Golperjogot

Golperjogot

over naki villain bangla love story part 13

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ১৩ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

Lover Naki Villain

Mona Hossain { Part 13 }


আকাশ মেঘলার ফোনে অনেকবার ফোন দিয়েছে কিন্তু ফোন সুইচ অফ।
আকাশ মেঘলাকে খোঁজে খোঁজে ক্লান্ত হয়ে গেছে সব জায়গায় খোজে দেখেছে কিন্ত আসেপাশে কোথাও মেঘলা নেই।
আকাশ নিরাশ হয়ে হোটেলে ফিড়ল।
তখন নাবিল এসে বলল মেঘলা নাকি কাল রাতেই বাসায় চলে গেছে।

আকাশঃ কিভাবে জানলি?

নাবিল আকাশকে একটা এসমেস দেখাল যেটা মেঘলার ফেসবুক থেকে নাবিল কে করেছে

ভাইয়া আমার এখানে ভাল লাগছে না তাই চলে যাচ্ছি,আমি সোজা বাসায় যাব আমাকে নিয়ে টেনশান করবেন না।

নাবিলঃ এই দেখ একটু আগে এসমেস করেছে ও বাসা পৌছে গেছে।

আকাশঃ দাড়া বাসায় ফোন করে খোঁজ নিই।

আকাশ ফোন দিল তার মা ফোন তুলল।

আকাশঃ মা মেঘলা কোথায়?

মাঃ কেন নিজের ঘরে।
আকাশ ফোন কেটে দিল।

নাবিলঃ কি হল?

আকাশ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বলল যাক বাবা নিশ্চন্ত হলাম ম্যাডাম চলে গেছেন।

নাবিলঃ তুই যেমন মেঘলাও তেমন কারোর চেয়ে কারো জেদ কম না। মন ভাল করার কত চেস্টা করলাম তাও চলে গেল।এত শপিং করে দিলাম একটাও নিল না সব রুমে রেখে গেছে।

আকাশঃ এটাই মেঘলা....

নাবিলঃ তো এখন কি করবি চলে যাবি?

আকাশঃ আরে না যাব কেন?মেঘলা তো ঠিক আছে তাহলে যাওয়ার কি দরকার তাছাড়া সবাই কি ভাব্বে এভাবে চলে গেলে।

নাবিলঃ হুম ঠিকি বলেছিস ২ দিনের ত ব্যাপার।আচ্ছা যা রুমে গিয়ে বিশ্রাম নে অনেক তো খোঁজা খোঁজি করলি।

আকাশঃ হুম ক্লান্ত লাগছে বলে ঘরে গেল।



অনেক আনন্দের সাথে ২ দিন কাটল আকাশের ট্যুরে অনেক মজা করছে সে।
সন্ধ্যায় আকাশ ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে ফেসবুক ঘাঁটছিল।
হটাৎ একটা পোস্টে আকাশের চোখ আটকে গেল।পোস্টটা মেঘলার একাউন্ট থেকে করা পোস্টে মেঘলার একটা ছবি,খুব সুন্দর করে সেজেছে সে লাল শাড়ি লাল চুড়ি লাল লিপস্টিকে মেঘলাকে একদম বউ বউ লাগছে।

ছবিটা দেখে আকাশ ততটা অবাক হল না সব মেয়েই মজা করে বউ সাজে কিন্তু ক্যাপশন টা দেখে আকাশের হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে

ক্যাপশনে মেঘলা লিখেছে....

"ভালবাসা সেতো হাজারো স্বপ্নে বুনা মরিচীকা"
যার পিছনে অনন্ত কাল ধরে ছুটা যায় যেমন আমি ছুটে আসছি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কিন্তু এতদিন পড়ে এসে বোঝলাম মরিচীকা শুধু দূর থেকেই দেখা সম্ভব কাছে আসলে তা বিলীন হয়ে যায়। আমার ক্ষেত্রও তাই হয়েছে।তাই ভালবাসার মানুষটাকে ভাল রাখতে এতদিন ধরে জমিয়ে রাখা নিজের ইচ্ছাগুলিকে কবর দিয়ে স্বপ্নের লাশের উপড় দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি নতুন জীবনের দিকে আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন.... কিছুক্ষন পর আমার বিয়ে জানিনা উল্ট পাশে থাকা মানুষটাকে কতটা মেনে নিতে পারব তবুও কারোর উপড় বোঝা হয়ে আর থাকতে চাই না।আজ থেকে সবার মুক্তি সাথে আমারও এতদিন ধরে পোষে রাখা ভালবাসা নামক পাখিটাকে মনের ঘর থেকে আজ মুক্তি দিয়ে দিব।

পোস্টটা দেখে প্রথমে আকাশের থাক্কা লাগলেও বিশ্বাস হল না একদিনের মধ্যে কারো বিয়ে হওয়া সম্ভব নাকি? তারউপড় বাড়ির একজনের বিয়ে হবে আমাকে জানাবে না সেটা কি করে হয়। তবুও মনের ভিতর উতালপাতাল করছে।

তখনি নাবিল অস্থির হয়ে আকাশের রুমে ঢুকল।

নাবিলঃ আকাশ এসব কি হচ্ছে?

আকাশঃ কি হচ্ছে?

নাবিলঃআর কিছুক্ষন পর নাকি মেঘলার বিয়ে....

আকাশঃ আরে ধুর কি যে বলিস এত তাড়াতাড়ি বিয়ে কিভাবে হবে....ঢপ মারছে।

নাবিলঃ না ঢপ নয় সত্যি....

আকাশঃ কিভাবে বোঝলি...???

তোর বাবার সাথে আমার বাবার ভাল সম্পর্ক জানিস তো সেই সুবাদে আংকেল আমার বাবা মাকে ইনভাইট করেছেন।বলেছেন ছেলে পক্ষ আজ মেঘলাকে দেখতে আসবে পছন্দ হলে আজই বিয়ে।

আকাশঃ সবাইকে ইনভাইট করছে আর আমি বাড়ির ছেলে আমাকে বলবে না এটা কেমন কথা?

নাবিলঃ ছোট বেলার কাহিনী ভুলে গেছিস আকাশ? তুই মেঘলার জন্য কত পাগল ছিলি সেই ভয়েতেই হয়ত তোকে বলেনি তুই বাড়ি নেই সেই ফাঁকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে

আকাশঃ না এটা হতে পাড়ে না আমি বিশ্বাস করি না।

নাবিল দাঁড়া দেখাচ্ছি মা তোদের বাসায় গিয়েছে কল দিচ্ছি।

নাবিল তার মা কে কল দিল,
নাবিলঃ মা বিয়েতে আর কে কে এসেছে?

নাবিলের মাঃ তেমন কেউ না তোর আংকেলের খুব কাছের কয়েকজন কে ইনভাইট করেছে জানিস তো তর আন্টি মেঘলার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি পছন্দ করেন না। তাও তোর আংকেল ছেলে পক্ষের জন্য ভালই ব্যবস্থা করেছেন।

নাবিলঃ সবাই কি করছে...???

মাঃ বাড়িতে বিয়ে মানে তো অনেক কাজ তোর আংকেল এতই খুশি যে নিজেই বাড়ি সাজাচ্ছে তোর আন্টি রান্নায় ব্যস্ত আর বিপাশা মেঘলাকে সাজাচ্ছে।

নাবিলঃ মা ভিডিও কল দাও আর ফোন টা মেঘলাকে দাও কেমন সেজেছে দেখি।

মাঃ আচ্ছা ধর দিচ্ছি।মেঘলা এই মেঘলা নাও তোমার ফোন বলে নাবিলের মা মেঘলাকে ফোনটা দিয়ে আসল।

মেঘলা ফোন হাতে নিয়েই ঘুমটায় মুখ ঢাকল।

নাবিলঃ কি হল....

মেঘলাঃ উমম লজ্জা পেয়েছি

নাবিলঃ লজ্জা কিসের ঘোমটা তুলো কেমন সেজেছো দেখি বাস্তবে ত আর দেখতে পাড়লাম না।

মেঘলাঃ ভাইয়া বিশ্বাস করুন এভাবে বিয়ে করার ইচ্ছা আমার ছিল না কিন্তু ছেলে নাকি বিদেশে চলে যাবে তাই এমন হচ্ছে।তা না হলে আপনাকে বলতাম।আর ফেসবুকে দেখলাম আপনারা ওখানে অনেজ মজা করছেন তাই আর ডাকি নি।

নাবিলঃ ওহ আচ্ছা বিয়ের কারন তাহলে জেদ (মনে মনে)

আকাশ নাবিলের হাত থেকে ফোনটা একটানে নিয়ে বলল ইচ্ছা করে এসব করেছিস তাই না মেঘলা?

মেঘলাঃ কি করেছি?

আকাশঃ আমি বাসায় নেই এই দিনেই বিয়েটা করতে হচ্ছে?

মেঘলাঃ আজ হোক বা কাল বিয়ে ত করতেই হবে আন্টি অনেক দিন আগে থেকেই এই বিয়েটার জন্য বলছিল এখন রাজি হলাম আংকেল কেউ আমি রাজি করিয়েছি। ছেলে বিয়ের পর পড়াশোনা করাতে রাজি তাই রাজি হয়েছে সবাই।আফসোস আপনারা নেই নাবিল ভাই আর আপনি থাকলে খুব ভাল হত।

আকাশঃ চিন্তা করিস না তোর বিয়ে আর আমি আসব না তা কি করে হয় ওয়েট কর আসতেছি।গিফট নিবি না? বিয়ে বলে কথা।

নাবিলঃ মেঘলা এমন ভাবে কথা বলছে যেন কিছুই হয় নি আর আকাশেই বা কেন বলছে না বিয়ে করিস না আমি তোকে ভালবাসি এত জেদ কিসের ওদের?

মেঘলাঃ ওখান থেকে আসতে আসতে বিয়ে হয়ে যাবে ভাইয়া তাই কস্ট করে আসার দরকার নেই।আপনি সবার সাথে মজা করুন পাড়লে ইরা আপুকে নিয়ে একটু সমুদ্র স্নান করে আসুন ভাল লাগবে আর বিয়ের পর আমার শ্বশুড় বাড়ি বেড়াতে আইসেন কেমন?

আকাশঃ কিভাবে বোঝলি বিয়েটা হবে? ছেলে তো তোকে এখুনো দেখেই নি।আগে তো পছন্দ করুক।

মেঘলাঃ বোকার মত কথা বলছেন..... আরে না দেখে কেউ বিয়ের আয়োজন করে নাকি? ছেলের সাথে আমার আগেই দেখা হয়েছে এখন শুধু মা বাবা দেখবে যাকে বলে ফর্মালিটি এই আর কি।আর আমি দেখতে এতও খারাপ না যে কোন ছেলে আমাকে রিজেক্ট করবে চিন্তা করবেন না পছন্দ ত আগেই করা শেষ তাই বিয়েটা হচ্ছে।

আকাশঃ ওয়াও এতদূর হয়ে গেছে.... আমি মনে হয় এতদিন মহাকাশে ছিলাম তাই কিছুই জানতে পাড়লাম না।

মেঘলাঃ মহাকাশে না আপনি তো কক্সবাজার ছিলেন। একটু বেশিই ব্যস্ত ছিলেন তাই জানতে পাড়েন নি।

আকাশঃ মার পরিচিত ছেলে মানে আমিও নিশ্চুই চিনি। তা নাম কি তোর বরের?

মেঘলাঃ ভাইয়া আমার সাজ কমপ্লিট করতে হবে ভাবি রাগ করছে এখন রাখি পড়ে আবার কল দিব বলেই মেঘলা ফোন কেটে দিল।

আকাশ ফোন টা রেখেই মাটিতে বসে পড়ল।
নাবিলঃ এত ভেংগে পডিছিস কেন বিয়েটা এখুনো হয় নি চল আকাশ আমাদের এখুনি ফিরতে হবে।

আকাশঃ ফিড়ে আর কি হবে নাবিল?আমরা যেতে যেতে বিয়েটা হয়ে যাবে।মেঘলার অনেক জেদ ও বিয়েটা করবেই কারো কথা শুনবে না।

নাবিলঃ তাহলে ত তুই সব জেনেই গেছিস মেঘলা তো ঠিকি বলেছে তুই বরং ইরা কে নিয়ে একটু সময় কাটা। আর গিয়ে কিছু হবে না এটা না বলে বল যে ইরাকে ছেড়ে যেতে তোর ইচ্ছা করছে না তাই যাবি না।

আকাশ এবার হাওমাও করে দিল।

নাবিল আকাশ কে জড়িয়ে বলল শান্ত হ আকাশ কিছুই হবে না। আমি এই বিয়ে হতে দিব না।

আকাশঃ খুব ভালবাসি রে নাবিল.....
মেঘলাকে ছাড়া আমি বাঁচব না।আমার অসহায়তা টা মেঘলা বোঝল না আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের এত বড় শাস্তি দিচ্ছে। এতে তো ও নিজেও কস্ট পাবে।তুই কিছু একটা কর নাবিল। আমার মাথা কাজ করছে না।কিভাবে যাব আর যদিও বা যেতে পাড়ি সবার সামনে কিভাবে বিয়ে ভাংব? মেঘলা যতটা রেগে আছে আমি কিছু করলে ও রিয়েক্ট করবে।

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা পর্ব 6 | Bangla Romance love story
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top