Golperjogot

Golperjogot

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ৩৫ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

Lover Naki Villain

Mona Hossain { Part 35 }


মেঘলাঃএত কিছুর পরেও আমি আপনার মত একটা ভিলেন কে বিয়ে করব না।মেয়েরা কারোর হাতের পুতুল নয় যে যখন তখন জোর করে তাদেরকে বিয়ে করা যায়।
আমি করব না আপনাকে বিয়ে।
কি হবে বিয়ে না করলে? লোকে আমায় নস্টা বলবে? সমাজ আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে? নিক তবুও আমি এমন জঘন্য একটা ছেলেকে বিয়ে করব না। যে কিনা মেয়েদের সম্মান করতে জানে না।


কি ভেবেছেন জোর করে রেপ করে মেয়েদের বউ বানানো যায়? না মিঃ আকাশ এমন জঘন্য কাজ করে ঘৃনার পাত্র হওয়া যায় মনের মানুষ হওয়া যায় না....!!! 




আকাশঃ মেঘলা এমন করিস না প্লিজ আমি আর সহ্য করতে পাড়ব না...


উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে মেঘলা আর আকাশের কথা শুনছিল হটাৎ ভীড়ের মাঝখান থেকে হাত তালির আওয়াজে সবাই সেদিকে তাকাল।


নাবিল হাত তালি দিতে দিতে এসে বলল সাবাস মেঘলা।মেয়েদের আসলে এমনেই হওয়াই উচিত।অন্যায়ের সাথে আপোস করা একেবারেই উচিত নয়। তুমি একদম ঠিম বলেছো যে ছেলে মেয়েদের সম্মান করতে জানে না তার ভালবাসা পাওয়ার কোন অধিকার নেই।


নাবিলের কথা শুনে আকাশ হতবাক হয়ে গেল,
আকাশঃ নাবিল তুই এসব কি বলছিস?


নাবিলঃ আমি একদম ঠিকি বলছি আকাশ চোধুরী ওরফে মিঃ রেপিস্ট।
Now you are a big loser.
আজকের এই খবরটা কাল সবগুলো নিউজ পেপারের হেডিং হবে।
আমাদের দলের সদ্য নির্বাচিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান the yong star আকাশ চৌধুরী একজন রেপিস্ট... ভাবতে পাড়ছিস কেমন টুইসট হবে বিষয় টা?
তোর ক্যারিয়ার এখানেই শেষ হয়ে যাবে।
তোর রাজত্বের পতন হবে আর তার সাথে সাথে তুই বেঁচে থাকতেও মরে যাবি যাকে বলে জীবন্ত লাশ। সবাই তোর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিবে।যেই মেয়েগুলি তোর সাথে একবার কথা বলার জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করত তারাও তোকে ঘৃনা করবে। 
রাস্তায় বের হলে সবাই তোকে দেখে বলবে ওই দেখো চৌধুরী বাড়ির রেপিস্ট ছেলে যাচ্ছে যারা তোর দিকে তাকানোর সাহস পেতো না তারাও তোর দিকে আংগুল তুলবে....
আর জানিস তো রাজনীতি চলে জনগনের পাওয়ারে তারা যখন তোর দিক থেকে মুখি ফিড়িয়ে নিবে তুই তোর পদ হারাবি।কাল থেকে তোর না থাকবে কোন রানী না থাকবে সাম্রাজ্য?


আকাশঃ আমি বিশ্বাস করতে পাড়ছি না নাবিল তুই এগুলি বলছিস?জীবনে যে ২ জনকে আমি বুকের বাম পাশে জায়গা দিয়ে ছিলাম সেই ২ জনেই আমার সাথে ছলনা করল?কেউ আমায় ভালবাসল না?কেন নাবিল আমার ভালবাসা কি এতই ফালতু ছিল?


নাবিলঃ জানি আকাশ তোর খারাপ লাগবে
এগুলি হজম করতে তোর কস্ট হবে,বিশ্বাস কর তোকে এসব বলতে আমারো খারপ লাগছে কিন্তু এছাড়া যে কোন পথ দেখতে পাচ্ছি না সবভাবেই তো দেখলাম কিন্তু মেঘলার জেদ ভাংতে পাড়লাম না এবার তোকে আঘাত করে দেখি তাতে যদি মেঘলা মুখ খোলে।দেখি মেঘলা তোর কস্ট কতক্ষন সহ্য করতে পাড়ে পরে না হয় তোর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিব (মনে মনে)
। 
জানিস আকাশ ক্লাসে সবসময় আমি ফার্স্ট হতাম হুট করে কোথা থেকে তুই উড়ে এসে জোড়ে বসলি তুই আমার জায়গাটা নিয়ে নিলি অনেক চেস্টা করেও তোকে আর ডাউন দিতে পাড়লাম না আস্তে আস্তে স্যারদের কাছে তুই আমার চেয়ে বেশি প্রিয় হয়ে গেলি যদিও আমি তোকে প্রতিদন্ধি ভাবতাম না কিন্তু কেন জানি না সবসময় সবাই তোর সাথে আমার তুলনা করত।তখন থেকেই জেদ ছিল তোর উপড়, তারপর রাজনীতি তেও তুই এগিয়ে গেলি তোর হয়ে মারামারি করতাম আমি আর নাম হত তোর।আমি এসব কিছুতেই মানতে পাড়ছিলাম না।
আজ সুযোগ পেলাম তাই কাজে লাগালাম।
আমি জানতাম মেঘলা তোকে বিয়ে করবে না আর এই জঘন্য কাজ টা করলে তো আরও করবে না। তাই তোর আবেগের সুযোগ নিয়ে এমন একটা জঘন্য কাজেই তোকে সাপোর্ট দিলাম ভুল করছিস জেনেও তোকে এগিয়ে দিলাম।আর তুই সেই ফাঁদে পা দিলি।


নাবিল ভিলেনি হাসি দিয়ে বলল তুই বড্ড বোকারে আকাশ তুই আমার সাজানো গোলকধাঁধায় হারিয়ে গেছিস।সেখান থেকে আর বের হতে পাড়বি না।
You are finish....!!
। 
থ্যাংকস মেঘলা আমাকে এত বড় সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
আর একদম চিন্তা করো না আমি তোমাকে বিয়ে করে বউ এর সম্মানেই দিব রেপ হয়েছো বলে দূরে ঠেলে দিব না।


কথাটা বলার সাথে সাথেই মেঘলা নাবিলের গাল লাল করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বলল লজ্জা করছে না এসব বলতে?যে আকাশ নাবিল ছাড়া এক পা ও বাড়ায় না যে আকাশ তোমাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে তাকে এভাবে ফাঁসাতে বুক কাঁপল না?


আকাশ এবার বলতে শুরু করল।নাবিল আর তোর মধ্যে কি পার্থক্য মেঘলা? তোর লজ্জা না করলে ওর কেন করবে? আর নাবিল তো কিছু করে নি তোকে বিয়েতে বাধ্য করতে এসব করার প্লেন আমারেই ছিল।নাবিল তো শুধু সুযোগ নিচ্ছে নাবিল কিছু করেনি।যা করার তুই করেছিস মেঘলা। আমি এখন বোঝতে পাড়ছি জীবন্ত লাশ কাকে বলে দেখ আমার নিজের বাবা মা আমার দিকে ঘৃনার চোখে তাকিয়ে আছে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু,যে কিনা সমস্ত বিপদে নিজের জীবন বাজি রেখে আমার পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়াত আজ সেও আমার হাত ছেড়ে দিয়েছে।আমার ক্ষমতা সমাজের অবস্থান সব এক নিমিশেই মাটিতে মিশে গেছে।আমি আর কোনদিন কারো সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলতে পাড়ব না সবাই আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলবে। পৃথিবীর সকল মেয়ে আমাকে ঘৃনা করবে।
তোর কি মনে হয় আমি পাগল? আমি কি জানতাম না আমি এই কাজটা করলে আমার সাথে কি কি ঘটবে? আমি সবি জানতাম জেনে বোঝেই করেছিলাম।আমি জানতাম আমি আমার অবস্থান হারাব কিন্তু এটা জানতাম না যে কথাগুলি নাবিল আমায় বলবে...


সারাজীবন ধরে একজনকে ভালবাসার বিনিময়ে এর চেয়ে বড় পুরুষ্কার আর কি হতে পাড়ে?
আমি আজ খুব খুশি মেঘলা সবকিছুর বিনিময়েও আমি তোকে চেয়েছিলাম।আমি স্বার্থপর নই আমি সব হারাতে রাজি ছিলাম শুধু বিনিময়ে তোকে চেয়েছিলাম কিন্তু ভাগ্যটা এতই খারাপ যে তোকেও পেলাম না আর বাকি সব কিছুও হারালাম।কিন্তু তুই যা চেয়েছিলি তাই হয়েছে।এবার তুই খুশি তো মেঘলা....???


মেঘলা কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল আমি এসব চাই নি আকাশ....


আকাশঃ তুই এটাই চেয়েছিলি.... দেখ মেঘলা দেখ তোর ছলনার জন্য একটা জীবন কিভাবে নস্ট হয়ে গেল কেন ঠকালি আমাকে?এত ভালোবাসার পর আমার কি এসব প্রাপ্য ছিল আমি কি সত্যিই এসবের উপযুক্ত ছিলাম?এখানে এত এত আপনজনদের মাঝে আজ আমার পাশে কেউ নেই।আমি হেরে গেছি মেঘলা... 


নাবিলঃ ইসস আকাশ তোর জন্য না বড্ড মায়া হচ্ছে কিন্তু কি করব বল তোর পদ টা আমার চাই। আসলে কি জানিস লোভ জিনিস টা সবাইকে বদলে দিতে পাড়ে যেমন এই বেইমান মেয়ে টাকেও বদলে দিয়েছে।সম্পত্তির জন্য তোর সাথে মিথ্যা ভালবাসার অভিনয় করে তোকে নিঃস্ব করে দিয়েছে এরকম মেয়ের জন্য সব মেয়েদের দুর্নাম হয়।এরা শুধু কেড়ে নিতে জানে কিছু দিতে জানে না।শুধুমাত্র কিছু টাকার জন্য বিক্রি হয়ে যায়।এই মেয়েটা কখনো তোর ভালবাসার যোগ্য ছিল না। এদের তো টাকা দিলেই বিছানায় নেওয়া যায় ভালবাসার মত পবিত্র কিছু পাওয়ার যোগ্যতা এদের নেই। দুনিয়ায় বহুত বেইমান দেখেছি কিন্তু এর মত একটাও দেখি নি। ছোট থেকে ওকে যারা বড় করল তাদের পরিবারকে ধ্বংস করে দিতেও ২ বার ভাবল না।তোর কথা ভাবলই না তোর বাবার কথাও ভাবল না আজ তদের বিয়ে না হলে তোর বাবার দিকেও তো সবাই আংগুল তুলবে সেটাও চিন্তা করল না এদের আসলে বেঁচে থাকার এই কোন যোগ্যতা নেই।মিথ্যাবাদী, বেইমান,স্বার্থপর লোভি মেয়ে...


মেঘলাঃ একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া... আমি সত্যিই মিথ্যাবাদী,বেইমান...আমি কেড়ে নিতে জানি তাই তো দাদির কাছ থেকে সব সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছি।

কিন্তু আকাশ আপনার মনে কি একবারো প্রশ্ন জাগলো না, দুনিয়ায় এত রেস্টুরেন্ট থাকতে আমি ডেটিং করতে কেন সেই রেস্টুরেন্ট এ গিয়েছিলাম।আর যদি যাওরেই থাকত সেদিন সেই সময়েই কেন? বাড়ির সবাই তো জানত আপনার মিটিং আছে,কোথায় আর কোথায় মিটিং সেটাও সবাই জানত তাহলে নিশ্চুই আমিও জানতাম। জেনে শুনে সেদিন সে সময়েই আমি কেন সেখানে গিয়েছিলাম?


আর নাবিল ভাই আপনাদের কারোর জানতে ইচ্ছে করল না? যে মিটিং এ আকাশ ছিলই না সেই মিটিং  কি করে আকাশ পদ পেল? যদিও সে যোগ্য ছিল তবুও সিনিয়র মেম্বারদের বাদ দিয়ে ও কি করে দলের দায়িত্ব পেল? 
ওহ আপনারা তো আমার মত বেইমান নন তাই এসব মাথায় আসে নি তাই না?


তাহলে আমিই বলি।
আমি রেস্টুরেন্ট এ গিয়েছিলাম প্রেম করতে নয়,আকাশের স্বপ্ন কিনতে ।সেদিন আমি দাদীর দেওয়া সমস্ত সমত্তি  বিক্রি করে আকাশের স্বপ্ন কিনেছিলাম।আর টাকাগুলি দিয়ে ফিরে আসার সময় আকাশের মুখোমুখি হয়ে গিয়েছিলাম আকাশ ফোনে কথা বলছিল তাই আমায় দেখে নি কিন্তু আমি দেখেছিলাম আমি জানতাম আকাশ আমায় যখন দেখবে হাজারটা প্রশ্ন করবে আর সত্যিটা জেনে যাবে আমি চাই নি আকাশ সত্যিটা জানুক তাই সেখানে বসে থাকা একজনকে রিকুয়েষ্ট করেছিলামা আমার বিএফ হওয়ার অভিনয় করতে।
বেইমান না হলে কি এই কথাগুলি এতদিন লুকাতে পাড়তাম?মিথ্যাবাদী না হলে কি গুছিয়ে বলতে পাড়তাম যে বিক্রি করে দেওয়া সম্পত্তির মালিক আরো ৩ বছর পর হব।মিথ্যাবাদী না হলে কি এফএম স্টেশনে কল দিয়ে সারারাত গল্প শুনে বলতে পাড়তাম যে বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছি?
জানেন আমি না খুব লোভি,লোভি না হলে কি ২ টা রিং এর জন্য সাঁতার না জেনেও ডোবায় ঝাঁপ দিতে পাড়তাম? লোভি জন্যই পেড়েছিলাম। আমি বেইমান,মিথ্যাবাদী, লোভি কিন্তু জানে ভাইয়া এমন বেইমান সচারাচর পাওয়া যায় না।


নাবিলঃ কিন্তু এত কিছু করার পড়েও তুমি বলো নি কেন?


মেঘলাঃ স্বার্থপর তাই,আমি পাড়ি নি যাকে নিজের চেয়েও ভালবাসি তাকে কস্ট দিতে। যাকে ভালবাসি তাকে কস্ট দেওয়া মানেই তো নিজেকে কস্ট দেওয়া আমি পাড়ি নি এত উদার হতে..... 


কথাটা বলার সাথে সাথে আকাশ দৌড়ে এসে নাবিলকে জড়িয়ে ধরল 


আকাশঃ নাবিল তুই শুনলি মেঘলা আমাকে ভালবাসে বলল....তুই শুনলি নাবি...
আমি তোকে কি বলে কৃতজ্ঞতা জানাব বোঝতে পাড়ছি না থ্যংকস দোস্ত আমি এতদিন এত অত্যাচার করেও মেঘলাকে দিয়ে যা বলাতে পাড়ি নি তুই পেড়েছিস তোর কাছে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব তুই চিন্তা করিস না আমি নিজে গিয়ে পদ থেকে অব্যাহতি দিব। আমার টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি কিছু চাই না রে, মেঘলার একটা কথাতেই জীবনের সব পেয়ে গেছি।নাবিল তুই আমার ইচ্ছা পুরন করেছিস এবার আমিও তোর সব ইচ্ছা পূরন করব আমি সারাজীবন তোর পাশে তোর ঢাল হয়ে থাকব চাই না আমার বাড়ি,গাড়ি,ক্ষমতা।


নাবিলঃ শান্ত হ আকাশ তুই মেঘলার একটা কথা শুনতে গিয়ে বাকি গুলি মিস করে গেছিস এতকিছু করার পড়েও মেঘলা কেন সব আড়াল করল সেটা জানতে হবে....এর পিছনে কে আছে?নাবিল ইরার দিকে তাকিয়ে বলল এর পিছনে তোর দাদী বা অন্যকেউ নেই তো?


মেঘলাঃ আমি আজ সব বলে দিব অনেক হয়েছে আর না আমিও এবার একটু ভাল থাকতে চাই আর কিছু লুকাব না....

পড়ুন  কলেজের ক্রাশ যখন আমার প্রেমে পর্ব 3 | Emotional Love Story
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

Leave a Comment

Home
Stories
Status
Account
Search