Golperjogot

Golperjogot

লাভার নাকি ভিলেন - পর্ব ৭ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

লাভার নাকি ভিলেন – পর্ব ৭ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

মেঘলা কাঁদতে কাঁদতে বলল সারাদিন কেউ আমার সাথে একটা কথা বলে না আমি সারাদিন একা একা থাকি।
আমার একদম ভাল লাগে না😔
একটু টিভি দেখতে এসেছিলাম তাও এখন বন্ধ হয়ে গেল।কেউ আমায় সহ্য করতে পাড়ে না এর চেয়ে গ্রামেই ভাল ছিল।

আকাশ আর কিছু না বলে বাইরে চলে গেল।
,
,
,
কিছুক্ষন পর মেঘলা মন খারাপ করে কলেজে গেল।
কলেজে যেতেই মেঘলা দেখল নাবিল কয়েকটা ছেলের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।

মেঘলা পিছন থেকে বলল এই যে খচ্চর কেমন আছেন?
নাবিল বিরক্তির দৃষ্টিতে তাকাল কিন্তু মেঘলাকে দেখে মুহুর্তেই নাবিলের মুড বদলে গেল।

মেঘলা আজ সাদা জামা পড়েছে সাথে সাদা হিজাব চোখে গাঢ় কাজল আর ঠোঁটে পিংক লিপস্টিক।

নাবিল তো হা করে মেঘলাকে দেখছে সাথে থাকা ছেলে গুলোও দেখছে। ছেলে গুলি মেঘলার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে নাবিল বলল আরে ছোট বোন যে কি খবর তোমার?
এই তোরা দাঁড়া বোন কে ক্লাসে দিয়ে আসি।

নাবিলঃ তারপর বলো কলেজে প্রথম ক্লাস কেমন লাগছে?

মেঘলাঃ খুব ভাল।

নাবিলঃ ফোচকা খাবে?

মেঘলাঃ ক্লাস আছে তো দেড়ি হয়ে যাবে।আপনি ক্লাসে যাবেন না?

নাবিলঃ কি যে বলো আমরা কি ক্লাস করতে কলেজে আসি?

মেঘলাঃ তাহলে….???

নাবিলঃ আমি আড্ডা দিতে আসি আর আকাশ মারামারি করতে আসে।

মেঘলাঃ কি বলেন? কাকে মারে?

নাবিলঃ আকাশের প্রচুর রাগ কেউ একটু ১৯,২০ করলেই ধরে মারে।আফটার অল কলেজের ভিপি বলে কথা।

মেঘলাঃ ভিপি কি?

নাবিলঃ তুমি সেটাও জানো না? আকাশ ছাত্র রাজনীতি করে আমাদের ফিউচার এমপি সাহেব তিনি।আর আমি তার এসিস্ট্যান্ট।

মেঘলাঃ ওমা তাই….

নাবিলঃ হুম।মেঘলা একটা বিষয় খেয়াল করেছো?

মেঘলাঃ কি

নাবিলঃ তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে সবাই তোমাকে দেখছে।

মেঘলাঃ কি যে বলেন…☺

মেঘলা আর নাবিল কথা বলছিল তখন আকাশ কলেজে ঢুকল মেঘলাদের সামনে দিয়েই হেঁটে চলে গেল।কথা বলল না।

নাবিলঃ কি ব্যাপার আকাশ বিল্ডিং এ ঢুকছে কেন আর আমাদের সাথে কথা বলল না কেন?

মেঘলাঃহয়ত কাজ আছে তাই যাচ্ছে আমাকে তো আগেই বলে দিয়েছে কলেজে কথা বলা যাবে না।

নাবিলঃ তাই বলে আমার সাথেও বলবে না?আর এটা ভাংগা বিল্ডিং কোন ছাত্র এখানে যায় না।আকাশ কাউকে মারলে এখানে নিয়ে মারে ও ছাদের দিকে যাচ্ছে মানে কাউকে মারবে। তুমি ক্লাসে যাও আমি আকাশের কাছে যাই বলে নাবিল চলে গেল।

পড়ুন  Sad Story Bangla Mr. Fuska wala Part 5 | Bangla Golpo

মেঘলাঃআজব কারন ছাড়াই মানুষকে মারে।আমাকেও মারে😫

মেঘলা ক্লাসে গিয়ে ঠিকঠাক ভাবে ক্লাস করেছে কলেজে আজ মেঘলা আকাশের সাথে কোন কথা বলে নি।ক্লাস শেষে সে যথাসময় বাসায় ও চলে এসেছে।

বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা তখন আকাশ বাসায় আসল।
রাবেয়া বেগম,বিপাশা ২ জন মিলে গল্প করছে। আকাশ এসে তাদের সাথে বসল তখনি মেঘলা ২ কাপ চা নিয়ে আসল।

মেঘলাঃ আপনি আছেন আমি ত জানতাম না। একটু বসুন আমি আপনার জন্য চা নিয়ে আসছি।

আকাশঃ দাড়া…. আমি চা খাব না। এক কাপ কফি দিস কিন্তু এখন না আমি ঘরে যাওয়ার পর।এখন এদিকে আয়।

মেঘলা আকাশের কাছে যেতেই আকাশ ব্যাগ থেকে একটা প্যাকেট বের করব দিল মেঘলাকে।
যা দেখে আকাশের মা আর ভাবির চোখ কপালে উঠে গেছে।
মেঘলাঃ কি এটা?

আকাশঃ খুলে দেখ।

মেঘলা প্যাকেট খুলে অবাক হল এটা একটা ভাল ব্র‍্যান্ডের নতুন ফোন। ফোন টা হাতে নিয়ে মেঘলা বলল কার এটা?

আকাশঃকার আবার তোর….পছন্দ হয়েছে?

আকাশের কথা শুনে মেঘলার খুশি যেন আর ধরে না। খুশিতে আত্মহারা হয়ে বলল আমার তো বিশ্বাস এই হচ্ছে না। আমার ফোন….!!! খুব সুন্দর ফোনটা আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।

বিপাশা রাগান্বিত হয়ে বলল ওর ফোনের কি দরকার? চার কুলে যার কেউ নেই সে ফোন দিয়ে কি করবে? কার সাথে কথা বলবে আর ওকেই বা কে ফোন করবে?

আকাশঃ অন্যকারো সাথে কথা বলার জন্য ফোন দেই নি তো আমার সাথে বলার জন্য দিছি।

রাবেয়া বেগমঃ মানে কি?

আকাশঃ কাল ওর কাছে যদি ফোন থাকত তাহলে ও হারাত না আর এত কাহিনিও হত না ও হারিয়েছে জন্যে বাবা পুলিশ কেস পর্যন্ত করেছে আমি চাই না এই ঘটনা ২ বার ঘটুক।সাথে ফোন আছে এখন আর ঝামেলা নেই যে জাহান্নামেই যাক কোন সমস্যা নেই অন্তত খুজতে হবে না। আমার অনেক কাজ আছে ওকে খোঁজার মত সময় আমার নেই বোঝেছো।

আর আমি কাকে কি দিচ্ছি কেন দিচ্ছি ভবিষ্যতে এমন উদ্ভট প্রশ্ন করবা না যুক্তি ছাড়া কোন কাজ আমি করি না।নিজেদেরকে ঝামালা মুক্ত রাখার জন্যই ফোন দিয়েছি প্রেমআলাপ করার জন্য না।

পড়ুন  মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৪ | মোনা হোসাইন

রাবেয়া বেগমঃ একদম ঠিক বলেছো বাবা আমি বোঝতে পাড়ি নি সরি।ঠিকি করেছিস কাল তোর বাবা ত একদম পাগল হয়ে গেছিল যাক ফোন দিয়েছিস ভালই হয়েছে।আর ও যখন কলেজে চলে যায় আমি ত বাসায় কিছুই খোঁজে পাই না সব ও গুছিয়ে রাখে এখন থেকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করতে পারব।

বিপাশাঃ তাইবলে এত দামি ফোন দিতে হবে? আকাশের নিজের ফোনটাও ত এত দামি ব্র‍্যান্ডের না।

ভাবি আকাশ কাউকে ফালতু জিনিস গিফট করে না বলতে বলতে উঠে দাঁড়িয়ে হাতের ব্যাগটা বিপাশার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল নেকলেস টা কেমন হয়েছে দেখে জানিও।

কথাটা শেষ করার আগেই বিপাশা ব্যাগটা নিয়ে খুলে চমকে উঠল বেশ দামি একটা নেকলেস।

আকাশঃ এখন তুমিও বলো যে মেঘলা তোমার নেকলেস নিয়েছে বলে ওর হয়ে আমি এটা তোমায় দিলাম।শোন তুমি আমার একমাত্র ভাইয়ের একমাত্র বউ কোন কিছুর মন খারাপ করবে সেটা মানতে পারব না তাই এনে দিয়েছি বোঝলে?

খুশিতে বিপাশার চোখ চিকচিক করছে আরে এসব ফালতু কথা ভাবব কেন কত সুন্দর একটা গিফট দিলে।

আকাশঃ তাহলে বসে আছো কেন?যাও গলায় পড়ে দেখো কেমন হয়েছে।

বিপাশাঃ ঠিকি বলেছো…. ইস কত ভাল আমার ভাইটা বলে বিপাশা নিজের ঘরে চলে গেল।

মেঘলা তখনো ফোন দেখছে….

আকাশ উপড়ে যেতে যেতে বলল মেঘলা কফিটা দিয়ে যা….

মেঘলাঃ এক্ষুনি নিয়ে আসছি।

কফি বানাতে বানাতে আকাশ ফ্রেশ হয়ে এসে ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে।

মেঘলাঃ আসব ভাইয়া…

আকাশঃ উফফ আবার ভাইয়া….হুম মহারানী আসুন।

মেঘলা ঘরে ঢুকতেই আকাশ বলল দরজা টা লক করে ভিতরে আয়।

মেঘলাঃ কেউ কিছু বলবে না?

আকাশঃ না বলবে না। মা ঘরে টিভি দেখছে আর ভাবি নেকলেস পেয়ে খুব খুশি। এখন অন্তত হাজার খানি সেলফি তুলবে আর সব বান্ধবিদের পিক পাটাবে ১ ঘন্টার আগে রুম থেকে বের হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।তাই তোকে নিয়ে ভাবার সময় এখন কারো নেই।দরজাটা টা লাগিয়ে আমার কাছে আয়।

মেঘলা তাই করল।
আকাশকে কেমন যেন অন্যরকম লাগছে শান্ত শিষ্ট।হয়ত মন খারাপ,তাই মেঘলা আকাশের পাশে গিয়ে বসল। আকাশ মেঘলার ফোনটা হাতে নিয়ে বলল দেখ এখানে একটা ফেইসবুক একাউন্ট আছে #সাহিত্যের_ছোয়া গ্রুপে এড হয়ে স্টরি পড়িস।আর যখন মন খারাপ হবে গ্রুপের আপুদের সাথে শেয়ার করিস দেখবি মন ভাল হয়ে যাবে। এই একাউন্ট টা তোর ডায়েরি মনে করিস নিজের সুখ দুঃখ সব লিখে রাখিস। তাছাড়া ইন্টারনেট এ সব কিছুই আছে যা খুশি দেখিস।গেম খেলিস তাহলে আর একা একা লাগবে না।
যা করার ফোন দিয়ে করবি, টিভি দেখার দরকার নেই। আর কখনো ভাবির ঘরে যাবি না ঠিক আছে? এখন থেকে ফোনের সাথে সময় কাটাবি কারো সাথে কথা বলার দরকার নেই ঠিক আছে?

পড়ুন  শেষ ঠিকানা তুমি – প্রেমের গল্প পর্ব 17 | Bangla Golpo

মেঘলাঃ সত্যি এটা আমার একাউন্ট….???

আকাশ ছট করে মেঘলার একটা ছবি তুলে আইডিতে সেভ করে দিয়ে বলল হুম তোর একাউন্ট।
কিন্তু আজে বাজে ফ্রেন্ড বানাবি না ঠিক আছে?

মেঘলাঃ আচ্ছা….কিন্তু বিশ্বাস করুন আমি ভাবির নেকলেস নেই নি।

আকাশঃ আমি জানি নিস নি আর নেকলেসটাও হারায় নি…

মেঘলাঃ তাহলে নতুন কিনে দিলেন যে….

আকাশঃ উনাকে গিফট না দিলে তোর ফোন নিয়ে বাড়িতে মহামারি শুরু হয়ে যেত তাই দিয়েছি।এখন কেউ আর কিছু বলবে না তাই দিয়েছি।

মেঘলাঃ আমার জন্য এতগুলি টাকা খরচ করলেন?

আকাশঃ বেশি কথা আমার ভাল লাগেনা মেঘলা। এখন যা তুই এখান থেকে।

বেশি কথা বললে থাপ্পড় খেতে হবে সেটা মেঘলা জানে তাই চুপচাপ উঠে চলে যেতে চাইল।

কিন্তু আকাশ পিছন থেকে আবার গম্ভির গলায় বলল মেঘলা….

মেঘলাঃ হুম….

আকাশঃ আমি তোকে মারি তোর খুব খারাপ লাগে তাই না?

মেঘলাঃ কই না তো এটা নিয়ে আমি কি কখনো কিছু বলেছি?আপনি কেমন সেটা তো আমি ছোট থেকেই জানি

আকাশঃ আমি আগের মত নেই মেঘলা রাগ উঠলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পাড়ি না তুই আমার কাছে বেশি আসিস না কেমন…

মেঘলা…..

আকাশঃ মেঘলা….অনেক দিন থেকে মনের মধ্যে কিছু প্রশ্ন জমিয়ে রেখেছি তোর জন্য আজ জিজ্ঞাস করব উত্তর দিবি ?

মেঘলাঃ কি প্রশ্ন.. ….❓

আকাশঃ আমার সাথে এমন কেন করেছিলি মেঘলা…..??? আমার কি দোষ ছিল?

,
,
,
চলবে…!!

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top