মি: ফুচকাওয়ালা
Amrin Talokder { Part - 06 }
বিয়ের সব কিছু কাজ সম্পূর্ণ করে নিজের বাসর ঘরের যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে।কিন্তু কেন যেন বাসর ঘরে যেতে ইচ্ছে করছে না।খুব করে তাসফিকে মনে পরছে। সত্যি কি তাসফি নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেছে,একবারও কি আমার ভালবাসা বুঝতে পারলো না।আমি কি তার কাছে এতটাই অমুল্য ছিলাম,চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি গরিয়ে পরলো।
যার জন্য এতটা পাগল ছিলাম, যাকে এক নজর না দেখলে পাগল হয়ে যেতাম,তাকেই পেলাম না,ভাগ্যটাই খারাপ,না হলে তাসফিকে হয়তো পেতাম।
এইসব ভাবতেছি এমন সময় মা এসে বলল....
আম্মু : কিরে তুই বাসর ঘরে না যেয়ে এখানে দারিয়ে আছিস কেন।
আমি: কিছু না আম্মু। এমনেই।
আম্মু : এমনেই মানে😤😤।মেয়েটা কখন থেকে রুমে বসে আছে।আর তোর যাওয়ার নামই নেই।এমুহূর্তে তুই তোর রে যাবি।আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না।
আমি আর কিছু না বলে চলে গেলাম আমার বাসর ঘরে।কি করবো কি ভাবে শুরু করবো কিচ্ছু বুঝতেছি না।
এক মনে বলে মেনে নিতে আর এক মনে বলে না মানতে।কি করবো তা নিয়েও কনফিউজড আছি।আচ্ছা এতো সব না ভেবে চলে যাই রুমে।এক বুক সাহস নিয়ে ঘরে ডুকে পরলাম।
এতক্ষণ ভালো লাগতেছিল না কিন্তু ঘরে ডুকতেই কোন এক অজানা টান কেন যেন টানছে।জানি না কেন এরকম হচ্ছে।
আর ওই দিকে......
বিয়ের সময় তাসফি এতটাই কান্না করেছিল যে চোখের কাজলের সাথে চোখের পানি লেগে তাসফিকে বিশ্রি দেখাছিল।
কাঁদবে বা না কেন,যার জন্য এতটা বছর অপেক্ষা করেও তাকে পেলো না,যারা কাওকে ভালোবাসেন তারাই শুধু বুঝবেন ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা করার পরও হরালে কতটা কষ্ট হয়।
তার পর আস্তে আস্তে চলে যায় তার বিছানার কাছে।বিছানার কাছে যেতেই,
বিয়ে করা নতুন বউ: দেখুন আমি একজনকে ভালোবাসি,তার জন্য অপেক্ষা করার পরও আজ তাকে হারাতে হয়েছে,তাই আমি চাচ্ছি না আজ আপনি কি করুন।
আসলে বিয়ের সময় শুনে ছিলাম মেয়েটির নাম কিন্তু তাসফিকে হারানোর কষ্ট ভুলে গেছি তার নাম।
আমি: আমি এরকম না যে আমি আপনার উপর ঝপিয়ে পরবো,আমিও কাওকে ভালোবাসতাম,কিন্তু আজ ৪ বছর পর বিদেশ থেকে এসেও তাকে বিয়ে করতে পারিনি।
আমার কথা শুনে তাসফির মনে কিছুটা সন্দেহ জাগে।
তাসফি: আচ্ছা আপনার নাম কি???
আমি: কেন বিয়ের সময় আমার নাম শুনেন নাই।আমার নাম আমরিন.
আমার নাম শুনেই তাসফি মাথার ঘোমটাটা ফেলে দেয়।আর আমাকে দেখতে পেয়ে আর কিচ্ছু না ভেবে আমাকে জরিয়ে ধরে।আমি তার এরকম পরিস্থিতিতে কিছুটা অবাক হয়ে যাই।হঠাৎ করে আমাকে জরিয়ে ধরলো কেন এই মেয়ে।
আমি: এইযে শুনছেন আপনি যেন কাকে ভালোবাসেন তাহলে কেন আমাকে জরিয়ে ধরলেন।ছারাুন আমাকে আর কি করছেন এত জোরে জরিয়ে ধরলে তো মরেই যাবো,আমাকেেরে ফেলবেন নাকি??
তাসফি: তুমি আমাকে বিয়ে করছো আমাকে বলোনি কেন একিারো।তোমার জন্য আমি ৪ টা বছর অপেক্ষা করেছি।আর তুমি বিদেশ থেকে আসার পরই নাকি বিয়ে করছো,কিন্তু বিয়েটা যে আমাকে করছো সেটা কেন বলোনি হুমমম,আমাকে কষ্ট দিতে তোমার ভালো লাগে।
আমি: আমিও সত্যি জানি না যে তোমার সাথে আমার বিয়ে,জানলে কি আর বারস ঘরে এসে বলতাম যে আমি কাওকে ভালবাসি,এসেই তো আমার সিনিয়র বউটার সাথে রোমাঞ্চ করতে শুরু করতাম তা না জানটা।
তাসফি: চুপপপ। দেয়ালেরো কান আছে।কেও শুনে ফেলবে।
তার পর তাদের মাঝে রাগ অভিমানের পর তারা তাদের বাসর সম্পুর্ন করলো,যেটা আপনাদের না জানলেও চলবে।
বিয়ের পর দিন থেকেই শুরু হলো তাসফির কাজের ভুল ধরা। তাসফিকে অপমান করা।কিন্তু কে করছে এই সব আগের পর্বে বলেছিলাম যে এই পর্বে সব বলবো আপনাদের।
আমরিনকে তার এক ফুপাতো বোন(পপি) ভালোবাসতো।ভালোবাসতো বললে ভুল হবে আমরিনদের টাকা পয়সার লোভে তাকে পেতে চাইতো।কিন্তু আমরিন সব সময় তার ওই ফুপাতো বোনের থেকে অনেক দুরে থাকতো,কিন্তু আজ তার সব স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেছে কাল আমরিনের বিয়ে হয়ে গেছে।
তাই সে প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে।পপি নিজেও জানেনা আমরিন তাসফিকে কতটা ভালোবাসে।না জেনেই এই আগুন নামক খেলায় মেতে নিয়েছে নিজেকে।পপি হয়তো এখনও আমরিনকে চায়।কেননা পপি টাকার লোভ অনেক।তার কাছে টাকা হলে সব কিছু করতে পারে।টাকার জন্য মানুষকে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করে না।
বিয়ের পর দিন সকাল বেলা তাসফি তার শ্বাশুড়ির সাথে রান্নার কাছে সাহায্য করতে গেছে।আম্মু অনেক বার না করেছে।
আম্মু : তাসফি মা তুমি এই বাড়ির পুত্র বধু হয়ে কিন্তু আসো নি,তুমি আমার একটা মেয়ে, আমি চাই না তুমি রান্না করতে এসে কোন সমস্যা হোক তোমার বুঝেছো।
তাসফি: আম্মু 😰😰😰।
আম্মু : কিরে কাঁদছো কেন,হুমম,তোমার আম্মুর কথা মনে পরছে।
তাসফি: না তার জন্য না,তোমার কথা শুনে,সত্যি আমি কখনও ভাবিনি আমার শ্বশুর বাড়ি এত্ত ভালোবাসা পাবো।আম্মু : শ্বশুর বাড়ি ঠিক আছে কিন্তু ভুলেও কখনও মনে করবে না তোমার শ্বশুর বাড়ি কেমন,তোমার বাড়ির মতো নিজ স্বাধীন ভাবে চলবে।
তাসফি: না আম্মু আমি নিজ স্বাধীন ভাবে চলতে চাই না,তবে আমি কিন্তু তোমার উপর রেগে যাচ্ছি।
আম্মু : কেন রেগে যাচ্ছো কেন হুমম পাগলি মেয়ে??
তাসফি: আমি যদি তোমার মেয়ের মতো হই তাহলে তুমি করে বলছো কেন,তুই করে বলবে আম্মু কি কখনও তার মেয়েকে তুমি করে বলে বলো।বেশি সময় তো তুই করেই বলে।
আম্মু আর তাসফির মাঝেও ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে, শুধু আম্মু না এই বাড়ির সবার সাথেই ভালো সম্পর্ক হয়েছে।তাসফিকে কেও বুঝতেই দিচ্ছে না যে এটা তার শ্বশুর বাড়ি।
আর বিশেষ একজনের সাথে তো আরো বেশি ভালো সম্পর্ক হয়েছে।
আরে থামেন আমি আমার কথা বলছি না।আমার ছারাও আরো একজন আছে সে হচ্ছে সেই মেয়েটি যে তাসফিকে অনেক ভয় পেতো।তাসফিকে দেখলে জ্ঞান হারাতো।মনে আছে আপনাদের হ্যাঁ সেই প্রিয়ার কথাই বলছি।
প্রিয়াতো তাসফিকে সব সময় এটা ওটা বলে হাসিয়ে পাগল করে দিচ্ছে। এখন আর তাসফির দেখে ভয় পায় না।
সবার মাঝে থাকতে থাকতে সত্যি ভুলে গেছে এটা তার শ্বশুর বাড়ি। আম্মু যে কেন বললো এটা তার বাড়ির মতো মনে করে থাকতে।আমি যে সেই সকাল থেকে এখন দুপুর হয়ে গেছে আমার খেয়াল কি আর আছে তার,সবার সাথে কাথা বলেই আমাকে ভুলে গেছে।
কি আর করবো মনের দুঃখে গান গাইতে ইচ্ছে করছে। কোন কিছু না ভেবে প্রিয়াকে ডাকলাম।প্রিয়া না এসে আসলো পপি।
পপি: আমরিন তুমি কেন বুঝনা আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। তুমি প্লিজ ওই মেয়েকে বাদ দিয়ে দাও, আমি আর তুমি দুজন মিলে সুখে সংসার করবো।
আমরিন: দেখ পপি আমার মাথায় রাগ তুলিস না,আর একবার যদি তাসফির নামটা মুখে আনিস তাহলে তোর মুখের জবানটা আমি আর বের হতে দিব না,আমার রুম থেকে বের হ বলছি।
পপি: আমিও দেখবো এই তাসফি কত দিন এই বাড়িতে থাকে এই রুম তোমার আর আমার আমি করবই।
এই বলে চলে গেল।মেজাজটা ১৮০° কোণে গুরতেছে।আমি যার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম যাকে মনে প্রাণে ভালোবাসি তাকে দিতে বলে ডিভোর্স, কেমনডা লাগে তাহলে।
পপি : আমিও দেখবো তাসফি তুমি কতটা দিন এই বারিতে থাকো।আমার রাম্তা থেকে সরাতে যদি তোমাকে গুম করতে হয় তাও আমি করতে দ্বিতীয় বার ভাববো না,আমি চাই এই বাড়ির সব টাকা সম্পত্তি।আমি হবো এই বাড়ির রাণি।আমার কথায় চলে এই বাড়ির সব নিয়ম কানুন।
....…………………………………
কি হবে তাহলে তাসপির, তাসফির জিবনে কি সুখ নামক জিনিসটা হারিয়ে যাবে নাকি পপি নামের আপদটাই এই পৃথিবী থেকে সরে যাবে।নাকি অন্য কিছু ঘটতে চলেছে আমরিনের পরিবারে।কি হতে পারে।