Golperjogot

Golperjogot

over naki villain bangla love story part 18

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ১৮ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

Lover Naki Villain

Mona Hossain { Part 18 }


মেঘলাঃ আকাশ আপনি কোথায় আমার এখানে থাকতে কস্ট হচ্ছে, ভয় করছে আমাকে নিয়ে যান প্লিজ।আপনি আমার সাথে এটা কি করতে পাড়লেন?কি এমন অন্যায় করেছি যার শাস্তি এভাবে দিচ্ছেন।




কিছুক্ষন পর আকাশ আসল আর অবাক হয়ে বলল মেঘলা ঘর অন্ধকার করে রেখেছিস কেন?
আকাশ ফোনের ফ্লেশ অন করল।
আকাশের কন্ঠ শুনে আর আলোর রেখা দেখেই মেঘলা দৌড়ে গিয়ে আকাশকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল।

আকাশঃ আরে কাঁদছিস কেন?

মেঘলা আকাশকের বুকে মুখ গোঁজে চোখ বন্ধ করে শক্ত করে আকাশ কে জড়িয়ে আছে মুখে কোন কথা নেই।

আকাশঃ আচ্ছা বোঝেছি,এবার ছাড় গিয়ে লাইট অন করি।তারপর শুনি কি হয়েছে,
ছাড়ার কথা শুনে মেঘলা আকাশকে আরো শক্ত করে আঁখরে ধরে বলল আমি এখানে থাকতে চাই না আমাকে নিয়ে চলুন প্লিজ।
আমার এমন অদ্ভুত ভালবাসার দরকার নেই।

আকাশঃ তাই বোঝি?আচ্ছা মেঘলা তুই এত বোকা কেন?তোকে আমি কেন অন্ধকার ঘরে বন্ধ করে যাব বল তো?আর গেছিই যখন নিশ্চুই কোন কারন ছিল,তোর কাছে তো ফোন ছিল নাকি?এতই যখন ভয় পাচ্ছিলি ফোন করলি না কেন তোকে বলেছিলাম না যেকোন অসুবিধায় পড়লে সাথেসাথে আমাকে এসমেস করবি।
আমি ত ভেবেছিলাম ফ্লেশ অন করে তুই সারপ্রাইজটা উপভোগ করবি তাই তোকে সময় দিয়েছিলাম।তাই বাইরে দাঁড়িয়েছিলাম।

এত কিছু বলার পড়েও মেঘলা আকাশকে ছাড়তে রাজি না তাই আকাশ মেঘলাকে কোলে তুলে নিয়ে গিয়ে লাইট অন করল সাথে সাথে উপড় থেকে গোলাপের পাপড়ি পড়তে লাগল মেঘলা তা দেখে অবাক হয়ে গেল।সে আকাশের কোলে থেকেই চারপাশে চোখ বুলিয়ে খুশি হয়ে গেল।ঘরটা গোলাপ বেলুন দিয়ে সাজানো। সবটা মেঝেতে গোলাপের পাপড়ি ভিছানো। মেঘলার গোলাপ খুব পছন্দ তাই ফুল দেখেই খুশি হয়ে গেল।

আকাশঃ নামবি নাকি কোলেই থাকবি?আমার অবশ্য কোন আপত্তি নেই।
মেঘলা এক লাফে কোল থেকে নেমে ঘুরে ঘুরে সব দেখতে লাগল দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে কত খুশি হয়েছে।

মেঘলা সব দেখছে এই ফাঁকে আকাশ আবার বাইরে চলে গেল।

মেঘলা সবকিছুর মাঝে দেখল ঘরের একপাশে ২ টা পুতল সাজানো পুতুল গুলি দেখে মেঘলা আবার কেঁদে দিল।

আকাশ একটা কেক নিয়ে ফিরে এল। এসে দেখে মেঘলা পুতল হাতে নিয়ে কাঁদছে।

আকাশ এবার রেগে ধমক দিয়ে বলল তোকে কি কান্না রোগে পেয়েছে নাকি?
শুধু শুধু এত কাঁদছিস কেন?দেখতো কেঁদে কেঁদে চোখ মুখের কি অবস্থা করেছিস?

মেঘলাঃ পুতল গুলি আকাশের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল এরা আকাশ,মেঘলা তাই না?

আকাশঃ হ্যা... তো এর সাথে কাঁদার কি সম্পর্ক?

মেঘলা এসে আকাশকে জড়িয়ে ধরে বলল এত ভালবাসেন আমায়?

আকাশঃ সন্দেহ আছে?

মেঘলাঃ না নেই তবুও এতদিন আগের মাটির পুতুল কিভাবে রাখলেন?

আকাশঃ তোর মনে আছে মেঘলা আমি পুতুল খেলতে চাইতাম না তুই জোর করতি খেলার জন্য ছোট বেলা কতবার এই পুতুল আকাশ আর পুতুল মেঘলার বিয়ে দিয়েছিস সেগুলি কি করে হারাতে দেই বল?আচ্ছা চল এবার কেক টা কাট।

মেঘলাঃ আপনি এত কিছু কখন করলেন?
আকাশ একটু হাসল।

মেঘলা কেক কাটার জন্য কেকের কাছে গেল।

আকাশঃ দাঁড়া আগে একটা কাজ আছে।

আকাশ হাঁটু ঘেরে বসে মেঘলার দিকে একটা আংটি বাড়িয়ে দিয়ে বলল সারাজীবন থাকবি তো আমার পাশে?

মেঘলাঃ রাতে তো আংটি দিলেন তাহলে এটা আবার কেন?

আকাশঃ ওটা তো পুরুনো, তুই সেই মুহূর্তে প্রপোজ করতে বলেছিলি তাই দিয়েছিলাম।ওটা খুলে এটা পড়।

মেঘলাঃ কিন্তু আমার ওটাই বেশি পছন্দের কারন ওটা আমার আকাশের।

আকাশ মুখটা গুমরা করে বলল তোর জন্য পছন্দ করে আনলাম তুই নিবি না....

মেঘলা হেসে বলল হাত তো ২টা তাই না?

আকাশ হেসে ডান হাতে আংটিটা পড়িয়ে দিল।

তারপর ২ জন মিলে কেক কাটল। ২ জন ২ জনকে খায়িয়ে দিল।

আকাশঃ এবার চল রেস্টুরেন্ট গিয়ে লাঞ্চ করে তোকে শপিং করে দিয়ে বাসায় যাব।

মেঘলাঃ আমি যাব না ....

আকাশঃ কেন যাবি না? জানিস এই দিনটার জন্য কত স্বপ্ন দেখেছিলাম মোটামুটি সব পূরন হয়ে গেছে এবার শুধু ওই গুলি করলেই শেষ।

মেঘলাঃ এই দিনটা নিয়ে আমারো তো কিছু স্বপ্ন থাকতে পাড়ে তাই না?

আকাশঃ তাই বোঝি তা কি করতে চান বলুন আমি সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

মেঘলাঃ আমার ব্যবস্থা আমিই করব কারোর হেল্প দরকার নেই।

আকাশঃ আচ্ছা তবস দেখান দেখি আপনার কি স্বপ্ন।

মেঘলাঃ চলুন তবে....

আকাশ বাধ্য ছেলের মত যেতে লাগল মেঘলা আকাশ কে নিয়ে শহর পেড়িয়ে গ্রাম,গ্রাম পেড়িয়ে দিগন্ত,দিগন্তের শেষে বিশাল এক বট গাছের দিকে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে মেঘলার গন্তব্য সেটাই....

আকাশঃ মেঘলা আমরা এতদুরে কোথায় যাচ্ছি?

মেঘলাঃ গেলেই দেখতে পাবেন।আমার স্বপ্ন এত সস্তা না যে বল্লেই পূরন করতে পাড়বেন তার জন্য কস্ট করতে হবে মশাই।

আকাশঃ আমি রাজি.... আমিও দেখতে চাই কি এমন স্বপ্ন যা সহজে পূরন করা যায় না।

মেঘলা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে বলল অনেক হেঁটে এসেছেন বসে একটু বিশ্রাম নিন আমি আসছি।

মেঘলা চলে গেল।
আকাশ চারদিক টা যতই দেখছে ততই অবাক হচ্ছে চারদিকে কোন মানুষজন বা বাড়িঘর নেই একদম নিস্তব্ধ কোন কোলাহল নেই। একদিকে বিস্তর দিগন্ত অন্যদিকে বিশাল জলরাশি।
তার মাঝখানে এক বটগাছের নিচে আকাশ বসে আছে। পরিবেশটা দেখে আকাশের ২ চোখ জুরিয়ে গেল।

কিন্তু মেঘলা কোথায় গেল প্রায় আধ ঘন্টা হয়ে গেছে তবুও খোঁজ নেই।
কিছুক্ষন পর মেঘলা ফিড়ে এল আরো একজনকে সাথে নিয়ে।

মেঘলা হাঁপাতে হাঁপাতে বলল চাচা নৌকা টা নিয়ে আসুন আমরা অপেক্ষা করছি।

লোকটি চলে গেল।

আকাশঃ এভাবে হাঁপাচ্ছিস কেন আর উনি কে?

মেঘলাঃ উনি মাঝি চাচা, অই যে দুরের বাড়িটা দেখতে পাচ্ছেন ওখানে থাকেন। উনাকে আনতে গিয়েছিলাম দৌড়াতে দৌড়াতে গিয়েছি তাই হাঁপাচ্ছি।আমি উনার নৌকায় অনেক ঘুরেছি আজ আমরা ২ জন ঘুরব তাই গিয়ে নিয়ে আসলাম উনাকে।

আকাশঃ এত দূর যাওয়ার কি দরকার ছিল...???

মেঘলাঃ হুম গেলাম বলছি না আমার স্বপ্ন সস্তা না।

আকাশঃ আমাকে নিয়ে গেলে হত না? ২ জন একসাথে যেতাম।

মেঘলাঃ আপনার কষ্ট হত এমনেতেই অনেকটা হেঁটে এসেছেন।

আকাশ হতবাক.....
মাঝি তার ডিংগি নিয়ে এসে নামতে নাময়ে বলল যা মা....

আকাশঃ চাচা আপনি নামছেন কেন? আপনি যাবেন না?

মাঝিঃ আমি কেন যাব? ওর অনেক দিনের ইচ্ছা তার রাজকুমার এসে তাকে স্বপ্নের বাড়িতে নিয়ে যাবে।আজ কতবছর পর আপনি এসেছেন আপনিই ওকে নিয়ে যান।

আকাশ মাঝির কথায় অবাক হল।

মেঘলা ব্যাগ থেকে টাকা বের করে মাঝিকে দিতে চাইল।
আকাশঃ টাকাটা আমি দেই....

মেঘলাঃ না এখানে যা হবে সব আমি করব আপনি শুধু দেখবেন।

মাঝিঃ না মা আজ এতদিন পর তোর স্বপ্ন পুরন হতে চলেছে কতদিন থেকে তুই এই দিনের জন্য অপেক্ষা করছিস আজ আমায় ভাড়া দিয়ে লজ্জা দিস না আমি নিতে পাড়ব না।

মেঘলা হেসে বলল আচ্ছা চাচা কিন্তু এখন এই মা কে যে আপনার একটা কাজ করে দিতে হবে।

মাঝিঃ কি কাজ বল।আমি নিশ্চুই করে দিব।

মেঘলা ফিসফিস করে মাঝির কানে কানে কি যেন বলল তারপর মাঝির হাতে কিছু টাকা দিয়ে দিল।

মেঘলাঃ চলুন যাই....

আকাশ মেঘলা ২ জনেই ডিংগিতে বসল।

মাঝিঃ বাবাজি মেঘলা কিন্তু সাঁতার জানে না একবার পড়ে গিয়ে ডুবতে বসেছিল।একটু দেখে যাবেন।

আকাশ চিন্তা করবেন না চাচা....!!! আমি সাবধানেই যাব।

পড়ুন  ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 33 | Villain Action Story
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top