Golperjogot

Golperjogot

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ১৬ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ১৬ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

Lover Naki Villain

Mona Hossain { Part 16 }


আকাশঃ আলমারিতে একটা বক্স আছে যাওয়ার সময় নিয়ে যাস।

মেঘলাঃ কি আছে বক্সে....

আকাশঃ তেমন কিছু না রুমে গিয়ে দেখিস হয়ত ভাল লাগবে অথবা খুব খারাপ লাগবে।ভাল লাগলে রেখে দিস খারাপ লাগলে ফেলে দিস।

মেঘলা বক্স টা নিয়ে ঘরে চলে গেল....




কিছুক্ষনপর আকাশ মেঘলার ঘরে গেল।গিয়ে দেখল মেঘলা বক্সে থাকা জিনিসগুলি নিয়ে কাঁদছে কারন এগুলো মেঘলার ছোট বেলার ব্যবহৃত কিছু জিনিস যা আকাশ এতদিন ধরে যত্ন করে রেখেছে।
আকাশ মেঘলার কাছে গিয়ে বলল কাঁদছিস কেন?
মেঘলা উঠে দাঁড়িয়ে আকাশকে থাপ্পড় মারল আর এবার সে একটা থাপ্পড় দিয়ে থামে নি আকাশকে সমানে মারতে লাগল।

আকাশ মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে বলল শান্ত হ.... এত রাগ নিজের মধ্যে জমিয়ে রেখেছিস কেন?
মনের ভিতরে জমিয়ে রাখা অভিমান গুলি সব বলে ফেল। আজ আমি তোর সব প্রশ্নের জবাব দিব তার আগে শান্ত হ.... কান্না থামা।

আকাশ মেঘলার চোখ মুছে দিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিল।তারপর নিজে মাটিতে হাটুঘেরে বসে মেঘলার হাত ২ টি ধরে বলল এবার বল কি জানতে চাস।

মেঘলাঃ আমি কি দেখতে খারাপ?

আকাশঃ আমাকে কি তোর অন্ধ মনে হয়?

মেঘলাঃ তাহলে বাবা মার পরিচয় নেই জন্যে আমাকে ভালবাসেন না?

আকাশঃ ভালবাসি না কে বলল? তোকে আমি অনেক ভালবাসি যদি না বাসতাম তাহলে তোর সবকিছু এত যত্নে গুছিয়ে রাখতাম?

মেঘলাঃ সব কিছু গুছিয়ে রেখে কি লাভ? আমাকেই ত কাল অন্যজনের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন।

আকাশঃ দিয়েছি কি?

মেঘলাঃনাবিল ভাইয়া না থাকলে ত আজ আমি অন্যকারো বউ থাকতাম।

আকাশঃ হা হা হা পাগল নাকি? তোর একবারো মনে হল না যে নাবিল তোকে বোনের মত আদর করে সে হটাৎ তোর প্রেমিক হয়ে গেল কি করে?

মেঘলাঃ তারমানে নাবিল ভাইয়ের এমন আচারনের পিছনে আপনি ছিলেন?

আকাশ একটু হাসল....
মেঘলাঃ নাবিল ভাই সবার সামনে বলতে পাড়লে আপনি কেন বলতে পাড়েন না?মেঘলা রেগে গিয়ে আকাশের কাছ থেকে হাত ২ টি ছাড়িয়ে নিল।
আকাশ নিচ থেকে উঠে মেঘলার পাশে বসে মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে বলল এবার ছাড়িয়ে দেখা দেখি।

মেঘলা গাল ফুলিয়ে বলল দরকার নেই ধরে রাখার ছেড়ে দিন।

আকাশঃ ছাড়ার হলে সেদিনি ছেড়ে দিতান যেদিন আমায় ছেড়ে গ্রামে চলে গিয়েছিলি।

পড়ুন  Love Never Ended Part 10 | Come Back Sad Love Story

মেঘলাঃ ধরেই বা রেখেছেন কোথায়? এটা কেমন ভালবাসা যে কারো সামনে বলা যায় না।সবার সামনে অপমান করে মনে মনে ভালবেসে কি লাভ?

আকাশঃ মেঘলা তুই তো জানিস ছোট বেলায় আমি তোর জন্য কত পাগল ছিলাম। জানি না কেন তুই আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলি তুই চলে যাওয়ার পর খুব কেঁদেছিলাম।তোর শোকে এতই কাতর হয়েছিলাম যে অসুস্থ হয়ে অনেকদিন হাসপাতালে ছিলাম।তবুও তুই আমাকে একবার দেখতে এলি না।

মেঘলাঃ আমি যেতে চাই নি আকাশ।

আকাশঃ কতদিন পর তুই আবার আগের মত আমাকে আকাশ বলে ডাকলি.....আবার ডাক না মেঘলা।

মেঘলাঃ আমি যেতে চাই নি আকাশ আমাকে পাটিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আকাশঃহুম আগে বোঝতাম না ভেবিছিলাম তুই নিজেই চলে গেছিস। জানিস আমি এত অসুস্থ ছিলাম দিনরাত তোকে ডাকতাম ডাক্তারো অনেকবার বলেছিল তোকে নিয়ে আসার জন্য মা তবুও তোকে আনতে দেয় নি।
তুই বল এখন যদি আবার আমি তোর প্রতি ভালবাসা দেখাই মা তকে এখানে থাকতে দিবে? কখনই দিবে না তোর পড়াশুনাটা বন্ধ হয়ে যাবে তোকে আবার গ্রামের পাটিয়ে দিবে অথবা বিয়ে দিয়ে দিবে তারচেয়ে তুই সবসময় আমার চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছিস এই ভাল নয় কি?

মেঘলাঃ আগে তো ছোট ছিলেন প্রতিবাদ করতে পাড়েন নি এখনো কি পাড়বেন না?

আকাশঃ আমি এখনো নিজের পায়ে দাঁড়াই নি মেঘলা তোর উপড় যা যা অন্যায় হয় সেগুলির প্রতিবাদ করতে হলে তোকে নিয়ে এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত।কিন্তু তকে নিয়ে রাখব কোথায় খাওয়াবই বা কি?আমি চাইলে চাকরি হয়ত করতে পাড়ব কিন্তু আমার ইচ্ছা আমি রাজনীতি করি তাই একটু সময় নিচ্ছিলাম কিন্তু তুই যদি চাস আমি কালেই তোকে নিয়ে এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।

মেঘলাঃ না আমি চাই না আপনি বাড়ি ছাড়ুন।আচ্ছা বাড়িতে না হয় প্রবলেম কিন্তু কলেজে আমার সাথে এমন করেন কেন?

আকাশঃ ইরাকে দেখেছিস.... জানিস ও কে?

মেঘলাঃ হুম জানি আপনার প্রেমিকা....

আকাশঃ একটা থাপ্পড় মেড়ে সবগুলি দাঁত ফেলে দিব বেয়াদব মেয়ে।
ইরা বিপাশা ভাবির বোন ওর সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে বাবা মা।কলেজে যদি তোর সাথে মিশতাম ও বাসায় হাজারটা কথা বানিয়ে বানিয়ে বলত।সেটাও তেমন সমস্যা ছিল না সমস্যা হল আমি কলেজে যত ছেলেদের মেরেছি তারা সবাই সবসময় সুযোগ খোঁজে কিভাবে আমাকে আঘাত করা যায় আমাকে মারার সাহস পায় না তাই কিছু করতে পাড়ে না। কিন্তু ওরা যদি একবার জেনে যায় তুই আমার উইক পয়েন্ট ওরা তোর ক্ষতি করবে আমি সেটা কিভাবে সহ্য করব? সেই ভয়েই তোর সাথে কথা বলি না।তোকে সবসময় পাহাড়া দিয়ে রাখা কি আমার পক্ষে সম্ভব বল?

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৯ | মোনা হোসাইন

মেঘলা ভ্যা ভ্যা করে দিল.....

আকাশঃ অই আবার কি হল কাঁদিস কেন?

মেঘলাঃ আপনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে....??

আকাশঃ হুম হয়েছে কিন্তু তাতে তোর কি?তুই তো আমায় ভালবাসিস না তুই ত নাবিল কে ভালবাসিস।

মেঘলা আবার আকাশকে মারতে শুরু করল

আকাশঃ আচ্ছা আচ্ছা আর মারবেন না ম্যাডাম আমার ভুল হয়ে গেছে আর বাজে কথা বলব না।

কে শুনে কার কথা মেঘলা আকাশকে মেরেই চলেছে এবার আকাশ বিছানায় শুয়ে মেঘলাকে একটানে নিজের বুকের উপড় নিয়ে শুয়িয়ে দিল।
আকাশ মেঘলাকে চেপে ধরে বলল,আমার কি দোষ কলেজে সবাই তো এটাই দেখেছে।

মেঘলাঃ তাই বোঝি....আমি যখন নাবিল ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরেছিলাম আমার গায়ে যে ওড়না ছিল না সেটা চোখে পড়ে নি? জড়িয়ে ধরেছি সেটাই শুধু চোখে পড়ল?

আকাশ মেঘলাকে সরিয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল কি বলছিস এসবের মানে কি মেঘলা?

মেঘলাঃ যেদিন প্রথম কলেজে গিয়েছিলাম কয়েকটা ছেলে আমাকে বাজে কথা বলেছিল।আজ অনেকদিন পর ছেলেগুলি কলেজে এসেছিল এতদিন আসে নি এসেই আমার কাছে এসে সবাইকে ক্লাস থেকে বের করে দিল আর জানি না কেন ছেলে গুলি বলল আমি নাকি ওদের মার খাইয়েছি তাই ওরা আমার সাথে..........
আমি কোনরকমে সেখান থেকে পালিয়ে
আপনার কাছেই যাচ্ছিলাম কিন্তু আপনি বলেছিলেন সবার সামনে কথা বলা যাবে না তারউপড় ইরা আপুও সেখানে ছিল আমি জানতাম আপনার কাছে গেলে উনি আমায় আবার মারবেন কিন্তু আমি এতই ভয় পেয়েছিলাম যে নাবিল ভাইকে জড়িয়ে ধরেছিলাম।

আকাশঃ কি বলছিস এসব? সেদিন ওদের এত মারলাম তবুও ওদের শিক্ষা হয়নি? তুই তখন আমায় বলিস নি কেন? নাবিলকে অন্তত বলতি।

মেঘলাঃ আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম কি করব বোঝতে না পেড়ে চলে এসেছিলাম।

আকাশঃএই ভয়েই আমি তোকে নিষেধ করেছিলাম আমার সাথে কথা বলতে আর এটাই ঘটল... তুই থাক আমি আসছি বলে আকাশ চলে যেতে চাইল।

মেঘলা আকাশের হাত ধরে বলল এত রাতে কোথায় যাচ্ছেন?

আকাশঃ তোর গায়ে হাত দেওয়ার শাস্তি কতটা ভয়ংকর হতে পাড়ে সেটাই দেখাতে যাচ্ছি।

মেঘলাঃ না.... থামুন যেতে হবে না যা হওয়ার হয়ে গেছে।বাদ দিন এসব।

পড়ুন  অফিসের পিএ যখন বউ – অনুগল্প | Bangla Short Story Romantic

আকাশঃ ছাড় মেঘলা আমাকে যেতে হবে।

মেঘলাঃ উম্ম ছাড়ব না এখন এসব মারামারির চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে আপনার জন্য।

আকাশঃ কি কাজ?

মেঘলাঃ আমাকে প্রপোজ করুন।

আকাশঃ তাই বোঝি...

মেঘলাঃ হুম 😋

আকাশঃ আপনি যদি চান কাল কলেজে সবার সামনে নাহয় প্রপোজ করব...

মেঘলাঃ না আমি চাইনা কেউ জানুক আপনি আমায় ভালবাসেন আমি আপনাকে আপনার স্বপ্ন পুরনের সময় দিতে চাই।

আকাশঃ পাগলি একটা আয় কাছে আয়।

মেঘলা আকাশের কাছে যেতেই আকাশ নিজের হাত থেকে একটা আংটি খুলে মেঘলার হাতে পড়িয়ে দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে বলল আমি আমার পাগলিটাকে খুব ভালবাসি। নিজেকে কখনো আসহায় ভাব্বি না মনে রাখিস আকাশ সব সময় মেঘলার ছায়া আছে।সমস্ত বিপদ থেকে সে তার মেঘলাকে আগলে রাখবে।
তুই এত গাধা কেন মেঘলা? ফোনটা তোকে কেন দিয়েছিলাম? তোর সমস্যাগুলি আমাকে এসমেস করেও তো বলা যায় তাই না?

মেঘলাঃ আমি কি জানতাম আপনি আমায় ভালবাসেন? আমি ত আপনাকে ভয় পেতাম কিছু হওয়ার আগেই শুধু থাপ্পড় মারেন।

আকাশঃ আমি কখনো তোর উপড় রাগ করিনা।যখন কেউ তোর সাথে অন্যায় করে আর আমি কিছু করতে পাড়ি না তখন তোর উপড় রাগ জারি যেখানে অধিকার আছে সেখানেই তো রাগ দেখানো যায়।দেখ তুই কলেজে আমাকে সবার সামনে থাপ্পড় মারলি আমি কি রাগ করেছি?

মেঘলাঃ আপনার ভালবাসাটা এত অদ্ভুত সেটা বোঝতে বোঝতে আমার মাথার চুল সাদা হয়ে যাবে।

আকাশঃ ভালই হবে তুই বুড়ি হয়ে যাবে আচ্ছা দেখি আমার বুড়িটাকে কেমন দেখাবে তখন।

মেঘলাঃ হুম দোয়া করি খোদা যেন আপনার এই ইচ্ছাটা পূরন করেন বুড়ি বয়সেও আমি যেন আপনার পাশে থাকতে পাড়ি।

আকাশঃ থাকবি..... আকাশের বুকে মেঘলা সারাজীবন থাকবে।আমি থাকতে কখনো কোন দুশ্চিন্তা করবি না। আকাশ মরার আগে পর্যন্ত তোকে সমস্থ বিপদ থেকে আগলে রাখবে যাই হয়ে যাক তোকে কখনো হারাতে দিবে না।
ছোট থেকেই তোকে বউ হিসেবে দেখে এসেছি আজও দেখি সারাজীবন দেখব।তুই আমার একমাত্র বউ আমার লক্ষি বউ।

মেঘলাঃ আমিও আপনাকে খুব ভালবাসি,সারাজীবন বাসব।

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top