Mukhosh
Mona Hossain { Part 15 } recap
রুহিকে শাওয়ার নিতে দেখে রাজের আর বোঝার বাকা রইল না যে রুহি এতক্ষন কি কি করছিল।
এদিকে রুহি রাজ কে এখন এখানে দেখার জন্য প্রস্তুত ছিল না।তাই রুহি অবাক হয়ে বলল,
রুহিঃআ আ আপনি এত রাতে এখানে কি করে আসলেন....
রাজ রুহির প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সোজা গিয়ে রুহিকে ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিল।তারপর চুলের মুটি ধরে বলল এত রাতে শাওয়ার নিয়েছিস কেন?
রুহিঃএত রাতে পারমিশন ছাড়া একটা মেয়ের ঘরে ঢুকে তাকে থাপ্পড় মারাটা যতটা অপরাধ রাতে শাওয়ার নেওয়াটা নিশ্চুই ততটা অপরাধ না।
রাজঃ রুহি চুপ একদম চুপ আমি তোমার এই কথা গুলি নিতে পাড়ব না।তাই এমন কিছু বলো না যাতে আমি তোমার গাঁয়ে হাত তুলতে বাধ্য হই।
রুহিঃ তুলার বাকি রেখেছেন বোঝি?
রাজ রুহির চুল আরো জোরে টেনে বলল তোকে কে পাঠিয়েছি জানি না তবে এবার আমার কাছে আসাটা তোর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল এক খেলায় ২ বার তুই জিততে পাড়িস না।বলে রুহিকে বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে চলে গেল।
পরের দিন সকালে সবাই রেডি মিনিবাস ও সময়মত চলে এসেছে আজ সবার একসাথে যাওয়ার কথা কিন্তু রাজ আর রুহি এখনো আসে নি সবাই অপেক্ষা করছে।
স্নেহা রাজ কে ফোন দিল।
স্নেহাঃ হ্যালো রাজ কোথায় তুই...???সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে।
রাজ রাতে ড্রিংক করায় সব ভুলে গেছি।
রাজঃ কে অপেক্ষা করছে আর কেনই বা করছে আজ আমার জম্নদিন নাকি?
স্নেহাঃ উফফ রাজ আজ আমাদের পিকনিক কাম প্রেক্টিকেল ক্লাসের জন্য বাইরে যাওয়ার কথা।
রাজঃ ওহ শীট আমি একদম ভুলে গেছি তোরা দাঁড়া আমি এক্ষুনি আসছি বাই দা ওয়ে রুহি এসেছে?
স্নেহাঃ না তো ও তো আসে নি।
রাজঃআচ্ছা থাক তোরা আমি আসছি বলে রাজ রেডি হয়ে ব্যাগ হাতে হোস্টেলে পৌছাল।
রুহি তখনো ঘুমচ্ছে কারন সারারাত ঘুমায় নি।
রাজ গিয়ে রুহিকে না ডেকে আগে রুহির কাপড় জামা একটা ব্যাগে গুছিয়ে নিল।
তারপর রুহির হাত ধরে টানতে টানতে বলল
এই উঠ...
রুহি আচমকা ঘুম থেকে উঠল কিন্তু কি হচ্ছে কিছুই বোঝতে পাড়ল না। ঘুম থেকে উঠে রুহির মাথায় কিছু ঢুকে না আর এখন তো ঘুমের ঘোরেই আছে।
রুহিঃ কে আপনি....??? আমায় এভাবে টানছেন কেন?
রাজঃ বাহ ড্রিংকস এর মাত্রা এতই ছিল যে এখন আমাকেও চিনা যাচ্ছে না? নাকি ছেলেগুলি আমার চেয়ে ভাল ছিল তাই আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে।
রুহি তখনো কিছু বোঝে উঠতে পাড়ে নি তার আগেই রুহিকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে রাজ।
এবার রুহি বিষয় টা বোঝতে পাড়ল,
রুহিঃওহ আপনি.... কিন্তু এভাবে টানছেন কেন?
রাজঃ আমাদের জন্য সবাই অপেক্ষা করছে তাই।
রুহিঃ আমার দিকে একটু তাকাবেন প্লিজ
রাজ রুহির দিকে তাকিয়ে বলল কি হয়েছে।
রুহিঃ আমি কি পড়ে আছি?
রাজ থেমে গিয়ে রুহির দিকে ভাল ভাবে দেখল,
রুহি একটা টিশার্ট আর একটা থ্রি কোয়ার্টার পড়ে আছে এই মর্ডান ড্রেস রাজ কালকেই রুহিকে কিনে দিয়েছে।এটা ঘুমানোর জন্য আর্দশ ড্রেস হলেও বাইরে যাওয়ার মত না।
রুহিঃ এই ড্রেসে সবার সামনে গেলে কেমন হবে?
রাজঃ ফালতু কথা রেখে তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে এসো ইডিয়েট।
রুহিঃ এক দৌড়ে রুমে গেল
যতক্ষনে রুহি ফিরে আসলো রাজ সহ সবাই বাসে উঠে গেছে।
রুহি ভেবেছিল রাজের পাশে বসবে কিন্তু রাজ মিনির সাথে বসেছে দেখে রুহির মন খারাপ হয়ে গেল।রুহি সারা বাসে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিল মিনি বাসে শুধু একটাই সীট খালি আর তার পাশের সীটে একটা ছেলে বসে আছে রুহি ভাবতে লাগল বসবে কিনা কারন তার শুধু সেদিনের কথাই মনে হচ্ছে যেদিন রুহির পাশে বসায় একটা ছেলেকে রাজ মেরেছিল।
রুহিঃ৭/৫ ভেবে গিয়ে রাজ কে বলল আমি কোথায় বসব?
রাজ ড্রাইভারকে স্টার্ট দিতে বলে রুহির দিকে তাকাল তারপর যা বলল তা শুনে রুহির মাথা চক্কর দিয়ে উঠল।
রাজঃ ঠিক কত টাকা দিয়েছো ট্রিপের জন্য?নিয়ে যে যাচ্ছি সেটাই তো যথেষ্ট।আবার আমাকে প্রশ্ন করছো।
রাজের কথা শুনে সবাই হেসে দিলেও স্নেহার এসব মোটেও ভাল লাগছে না।
রুহি মাথা নিচু করে বলল আমি আসতে চাই নি রাজ....
রাজঃ তো কে জোর করেছিল?
রুহি এবার বলতে যাবে যে তাকে নামিয়ে দিতে কিন্তু রুহির কথা রুহির মুখে থাকতেই রাজ উঠে দাঁড়িয়ে রুহিকে একটা থাপ্পড় মারল আর বলল ট্রিপ টা নষ্ট করবি না আর ঘারের উপড় নিশ্বাস না ফেলে পিছনে গিয়ে দাঁড়া।
রুহির গালে রাজের ৫ আংগুলের দাগ স্পষ্ট ভেসে উঠেছে রুহি আর মার খেতে চায় না তাই চুপচাপ পিছনে গিয়ে দাঁড়াল।তার কান্না পাচ্ছে।
সবাই খুব মজা করছে কিন্তু রুহির প্রায় ১ ঘন্টা যাবত দাঁড়িয়ে আছে তার পা টনটন করছে কি করবে বোঝতে পাড়ছে না।১২ ঘন্টার জার্নি দাঁড়িয়ে যাওয়া কি করে সম্ভব রুহি সেই চিন্তাতেই ব্যাস্ত।
হঠাৎ গাড়ির সামনে অন্য গাড়ি চলে আসায় ড্রাইভার তাতক্ষনিক ব্রেক চাপল তাতে সবাই একটু সামনের দিকে ঝুঁকে গেলেও কেউ তেমন ব্যাথা পায় নি কিন্তু রুহি দাঁড়িয়ে থাকায় তাল না সামলাতে পেড়ে ধুপ করে নিচে পড়ে গেল।
স্নেহা সামনে থেকে দৌড়ে এসে রুহিকে টেনে তুলতে তুলতে বলল রুহি ঠিক আছো?
রুহি কিছু বলল না নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।খোলা চুল থাকায় রুহির মুখ ঢেকে গেছে।
স্নেহা আর কিছু না বলে রুহিকে এনে নিজের পাশের সীটে বসিয়ে দিল।
রাজ বলে উঠল স্নেহা কি করছিস?
স্নেহাঃ আমার পাশে বসাচ্ছি মারবি আমায়? আয় তাহলে মার কিন্তু রুহি আমার পাশেই বসবে।
মিনিঃ আলগা পিড়িত।ছাড়োত রাজ বসতে দাও।
স্নেহাঃ আমি রুহি নই মিনি যে সব শুনব আর সহ্য করভ বোঝে কথা বল।
রাজঃ হইছে থাম তোরা। আচ্ছা তুই তোর সীটে বস স্নেহা।
রাজের আর স্নেহাদের সীট পাশাপাশিই।
আরো কিছুক্ষন কেটে গেল রুহি এখনো নিচের দিকে মুখ করে আছে একটা কথাও বলছে না।
রাজের ব্যাপারটা ভাল লাগছে না।
রাজ স্নেহাকে মেসেজ দিয়ে বলল রুহির সাথে কথা বলতে।
স্নেহা( মনে মনে)ডং দেখলে বাঁচিনা ভালও বাসে আবার অপমানো করে।
স্নেহাঃ রুহি এসব কোনো ব্যাপার না রাজ তো এমনেই ওর কথায় মন খারাপ করে থেকো না প্লিজ তাকাও আমার দিকে বলে স্নেহা রুহিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে চুল গুলি সরাতেই আংতকে উঠল। রুহির ঠোঁট কেটে গেছে অল্প রক্তও পড়ছে।
স্নেহাঃ আহা ব্যাথা পেয়েছো বলবা না?
রুহিঃ ও কিছু না আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমি তোমার কাঁধে মাথা রেখে একটু ঘুমাই?
স্নেহাঃ তা ঘুমাও কিন্তু রক্তটা....
রুহিঃনা থাক তোমার কষ্ট হবে বলেই রুহি জানালার পাশে মাথা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিল।
রুহি ঘুমিয়ে পড়েছে।তখন রাজ এসে বলল স্নেহা সর।
স্নেহাঃ সর মানে কই যাব?
রাজঃ আমার সীটে😎
স্নেহাঃ যতসব ফালতু এমন ভালবাসা জীবনে দেখিনি পাগল কোথাকার।বলে স্নেহা গিয়ে মিনির পাশে বসল
Related Story
রাজ রুহিকে এনে নিজের কাঁধে শুয়িয়ে দিয়ে আস্তে করে ঠোটের রক্ত মুছে এন্টিসেপ্টিক জেল লাগিয়ে দিল।রুহি কিছুটা আরাম পেয়ে রাজ কে আখঁরে ধরল রাজ ও তাকে সাপোর্ট দিয়ে ফ্রিলি ঘুমানোর সুযোগ করে দিল।
রুহির যখন ঘুম ভাংগল নিজেকে রাজের বুকে আবিষ্কার করে খুব রাগ হল
এক ঝটকায় রাজের কাছ থেকে সরে গিয়ে বলল আপনি.... আপনি এখানে কি করছেন? একটুও শান্তিতে থাকতে দিবে না নাকি?
রুহির কথা শুনে রাজের জেদ চেঁপে গেল।শান্তিতে ঘুমানোর জন্য ৩ ঘন্টা একপাশ হয়ে বসে থেকে তাকে কাঁধে রেখে রেখে, কাঁধ ব্যাথা করে ফেললাম আর এখন বলছে আমি শান্তিতে থাকতে দেই না কি আজব।
রাজঃ ওই স্নেহার বাচ্চা রিকুয়েষ্ট করছিলো তাই একটু আসছিলাম না হলে বয়েই গেছে আপনার কাছে আসতে বলে চলে গেল রাজ স্নেহাকে আবার পাঠিয়ে দিল।