Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ১১ | মোনা হোসাইন

মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ১১ | মোনা হোসাইন

Mukhosh

Mona Hossain { Part 11 } recap


সকালে ঘুম থেকে উঠে রুহি অবাক হয়ে গেল কারন রাতে অন্ধকারে সে খেয়াল করে নি কিন্তু এখন দিনের আলোয় দেখতে পাচ্ছে এই ঘরে তার অনেক ছবি।

রুহিঃএগুলা ত আমি....কিন্তু এত সব ছবি কখন তুলল?
আমি কখন কি করছি সব মুহুর্তের ছবি এখানে আছে।
রুহি অবাক হয়ে ছবি গুলির দিকে তাকিয়ে আছে। একটা ছবি তে রুহি চকলেট খাচ্ছে মুখে চকলেট লেগে আছে ছবিটায় তাকে পিচ্ছি বাচ্চার মত লাগছে ছবিটার পাশে চকলেট এর খালি প্যাকেট সহ ডেট লিখা আছে।
অন্য একটা ছবিতে রুহি মুখ গোমরা করে চাওমিন হাতে বসে আছে ছবিটার পাশে রেস্টুরেন্টের সেই চামচ টাও লাগানো। আরো অনেক ছবি আছে তার সাথে সেদিনের ওড়নাটাও দেয়ালে লাগানো।


শেষ দিকে একটা ছবির সাথে কিছু ভাংগা চুড়ি আর রুহির কাটা ছিড়া হাতের ছবি লাগানো।

রুহি অবাক হয়ে ভাবছে সাইকো আমায় এত ভালবাসে....???

কই একবারো তো মুখে বলে না।এ কেমন ভালবাসা আজব তো।

সে যাইহোক যতই ভালবাসুক তাই বলে ঘরে এভাবে ছবি লাগিয়ে রাখবে? ওর মা বাবা কিছু বলে না? আমি কি বিয়ে করা বউ নাকি?

পিছন থেকে এসে রাজ বলে উঠল
ম্যাডামের ঘুম ভাংল তাহলে?
সেই কখন থেকে সবাই অপেক্ষা করছে ম্যাডামের জন্য কিন্তু তার তো দরজা খোলার নামেই নেই।

রুহি রাজের দিকে ভ্রি কুচকে তাকিয়ে বলল এগুলা কি?

রাজঃ কি বলতো?

রুহিঃ আপনি আমার এত ছবি কেন তুলেছেন?

রাজঃ আমি তুলেছি কে বলল?

রুহিঃ আমি তো নিজেই দেখতে পাচ্ছি।

রাজঃ এসব আমি তুলি নি ম্যাম আমি সেদিন মাঠে বলেছিলাম আপনি কোথায় কি করেন তার খবর দিতে পারলে আমি তাকে খুশি করব। তাই এক এক জন এক এক সময় তুলেছে। আর এক এক রেটে এগুলি আমার কাছে বিক্রি করেছে আমি কিনে এনেছি তুলি নি।আমার তো খেয়ে কাজ নাই আপনার পিছনে সারাদিন ঘুরে বেড়াব।

যারা তুলেছে তাদের সাথে গিয়ে রাগ দেখান আমাকে দেখাচ্ছেন কেন?

পড়ুন  Romantic Premer Golpo Bangla Tomar Amar Prem Part 4

রুহিঃ আপনি খুব.....

রাজ রুহির মুখে হাত দিয়ে বলল বাকি টা আমি জানি।কিন্তু যুক্তি ছাড়া কথা বলা যাবে না ত।আমি মোটেও খারাপ না শুধু নিজের জিনিসে একটু বেশি খেয়াল রাখি আর কি।এসব ছাড়ুন।
এখন তাড়াতাড়ি নিচে চলুন বাবা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে উনার অনেক কাজ আছে জানেন এই তো তাড়াতাড়ি চলুন অনেক্ষন থেকে বসে আছে।বলে রাজ রুহির হাত ধরে টানল।

রুহিঃ আহ দাঁড়ান।

রাজঃ আবার কি?

রুহিঃ এমন ড্রেসে কেউ বড়দের সামনে যায় নাকি?
কেমন ছেলেদের মত লাগছে।

রাজঃ তো আর জামা কই পাব?আমি কি মেয়ে নাকি যে মেয়েদের ড্রেস থাকবে।

রুহিঃ আমি এভাবে যেতে পাড়ব না।

রাজঃ আচ্ছা ওয়েট ব্যবস্থা করছি।বলে রাজ তার মার ঘর থেকে একটা শাড়ি নিয়ে আসল।আশা করছি এবার মেয়ের মত লাগবে।

রুহিঃ কিন্তু....

রাজঃ আবার কিন্তু.... আমি এবার হার্ট ফেল করব।

রুহিঃএত অল্পতে হার্টফেল করে এই আবার কেমন ছেলে মেয়েদের ও তো এর চেয়ে বেশি পাওয়ার থাকে।

রাজঃ আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

রুহিঃ কি একটা মেজাজ খালি খারাপ এই হয় সবসময়।

রাজঃ বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।

রুহিঃ তো আমি কি করব?

রাজঃ ড্রেস চেঞ্জ করো আর তা না পাড়লে ড্রেস ছাড়াই চলো।

রুহিঃ কি অসভ্য চেলে মা গো।

রাজঃ পড়বা কি? রাগি লুক নিয়ে

রুহিঃ শাড়ি পড়তে পাড়ি না।

রাজঃ বাহ বেশ তাহলে এখন আমার কি করা উচিত? ড্রেস ছাড়া নিয়ে যাওয়া উচিত না কি?

রুহিঃ না...শাড়িটা পড়িয়ে দেওয়া উচিত।

রাজঃ কি....???

রুহিঃ খারাপ কিছু বল্লাম?

রাজঃ লজ্জাবতি নিজে বলছে একটা ছেলেকে শাড়ি পড়িয়ে দিতে?

রুহিঃ ছেলে কে?

রাজঃ আমাকে কি মেয়ে মনে হচ্ছে

রুহিঃ এই তর্কে গেলে ফরনসিক টেস্ট করতে হবে আমরা এখন সেসব না করে শাড়িটা পড়ি?

রাজঃ আগে প্রমান টা তো দেই বলেই রুহিকে একটানে ঘুরিয়ে নিজের বুকের সাথে রুহির পিট মিলিয়ে দিয়ে,তার চুলে মুখ ডুবিয়ে দিল।
রাজের এমন স্পর্শ এ রুহি বার বার কেঁপে উঠছে
রাজ রুহিকে চেপে ধরে মুখ তুলে বলল তো এখন এভাবে কাঁপছ কেন। আমিত মেয়ে তাই না?

পড়ুন  মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৫ | মোনা হোসাইন

রুহিঃ ভুল হয়ে গেছে ছেড়ে দিন প্লিজ.....🥺

রাজঃ হুম আমার কাছেও এখন রোমেন্স করার মত সময় নেই তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করো বেবি।

রাজ শাড়ি আনলেও ব্লাউজ বা পেটকোট আনে নি তাই শাড়ি পড়া সম্ভব হল না

রুহি টিশার্ট এর উপড়ে শাড়িটা জড়িয়ে কোন রকম একটু ভদ্র সাজার চেস্টা করল।

রাজ রুহির হাত ধরে নিচে নিয়ে গেল।
নিচে যেতেই যাক বাবা তোমরা শেষ পর্যন্ত এসেছো বলে রাজের মা এসে রুহিকে নিয়ে গেল।

রাজঃ রুহি আমার বাবা মা।

রুহিঃ ২ জন কেই পায়ে হাত দিয়ে সালাম করল এটা দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল।

রুহি ফিস ফিস করে রাজ কে বলল আমি কি কিছু ভুল করলাম সবাই এভাবে তাকিয়ে আছে কেন?

রাজঃ ঠিক বোঝতে পাড়ছি না কি যে হয়েছে

রাজের মা অবাক হয়ে বলল এই যুগে কেউ কাউকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে?

রুহিঃ মা তো বলেছিল বড়দের সাথে দেখা হলে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে হয়।এখানে বোঝি সালাম করা বারণ?

রাজের বাবাঃ না মা,বারণ নয় এখন সবাই কেমন অস্থির টাইপের হয়ে গেছে।
বড়দের সম্মান করা আজকালের ছেলে মেয়েরাতো ভুলেই গেছে যেমন এই যে একটা (রাজকে দেখিয়ে) কখনো কাউকে সালাম করে নি। সে হয়ত এসব জানেই না।তুমি হঠাৎ করলে তাই অবাক হয়েছি।
যানো খুব চিন্তায় ছিলাম রাজ যে উগ্র স্বভাবের কেমন মেয়ে যে পছন্দ করেছে কে জানে এটা ভেবে।
কিন্তু তুমি তো প্রথম দেখাতেই আমাদের মন কেড়ে নিলে।

রাজঃ হয়েছে এমনেতেই তাকে কাবু করা যায় না।এখন আর মাথায় তুলতে হবে না।চলো খেতে চলো ক্ষিদে পেয়েছে।

সবাই খেতে বসেছে হঠাৎ করে রুহি বলে উঠল আন্টি আপনারা তো অনেক ভাল কিন্তু আপনাদের ছেলেটা এমন কেন?

কথা টা শুনেই রাজ বিষম খেল।

রাজঃ এই হয়েছে....এখন নিশ্চুই সব বলে দিবে আমি কি কি করেছি।

রাজ টেবিলের নিচে রুহির পায়ে পা দিয়ে জোরে চেপে ধরে চোখ পাকিয়ে ইশারা করে বোঝাল যেন কিছু না বলে।

কিন্তু রুহি বলতে শুরু করতে যাচ্ছে তখনি রাজ হাত ধুয়ে রুহিকে টানতে টানতে বলল অনেক হয়েছে আর খেতে হবে না চলো ভার্সিটি যেতে হবে লেইট হয়ে যাচ্ছে।

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ৩২ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

রুহিঃ আরে কথাটা তো শেষ করি।

রাজঃ কোন কথা নেই সব অন্যদিন হবে।

রাজের মাঃ আরে কি করছিস রাজ মেয়েটাকে খেতে দে।

রাজঃ আমি আছি ত মা ক্যান্টিনে খায়িয়ে দিব প্রমিজ এখন ও আর খাবে না।

ও এখন খাবার নয় আমার মাথা চিবিয়ে খাওয়ার চিন্তায় আছে (মনে মনে)

রুহিঃ উফ একটু কথা বললে কি হয়? আমি কি বাবা মাকে নিয়ে যাব নাকি?

রাজ আর কিছু না বলে রুহিকে টানতে টানতে উপড়ে নিয়ে গেল।

রাজের বাবাঃ কে বলবে বলোত এই মেয়ে রাজ কে এতদিন ধরে এত কষ্ট দিয়েছে?

রাজের মাঃ ছাড়োত এর বয়স এই বা কত তখন তো আরোও ছোট ছিল বোঝতে পাড়েনি।
দেখো এরা খুব সুখি হবে। আর মেয়েটাকে আমার বেশ ভাল লেগেছে।

রাজের বাবাঃ তা ঠিক বলেছো।

এদিকে রাজ রুহিকে টানতে টানতে নিয়ে এসে দরজা লক করে দিল।

রুহিঃ রুহিরে তুই আজ শেষ এই সাইকো এখন তোর কি অবস্থা করবে খোদা জানে.....যা চেয়েছিল তা তো করতেই পারলি না উল্টে ফাঁদে পড়ে গেলি।কি হবে এখন...??

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top