Golperjogot

Golperjogot

মায়ের ভালোবাসা – বাংলা ইমোশনাল গল্প পর্ব 2 | Mayer Valobasha

২ মাস পর বারিতে যাচ্ছি,কিন্তু কাওকে বলিনি।সারপ্রাইজ দিবো বলে কাওকে কিচ্ছু জানাইনি,কিন্তু নিজেই যে এভাবে সারপ্রাইজ হয়ে যাবো তা কখনও ভাবি নি.

বারিতে যেয়ে দেখি মা অনেক শুকিয়ে গেছে আর লাকড়ি চুলায় রান্না তরছেন।আমাকে দেখে মা আমার কাছে আসল,

→আম্মু কেমন আছো,আর তোমার শরিরের যত্ন নও না কেন?

→আরে পাগল ছেলে তুই আজ বারিতে আসবি ফোন করে আসবি না,আমাকেতো একবার বলতে পারতি।

→মা,আমি যেটা বলছি তার উত্তর দেও,তুমি শরিরের যত্ন নেও না কেন??আর কাজ তুমি করছো কেন??

→দেখ বাবা আমি তো বুড়ি হয়ে গেছি আর কত দিন বা বাঁচবো।তাই কাজ আমিই করি,শুধু শুধু বউমা কষ্ট করবে কেন..

→মানে তোমার এখন শেষ বয়স, আর তুমি বলছো এখন কাজ করতে হবে,কেন তাসফি কি করে, তার তো কোন কাজ নেই তোমাকে তো সাহায্য করতে পারে।

→আচ্ছা বাবা সে সব বাদ দে।এখন বলতো কেমন আছিস।

আমি মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মায়ের চোখে পানি।জানি না মা আমাকে পেয়ে এই এতো কষ্টের মাঝে সুখের কান্না করছে। যে মাকে এতো ভালোবাসি,যে মা নিজে কষ্ট করে আজ আমাকে মানুষ করেছে সে মা এখনও কষ্ট করছে,আর কয়েক দিন দেখি তার পর কিছু একটা করবো।

→হুমম মা ভালো,কিন্তু তুমি তো ভালো নেই,আর আজ আমি আসচ্ছি।তোমার জন্য নতুন কাপড় এনেছি,যাও এগুলো পরে আস।

→আচ্ছা তুই রুমে বসে রেষ্ট নে আমি তোর জন্য খাবার নিয়ে আসচ্ছি।

→আচ্ছা মা,
আমি রুমে ডুকে দেখি তাসফি রুমে বসে সাজতেছে।আমাকে দেখে এক প্রকার চমকে গেছে,সেটা আমার বতাকে দেখে বুঝতে অসুবিধা হলো না,তাকে তো আর আজকে এসেই কিছু বলতে পারি না,কেননা মা তো আর আমাকে কিছু বলেনি।তাই আমাকে কিছু দিন দেখতে হবে তাসফির আচরণ।

→কেমন আছে আমার প্রিয় স্বামীটা
→ভালো তুমি কেমন আছো,আর তুমি আমাকে দেখে এরকম চমকে গেলে কেন??কোন সমস্যা করলাম আমি বারিতে এসে।

→আমি কি বলছি তুমি কোন সমস্যা করেছো,না জানিয়ে আসচ্ছো তাই দেখে চমকে গেলাম সত্যি তুমি তো নাকি অন্য কেও তোমার রুপে আসচ্ছে।

→মানে আমার রুপে কে আসবে কি বলতে চাচ্ছো তুমি খুলে বলো তো।

→আরে কিছু না, তুমি একটু বেশিই বুঝো।তুমি রেষ্ট নেও আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসি।

→ মা আমার জন্য খাবার আনতে গেছে।

তাসফি আর খাবার আনতে গেল না।আর মা আমার রুমে আসার আগ মুহুর্তে তাসফির ফোনে ফোন আসলো,আমার জন্য ধরলো না, প্রথম বার কেটে গেল,আবার বাঝতেছে এবারও ধরলো না,

→ কি তাসফি ফোন ধরো না কেন,কে ফোন দিয়েছে,
→ আরে রং নাম্বার থেকে ডিস্টার্ব করছে কত দিন ধরে।

আমি তাসফির কথা শুনে আমার রাগ উঠে গেল,কার এতো বড় সাহস আমার স্ত্রীতে রং নাম্বারে ডিস্টার্ব করে,দাও তো ফোন টা আমি কথা বলি

→ না তার দরকার হবে না,আর কয়েকবার দিবে তার পর আর দিবে না।
→ তাসফির কথা আমার যেন কেমন লাগছে,তাই আমি সিন্ধান্ত নিলাম যে ভাবেই হোক এখন যে ফোন দিছিল কে সে যানতেই হবে,কি লুকাচ্ছে আমার কাছ থেকে তাসফি,আমি এর শেষ দেখেই ছারবো,বারিতে মা এখনও কাজ করে, বোন থাকলে বোনটা মায়ের কাজে সাহায্য করতো,বোন হয়তো পাইভিট পরতে গেছে।
(মনে মনে এগুলো ভাবছিলাম)

→কিরে কি ভাবছিস বসে বসে,নে খাবার গুলো খেয়ে নে,টান্ড হয়ে যাবে তো খাবার গুলো।

মায়ের কথায় আমার ধ্যান ভাংলো,তার পর মাকে বললাম মা তোমার হাতে অনেক দিন ধরে খাইনা, আজ খাইয়ে দাও না প্লিজ।।

মা আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিলো,আর আমি ছোট বাচ্চাদের মত খাচ্ছিলাম,আর আমার আসল কাজটা করেছিলাম,সেটি কি জানেন আমার আসল কাজ,সেটা হচ্ছে আর চোখে দেখছিলাম তাসফি কি করে এখন,

দেখি সে এক মনযোগে ফোনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আর খুব তারাতারি টাইপিং করছে,মনে হয় কোন কিছু নিয়ে চিন্তিত।মা আছে বিধায় তাকে কিছু বললাম না।মা যাওয়ার পর আমি খাটে শুয়ে আছি চোখ বন্ধ করে,তাসফি মনে করছে আমি হয়তো ঘুমিয়ে পরছি,তাই সে বালিশের নিচে মোবাইল রেখে বাথরুমে গেলো।এখনও তার ফোন হাতে নিই নাই।এর মাঝে একটা এসএমএস আসলো, আমি ভাবলাম হয়তো অফিস থেকে দিছে তাই ততটাও গুরুত্ব দিলাম না,কিন্তু একে একে আরো ৪ টা এসএমএস আসলো, না এবার দেখতেই হয় কে এসএমএস দিল,ফোন হাতে নিয়ে দেখি আননোন নাম্বার থেকে এসএমএস আসচ্ছে,আমি যেটা ভাবছিলাম সেটাই তাসফি কে রং নাম্বার থেকে বাবু সেনা আজ কখন আসবে এগুলা এসএমএস আসচ্ছে,কিন্তু তাসফি তো বলেছিলো তাকে ডিস্টার্ব করে,কিন্তু তাহলে এগুলো বলল কেন।আমার মাথায় ডুকছেনা তাই ফোনটা হাতে নিয়ে লক খুলার চেষ্ট করছি,কয়েকবার ট্রাই করার পর খুলে গেল,দেখি সেই নাম্বার অনেক দিন আগে থেকেই কথা হয়,আর এসএমএস দেখে বুঝতে পারলাম,তাসফি নতুন কারো প্রতি অন্ধ হয়ে আছে,যার কারণে আমার কথা তাসফি একটাও রাখে নি।

→মোবাইল টা আগের যায়গায় রেখে চলে আসলাম মায়ের রুমে।মা তোমাকে একটা কথা বলবো তার সঠিক উত্তর দিবে।।
→হুমম বল কি এমন বলবি যার জন্য এরকম করে কথা বলছিস

→আচ্ছা মা তাসফি তোমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে তাই না।তোমার সাথে সংসারের কাজে সাহায্য করে না,আর বারির বাহিরেও থাকে তাই না।

→ তুই এগুলো কেমনে জানলি কে বলছে তোকে এগুলো,না তাসফি মোটেও এরকম না,

→ মা তুমি কিন্তু যান আমি মিথ্যে শুনতে পছন্দ করি না,তাই সত্যি বলো।

→কি করবো বল,তোকে নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করিয়েছি,যানতাম না মেয়েটা এরকম হবে,তাসফি প্রায় অনেক রাত করে বারি ফিরে,আর অনেক ক্লান্ত দেখায় তাতে তখন,যানি না কোথায় কি করে বেরায়,একদিন তাকে বলেছিলাম যে তাসফি তুমি এরকম করে চলো কেন,এটা তোমার বাবা বাড়ি না,তোমার শ্বশুর বাড়ি, ভালো ভাবে চলা ফেরা করো,কিন্তু তাসফি কি বলে ছিল যানস
→এই বুড়ি বেশি কথা বলবি না,আমার যা ইচ্ছে তাই করবো তোর টাকায় চলি নাকিরে, আমার স্বামীর টাকায় যা ইচ্ছে করার করবো তাতে তোর কি,আর কয়দিন পর তো মরে যাবি,তখন তো আমাকেই সব তেখতে হবে,তার আগেই তোকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবো বেশি কথা বললে,

→সেদিনের পর থেকে আমি আর তোর বোন ভাতে কাপরে আলাদা হয়ে যাই,আর আগে যেরকম কষ্ট করেছি সেরকম করেই বেঁচে আছি,তোর বোন কে নিয়ে,

মায়ের কথা শুনে মনে হচ্ছে তাসফিকে এখনই মেরে ফেলি।মায়ের রুম থেকে আমার রুমে চলে আসলাম,তারপর কিছু বললাম না,দেখি তাসফি ঠিক হয় কিনা,কিন্তু না যত দিন যাচ্ছে তাসফি অন্য রকম হয়ে যাচ্ছে,তাই আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাসফিকে বিধায় করে দিব চির জিবনের জন্য।

কোট থেকে এসে তাসফি কে বললাম চলো তোমাদের বারিতে যাই না অনেক দিন ধরে, আজ তোমাদের বারিতে যাব।তাসফি তাদের বারির কথা শুনে এক লাফে রেডি হয়ে নিল,ব্যাগ গুছানোও শেষ মাকে বলে বের হলাম মা আজ তোমাকে না জানিয়ে বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি,তোমাকে পরে বলবো।তারপর তাসফিদের বারিতে এসে তাসফিকে বললাম তাসফি এই কাগজটা রাখো,আমি আসতাছি।তাদের বারির ভিতরেও যাইনি,যখন রাস্তায় এসে পরেছি দেখি তাসফিনমর বাবা, তাকে সালাম দিয়ে বললাম আপনাদের মেয়ে রেখে যাচ্ছি,একবারের জন্য তাকে আপনারা যেখানে খুঁশি বিয়ে দিতে পারেন,আমার বারিতে তার আর ভাত নেই,বলে চলে আসলাম,

তাসফির বাবা বারিতে যেয়ে দেখলো তাসফি ডিফোর্স পেপার নিয়ে দারিয়ে আছে,তাসফির বাবা তাসফিকে এ পর্যন্ত তার শরিরে হাত তুলে নাই,কিন্তু আজ মেরে বলল

→তুই কি এমন করেছেস যে আমরিন তোকে ডিভোর্স দিয়ে দি,তোর মত মেয়ের আমার বারিতেও যায়গা নেই চলে যা এখান থেকে….

তাসফির খবর আর আমি জানি না।

তারপর বারিতে এসে মাকে সব খুলে বললাম,আর আজ আমার ছুটি শেষ তাই মা বোন কে নিয়ে ছিটলাম শহরের উদ্দেশ্য। আর যেন আমার মা বোন না কষ্ট পায়,সেই জন্য নিজের কাছেই রেখে দিব তাদের,

কিছু গল্প অসমাপ্তিতেই সমাপ্তি হয়ে যাই,যেরকম এই গল্পটাও হলো,তবে গল্পের নাম অনুসারে যেটা প্রয়োজন সেই ভাবেই চলে গেছে গল্পটা ধন্যবাদ💝💝

Leave a Comment