Golperjogot

Golperjogot

over naki villain bangla love story part 10

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ১০ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

লাভার নাকি ভিলেন

Mona Hossein { 10 }


পরদিন আকাশের বাবা নিজে গিয়ে মেঘলার ট্যুর ফি দিয়ে দিলেন।

অনেকেই যাবে সবাই খুশি, কিন্তু মেঘলাদের ব্যাচ যেহেতু সবচেয়ে জুনিয়র ব্যাচ তাদের উপড় সিনিয়রা হুকুম চালাবে এটাই নিয়ম তাই মেঘলাদের ব্যাচের তেমন কেউ যাচ্ছে না। কিন্তু তাতে মেঘলার কি যায় আসে? আকাশ তো যাচ্ছে তাতেই হবে।

এই পিচ্চি মেয়েটা ট্যুরের কি বোঝে? একে কে নিয়ে যাচ্ছে?কথাটা শুনে চোখ গরম করে মেঘলা পিছনের দিকে তাকাল।

মেঘলাঃ অহ খচ্চর,তাই তো বলি এসব বাজে কথা আর কে বলবে?

নাবিল হাসতে হাসতে বলল যানো তোমাকে ওখানে নিয়ে গিয়ে বেঁচে দিব ভাল হবে না?

মেঘলাঃ আহা শখ কত? আমি আপনাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিব সেটা কেমন হবে?

নাবিলঃ ওহ আচ্ছা তুমি তাহলে সাঁতার ও জানো না?

মেঘলাঃ ওমা আপনি সেটা কি করে জানলেন?

নাবিলঃ এই তো এখুবি বল্লে....

মেঘলাঃ আমি ত আপনাকে ফেলব বল্লাম।

নাবিলঃ তুমি ভেবেছো আমাকে ফেলে দিবে বললে আমি ভয় পাব তারমানেই তো তুমি পানি ভয় পাও আর যে সাঁতার পাড়ে না সেই ত পানি ভয় পায় তাই না?

মেঘলাঃ আপনার আর আকাশ ভাইয়ের মাথায় কত বুদ্ধি.... আমারো যদি থাকত।

নাবিলঃ আকাশের সাথে থাকতে থাকতে তোমারো বুদ্ধি হয়ে যাবে।কিন্তু তুমি এখুনি দাঁড়িয়ে আছো কেন বাসায় গিয়ে গোছগাছ করে নাও সকালে যেতে হবে তো।এদিকে আমিও প্লেন করি তোমাকে পাহাড় থেকে ফেলব?সমুদ্রে ডুবাব নাকি বেঁচে দিব?

মেঘলাঃ আমাকে কাবু করা এত সহজ না বোঝলেন মশাই। যাই হোক আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে এখন যাই সকালে দেখা হবে।

মেঘলা বাসায় এসে সব গুছিয়ে নিয়েছে। তার সময় যেন আর কাটছে না।আকাশও বাসায় এসে নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নিয়েছে।

মেঘলা সারারাত ধরে প্লেন করেছে সে কি কি করবে?আকাশের সাথে ঘুরবে,শপিং করবে,একসাথে খাবে আর যাওয়ার সময় আকাশের কাঁদে মাথা রেখে ঘুমাবে।সব প্লেন করা শেষ।

সকালে উঠেই মেঘলা রেডি।আকাশ এসে বলল মেঘলা আমি আগে যাই তুই একটু পর যাস।

মেঘলাঃ আচ্ছা....

নানা রকম ঝলপনা কল্পনা করে মেঘলা গিয়ে বাসে চড়ল কিন্তু সেখানে যাওয়ার সাথে সাথেই তার সমস্ত খুশি বিলিন গেল কারন আকাশ একটা মেয়ের পাশে বসেছে আর মেয়েটা আকাশের হাত ধরে বসে আছে।আকাশ এমন ভাব করল যেন সে মেঘলাকে চিনেই না।

মেঘলা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে যে যার সিটে বসে পড়েছে।তাই বাধ্য হয়ে মেঘলা গিয়ে পিছনে বসলো।
পিছন থেকে আকাশ আর ওই মেয়ে ২ জনকেই দেখা যাচ্ছে তারা ২ জনেই খুব খুশি নানা রকম খুনশুটি করছে ২ জনে মিলে, যেমনটা মেঘলার থাকার ছিল। আকাশের ওই মেয়ের প্রতি এত কেয়ারিং দেখে,মেঘলার সারারাত ধরে দেখা প্রতিটা স্বপ্ন এক এক করে ভেংগে যাচ্ছে। তার মনে হচ্ছে এর চেয়ে না আসায় ভাল ছিল।মেঘলার খুব কান্না পাচ্ছে।ইতিমধ্যে কেঁদেও দিয়েছে।কিছুক্ষন কাঁদার পর তার ম্যাথা ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে। কাঁদতে কাঁদতে মাঝে মাঝে হিচকি তুলছে মেঘলা।

মেঘলার হিচকি দেখে পাশে বসে থাকা মেয়েটি চেচিয়ে বলে উঠল কি হচ্ছে এসব? এই মেয়েটাকে কে এনেছে একটু শান্তিতে বসতে দিচ্ছে না।এখন তো বমিও করবে।

মেয়েটির কথা শুনে সবাই মেঘলার দিকে তাকাল মেঘলা তাড়াতাড়ি চোখ মুছে নিল।

মেয়েটিঃ এই উঠো এখান থেকে... আমার পাশে বসবা না।বলেই মেয়েটি মেঘলাকে সীট থেকে তুলে দিল।

সবাই মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে।মেঘলার লজ্জা করছে সে আপাতত এখানে তার আকাশ বাদে কাউকে আপন মনে হচ্ছে না তাই অসহায় দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকাল মেঘলা কিন্তু আকাশের তাতে কোন রেসপন্স নেই।

কাঁদতে কাঁদতে মেঘলার মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেছে।
কি ভেবে এসেছিলাম আর কি হল? আমার কোন ক্লাসমিট ও তো আসে নি কি করব আমি?কার কাছে সাহায্য চাইব? আকাশ যে কোন সাহায্য করবে না দেখেই বোঝা যাচ্ছে কি করব এখন? শরীরতো খুবি খারাপ লাগছে।

আশে পাশের সবাই মেঘলাকে হাজার টা কথা শুনাচ্ছে।
এই তুমি দূরে গিয়ে দাড়াও কাছে আসবা না।মনে তো হচ্ছে এখুনি বমি করে সবার অবস্থা খারাপ করে দিবে।জার্নি যখন করতে পাড়ো না এসেছিলে কেন?নিজের ক্লাসের কেউ আসে নি উনি ড্যাংড্যাং করে চলে এসেছেন যতসব প্যারা।কে যে এই মেয়েকে আসার পারমিশন দিল।

মেঘলার এত অপমান সহ্য হল না এবার সে কেঁদেই দিল।

তখনি পিছন থেকে একজন এসে বলল, কি হচ্ছে এখানে?যাদের যাদেএ এত সমস্যা হচ্ছে নেমে যাচ্ছিস না কেন?একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে এমন করতে তোদের খারাপ লাগছে না?

পিছনে তাকিয়ে মেঘলা যেন আত্মায় প্রান ফিড়ে পেল সস্বির নিশ্বাস ফেলে বলল ভাইয়া আপনি আছেন তো ভুলেই গেছিলাম। বাসায় যাব আমাকে নামিয়ে দিন প্লিজ।

নাবিলঃ ড্রাইভার গাড়ি থামান....

নাবিল মেঘলার হাত ধরে নিয়ে নেমে গেল।

মেঘলাঃ ভাইয়া আপনি নামছেন কেন আপনি যান আমি একাই যেতে পাড়ব।

নাবিলঃ তাই বোঝি?

মেঘলাঃ হুম আমি কোন গাড়ি নিয়ে চলে যাব।

নাবিল একটা পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল পানি খাও চোখে মুখে পানি দাও।

মেঘলার শরীর খারাপ লাগছিল তাই নাবিলের কথা মত পানি খেয়ে নিল।

আকাশ ভিতর থেকে বলল নাবিল তোরা নাটক কর আমরা যাই গাড়ি থামিয়ে রেখেছিস কেন?

নাবিল চোখ গরম করে বলল,দেখে কি ভিখারি মনে হচ্ছে? তুই যত টাকা দিয়ে এসেছিস আমরাও তত দিয়েই এসেছি তাই চুপচাপ বসে থাক যতক্ষন না মেঘলা ঠিক হচ্ছে সবাই অপেক্ষা করবি।আর মেঘলাকে নিয়ে যার যার সমস্যা তারা নিজের ইচ্ছায় নেমে যেতে পাড়ে।কাউকে যাওয়ার জন্য জোর করা হচ্ছে না মেঘলা যদি না যেতে পাড়ে তাহলে এই ট্যুর হবে না। ও সবাই কে সম্মান দেখাচ্ছে বলে সবাই ওকে চেপে ধরেছিস অমানুষের দল কিন্তু আমি থাকতে সেটা তো হতে দিব না।

নাবিলের কথায় আকাশ চুপ হয়ে গেল সাথে অন্যরাও কারন যেখানে আকাশ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না সেখানে অন্যকেউ কথা বল্লে নাবিল মেনে নিবে না।

মেঘলা আকাশের ব্যবহারে অবাক হচ্ছে।আর নাবিলের কেয়ারিংও তার কাছে অদ্ভুত লাগছে।

নাবিলঃ কারো কথায় কান দেওয়ার দরকার নেই। তুমি খোলা হাওয়ায় বসে যতক্ষন ইচ্ছা বিশ্রাম নিয়ে নাও মেঘলা।

কিছুক্ষন পর মেঘলাকে নিয়ে এসে নাবিল নিজের পাশের সীটের ছেলেটাকে তুলে দিয়ে মেঘলাকে জানালার পাশে বসিয়ে দিয়ে জানালা খোলে দিল আর মেঘলাকে ধরে নিজের কাঁধের উপড় শুয়িয়ে দিয়ে বলল ঘুমাও।

মেঘলার আপত্তি থাকলেও তার মাথা ব্যাথা করছে তাই আপত্তি না করে নাবিলের কাঁদে মাথা রেখে ঘুমানোর চেস্টা করল।আর কিছুক্ষনের মধ্যে ঘুমিয়েও গেল।

আকাশ আড় চোখে বারবার মেঘলাকে দেখছে কিন্তু মেঘলা গভীর ঘুমে আছন্ন।

মাঝপথে খাওয়ার জন্য সবাই নেমে গেল। আকাশের পাশে বসা মেয়েটির এসে বলল নাবিল খাবে না? নামছো না যে?

নাবিলঃ দেখতেই পাচ্ছো মেঘলা ঘুমাচ্ছে ওকে রেখে যাব কি করে? বোঝতেই পাড়ছো অসুস্থ হয়ে গেছে। আকাশ তুই যদি ওর পাশে একটু বসতি আমি খেয়ে আসতে পাড়তাম। আমি না হয় তোর জন্য খাবার নিয়ে আসব।

আকাশঃ আচ্ছা যা তুই বলে, আকাশ মেঘলার পাশে বসল।নাবিল আর মেয়েটি চলে যাওয়ার পর আকাশ মেঘলাকে নিজের কাঁধে শুয়িয়ে দিয়ে আলত করে কানের কাছে চুল গুলো গুঁজে দিয়ে মেঘলার কপালে চুমু খেল।কিন্তু মেঘলা সেসব দেখতে পাচ্ছেনা সে তো তার ঘুমের রাজ্যে বিচরন করছে।

কিছুক্ষনের মধ্যেই নাবিল ফিড়ে এলো এখুনো কেউ আসে নি।

নাবিল মেঘলাকে ডাকতে যাবে তখনি আকাশ বলল ডাকিস না আগে আমি যাই তারপর ডাক।

নাবিলঃ তোর মাথায় কখন কি চলে শুধু তুই জানিস বাকি সবার মাথার উপড় দিয়ে যায়।

আকাশঃ সময় হলে না হয় বোঝাব....

আকাশ চলে যাওয়ার পর নাবিল মেঘলাকে ডেকে খায়িয়ে দিল।

নাবিলঃ মেঘলা ঠিক আছো?

ঘুমিয়ে মেঘলার সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে আমি একদম ঠিক আছি ভাইয়া আপনি টেনশান করবেন না।

মেঘলাঃ ভাইয়া একটা প্রশ্ন করব?

নাবিলঃ অবশ্যই....

মেঘলাঃ না মানে আসলে... আকাশ ভাইয়ার সাথে বসা মেয়েটা কে....???উনাকে আগে কখনো দেখি নি আর আকাশ ভাইয়াকেও এর আগে মেয়েদের সাথে এত বেশি মিশতে দেখি নি তাই জিজ্ঞাস করছিলাম আর কি...


পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন - পর্ব ১ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

চলবে ?

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top