মি: ফুচকাওয়ালা
Amrin Talokder { Part - 04 }
হিয়া: হুহু, জানি তুমি আমার বড়, কিন্তু আমার বান্ধবীকে আমার দিয়ে ডেকে এনে তাকে তার বড় ভাইয়ের খোঁজ নেওয়া কোন ধরনের ভদ্রতা। আর বলেনি বলে তাকে ধমক দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে দিছো, এই সব বাবা মাকে বলবো কি??
তাসফি: প্লিজ বাবা মাকে কিছু বলিস না।তারা জানলে আমাকে কুরবানি করে দিবে।
হিয়া: আচ্ছা বলবো না এখন টাকা দাও ১০০০
Bangla Valobashar Golpo
তাসফি:........
হিয়া: কি এরকম ডং ধইরো না তো, না দিলে কোন কিছুই পাবে না,এখন টাকা দেও তারাতারি।
তাসফি: দিতে পারবো না, আমি গেলাম।
তাসফি এই বলে সেখান থেকে চলে গেল, আর হিয়া ভাবতেছে আমিও দেখবো তুমি টাকা না দিয়ে কই যাও।আমিতো টাকাটা নিয়েই ছারবো,
আর তাসফি, ওহহফ বাঁচলাম, হিয়াটা যে কেমন হইছে না। কোন একটা ঝামেলায় পরলেই টাকা দেও টাকা দেও।
আচ্ছা আপনারাই বলেন তো আমি টাকা পাবো কই।তার পর সেখান থেকে চলে আসি, সেখান থেকে প্রিয়াকে খুঁজে চলেছি কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না, কোথায় যে গেল, আচ্ছা চলে তো যায় নি, বদমাইশ বোনটা হয়তো বা চলে যেতে বলেছে নিশ্চয়ই।
তার পর আর না খুঁজে আমার রুমে বসে আছি,
তাসফি: আমরিন কি সত্যি আমাকে ভালোবাসতো, আমার জন্য বিদেশেও যেতে চায় নি।ও এতোটা ভালোবাসতো আর আমি সেটা বুঝতেও পারলাম না, আমি এতটাই বোকা যে আমার সত্যিকারের ভালোবাসাটা বুঝতে পারলাম না। কি করলাম আমি, আচ্ছা আমরিন কি বিদেশ থেকে বিয়ে করে আসবে, তাহলে আমার কি হবে। নাহহহ আমরিন যদি সত্যি আমাকে ভালোবাসে তাহলে আমরিন শুরুই আমার হবে আর কারো না।
তাসফি মনে মনে এসব ভাবছিল, এই সময় হিয়া আর প্রিয়া তাসফির সামনে উপস্থিত।
হিয়া: কিরে আপু নাম্বার নিবা নাকি।
তাসফি : দেখ ভালো লাগছে না তোর ফাজলামো, এখান থেকে চলে যা, আমার নাম্বার লাগবে না আর আমি টাকাও দিতে পারবো না, চলে যা এখান থেকে, আমাকে একা থাকতে দে।
হিয়া: কি ব্যপার, আপু তো কখনও এরকম করে না, এখন কি হলো যে এত পরিমাণ সিরিয়াসে চলে গেছে আর চলে যেতে বলছে আমাকে (মনে মনে ভাবছিল) আচ্ছা আপু তোমার কি শরির খারাপ,
তাসফি : দেখ বোন তুই যদি এখান থেকে না যাস তাহলে আমিই চলে যাই। থাক তোরা এখানে বসে,
হিয়া: আরে আপু তোমার সাথে এখন মজা করতে আসিনি।আর এই নাও নাম্বার টাকা লাগবে না, এবার তো একটু হাসো, আমি আমার বড় বোনটার হাসি মুখ দেখে এখান থেকে যেতে চাই ।
তাসফি হিয়াকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিছে।
হিয়া: আপু এই আপু, কাঁদছিস কেন, আমরিন ভাইয়াকে সত্যি ভালোবেসে ফেলেছিস বুঝি।
তাসফি: হুমমম,( কান্না করার জন্য ভালো ভাবে কথাও বলতে পারছে না।
হিয়া: তাই কাঁদছিস কেন হুমমম,
তাসফি: যদি ওকে হরিয়ে ফেলি তখন কি করবো আমি,সময় থাকতে তো বুঝি নি।
Bangla Premer Golpo
হিয়া: দেখো আপু আমরিন ভাইয়া যদি তোমাকে সত্যি ভালোবেসে থেকে থাকে তাহলে যেথাই যাক না কেন, ভাইয়া শুধু তোমাকেই ভালোবাসবে, আর তোমার জন্য অপেক্ষা করবে, এই দেশে আসার আগে ভাইয়া কখনই বিয়ে করবে না, তুমি দেখে নিও, আর দেশে আসার পর তোমাকেই বিয়ে প্রস্তাব দিবে, এখন শান্ত হও কেমন।
তাসফি: শান্তনা দিচ্ছিস আমাকে??
প্রিয়া: আপু শান্তানা দিচ্ছে না হিয়া তোমাকে,সত্যি বলছে,আমিও ভাইয়ার চোখে তোমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি,তোমাকে ছেরে যেতে চাচ্ছিল না তবে চাচি আম্মুর জন্য যেতে হয়েছে।
তাসফি: ওহহহ।
প্রিয়া: আচ্ছা আপু নাম্বার তো দিয়ে গেলাম তাহলে ফোন দিয়ে শুনো কেমন আছে, যার জন্য এখন কাঁদতেছো।শুনো তো সে কেমন আছে।
তাসফি : প্রিয়াাা তুমি ভয় পাও না আমাকে, এক থাপ্পড় মেরে দিব,
প্রিয়া: নাহহহহ আপু, (কিছুটা জ্ঞান হারানোর অভিনয়)
হিয়া: ওই প্রিয়া তোকে না কতো করে বললাম যে আপুকে ভয় পাবি না,আবার জ্ঞান হারালি কেন??
Related Story
প্রিয়া: কে জ্ঞান হারিয়েছে রে আমি তো মজা করতেছিলাম, আপু কে এখন আর ভয় পাই না, তুই তো সব ভয় ভেংগে দিছিস,
তাসফি: আচ্ছা প্রিয়া তোমরা এখন আসতে পারো কেমন, আমি এখন একটু একা থাকতে চাই।
হিয়া: হুমমম থাকো একা।কত যে একা থাকবে তা আমার জানা আছে হুমম।
তাসফি: তো তোর কি মনে হয় আমি কি করবো,
হিয়া: কি আর করবে শুনি, নাম্বার পেয়েছো এখন তার সাথেই কথা বলবে ফোন দিয়ে যার জন্য আমাদের তারিয়ে দিচ্ছো।
তাসফি: যা তো এখান থেকে তুই একটু বেশিই বুঝিস।
তার পর হিয়া আর প্রিয়া চলে যায়,আর এদিকে তাসফি আমরিনের নাম্বারটা ডায়াল করে ফোন দেয়, কিন্তু ফোন রিসিভ হচ্ছে ফোন ধরছে না।
তাসফির একটা বদ অভ্যাস তাসফির ফোন যদি কেও না ধরে তাহলে ফোন দিতেই থাকবে,এবারো তার ব্যতিক্রম হলো না,৫ বার ফোন দিয়ে ফেলছে।
আর কত বার ফোন দিব, এত ভাব হইছে বিদেশ যেয়ে সাদা চামড়ার মেয়ে পেয়ে ভুলে গেছিস আমাকে, যদি একবার কাছে পাই না তোকে দেখে নিব তখন,(মনে মনে ভাবতে ছিল).
এটাই লাস্ট ফোন দিব,যদি ধরে তো ধরবে না হলে আর কখনই ফোন দিব না, ৬ নাম্বার ফোন দিতেই ফোনটা কেটে দিল।
আর ফোন কেটে দেওয়ায় তাসফির জিদ আরো বেরে গেল, তাই তাসফি মনে মনে স্থির করলো যতক্ষণ না ফোন ধরবে ততক্ষণ ফোন দিয়েই যাবে।
আবার ফোন দিতে যাবে তার আগেই তাসফির ফোনে আমরিন ফোন করে,
আমরিন: হ্যালো আসসালামু আলাইকুম.
তাসফি:........ ………
আমরিন: আরে পাগল নাকি, ফোন দিলেন এতো বার করে কথা বলেন না কেন??
তাসফি:……………
আমরিন রাগ করে ফোন কেঁটে দেয়,
এভাবেই তাসফি প্রতিদিন আমরিন কে ফোন দিয়ে জ্বালাতন করতো।
Bangla Love Story
আর তাসফি এই ৪ বছরে অনেক গুলো বিয়ে এসেছে কিন্তু শুধু আমরিনের জন্য সব বিয়ে ভেঙ্গে দিছে, বিয়ে গুলো ভাঙ্গতে তাসফিকে যে পরিমাণ কষ্ট শিকার করতে হয়েছে সেটা তাসফি নিজেই জানে।
তাসফি বুঝতে পেরেছে সত্যি মন থেকে ভালোবাসলে তার জন্য কত কষ্ট চোখ বুঝে মেনে নিতে হয়। তাসফি যে আমরিনকে সত্যি ভালোবাসে সেটা তাসফি বুঝতে পারে, কিন্তু আমরিন কি আমার কথা এখনও মনে রেখেছে নাকি অন্য কোন মেয়ের মায়ায় পরে আমাকে ভুলে গেছে।
যদি আমি আমরিন কে না পাই তাহলে এই পৃথিবীতে আর থাকবো না।যার জন্য অপেক্ষা করে এতো গুলো বিয়ে না করে দিছি শুধু আমরিনের জন্য, আর তাকে না পেলে মরেই যাবো আমি।
তাসফির অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে ৪ টি বছর কেঁটে যায়।কালকে আমরিন দেশের মাটিতে পা দিবে। তাসফি কিভাবে কি করবে, কাল কি হবে সেগুলো ভাবতেই লজ্জা পাচ্ছে সাথে ভয় ও কাজ করছে, যদি আমরিনকে হারিয়ে ফেলি তাহলে আমার কি হবে। না আমার যে করেই হোক আমরিন শুধু আমার। আমরিন অন্য কারো হতে পারে না।
Also Read
রাত্রে আর তাসফি ঘুমাতে পারে নি।সারাটা রাত আমরিনকে নিয়ে ভেবেই পার করে দিছে। তাহলে চলুন তাসফি আমরিনকে নিয়ে কি ভেবেছে শুনে আসি..………
চারটি বছর আগে আমাকে পাওয়ার জন্য কতই না আমার পিছনে পরে থাকতো, শুধু আমার মুখে শুনতে আমিও তোমাকে ভালোবাসি, কিন্তু আজ চারটি বছর পার হয়ে গেল আর একটি বারও বলতে আসেনি এই চার বছরে যে আমি তাকে ভালোবাসি নাকি। আমাকে কি আমরিন ভুলে গেছে নাকি এখনও আমাকে ভালোবাসে।
আর এই চারটি বছর কতই না ফোন দিয়ে তাকে জালিয়েছি।কি করবো কাল, কি ভাবে তার সামনে যাবো, আমিই তাকে বলবো নাকি সে আসবে আমাকে দেখতে, আর যদি সে বিয়ে করে ফেলে তাহলে আমার কি হবে। আমি কি নিয়ে বাঁচবো, আমি তো তার জন্য এই চারটি বছর অপেক্ষা করেছি। সে কি তা একবারো জানে না, বা তার বোনের কাছ থেকে শুনেনি।নাকি ভুলে গেছে আমাকে,
এক প্রকার আবোল তাবোল যা মন চাচ্ছে তাই ভেবে ভেবে রাতের ঘুম হারাম করে দিছে।তার মনেই নেই যে রাত্রি শেষ হতে চলছে।