Golperjogot

Golperjogot

মিস্টার ক্ষেত – বাংলা ইমোশনাল অনুগল্প | Short Story

Mister Khet

Amrin Talokder { Short Story }

ফারিয়া: এই ক্ষেত শুন।

আমি আমরিন তালুকদার নিলয়, বাবা নেই।মা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছে,যদিও তাতে হিমশিম খেতে হয়,তাই দুই একটা টিউশন করিয়ে চলে যায়।আমি এবার ইন্টার প্রথম বর্ষে,আজই কলেজের প্রথম দিন ছিল,আর যে মেয়েটি ক্ষেত বলে ডাকছে সে আমাকেই ডাকছে,কারণ আমি ততটাও ভালো পোশাক পরে আসি নি,কারণটা আগেই বলে দিয়েছি।

যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, তারা কি আর ভালো জামা কাপড় পরতে পারে?যাই হোক পরিচয় তো অনেক দিয়েছি চলুন গল্পে ফিরি।

নিলয়: জ্বি আমাকে বলছেন?

ফারিয়া: তোর ছারা এই কলেজে আর কেও কি ক্ষেত আছে??

ফারিয়ার কথা শুনে সাথে থাকা ফারিয়ার বান্ধবী গুলোও হাসতে শুরু করে।কি সুন্দর তার হাসি,এক মায়াবী তার রূপ,ভালো লাগার মতো তার চোখ,এ যেন এক পরী,কিন্তু তার ব্যবহার একদম জঘন্য, আপনার তো দেখলেনই কেমন ব্যবহার করলো আমার সাথে।

নিলয়: জ্বি কিছু বলবেন?

ফারিয়া: তোর তো দেখছি বেশ তারা তাই না?

নিলয়: জ্বি,একটু তারাই ছিল, প্রথম ক্লাস তাই।

ফারিয়া: আহারে সোনা,আজ ত্তমাররর প্রথমম ক্লাত বুঝি।

এমন ভাবে কথা বলছে মনে হচ্ছে আমি তার বয়ফ্রেন্ড,কিন্তু ভয় হচ্ছে তার কথা বলার ধরণ দেখে।শুনেছি এই কলেজে নাকি র্যাগ করা হয়,ভাবছি আমি তো আবার র্যাগের শিকার হলাম না তো।

নিলয়: আপনাদের কথা বলা শেষ হলে কি আমি যেতে পারি?

ফারিয়া: আরররে বাবুটা একটু দারাও না,ওই যে,একটা মেয়ে দেখছিস তাকে গিয়ে এই চিঠিটা দিয়ে তার ঠোঁটে কিস করবি।

নিলয়: কিহহহ ওই মেয়ে…?আমি পারবো না।

ফারিয়া: কেন রে মেয়ে পছন্দ হয়নি বুঝি?তোকে তো ওই মেয়েকেই চিঠিটা দিতে হবে আর সাথে কিস ও করতে হবে।আর যদি না করিস তো আজ এখান থেকে পেন্ট খুলে রেখে দিব,তার পর পেন্ট ছারা যাবি।

কি করবো কিচ্ছু না ভেবে যেতে হলো সেই মেয়েটির কাছে,যাওয়া মাত্রই থাপ্পড় মেরে দিল,আর পিছন ঘুরে দেখি সেই মেয়ে গুলোও হাসচ্ছে।আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না,তাদের প্লান করাই ছিল, আগে থেকে।তাই সেখান থেকে মাথা নিচু করে চলে আসলাম।তাদের মতো ধনীর ধুলালীর সাথে তো আমাদের যায় না,তাদের না পারবো কিছু বলতে না পারবো কিছু করতে।তার পর ক্লাস খুঁজে ক্লাস রুমে বসে আছি,নতুন যায়গা নতুন পরিবেশ, কাওকে চিনি না।

আর চিনবোই বা কেমন করে?নিজের এলাকা ছেরে চলে আসচ্ছি নতুন এক মোহে,আই মিন স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশায়,নতুন শহরে।নতুন রূপে বাঁচতে শিখছি,তাই তো আগের শহর পরিত্যাগ করতে হয়েছে।যদি পুরোনো শহরেই রয়ে যেতাম কখন বাস্তবতা মেনে চলতে পারতাম না,যাইহোক সেসব কথা অন্য এক দিন বলবো।

ক্লাস রুমে বসে আছি এমন সময় কলেজ গেটে দেখা হওয়া আই মিন যারা আমাকে র্যাগ করলো তারাও এই ক্লাসে ডুকছে।তাদের দেখে কিছুটা ভয় পেলাম,কারণ তারা হয়তো এখানের স্থানীয়,স্থানীয় তো কি হইছে চাইলে আমিও পারতাম পাল্টা জবাব দিতে, কিন্তু চাই না পুরোনো দিন গুলোকে মনে করতে।চাইনা পুরোনো সৃতি আবারো জাগরিত হোক।তাই তো সব কিছু ভুলে চলে আসচ্ছি নতুন শহরে।

ফারিয়া: কিরে ক্ষেত, তুই এই ক্লাসে কেন?

নিলয়: দেখুন আমার নাম আছে,তাই আমি মনে করি কারো নের ভ্যঙ্গ করাটা ঠিক নয়,যদি আমাকে ডাকতেই হয় তো আমরিন তালুকদার নিলয় নামে ডাকতে পারেন,আই মিন সংক্ষেপে নিলয় বলতে পারেন,

নেহা: কি রে ফারিয়া?ক্ষেত দেখি কথাও বলতে জানে😪😪।

বলেই হাসতে থাকে তারা,আসুন তাদের সাথে পরিচয় হয়ে নেই।ফারিয়া হচ্ছে এই গল্পের আসল নাইকা,আর নেহা হলো ফারিয়ার বেষ্টফ্রেন্ড,আর যেগুলো আছে তারা ফারিয়ার চামচিকা।আই মিন ফারিয়া যা যা বলবে তারা তাই করবে,ফারিয়ার উপর কোন কথাই তারা বলতে পারবে না।

ফারিয়া: এই চল নেহা,ম্যাম এসে পরবে, সিটে গিয়ে বসি চল।

নেহা: হুমম ঠিক বলছিস চল।

তার পর ফারিয়া ও নেহার দল বল যার যার সিটে বসে যায়।আমি অতি সাধারণ পোশাক পরায় কেও আমাকে সামনে বেঞ্চে বসতে দেয় নি।আই মিন সবাই আমাকে দেখে কিছুটা অসহ্য বোধ করেছে,তাই আমি একাই একাকি পিছনের একটু বেঞ্চে বসে রইছি।হঠাৎ একটা মেয়ে এসে বলল…..

অচেনা মেয়ে : হ্যালো মি. আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি?

নিলয়: হুমম অবশ্যই, কেন নয়?

তার পর মেয়েটি আমার পাশে বসে পরে।

অচেনা মেয়ে: হাই আমি তাসফি জান্নাত, তুমি?

নিলয়: আমি আমরিন তালুকদার নিলয়। নিলয় বলে বলতে পারেন।

তাসফি: সো ফ্রেন্ডস??(হাত বারিয়ে)

নিলয়: আমার সাথে বন্ধুত্ব করবে?যেখানে সবাই আমাকে ইগনোর করে যাচ্ছে আমি ক্ষেত বলে।আর সেখানে আপনি বন্ধু হবেন?করুনা করছেন বুঝি?

তাসফি: একটা থাপ্পড় খাবি বুঝছিস,আজ থেকে তুই আমার বেষ্টফ্রেন্ড বুঝলি,আর আমাকে আপনি নয় তুই করে বলতে পারিস।

নিলয়: আচ্ছা,

তাসফি মেয়েটা সত্যি অনেক ফ্রি মনের মেয়ে,তার মতো মেয়ে এত্ত ভালো হবে,কল্পনাও করার বাহিরে,তার মাঝে নেই কোন অহংকার বোধ,নেই কোন হিংসা,এক দেখায় বন্ধুত্ব করে নিল,তাও আবার আমার মতো ক্ষেত কে?

ফারিয়া: কি রে তাসফি, তোরে দেখলাম ওই ক্ষেতটার সাথে অনেক হেসে কথা বলতে।তা তোদের মাঝে কিছু চলছে নাকি🙈🙈।

তাসফি: তুই কি পাগল হলি?

ফারিয়া: কেন কেন??

তাসফি: তুই দেখে গাধা,আমি তো তোর মতো গাধা নই,ওই রকম ছেলেরা অনেক সহজ সরল ও অনেক ব্রিলিয়েন্ট হয়।কলেজে আসি আর যাই লেখা পড়া তো কিচ্ছু মনোযোগ দেই না,

ফারিয়া: এই এই থাম থাম, তুই কি বুঝাতে চাচ্ছিস?

তাসফি: আরে কলেজে তো ঘুরে ফিরেই কাটাই নোট তো একটাও নেই, তো তার নোট গুলো নিয়ে পরে পরিক্ষা দিলে ভালো রেজাল্ট করতে পারবো😇😇।তাই বন্ধু বানানো।

ফারিয়া: হু ভালো করছিস,দেখিস আবার প্রেমে পরে যাস না যেন🙂।

বলেই সেখান থেকে ফারিয়া চলে যায়।আর তার মনের ভিতর চলে হিংসার এক নতুন খেলা,যা বাস্তবে রূপ দিতে মাঠে নামছে।আর কারো জীবন ধ্বংস করতে সে এক বারো পিছপা হবে না।

এভাবেই বেশ কিছু দিন চলে যায়।এর মাঝে ফারিয়া নিলয়ের সাথে মাঝে মাঝেই কথা বলে,কিন্তু আগের মতো খারাপ ভাবে নয়,অনেক নম্র ভদ্র ভাবেই কথা বলে।এক দিন ফারিয়ে বলেই দেয়।আর তাদের মাঝে ভালো কটা বন্ধুত্ব তৈরি করে নেয় ফারিয়া,যা পরবর্তীতে নিলয়কে ফারিয়ার প্রেমে সাহায্য করে।ফারিয়া দেখতে যতটা সুন্দর, তা থেকে সুন্দর তার চোখ গুলো,তার হাসির মায়ায় যে কেও ডুবে যেতে চাবো,আর রইলো তাহার কণ্ঠ,সব কিছু মিলিয়ে নিলয় ফারিয়ার প্রতি ফিদা,কিন্তু সে তো ফারিয়ার মতো বড় লোক নয়,তাই তার ভালোবাসাকে চাপা দিয়েই রেখে দেয়।কিন্তু ফারিয়া যে এরকমটা করবে তা কখনও ভাবেনি নিলয়।

ফারিয়া: নিলয় তোমাকে একটা কথা বলবো ভাবছিলাম,কিন্তু তুমি যে কি ভাবে নিবা বুঝতে পারছি না।

নিলয়: হুমম বলতে পারো সমস্যা নেই।আমি আবার কি ভাবে নিব??

ফারিয়া: আমি যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি নিলয়,যেদিন তোমায় প্রথম দেখি জানি কি করে এক ভালো লাগা কাজ করে ছিল তোমার জন্য, কেন যেন মনে হয়েছিল তোমাকে আমি অনেক জনম ধরে চিনি,তোমাকে আমি সত্যি অনেক ভালোবাসি বিশ্বাস করো নিলয়।

নিলয়: কোথায় আমি আর কোথায় তুমি,হয় না যে তোমার সাথে তুলনা,তুমি রয়েছো চাঁদের জায়গায়, আমি যে এক তারই বাম্ম্রন,আমি কি এই ছোট এক মানুষ,আমি চাঁদ পারি ছুতে?আমি যে পারি না, চাঁদ যে বহুদূরে।চাঁদকে ছুঁতে যেতে হবে আমায় আকাশ সমতূল্যে।

ফারিয়া: ভালো বাসি প্রিয়,তোমারই এই কাব্যে হারিয়েছি আমি,হারিয়েছি যে তোমারই প্রেমে,মিশে যেতে চাই তোমার বুকেরি পাজরে।তুমি কি নিবে আমায় তোমারই বাহুডোরে।আমি যে ভালোবাসি প্রিয়, রেখেছি তোমার মনেরই গহীন ঘরে।

দুজেনে এক এক করে কাব্য রচনা করে যাচ্ছে।কারো অন্য দিকে আর খেয়াল নেই।তাদের কাব্য এক এা করে বেরেই চলছে।আপনারা শুনলে আপনারও তাদের দুজনের প্রেমে পরে যাবেন।যাই হোক তাদের দুজনের প্রেমে আর কাওকে আনতে চাইনা,তারা থাকুক না তাদের মতো।তারা মিলুক না তাদের মতো,সেখানে,অন্য এক কাওকে নিয়ে তাদের ভালোবাসায় ফাটল ধরাবো।

নেহা: উমমমম,(কাশি দিয়ে)কি রে ফারিয়া,তোদের কি কাব্য রচনা শেষ হবে,সেই কখন ধরে দারিয়ে দারিয়ে তোদের এই নাটক দেখছি,আমি প্রেমেই পরে গেছি নিলয়ের,এত্ত সুন্দর কাব্য রচনা করে আগে যানতাম না তো।

ফারিয়া: নেহহহহহা,তুই যা এখান থেকে(দাঁতে দাঁত চেপে)

নেহা এই তো ফাজলামো করতে ছিল,হঠাৎ করেই ফারিয়ার এরকম রূপ দেখে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে যায়।নেহা নিজেও বুঝতে পারে না,হঠাৎ করেই ফারিয়া তার সাথে এরকম কেন করলো।

তাসফি: কি রে নেহা আজ তোর বস কই?

নেহা: 🤬🤬,ওই তোর কি মনে হয় ফারিয়া আমার বস??তাসফি : তা নয় তো কি?

নেহা: চুপ করবি তুই,নয় তো….?

তাসফি: নয় তো কি রে চামচিকা?

নেহা: তাসফির বাচ্চা🤬🤬🤬(রেগে যায়)

তার পর তাসফি সেখান থেকে চলে যায়।নেহা ফারিয়ার কাছ থেকে এসে তার আর বান্ধবীর সাথে বসে ছিল,কারণ ফারিয়া তার মিশনে নেমেছে,তাই তাকে আজ একাই থাকতে হবে।আর নেহাকে একা থাকতে দেখে তাসফি কি কি বলে গেলো দেখলেনই তো।

তাসফি সেখান থেকে চলে যায় নিলয়কে খুজতে লাগে।হঠাৎ তাসফির চোখ জোড়া আটকে যায় আম গাছের নিচে।তাসফি দেখতে পায় ফারিয়া ও নিলয় বসে বসে বাদাম খাচ্ছে আর ফারিয়া নিলয়ের কাঁধে মাথা দিয়ে আছে।তাতে তাসফি অবাক হয়ে যায়।সে কিছুতেই হিসাব মিলাতে পারছে না, সে তো স্বপ্ন দেখছে না?

ফারিয়া কি করে নিলয়ের সাথে এত্তটা ক্লোস হয়ে বসে থাকতে পারে তাি তাসফির মাথায় ডুকছে না,যাই হোক তাসফি আর কিছু না ভেবে সেখানে না যেয়ে ক্লাস রুমে চলে যায়।আর কিছু সময় পর ফারিয়া ও নিলয়ও ক্লাস রুমে ডুকে পরে।কিন্তু আজ ক্লাস রুমের দৃশ্য যে পাল্টে যায়।

আর নিলয় তাসফির সাথে না বসে ফারিয়ার পাশে বসে।আজ নেহাকেও ফারিয়া চিনে না,তাকে এক ঝাটকায় পিছনে সরিয়ো দেয়।আর নিলয়েকে তার পাশে বসায় ক্লাসের সবাই এত্তটা অবাক,যে মেয়ে এই ক্ষেত ছেলেকে দেখতেই পারতো না,আর তাকে আজ তার পাশে বসাচ্ছে।তাও আবার তার প্রিয় বান্ধবীকে সরিয়ে দিয়ে,ক্লাস রুমের কেও কোন হিসাবই মিলাতে পারছে না।

তাসফি: নিলয়,দারাও।

নিলয়: হুমম বলো,কিছু কি বলবে?

তাসফি: বলার জন্যই তো ডাক দিয়েছি,এত্ত তারা কিসের???

নিলয়: না সেরকম কিছু না তবে…..

তাসফি: তবে কি সেটা পরেই জানবো আগে বলো,আজ আমার সাথে বসলে না কেন?

নিলয়: আসলে আজ ফারিয়া…..

ফারিয়া: কি হইছে জান???আমার নামে কি বলতে ছিলা?

তাসফি: জান???মানে কিসের জান?কি বলছি তুই ফারিয়া?তুই ঠিক আছিস?

ফারিয়া: হুমম,আমি ঠিক আছি তো,আর হয়তো তুই ঠিক নেই।আর নিলয়ের সাথে কম কথা বলার চেষ্ট করবি,আমি আর নিলয়ে বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড।

তাসফি: কিহহহ,বললি?

ফারিয়া: যা শুনেছিস তাই বলছি,(বলেই ফারিয়া নিলয়কে জরিয়ে ধরে সেখান থেকে চলে আসে)

তাসফি খুব করেই ফারিয়াকে চিনে,ফারিয়ার যাই করুক না কেন, তার কোন না কোন উদ্দেশ্য থাকবেই।তার প্রয়োজনে সে নিচে নামতেও এক বার ভাববে না,তা তাসফি ভালো করেই জানে।তাই আর তাদের সাথে কথা না বারিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।ফারিয়া কিন্তু ফারিয়ার উদ্দেশ্য হাসিল না হওয়ায় নিলয়কে ছেরে দেয়।

নিলয়: ফারিয়া, তুমি আমার সাথে কথা কেন বলছো না?

ফারিয়া: ঠাসসসস,তুই আমার নাম উচ্চারণ করিস কোন মুখে।তুই কে??? একটা গাইয়া ক্ষেত কোথাকার,তুই যেন আর আমার সামনে না আশিস।

নিলয়ঃ কি হয়েছে তোমার? তুমি না আমাকে ভালোবাসো?তুমি না সেদনি প্রমিজ করেছো জীবনে মরণে প্রতিটা সময় তুমি আমার পাশে থাকবে।তুমি নাকি আমাকে ছারা আর কিচ্ছু কল্পনাও করতে পারো না,আর আজ তুমি এসব কি বলছো?

ফারিয়া: যা বলছি সত্যি বলছি.তোর মতো ক্ষেত গাইয়াকে কে ভালোবাসবে? আমি?আমি ফারিয়া? হাস্যকর, তোরে ততো আমি মাত্র ব্যবহার করেছি মাত্র,

নিলয়: কি বলছো তুমি এগুলো,ফারিয়া তুমি ঠিক আছো তো।(বলেই নিলয় কেঁদে দেয়)

এই কয়েক দিনে নিলয় ফারিয়াকে অনেকটাই ভালোবেসে ফেলেছে,নিলয় বুঝতেই পারেনি ফারিয়ার এই ভালোবাসার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে মিথ্যে অভিনয়। কিন্তু নিলয় তো ফারিয়াকে সত্যি ভালোবেসে ছিল,তার তো ভালোবাসায় কোন কমতি ছিল না,তাহলে কেন ফারিয়া নিলয়কে ভুল বুঝলো।

তাহলে কি ফারিয়ার ভালোবাসার ভিতর যে মিথ্যে অভিনয়টা ছিল,সেটা কি সত্যি শুধু স্বার্থ ছিল??হুমমম শুধু মাত্র হিংসায় জ্বলে পুরে ফারিয়া নিলয়কে তার প্রেমের ফাদে পা দেওয়ায়।

নিলয়: ফারিয়া,আমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয়ে থাকে তো তুমি নিশ্চয়ই আমাকে খুঁজে বেরাবে।কিন্তু আফসোস,আমাকে খুঁজে পাবে না প্রিয়,চলে যাবো এক অজানা শহরে।সত্যি তোমাকে মন থেকে ভালো বামি তোমার ফারিয়া,অনেকটাই বেশি ভালোবাসি।

বলেই নিলয় কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়, আরে ভাই থামেন কোথায় যাবে আর তার মেসে যাচ্ছে সে যেখানে থাকে সেখানে।গিয়ে তার আম্মুকে ফোন তিয়ে কান্না করে দেয়।তার আম্মুই একমাত্র খারাপ সময়ের সাথী,তাই সকল দুঃখের কথা তার আম্মুকে বলে।

নিলয় যে টিউশনি করাতো সেটা তার আম্মু জানতো তার পাশা পাশি যে পার্ট টাইম জব করতো সেটা তার আম্মুকে জানাই নি।আর সে টাকা হুলো নিলয় জমিয়ে রাখতো সেখানে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা মতো হয়েছে।আজ নিলয়ের বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে তাকেও নিজেকে আপগ্রেড করতে।নিলয় কবে নিজেকে আপগ্রেড করেছি ছল তার সেটাই মনে পরছে না,হয়তো তার আব্বু বেঁচে থাকা কালে।তার আব্বু মারা যাওয়ার পর তার নুন আনতেই পান্তা ফুরাতো।নিজেকে আপগ্রেড করবেতো দুরের কথা,এক বেলা খাবার জুটাতে তাকে নানান কাজ করে যেতে হতো।

নিলয় শপিং করে, নিজেকে সেই আগের মতোই করে নেয়।আজ কলেজে যাচ্ছে নিলয়,কিন্তু সে আজ ক্ষেত হয়েনয়।আজ তাকে যে কেও দেখলে প্রেমে পরে যাবে।আজ তাকে অনেকটাই হিরো দের মতো লাগছে।(বি: দ্র: টাঙ্গাইলের ছেলেরা অনেক কিউট হয়😇💝)

কলেজে যকওয়ার পর সবাই আজ সবাই নিলয়ের দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছে।সবাই আজ ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছে চোখ বড় বড় করে।সবারই মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে,একটা ছেলে এত্তটা হ্যান্ডসাম হয়, কলেজের ছেলেরাও নিলয়ের উপর আজ ফিদা হয়ে গেছে।

আজ এখনোো ফারিয়া আজ কলেজে আসে নি।আজ তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে মিট করার কথা,কিন্তু তার বয়ফ্রেন্ড কোন এক ব্যস্ততা দেখিয়ে তাকে চলে যেতে বলে।তাই সে অন্য একটা রেস্তোরাঁ যায় কিছু খেতে।কিন্তু ফারিয়া নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না,তার সামনে কেও বসে আছে?

আচ্ছা ফারিয়ার সামনে কে আছে?নিলয় নাকি তার বয়ফ্রেন্ড?কে হতে পারে? কাকে দেখে ফারিয়া চমকে গিয়েছে?হুমম তার সদ্য প্রেমিক একটা মেয়ের মুখে খাবার খাইয়ে দিচ্ছে।

Related Story

ফারিয়া এটা দেখে নিজেকে আর ঠুক রাখতে পারেনি।রাগে তার সামনে নমহিয়ে দারায়,তার প্রেমিক তাকে দেখে বিন্দু মাত্র সংকোচ না করে তাকে বলে দেয় তাকে সে কখনই ভালোবাসে নি।তাকে সে ব্যবহার করেছে,করেছে ব্যবহার তার টাকা কে।কিন্তু সে ভালোবাসে যার সাথে বসে রেস্তোরাঁ খাবার খাচ্ছে তাকে।

ফারিয়া কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না,আজ ফারিয়ার বড্ড কান্না পাচ্ছে।আজ কেন যেন নিলয়কে ব্ড্ মনে পরছে।আজ তার নিজের ভুল বুঝতে পেরে দৌড়ে ছুটে যায় তার সত্যিকারের ভালোবাসার কাছে।ছুটে যায় তার আপন মানুষটির কাছে।

আচ্ছা নিলয় কি মেন নিবে ফারিয়াকে?পারবে নিলয় ভুলে যেতে, ফারিয়া বলে ছিল,তার নাকি কোন যোগ্যতাই নেই তার বফফ্রেন্ড হতে।আজ কি সে মেনে নিবে ফারিয়াকে? নাকি সে ভুলে যাবে ফারিয়া নামেরও কেও ছিল তারই জীবনে?

ফারিয়া কলেজে ডুকার পর নিলয়কে দেখে সে পুরোই ফদা হয়ে গেছে।আজ যে ফারিয়া নিলয়কে এক অন্য রূপে দেখছে।ফারিয়া দৌড়ে গিয়ে নিলয়কে জরিয়ে ধরে কিস করতে থাকে তার মূখ জুড়ে।

এই ভাবে অসচেতন ভাবে আক্রমণ করার নিলয় বুঝতে পারেনি কে এরকম করছে।তাই ভয় পেয়ে তাকে ধাক্কা মেরে দুরে ফেলে দেয়।ফারিয়া ধাক্কা সহ্য করতে না পেরে মাটেতে পরে যায়,আর মাথায় কিছুটা আঘাত পায়।

ফারিয়া: আহহহহ,

নিলয় ফারিয়ার কণ্ঠ শুনে তার দিকে তাকায়,দেখে ফারিয়া মাটিতে শুয়ে আছে,তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।নিলয় মনের ভিতর এক অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব সৃষ্টি হয়।কিচ্ছু না ভেবে ফারিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে নিলয় ডাক্তারের দোকানে নিয়ে যায়।

আস্ত আস্তে ফারিয়ার পাগলামো গুলো ক্রমেই বেড়েই চলছে, কিন্তু নিলয় ফারিয়াকে যথেষ্ট এড়িয়ে যায়।কিন্তু আস্তে আস্তে নিলয়ও ফারিয়ার প্রতি দুর্বল হয়ে যায়।কিন্তু তার মন যে বাধ মানছে, কারণ এর আগে কেমন বিহেভ করছে সেটা কারো অজানা নয়।

ফারিয়া : নিলয়,এই দেখো ছুরি,তুমি যদি আজ এখন এই ভাবে আমাকে না বিয়ে করো,তাহলে আমি এই ছুরি দিয়ে নিজের গলায় চালিয়ে দিব।

নিলয়: প্লিজ ফারিয়া, এমন কিছুই করো না।

ফারিয়া: তাহলে বলো আমাকে বিয়ে করবে,এই না না,বললে হবে না,চলো বিয়ে করবো, অনেক কষ্ট সহ্য করেছি আর না।অনেক অনেক ভালোবাসি তোমায়।আমার জীবনের থেকে প্রিয় তুমি কেন বযঝতে চেষ্টা করছো না।(বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পরে)

আজ কেন যেন মনে হচ্ছে ফারিয়ার ভালোবাসা সত্যি। আজ ফারিয়ার ভালোবাসায় নেই মিথ্যের আবাশ,আজ রয়ে আছে নিলয়ের জন্য ফারিয়ার এক রাশ ভালোবাসা,যা ফারিয়ার মনের গহীন থেকে জন্ম হয়েছে,তার মাঝে নেই বিন্দু মাত্র ছলনা,রয়ে আছে সত্যতা।যা দিয়ে ফারিয়া তার প্রিয় মানুষটিকে করে নিতে চায় আপন,

তার পর ফারিয়া নিলয়কে ব্লকমেইল করে বিয়ে করে নেয়।ওইদিকে ফারিয়া নেহাকে বলে বলে আসচ্ছিলো, তাদের জন্য বাসরঘর সাজাতে,আর নেহা তার বান্ধবীর জন্য বাসর ঘর সাজাতে ব্যস্ত,নেহা পরম যত্নে তার বান্ধবীর জন্য বাসর ঘর সাজিয়ে বসে আছে, তার প্রাণ প্রিয় বান্ধবী বিয়ে করে তার বর নিয়ে আসবে বলে।কিন্তু এখনও আসচ্ছে না দেখে নেহার মনে ভয় ডুকে যায়।তাহলে কি নিলয় ফারিয়াকে মেনে নেয় নি,ফারিয়াকি তাহলে আত্নহত্যা করেছে।ভাবতেই নেহার গাঁ শিউরে উঠছে।

সব চিন্তা ভাবনার অবসান দিয়ে হঠাৎই ফারিয়ার বাড়ির সামনে গাড়ির হর্ণ বেঝে উঠে,গাড়ির হর্ণ বাঝার সাথে সাথে নেহা গিয়ে দরজা খুলে দেয়।আর বাড়িতে ডুকার সাথে সাথে তার বাবা মায়ের সম্মুখীন হয়।তার বাবা মাকে তাদের বিয়ের কথা বললে তারা মেনে না নিয়ে তাদের বের করে দেয়,কারণ ছেলে একজন মধ্যেবিত্ত গরের সন্তান,তাদের সাথে নাকি যায় না,তাই…..

নিলয়: ফারিয়া তোমার আব্বু আম্মু ঠিকই বলছে,তুমি আমাকে ভুলে যাও,আমি ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিব সাইন করে নিও।

ফারিয়া: একাধারে কান্না করেই যাচ্ছে।

Short Story

আর এই দিকে নিলয় চলে আসচ্ছে।মেইন দরজার বাহিরে পা দিবে এমন সময়……..ফারিয়ার আব্বু পিছন থেকে ডেকে নিয়ে, তাকে জরিয়ে ধরে তার সব সম্পত্তির দলিল নিলয়ের হাত তুলে দিয়ে তাকে মেনে নেয়।

তার পর ফারিয়া তার বাবা মায়ের দোয়া নিয়ে বাসর করতে চলে যায়,সাথে নেহাও এগিয়ে দিতে গিয়ে গন্ডগোল পাকিয়ে দেয়🙈🙈।

নেহা: কি রে স্বার্থপর,এত্ত কষ্ট করে বাসর সাঝালাম,আজ এই রুম কাপাবি,আর আমার পরিশ্রমের মুল্য দিবি না??(নেহা ফারিয়াকে আস্ত আস্তে কানে কানে বললো,নেহার কথা শুনে ফারিয়া হেসে কুটি কুটি হয় যাচ্ছে,নেহা এটা কি বললো ভাবতেই লজ্জায় তার মুখ লাল হয়ে গেছে,আর সে নাকি এই রুম কাপাবে😁😁😁)তার পর ফারিয়া নেহাকে তার পরিশ্রম মুল্য পরিশোধ করে দিয়ে বলে।

ফারিয়া : যা দিলাম,এবার তো রুম কাপাতে দে😁😁🙈🙈🙈🙈।নাকি এখনও থেকে যাবি🙄।

নেহা: না না,তার পমআর দরকার পরবে না,বলেই নেহা পালিয়ে যায়।

ফারিয়া : ওই চলো রুমে।

ফারিয়া ও নিলয় রুমে যাওয়ার পর তারা দুজনই এক সাথে নফল নামাজ আদায় করে নেয়।তার পর ফারিয়া নেহার ইচ্ছেটা পূরণ করার কথা বলেই অন্য দিকে ঘুর তাকায়,লজ্জায় চোখ তুলতে পারছে না ফারিয়া,আর এই মেয়েই কিনা এক সময় তাকে অপমান করে বেরাতো।আজ সেই মেয়েই তার সামনে লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে তার সবটা বিলিয়ে দিতে।ভাবতেই নিলয়ের এক অজানা শিহরণ বয়ে যায়।নিলয় যে আর তার মাঝে নেই।চলে গেছে এক অন্য জগৎে,তার সামনের প্রিয় মানুষটিকে আনন্দ দিতে।

অন্যের বাসর ঘরের কথা জানতে লজ্জা থাকা উচিত,চলে যান তাদের সুখময় জীবন যেন আরো সুন্দর হয় তার জন্য দোয়া করবেন।

ধন্যবাদ এত্তক্ষণ ধরে গল্পটি পরার জন্য।

সমাপ্ত

Writer :- Amrin Talokder

Leave a Comment