Golperjogot

Golperjogot

lover naki villain thriller story part 20

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ২০ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

Lover Naki Villain

Mona Hossain { Part 20 }


ইরা ভাবতে লাগল কিভাবে মেঘলাকে সরানো যায়...



এদিকে আকাশের চাচাত বোনের বিয়ে,চাচা চাচী সহ বোন, সবাই বিদেশে থাকে কিন্তু সব আত্নীয় স্বজন দেশে থাকে তাই বিয়েটা আকাশদের বাসা থেকে হবে। জাস্ট ২ দিন পর বিয়ে তাই আজ থেকেই বাসায় মেহমান আসা শুরু হয়েছে।
আকাশের সব কাজিনরা চলে এসেছে আগামিকাল হলুদ সন্ধ্যা....
বাড়িতে সাজ সাজ রব।মেঘলারও খুব ভাল লাগছে। আকাশের বোন সুমি...তার সাথেও মেঘলার খুব ভাব হয়েছে।সব ঠিকঠাক ছিল কিন্তু মেঘলা জানত না তার এই আনন্দ বেশি থাকবে না।
মেঘলার সব খুশি বিলীন করার প্লেন নিয়ে ইরা এসে হাজির হল।

আকাশ বসে বসে ফোন টিপছিল আর মেঘলা সুমির হাতে মেহিদি দিচ্ছে আকাশ মাঝে মাঝে মেঘলা আর সুমির সাথে খুনশুটি করছে মেঘলা সেটা উপভোগ করছে তখনি ইরা এসে আকাশকে জড়িয়ে ধরল।আকাশ ও কিছুটা তাল মিলাল। এটা দেখে মেঘলার খুব রাগ হল।

বিপাশা এসে ইরাকে জড়িয়ে ধরে বলল এই তো বাড়ির গিন্নি চলে এসেছে।

মেঘলার এই কথাটায় খটকা লাগলেও বেশি পাত্তা দিল না কারন সে জানে ইরার সাথে আকাশের বিয়ে ঠিক করা আছে তাই গিন্নি বলতেই পাড়ে।

মেঘলাঃ উম গিন্নি না ছাঁই ডাইনি বুড়ি এসেছে...আর আকাশ টাই বা কেমন ডাইনিটাকে আমি সহ্য করতে পাড়ি না জানে না? তাহলে এত আহ্লাদ কিসের যতসব অসহ্যকর (বিড়বিড় করে)

ইরাঃ বিপাশা আপু আমার ব্যাগপত্র গাড়িতে আছে কোথায় রাখবে ড্রাইভার কে বলে দাও।

বিপাশাঃ এটা তো এক ঝামেলা হল ঘর তো সব ভরে গেছে কিন্তু তুই তো কারো সাথে বেড শেয়ার করে থাকিস না কোথায় থাকবি তাহলে...??

তখন আকাশ বলে উঠল কেন মেঘলার ঘর তো খালি আছে ওকে মেঘলার ঘরে পাঠিয়ে দাও না মেঘলা অন্য কোথাও থাকবে.....

মেঘলাঃকথাটা শুনে ২২০ ভোল্টের ধাক্কা খেলাম।বাড়ির অন্য কেউ এই কথাটা বলতেই পাড়ত তাতে আমার কিছু যায় আসত না কিন্তু আকাশের মুখ থেকে এটা শুনে সাথে সাথে ২ চোখ ভরে এসেছে আর একটু হলেই জল গড়িয়ে পড়বে নাক মুখ লাল হয়ে গেছে ইচ্ছা করছে এখুনি কেঁদে দেই।কিন্তু সেটা দেখার সময় আকাশের নেই।সে আমাকে লক্ষ্য না করে উল্টে বলল ইরাকে ঘরে পৌছে দিতে।

মেঘলা রেগে গিয়ে বলল কাজ করছি দেখতে পাচ্ছেন না?

আকাশঃ এই মেয়েটা এত বোকা কেন আরে ঘরে তো পার্সোনাল অনেক কিছুই থাকতে পাড়ে সেগুলি গুছিয়ে নেওয়ার জন্য বলছি এটাও বোঝতে পাড়ছে না?(মনে মনে)
মেহেদী পড়ে এসে দিস আগে ওকে নিয়ে ঘরে যা মুখে মুখে তর্ক করিস না?

মেঘলাঃ ইরা আপু আপনার এতই প্রিয় যে আমাকে ঘর ছাড়া করলেন এখন আবার উনার কাজ করে দেওয়ার জন্য ঘরেও পাঠাচ্ছেন ভালই.... এক পলকেই কতটা বদলে গেলেন একবারো ভাবলেন না আমাকে বের করে দিলে আমি কোথায় ঘুমাব? নিশ্চুই মেঝেতে তাই না...??সারাদিন কত গল্প করেন আমার জন্য নাকি কত ভাবেন আর অন্য একটা মেয়েকে পেয়ে এখনি বদলে গেলেন ছেলেরা সত্যিই খুব খারাপ তারা সব পাড়ে ভাবতে ভাবতে মেঘলা ইরা কে নিয়ে উপড়ে গেল।

আকাশ বাইরে চলে গেল....

মেঘলা গিয়ে ইরাকে ঘরে দিয়ে চলে আসতে চাইলে পিছন থেকে ইরা মেঘলাকে ডেকে বলল,দাড়াও মেঘলা.

মেঘলাঃ জ্বি আপু বলুন...

ইরাঃ আমি জানি আকাশের সাথে হয়ত তোমার একটা সম্পর্ক আছে কিন্তু আমি তোমার বড় বোনের মত তাই তোমার কোন ক্ষতি হোক তা আমি চাই না।

মেঘলা অবাক হয়ে ইরার কথা শুনতে লাগল...

ইরাঃ তুমি কি জানো আকাশ তোমাকে একটুও ভালবাসে না সে তোমার সাথে শুধু মজা নিচ্ছে আর কিছুই না....

মেঘলাঃ প্লিজ আপু আর যাই বলুন আকাশের ভাইয়ের ব্যাপারে খারাপ কিছু বলবেন না। আমি নিজেকে অবিশ্বাস করতে পাড়ব কিন্তু আকাশ কে পাড়ব না।

ইরাঃ তাই বোঝি? তা তোমার কি মনে হয় আকাশ তোমাকে ভালবাসে?

মেঘলাঃ অবশ্যই বাসে আর এর মধ্যে আমার কোন সন্দেহ নেই।

ইরাঃ তাই যদি হয় তাহলে,
আকাশ তো জানে আজ রাতে বাসায় প্রচুর ছেলে আসবে ও কি করে পাড়ল তোমাকে ঘর থেকে বের করে দিতে? এতগুলি ছেলে বাড়ির মধ্যে ঘুরাঘুরি করবে আর তুমি শরনার্থির মত এখান থেকে ওখানে ঘুরে বেড়াবে তোমার আশ্র‍য় নেওয়ার মত কোন জায়গা নেই সব শেষে কোথায় ঘুমাবে? কোন এক মেঝেতে তাই তো?যেখানে ছেলেদের অবাদ বিচরন থাকবে রাতের অন্ধকারে তোমার সাথে যা খুশি ঘটতে পাড়ে।
ভালই যদি বাসত তাহলে এটা করতে পাড়ত তুমিই বলো?
অন্যদিকে দেখো আকাশ আমার ব্যাপারে কতটা সচেতন,আমাকে কতটা ভালবাসে বিপাশা আপু নিজের বোন হয়েও আমার কথা ভাবল না বলল ঘর নেই অথচ আকাশ আমার জন্য একটা সেইফ জায়গা বের করে দিল।একেই বলে ভালবাসা বোঝেছো?

মেঘলাঃ আপু তো কথাটা মন্দ বলে নি সত্যিই তো বলেছে..আমি কোথায় না কোথায় থাকব আমার সাথে যা ইচ্ছে হতে পাড়ে... আকাশ একবারো আমার কথা ভাবল না এটা ভেবেই কান্না পাচ্ছে. (মনে মনে)

ইরাঃ আচ্ছা এটাও বাদ দেই এবার বলতো আকাশের ব্যাপারে তুমি কতটা জানো...??

মেঘলাঃ সব জানি উনি আমায় সব বলেন কিছুই লুকান না।

ইরাঃ সত্যিই কি তাই....???

মেঘলাঃ হুম তাই...

ইরাঃ তাহলে নিশ্চুই এটাও জানো যে আকাশ বিবাহিত...

মেঘলা রেগে গিয়ে বলল অনেক আজেবাজে কথা বলেছেন এবার থামুন আমার এসব ভাল লাগছে না বলেই সে নিজের ফোন টা নিয়ে নিচে চলে আসল।
কিন্তু সন্দেহ খুব খারাপ জিনিস একবার মনে ঢুকলে আর বের হতে চায় না।
মেঘলার মনে ইরার কথাগুলি বার বার বাজছে....
তার খুব অশান্তি লাগছে কোন কিছুতেই মন বসছে না।
আকাশ ও বাসায় নেই যে তাকে জিজ্ঞাস করবে।ভাবতে ভাবতে সে একটা উপায় বের করল।
সুমির কাছ থেকে কথা বের করবে সুমির সাথে তার ভালই মিল হয়েছে।তাই সুমির ঘরে গেল।

মেঘলাঃ আপু আসব...

সুমিঃ হ্যা নিশ্চুই এসো না... এত পারমিশনের নেওয়ার কি আছে? যখন ইচ্ছে আসবে।

মেঘলাঃ কি করছো...

সুমিঃ তোমাদের দুলাভাইয়ের সাথে কথা বলছিলাম এখন বলা শেষ...

মেঘলাঃ খুব ভালবাসো তাই না?

সুমিঃ তা ত একটু বাসিই।তুমি কাউকে বাসো না?

মেঘলাঃ আমার কথা বাদ দাও আচ্ছা আকাশ ভাইয়া কাউকে ভালবাসেন না? আসলে এর পর তো তার সিরিয়াল তাই জিজ্ঞাস করলাম আর কি।

সুমিঃ ওর আবার কিসের সিরিয়াল ওর বিয়ে তে হয়েই গেছে....দাঁড়াও ওর বিয়ের ছবি দেখাই আমার ফেসবুকে ছিল খুব সুন্দর করে সেজেছিলাম আমরা....

সুমির কথাটা শুনে মেঘলার হৃদস্পন্দন যেন এক মুহুর্তের জন্য বন্ধ হয়ে গেল।

সুমি ছবিগুলি বের করে দেখাল... চারদিকে মানুষজন সাজানো গোছানো তার মধ্যে আকাশ আর ইরা...

আর কোন সন্দেহ রইল না মেঘলার কাছে সব প্রামান হয়ে গেল মেঘলা আর সহ্য করতে পাড়ল না সুমির সামনেই হাওমাও করে কেঁদে বাইরে চলে আসল।

সুমি বিষয়টা কিছুটা বোঝলেও কি হয়েছে সঠিক বোঝল না।

মেঘলা এক দৌড়ে ছাদে গিয়ে আকাশের দেওয়া ২ টা আংটিই খুলে নিচে ফেলে দিল।তারপর মেঝেতে বসে কাঁদতে লাগল....

মেঘলাঃ আমার সাথে এত বড় প্রতারনা কি করে করতে পাড়লেন আপনি...?? আপনি তো বলেছিলেন বিয়ে ঠিক হয়েছে বিয়ে হয়ে গেছে সেটা কেন বলেন নি?নিজের বউ থাকতেও আমাকে নিয়ে খেল্লেন?
কি করে পাড়লেন এত এত ভালবাসার গল্প সবি কি তবে মিথ্যা ছিল...???শুধুমাত্র মজা নেওয়ার জন্য আমাকে ব্যবহার করলেন?
এতদিন আমাকে মিথ্যা শান্তনা দিলেন।আমি এতদিন যা যা ভেবে এসেছি সবি মিথ্যা ছিল।আজকের গুলিই ঠিক আপনি কেন পরিবারে বলতে চান নি বা কাউকে জানাতে পাড়েন নি সেটা আজ বোঝলাম।
আরে সবাইকে বল্লে তো আমি জেনে যাব আপনি বিবাহিত।সত্যিই আপনি আমায় নয় ইরা আপুকে ভালবাসেন আর তার অনেক প্রমান আগেও দিয়েছেন আজও দিলেন।
আমাকে শুধুই ব্যবহার করলেন....
কিন্তু আমি তো সেই ছোট থেকে আপনার জন্য অপেক্ষা করছি,আজ আমার কাছে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই সব হারিয়ে আজ নিঃস্ব আমি কি নিয়ে বাঁচব আমি....??? আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে আকাশ ছোট থেকেই তো লাঞ্চনা আর অবহেলায় বড় হয়েছি কেন তবে সুখের স্বপ্ন দেখালেন? আমার মত অসহায় একটা মেয়েকে নিয়ে খেলতে একবারো বিবেকে বাঁধা দিল না?

পড়ুন  ভিলেন – থ্রিলার প্রেমের গল্প পর্ব 23 | Villain Bangla Story
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top