Golperjogot

Golperjogot

lover naki villain season 2 part 5

লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২ – পর্ব ৫ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

লাভার নাকি ভিলেন সিজন ২

Mona Hossain { পর্ব ৫ }


যখন মেঘলার জ্ঞান ফিরল তখন সকাল হয়ে গেছে। মঘলা চারপাশ টা থেকে ডুকরে কেঁদে উঠল...

বোকা কি আমি নাকি তুই বোঝতে পারছি না। মানে কান্না করার কোন কারন দেখতে পাচ্ছি না তাই বলছিলাম। কাঁদছিস কেন? মেঘলার ঠিক পাশ থেকে খরবের কাগজের আড়াল থেকে মুখ বের করে বলল উঠল আকাশ?

মেঘলা পাশ ফিরে আকাশ কে জড়িয়ে ধরল...

আকাশও মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে বলল এবার বল আমি কে...

মেঘলাঃ......

আকাশ আবার ধমক দিয়ে বলল,বল আমি কে?

প্রভুভক্ত বিড়ালের মত আকাশ কে আরও জড়িয়ে নিয়ে আকাশের বুকে মাথা নিচু করে ইনোসেন্ট ভাব নিয়ে মেঘলা জবাব দিল আকাশ...

আকাশ মেঘলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আবার জিজ্ঞাস করল কে হই তোর....??

মেঘলাঃ ভাইয়া না,ভাইয়া ছাড়া অন্য কিছু।

আকাশঃ তবুও লাভার বললি না?

মেঘলাঃভিলেন কে লাভার বলতে বয়ে গেছে আমার (মনে মনে)

আকাশঃ যাক ভাইয়ার ভুত মাথা থেকে নেমেছে তাতেই হয়েছে...এবার থেকে আপনি নয় তুমি করে বলবি আমায়।

মেঘলাঃ আচ্ছা বলব কিন্তু আপনি বলুন আমি এখানে আসলাম কি করে...??

আকাশঃ তোর জ্ঞান ছিল না তাই একা একা ওই রুমে রাখি নি আমার রুমে নিয়ে এসেছি চিন্তা করিস না দরজা খোলা ছিল আর আমি এখুনো শুই নি...তাই এক বিছানায় থাকি নি আমরা।

মেঘলাঃ আমি এটা জানতে চাইনি বল্লাম আমি তো রাস্তায় ছিলাম? কোন রাস্তায় ছিলাম নিজেও জানি না আপনি আমাকে খুঁজে পেলেন কি করে?

আকাশঃ যে দিকেই গিয়েছিস চকলেট ফেলতে ফেলতে গিয়েছিস শুধু আমি কেন যেকেউ এই খুঁজে পেত...!!!

আকাশ আর মেঘলা কথা বলছিল তখনি নাবিল ঘরে ঢুকল সাথে সাথে আকাশ মেঘলাকে বুক থেকে সরিয়ে দিয়ে নেড়েচেড়ে বসল।

নাবিলঃ সরি সরি ভুল সময় চলে এসেছি...

আকাশঃ ধুর কি যে বলিস ভিতরে আয়।

নাবিল কে দেখে মেঘলার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।

মেঘলাঃ এই তুই এখানে কি করছিস? বের হ এক্ষনি বের হ বাসা থেকে তোর মুখ দেখতে চাই না।

আকাশঃ এই মেয়ে এসব কি বলছে আকাশ মেঘলা মুখ চেপে ধরে বলল কি বলছিস এসব।চুপ কর নাবিল তুই কিছু মনে করিস না দোস্ত ভিতরে আয় প্লিজ।

আকাশ মুখ চেপে ধরায় মেঘলার কথা বুঝা যাচ্ছে না কিন্তু সে থেমে নেই একমনে বকা দিয়েই চলেছে আর আকাশের হাত থেকে ছুটার জন্য ছটফট করছে...

মেঘলাঃ উম মম ম মি আ....

আকাশঃ হ্যা হ্যা তোর উমম মি মি আ আ.... আমরা সবাই বুঝেছি এবার অফ যা।

মেঘলা সুযোগ পেয়ে আকাশের হাতে জোরে কামড় বসিয়ে দিয়ে বলল ফাযলামি করেন আমার সাথে?আমি বলছি না ও কে বেরিয়ে যেতে... ও যদি এখানে থাকে আমি চলে যাব বাসা থেকে...

আকাশঃ আচ্ছা যাস যাওয়ার আগে আমাদের ২ জনের জন্য ২ কাপ কফি বানিয়ে দিয়ে যা।

মেঘলাঃ কি.... আমি এই বেয়াদব গুলোকে কফি খাওয়াব? আপনাদের আমি বিষ খাওয়াব বিষ।

আকাশঃ আচ্ছা সেটাই নিয়ে আয় যা...

মেঘলাঃ পাড়ব না আমি

পড়ুন  Heart Touching Short Story in Bangla 2021 - Valobasha

আকাশ চোখ পাকিয়ে বলল উম মেঘলা বেশি হয়ে যাচ্ছে....

নাবিলঃ আচ্ছা থাম তোরা আমাকে নিয়ে ঝগড়া করতে হবে না আমি বরং এখন যাই আকাশ...

আকাশঃ পাগল হলি নাকি? ভিতরে আয় তো মেঘলা তোর মুখ থেকে আর একটা শব্দও শুনতে চাই না চুপচাপ যা কফি নিয়ে আয়।

মেঘলা গাল ফুলিয়ে চলে যাচ্ছিল তখনি নাবিল মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে ফেলল আর আকাশ কে বলল...আকাশ তুই আমার বুড়ি টাকে সময় রাগাস কেন...


মেঘলা নাবিলের বুকে মুখ লুকিয়ে বলল সবসময়েই এমন করে...খালি বকা দেয় আবার মারেও।

আকাশঃ তুই তো খুব সাংঘাতিক মেয়ে রে মেঘলা এই ১ মিনিট আগেও তুই নাবিলের বিপক্ষে ছিলি আর এখন ওর কাছেই আমার ব্যাপারে নালিশ করছিস...

মেঘলাঃ মিথ্যা বলেছি নাকি যা সত্যি তাই তো বলেছি

আকাশঃ সত্যি বলেছিস কিন্তু ভুলে যাচ্ছিস নাবিল আমার বন্ধু আমি যতই ভুল করি ওর কাছে ভুল মনে হবে না তেমনি আমার চোখেও ওর কোন ভুল ধরা পড়ে না।

নাবিলঃ আকাশ চুপ করবি....এই তো বাচ্চা মেয়ে এই এসব কি করে বুঝবে?মেঘলা একটু কম বুঝে বেশি করে জানিস তো তাহলে ওর কথা ধরছিস কেন?আচ্ছা বুড়ি আয় তো বস আমার কাছে কয়েকটা কথা বলি।

আকাশঃ যাই বল, যত ভাল করেই বল কোন কাজ হবে না। ম্যাডামের মাথায় কিছু ঢুকবে না।একে তো মাথা মোটা তার উপড় রাগে ভর্তি...এটা তোর সত্যি বোন তো? আমার ত সন্দেহ হচ্ছে তোর বুদ্ধির ১০০ ভাগের ১ ভাগ ও ওর মাথায় নেই।আছে শুধু জেদ।

মেঘলা নাবিল কে উদ্দেশ্য করে বলল ভাইয়া....

নাবিলঃ আকাশ থামবি..??

আকাশঃ আচ্ছা বাবা আমি চুপ এবার তোরা বল...

নাবিলঃ আসলে মেঘলা তুই তো খুব বোকা... বোকা কথাটা শুনে মেঘলা চোখ বড় বড় করে নাবিলের দিকে তাকাল।

নাবিল আমতা আমতা করে বলল না মানে বলতে যাচ্ছি যে ছোট তুই তো ছোট তাই একটু কম বুঝিস তাই আমাকেই দায়িত্ব টা নিতে হল...

আকাশঃ কিসের দায়িত্ব?

নাবিলঃ তোর কি মনে হয় আকাশ? এত রাতে একটা ছেলে আমার বোনের রুমে ডুকেছে আর আমি বড় ভাই হয়ে সেটা টের পাই নি? এতটাই কেয়ার লেস নাবিল?আর আমার বাসার দেয়াল টপকে বাসার ভিতরে ঢুকার সাহস যে তুই ছাড়া কোন ছেলের নেই সেটা কি আমি জানি না?

মেঘলা অবাকের সাথে রাগ মিশিয়ে বলল তুই জেনেও আমাকে বকা দিলি বাসা থেকে বের করে দিলি...??

নাবিলঃ হুম দিলাম কারন আমি তোকে যতটা ভালবাসি আকাশকেও ততটাই বাসি।যেটা তোর করা উচিত ছিল সেটা তো বুঝলি না তাই আমি করলাম।
আকাশ কে আমি চিনি কেউ ওর দিকে আংগুল তুলতে পারে এমন কোন কাজ আকাশ কখনো করে না।
কিন্তু কাল রাতে করল এত রাতে বিনাঅনুমতি তে একটা মেয়ের বেড রুমে ঢুকল যে ছেলে কোনদিন মেয়েদের সাথে কথা বলেনি কেউ তার দিকে খারাপ চোখে তাকাবে বলে সেই ছেলে যখন লুকিয়ে তোর রুমে ঢুকল তখনি বুঝলাম ওর তোকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হচ্ছে আর তুই নিজেও যে ওকে ছাড়া কত টা কষ্ট পেয়েছিস সেটা তো নিজের চোখেই দেখেছি।
তাই ইচ্ছা করেই তোকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছি যাতে আকাশ তোকে আবার এই বাসায় নিয়ে আসতে পারে।সরাসরি বললে বাবা মা কখনই তোকে আসতে দিত না। এখানে তাকতে দিয়ে রাজি হত না তাই নিজ দায়িত্বে একটু অন্যরকম ভাবেই তোদের একসাথে ইচ্ছাটা পুরন করে দিলাম।

পড়ুন  রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 5 – Bangla Premer Story

আকাশ নাবিল কে জড়িয়ে ধরে বলল একেই বলে বন্ধু কখনো মুখ ফোটে কিছু বলতে হয় না সব আগেই বুঝে যায়।

নাবিলঃ মুখে না বল্লেও মেঘলা যখন চলে যাচ্ছিল তুই যে ওর হাত ধরে আটকালি সেটার কারন মেঘলা না বুঝলেও আমি ঠিকি বুঝেছিলাম।

আচ্ছা মেঘলা এটা বল আকাশ যে তোর ব্যাগ রেখে দিল কেন দিল? তোর জামা কাপড় নিজে পড়বে বলে?নাকি তোর মেকাপ দিয়ে রুপচর্যা করবে কোনটা? ও মেয়েদের জিনিসপত্র দিয়ে কি করবে একবারো ভাবলি না...বুঝলি না আকাধ তোর জিনিসপত্র চাচ্ছে না তোকে যেতে নিষেধ করতে চায়ছে...

মেঘলাঃ সত্যিই তো আমি তো এভাবে ভাবি নি।

নাবিলঃ তা ভাব্বি কেন?পারিস তো শুধু গাল ফুলাতে....আর আকাশের দোষ ধরতে আরও একটা জিনিস পাড়িস আকাশ কে মুখ ভরে ভাইয়া ডাকতে পারিস...

আকাশঃ সে ব্যাবস্থা অবশ্য করেছি আজ প্রমিজ ডেতে ও প্রমিজ করেছে আমাকে আর ভাইয়া বলবে না।

নাবিলঃ বোধদয় হয়েছে তাহলে...

মেঘলাঃ আমি নাহয় বোকা কিন্তু তুই তো চালাক তা তুই যে আমায় এত রাতে বের করে দিলি তখন তো আকাশ বাসায় ছিল আমার যদি বিপদ হত?
আর বিপদ হয়েও ছিল।

নাবিলঃ আকাশ কত স্পীডে ড্রাইভ করতে পারে তোর ধারনা না থাকতে পারে কিন্তু আমার আছে। ওর বাসা থেকে আমার বাসা কত দূরে? আমি জানতাম আমি তোকে বের করে দিতে দেড়ি হবে ওর আসতে দেড়ি হবে না।

মেঘলাঃ কিন্তু ও তো আসে নি জানিস আমার সাথে কি হয়েছিল?

নাবিল রাগি লুক নিয়ে আকাশের দিকে তাকাল...

আকাশঃ দোস্ত দোস্ত মারিস না প্লিজ বিশ্বাস কর আমি ওকে অজ্ঞান করতে চাইনি শুধু একটু ভয় দেখাতে চেয়েছিলাম ।

মেঘলাঃ এসবের মানে কি?

আকাশঃ লোকের কি খেয়ে দেয়ে কাজ নেই নিজের হাতে নিজের মরন লিখবে নাবিলের বাসার সামনে থেকে তার একমাত্র বোনের দিকে নজর দিবে...?? না এত বোকা কেউ নেই।সত্যি বলতে তোর রুমে ঢুকতে আমার নিজেরেই বুক কাঁপছিল আর সেখানে অন্য ছেলেরা তো কোন ছাড়...
ওই ছেলেগুলিকে আমিই পাঠিয়েছিলাম মেঘলা
কিন্তু বিশ্বাস কর তুই ধাক্কা খাবি এটা ভাবি নি এই দেখ কান ধরছি আর এমন করব না।

মেঘলাঃ তোরা ২ টাই খুব খারাপ জীবনেও মিশব না তোদের সাথে...বলে মেঘলা উঠে যাচ্ছিল তখন নাবিল মেঘলার হাত ধরে বলল আবার রাগ করছিস?

মেঘলাঃ না রাগ করিনি বস কফি নিয়ে আসছি।বলে চলে গেল।

নাবিলঃ আমি যার জন্য আসলাম এখন সেটা বলি...

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ২১ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

আকাশঃ জানি কি বলবি... মেঘলা কালকেও ড্রাকস নিয়েছে এই তো...??

নাবিলঃ তুই কি করে জানলি..?? মেঘলা বলেছে?

আকাশঃ ওই কি বলার মেয়ে নাকি?
আমার এত লুতুপুতু ভালবাসা নেই সেটা তো তুই ভাল করেই জানিস। চকলেট ডে বা ভেলেন্টাইন তাতে আমার কিছু যায় আসে না আমি মুলত কাল রাগে গিয়েছিলাম তোর বাসায়।
মেঘলাকে এতবার ফোন দিলাম ধরল না তাই গিয়েছিলাম প্রেম করতে নয়। গিয়ে দেখলাম বেড সাইডে খাবার রাখা দেখিই বুঝলাম তিনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই সবার সাথে খেতে পারেন নি আর ঘুম মানেই তো.... বুঝতে বাকি রইল না ড্রাগস নিয়েছে।
তাই রাগ টা কন্ট্রোল করলাম গায়ে হাত তুললাম না।ওকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাও আমার ছিল না কিন্তু দেখলাম মুখ চোখ শুকিয়ে আছে আর খাবার গুলিও ঠান্ডা হয়ে গেছে তাই ভাবলাম একটু কিছু খায়িয়ে দিয়ে আসি তাই বাইরে নিয়ে গেলাম খাওয়ানোর জন্য।

জানিস সেখানেও মজার কাহিনি করল মেঘলা।

নাবিলঃ কি কাহিনি?

আকাশঃ আরে এত রাতে কোন রেস্টুরেন্ট খোলা থাকে নাকি? কিন্তু স্টেশনের দোকান গুলি তো সারারাত খোলা থাকে তাই মেঘলাকে ওখানে নিয়ে গেলাম আর ও বোকার মত জিজ্ঞাস করল স্টেশনে কেন গিয়েছি বল্লাম তোকে বেচে দিব মেঘলা সেটাই বিশ্বাস করল আর কান্না জুরে দিল দেখে কি যে হাসি পাচ্ছিল...

নাবিলঃ মেঘলা আসলেই মাথা মোটা...

২ জনেই হাসছিল তখন মেঘলা মুখ শুকনো করে এসে কফি দিল।

আকাশ মেঘলার অবস্থা দেখে বলল আবার কি হল মুখটা এমন করেছিস কেন..???

মেঘলাঃ সরি...

আকাশঃ কিসের জন্য...

মেঘলাঃ আপনার হাতে কামড়ে দিয়েছি...

আকাশের এতক্ষন মনেছিল না এবার মনে পড়ল আর হাতের দিকে তাকাল সত্যিই লাল হয়ে আছে।

নাবিল হাসি আটকাতে পারল না জোরে হেসে দিল।


নাবিলঃ কি ঝামেলায় পড়লাম বল তো আকাশ।একদিকে এটা আমার ছোট বোন অন্যদিকে বেস্ট ফ্রেন্ডের উড বি ওয়াইফ বোন হিসেবে বলা যায় না আচ্ছা ভাবি হিসেবে বলি এটাকে কামড় বলে না পাগলি লাভ বাইট বলে... এই ছোট খাটো বাইটে আকাশের কিছু হবে না যখন ইচ্ছা বসিয়ে দিয়েন।

আকাশঃ ধুর সালা কি বলছিস...

মেঘলা লজ্জা পেল সে চলে যেতে চাইল...

পিছন থেকে আকাশ মেঘলাকে ডাকল...

মেঘলা হাসি মুখে বলল জ্বি বলুন...

আকাশ গম্ভির গলায় বলল আমাকে কি জোকার মনে হয় তোর?আমার কথার কোন দাম নেই? তোকে লায় দিচ্ছি বলে মাথায় উঠে বসতে চাইছিস? একটা কথা কান খুলে শুনে নে এত লুতুপুতু প্রেম করার সময় আমার নেই।

আকাশের কথায় নাবিল অবাক না হলেও মেঘলা অবাক হল।

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top