Golperjogot

Golperjogot

lover naki villain bangla love story part 25

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ২৫ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

Lover Naki Villain

Mona Hossain { Part 25 }


এতদিন সব ঠিকঠাক থাকলেও কিছুদিন যাবৎ মেঘলার মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।
কিন্তু সেটা পরিবার কিংবা ইরার জন্য না সে নিজেই বদলে গেছে। আর ইরা তো সেই বিয়ের পর আর আসেই নি।আর আকাশের বাড়ির লোকেও কিছু বলে নি।তবুও মেঘলা কিছু অস্বাভাবিক আচারন করছে,

মেঘলা সারাদিন ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে ফোনের দিকে তাকিয়ে একা একাই হাসে।

আকাশ বোঝতে বাকি নেই যে মেঘলা কারো সাথে এসমেস করে কিন্তু আকাশ বোঝতে পাড়লেও মেঘলাকে কিছু বলে না।আকাশের ধারনা নতুন নতুন সোস্যাল মিডিয়া ইউজ করছে তাই এমন করছে।
কিন্তু আকাশ যতই ছাড় দিচ্ছে মেঘলাও তত পেয়ে বসছে এখন সে আকাশকে কিছুটা এড়িয়ে চলতে শুরু করেছে, আকাশ ডাকলেও মেঘলা আকাশের ঘরে যেতে চায় না মোট কথা ফোন ছেড়ে কিছু করার সময় তার কাছে নেই।



আকাশ সেসব মেনে নিয়েছিল কিন্তু রাতে ঘুমানোর আগে মেঘলাকে ফোন দেওয়া আকাশের প্রতিদিনের রুটিন।
প্রতিদিনের মত আজকেও ফোন দিয়েছে।
কিন্তু কল ওয়েটিং...রাত ১২ টা বাজে এখন কোন জরুরী ফোন থাকার কথা না তাও আকাশ ভাবল হয়ত দরকারী ফোন তাই কেটে দিল।প্রায় ১০ মিনিট পর আবার ফোন দিল কিন্তু এখনও কল ওয়েটিং দেখে আকাশের বুকে চিন চিন ব্যাথা শুরু হলো।
১২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত সে মেঘলাকে একনাগাড়ে কল করেছে কিন্তু প্রতিবারেই ওয়েটিং পেয়েছে।
এবার আকাশ বোঝতে পেড়েছে কিছু একটা ঘটছে যার ব্যাপারে সে জানে না।

আকাশ মেঘলার ঘরে গিয়ে নক করলো,মেঘলা ভাবল হয়ত কেউ দরকারে এসেছে সে জিজ্ঞাস করলো কে...???
আকাশ কথা বলল না।
মেঘলা দরজা খুলতেই আকাশ ঘরে ঢুকে পড়ল...
আকাশের চোখ ২ টি লাল হয়ে আছে দেখে বোঝায় যাচ্ছে সে খুব রেগে আছে।

আকাশকে দেখে মেঘলা ভয় পেয়ে গেল। মেঘলা বোঝল তার কপালে দুঃখ আছে, তাড়াতাড়ি ফোনটা লুকিয়ে ফেলল...

কিন্তু আকাশ মেঘলাকে কিছু না বলে বিছানায় বসে পড়ল আর মাথা নিচু করে কি জানি ভাবতে লাগল।

থমকে যাওয়া আকাশ ঝড়ের পুবার্ভাস ভেবেই মেঘলার গলা শুকিয়ে গেল।
মেঘলা কথা বলতে চাচ্ছে কিন্তু ভয়ে কথা জড়িয়ে যাচ্ছে কারন সে জানে এত রাতে আকাশ এমনি এমনি তার ঘরে আসে নি এখন নিশ্চুই তাকে মার খেতে হবে।
তবুও সাহস করে বলল এ এ এ এত রাতে আপ... আপনি এখানে.??

আকাশ মুখ তুলে মেঘলার দিকে তাকাল তারপর উঠে দাঁড়িয়ে মেঘলার কপালে একটা চুমু খেল মেঘলা অবাক হয়ে গেল....

আকাশ মেঘলার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল কখনো এমন কিছু করিস না যাতে কাউকে ভয় পেতে হয়।বলেই আকাশ চলে যেতে লাগল আর বলল অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড় জেগে থাকলে শরীর খারাপ হবে।

আকাশ যে এতক্ষন ধরে ফোন দিয়েছে মেঘলা তো সেটা দেখেছিল কিন্তু আকাশ কোন রিয়েক্ট করল না দেখে মেঘলা আকাশ থেকে পড়ল।সে নিশ্চিত ছিল আকাশ ফোন চেক করবে তারপর মারবে কিন্তু সেসব কিছু না করে উল্টে আদর করে চলে গেল।

আকাশ ঘরে এসে ভাবছে এই নিষ্পাপ চেহেরা কখনো কোন অন্যায় করতে পাড়ে আমি বিশ্বাস করি না কিন্তু ওর আমতা আমতা করা স্পষ্ট প্রমান করছিল ও কিছু অন্যায় করেছে তাই ভয় পাচ্ছে। ও ভয় পাচ্ছে এটা বোঝার পরেও আমি কি করে কিছু বলি?ওকে কিছু জিজ্ঞাস করা মানে ওকে সন্দেহ করা আর আমি ওকে সন্দেহ করছি এর চেয়ে বেশি অপমান আর কি হতে পাড়ে? তাই জিজ্ঞাস করতে চেয়েও কিছু বলতে পাড়লাম না কিন্তু মন যে কিছুতেই মানছে না...কার সাথে এতক্ষন কথা বলছিল না জানতে পাড়লে ঘুমাব কি করে? কিন্তু ওকে আমি সন্দেহ করছি এটা জানলে ও কস্ট পাবে তার চেয়ে জিজ্ঞাস না করাই ভাল।এমন তো হতেই পাড়ে কোন বন্ধুর সাথে কথা বলছিল।

আকাশ নিজেই নিজেকে শান্তনা দিয়ে শুয়ে পড়ল।




পরদিন সকালে মেঘলা কলেজে গিয়ে দেখল মাঠে লোকজনের ভীড়....
কি হচ্ছে জানার আগ্রহ নিয়ে মেঘলা এগিয়ে গেল গিয়ে যা দেখল তাতে নিজেই নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পাড়ছে না কারন আকাশ আর নাবিল মিলে সেই ছেলেটাকে মারছে যার সাথে মেঘলা সারারাত কথা বলেছিল।

মেঘলাঃ অবাক কান্ড আকাশ ভাই তো আমার ফোন ধরে নি তাহলে কি করে জানলো আমি এই ছেলেটার সাথেই কথা বলেছি......

আকাশ আর নাবিল ছেলেটাকে মারতে মারতে অবস্থা খারাপ করে দিয়েছে ছেলেটার নাক মুখ থেকে রক্ত পড়ছে,

মেঘলাঃ আমার জন্য কেউ এভাবে মার খাচ্ছে...??? না না এটা হতে পাড়ে না।আমার ওকে বাঁচানো উচিত।

মেঘলা দৌড়ে গিয়ে আকাশকে ফিড়ানোর চেস্টা করতে লাগল।

মেঘলাঃ ভাইয়া ছেড়ে দিন প্লিজ ওর কোন দোষ নেই। মেঘলা আকাশকে বাঁধা দিচ্ছে দেখে নাবিল অবাক হল।

নাবিল মেঘলাকে বলল কি করছো মেঘলা তুমি এখানে কেন এসেছো ক্লাসে যাও।

মেঘলা কিছু না শুনে আকাশ কে টেনে ধরল আকাশ মার থামিয়ে একটু সরে গিয়ে দাঁড়াল।

মেঘলাঃ যাক বাবা আটকাতে পেড়েছি.... ভেবে মনে মনে শান্তি পেল।

নাবিলঃ কি করব আকাশ ছেড়ে দিব।

আকাশ মেঘলাকে টেনে এনে সবার সামনেই জড়িয়ে ধরল।মেঘার মুখ নিজের বুকে চেপে ধরে বলল এমনভাবে মারবি যেন কোনদিন মেয়েদের দিকে তাকানোর সাহস না পায়....

নাবিলঃ কিন্তু মেঘলা....

আকাশঃ হা হা হা তুই ও কি বোকা হয়ে গেলি নাকি...বাচ্চা মেয়ে রক্ত দেখে ভয় পেয়েছে বলে তুই ও ভয় পাচ্ছিস?চিন্তা করিস না মেঘলা এখন আর মাথা ঘুরাতে পাড়বে তুই মার।

নাবিল মারতে লাগল...

মেঘলা ছটফট করছে আর বারবার বলছে ছাড়ুন আমাকে...প্লিজ আর মারবে না।

মেঘলা যতই ছটফট করছে আকাশ ততই চেপে ধরছে মেঘলাকে....

কিছুক্ষন পর আকাশ বলল হয়েছে নাবিল... এবার এটাকে নিয়ে যা।
নাবিল কয়েকটা ছেলেকে দিয়ে ওই ছেলেটাকে পাটিয়ে দিল।

আকাশ এবার মেঘলাকে ছেড়ে বলল এবার বল তোর কি সমস্যা? বাধা দিলি কেন?তুই কি চিনিস ছেলেটাকে?

মেঘলা অবাক হয়ে বলল মানে কি?

নাবিলঃ ঠিকি তো ও আজ একটা মেয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে তাই আমরা মারছিলাম কিন্তু তুমি হঠাৎ বাঁধা দিলে কেন?

মেঘলাঃ তারমানে ভাইয়া কিছু জানে না। আর জানবেই বা কি করে এটা তো কারোর এই জানার কথা না।কেবল কয়েক দিন হল কথা বলি।মেঘলা হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কিছু বলছে না।

আকাশঃ তোর কি শরির খারাপ লাগছে? পানি খাবি?

মেঘলাঃ.....

আকাশ নাবিলকে বলল নাবিল যা তো একটা আইসক্রিম নিয়ে আয়......

নাবিল চলে গেল।

আকাশঃ জানিস মেঘলা কাউকে একবার সুযোগ দেওয়া উচিত,২য় বার ক্ষমা করা যায়,৩য় বার অনুরোধ করা যায় কিন্তু তারপরে আর মানা যায় না....

মেঘলাঃ কিছুই বোঝল না....তার মনে খটকা লাগছে কিন্তু কি হচ্ছে বোঝতে পারল না।

নাবিল আসার পর আকাশ মেঘলার হাতে আইস্ক্রিম টা হাতে দিয়ে বলল খেতে খেতে ক্লাসে যা....

মেঘলা যেতে যেতে ভাবছে ভাইয়া কি আমাকে ওয়ার্নিং দিল নাকি এটা আমার মনের ভুল....

নাবিল আকাশ কে জিজ্ঞাস করলো এর আগেও তো ছেলেটা অনেক মেয়েদের সাথে এমন করেছে তখন তো মারিস নি আজ হটাৎ মারলি কেন?

আকাশঃ আমি সমাজসেবী নই তাই কে কার সাথে কি করছে সেটা আমার দেখার বিষয় নয় কিন্তু এখন তো আমার কলিজায় হাত দিয়েছে তাই মেরেছি।

নাবিলঃ বোঝলাম না...

আকাশঃ আমি কখনো মেঘলাকে কোন সীমায় সীমাবদ্ধ করে রাখি নি নিজের স্বাধীনমত চলতে দিয়েছি, কিন্তু কাল রাতে প্রথমবার মেঘলার ফেইসবুক চেক করলাম

নাবিলঃ ওর ফেসবুকে তুই ঢুকলি কি করে?

আকাশঃ পাসওয়ার্ড আমার জানাই ছিল কারন একাউন্ট টা আমিই খুলে দিয়েছিলাম।

নাবিলঃ আচ্ছা তারপর কি হল বল...

আকাশঃএকাউন্টে লগ ইন করার সাথে সাথেই মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল কারন মেঘলার প্রফাইল পিক কেমন বাজে ভংগিতে তুলা আর তাতে অনেক ছেলেদের কমেন্ট তারপর এসমেস চেক করে দেখলাম অনেক ছেলেদের সাথেই সে কথা বলে আর এই ছেলেটার সাথে মেঘলা অনেক বেশি এসমেস করে।

নাবিল অবাক হয়ে বলল তাহলে মেঘলাকে মিথ্যা বল্লি কেন? বল্লি না কেন যে ওর জন্যই এসব হচ্ছে।

আকাশঃ কি যে বলিস না নাবিল... নিজের প্রেমিকাকে সন্দেহ করছি তার জন্য এর চেয়ে বেশি অপমান আর কি হতে পাড়ে? মেঘলাকে আমি এতটা অপমান করতে পাড়ব নারে।

নাবিলঃ না বল্লে বোঝবে কি করে?

আকাশঃ বোঝার হলে এমনি বোঝবে....

নাবিলঃ যদি না বোঝে...???না বোঝে যদি এক ভুল বারবার করে।

আকাশঃ করুক ১ বার করবে ২বার করবে ৩ বার পর্যন্ত সুযোগ দিব......

নাবিলঃ তুই সত্যিই অদ্ভুত তোর জায়গায় আমি হলে এমন মেয়েকে সাথে সাথেই ছেড়ে দিতাম।প্রেমিক থাকতেও অন্য ছেলেদের সাথে কথা বলে এটা কেমন মেয়ে?

আকাশ নাবিলের কলার টেনে বলল মেঘলার ব্যাপারে একটা বাজে কথা বল্লে জিভ টেনে ছিড়ে নিব বোঝেছিস।

নাবিলঃ ধুর ছাড়ত... দেখলাম তুই সত্যিই ভালবাসিস নাকি? মেঘলা যে কেমন মেয়ে সেটা তো আমি জানিই ওর মত মেয়ে হয়না...... নতুন নতুন ফেসবুক চালাচ্ছে তো তাই এমন করছে তুই চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।

আকাশঃ মেঘলা কেন এত বোকা বোকা বলত দেখ এমন ছবি কেউ ফেসবুকে দেয়....??

নাবিলঃ হা হা হা.... ঠিকি বলেছিস মেঘলা আসলেই বোকা তাই তো বোঝে নি কি ছেলের পাল্লায় পড়েছে....!!!

আকাশঃ আমি তো চিন্তায় আছি ও যেভাবে আমাকে হার্ট করছে কতক্ষন তা সহ্য করতে পাড়ব...যুগের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে একদম গা ভাসিয়ে দিয়েছে...

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৭ | মোনা হোসাইন
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top