে বুঝানো সম্ভব না আজ যদি ওর কিছু হয়ে যায় তাও আমারি ভুলের কারনে নিজেকে কি করে ক্ষমা করব? আমি আর বাঁচতে চাই না আবির।

নাবিল পুরোপুরি ভেংগে পড়েছে মেঘলাও কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে পড়েছে আবির বোঝল ওদের বুঝিয়ে কাজ হবে না কিন্তু আকাশের জন্য রক্তের ব্যাবস্থা করতে হবে তাই নাবিলের হাত থেকে কাগজটা নিয়ে বলল আমি মেডিসিন আর ব্লাড নিয়ে আসছি।

আবির যাওয়ার সময় মেঘলার কাছে গিয়ে বলল মেঘলা দেখো আমি যানি তোমার মনের অবস্থা এখন কেমন কিন্তু তোনার চেয়েও নাবিল ভাই বেশি ভেংগে পড়েছে এখন ইমোশনাল হয়ে যদি নিজেত কোন ক্ষতি করে বসে?কিন্তু আমাকে তো মেডিসিন আনতে যেতে হবে তুমি ভাইয়ের দিকে খেয়াল রেখো প্লিজ আমি এখনি ফিরে আসব।

আবির চলে যাওয়ার পর মেঘলা লক্ষ্য করল নাবিল ফোনে কিছু একটা শুনছিল তারপর হটাৎ করেই ফোন টা ছুড়ে ফেলে দিয়ে কাঁদতে শুরু করেছে।

মেঘলা গিয়ে ফোনটা হাতে নিল,তারপর দেখলো তাতে কয়েটা ভয়েজ এসমেস এসেছে।

মেঘলা একটা ভয়েজ চালু করল। আর অবাক হয়ে গেল কারন তাতে ল একটা মেয়ের কান্নার আওয়াজ শুনা যাচ্ছে।

সামিরাঃ নাবিল তুমি আমাকে এভাবে ঠকাতে পারো না প্লিজ ফিরে এসো আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।জীবনে এই প্রথম কাউকে এতটা ভরসা করেছিলাম যদি আমাকে ছেড়েই যাবে তাহলে কেন আমাকে নিজের হাতে গড়ে তুলে ছিলে? তুমি কি যানো আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে তুমি চলে গেছো জন্যে মা বাবা নিজেদের সম্মান বাঁচাতে আমাকে জনির সাথে বিয়ে দিচ্ছে। আমি মিথ্যা বলছি না জান আমার সত্যিই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।তুমি কি বুঝতে পারছো তোমার সামিরা অন্য কারো হয়ে যাচ্ছে নাবিল। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমার বিয়ে তুমি প্লিজ এসো।আমি তোমার হাত ধরে বাঁচতে চাই নাবিল শুধু তোমার হাত ধরেই বাঁচতে চাই...

অন্য আর একটা এসেমেসে।
..ঃ তুমি কোথায় জান কতবার কল করেছি ফোন কেন তুলছো না? অনেক গুলি ভয়েজ ও তো পাঠিয়েছি তুমি কি আমার কথা শুনতে পারছো না? তবে কি সব মিথ্যা তুমি সত্যিই আমায় ভালবাসো না? তুমি যদি ভাল নাই বেসে থাকো তবুও শুনে রাখো আমি তোমায় ভালবাসি..আজ যদি তুমি না আসো আমি অন্য কারোর বউ হওয়ার আগে আত্মহত্যা করব...

পড়ুন  তোমার আমার প্রেম – লাভস্টোরি পর্ব 16 | Bangla Golpo

মেঘলাঃ ভাইয়া.... এগুলি।

নাবিলঃ ছাড় তো...

মেঘলাঃ মেয়েটা সোসাইড করবে বলছে..

নাবিলঃযানি আমি না গেলে সত্যিই করবে কারন ও এমনেই খুব ভালবাসে আমায়। কিন্ত যার কপালে যা লিখা আছে তাই হবে আমি বা তুই কি করতে পারি?

মেঘলাঃ তুই ভাল বাসিস না?

নাবিল কেঁদে ফেলল আর বলল বাসি খুব ভালবাসি...

মেঘলাঃ তাহলে যাচ্ছিস না কেন?

নাবিলঃআমি ওকে ভালবাসি কিন্তু আকাশকে তার চেয়ে বেশি ভালবাসি। ওকে আমি এই অবস্থায় ফেলে যেতে পারব না তাতে যদি সব উলট পালট হয়ে যায় তবুও না। আমি যানি ইরা সুযোগ পেলেই আকাশের উপড় এট্যাক করবে। আমার কাছে আকাশের প্রানের চেয়ে প্রিয় আর কিছু নেই।

তখনি একজন নার্স আসল,আকাশের বাসার কে আছেন?
নাবিলঃ জ্বি আমি আছি বলুন...

নার্সঃব্লাড কোথায় তাড়াতাড়ি দিন পেসেন্টের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে।এখনি ব্লাড দিতে হবে।

নাবিলঃ আমি এখনি নিয়ে আসছি বলেই নাবিল ছুটতে লাগল।

মেঘলার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে তখন নাবিলের ফোনে আবার এসমেস আসলো...
এবারেরটা ভিডিও তাতে মেয়েটা বিয়ের সাজে আছে আর সে ফ্যানের সাথে শাড়ি পেঁচাচ্ছে ফাঁসি দেয়ার জন্য।

মেঘলাঃ যানি ভাইয়া মেয়েটাকে ভালবাসে কিন্তু তারচেয়ে বেশি বাসে আকাশ কে।এখন আমি কি করব? আকাশকে এই অবস্থায় চলে যাব?কিভাবে যাব? না গেলে যে ভাইয়ার ভালবাসা চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাবে...
মেঘলা গিয়ে আকাশের কেবিনের সামনে দাঁড়াল
আকাশের নিথর শরীরটা বেডে পড়ে আছে রক্তক্ষরন এখনো বন্ধ হয় নি ডাক্তার রা সবাই চিন্তিত চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে।

মেঘলাঃ আমাকে ক্ষমা করো আকাশ তোমাকে এই অবস্থায় রেখে চলে যাচ্ছি। কি করব বলো আমার ভালবাসাকে আগলে রাখার জন্য তো ভাইয়া আছে কিন্তু ওর ভালবাসাকে বাঁচানোর জন্য কেউ নেই আমাকে যেতে হবে...আমি ফিরে আসব জান তুমি সুস্থ হয়ে যাও প্লিজ।আমাকে রেখে তুমি কোথাও যাবে না কিন্তু...

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top