Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ১৬ | মোনা হোসাইন

রুহিকে রেখে রাজ নিজের সীটে গিয়ে বসেছে তার কিছুক্ষন পড়েই রাজের ফোনে কয়েকটা mms আসল যেগুলো ওপেন করে রাজের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল কারন সেখানে রুহি একটা ছেলের সাথে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নানা রং ডংগে ছবি তুলছে রাজের মাথা আবার গরম হয়ে গেল।

রাজ রিপ্লে দিয়ে জিজ্ঞাস করলো পিক গুলি কবের তুলা? অপর পাশ থেকে এসমেস আসলো কিছুদিন আগের স্যার, কিন্তু দিব কি দিব না সেই ভয়ে দিতে পাড়ি নি আরো একটা খবর আছে স্যার রুহি আজ কক্সবাজার যাচ্ছে। তার সাথে তার বিএফ ও যাচ্ছে।

রাজঃরুহি সেটা আমি জানি কিন্তু বিএফ?
জ্বি স্যার উনিও যাচ্ছে তবে ২ জন আলাদা আলাদা।
রাজঃ বিএফ এর ব্যাপারটা সিওর হয়ে আমাকে জানাও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। সময়মত খুশি করে দিব এসেমেসটা দিয়ে রাজ ফোন পকেটে রাখলো।

রাজ রুহিকে দেখছে আর তার রাগ বাড়ছে এই একটা মিষ্টি চেহারার মাঝে এত প্রতারনা কিভাবে রাখো রুহি?আমার সাথে এসে সাথে বিএফকেউ নিয়ে যাচ্ছো🤨

রাজ ড্রাইভার কে গাড়ি থামাতে বললো।
তারপর সবাইকে বললো নেমে খেয়ে নিতে।
সবার সাথে রুহিও গেল কিন্তু রাজ সবাইকে অবাক করে দিয়ে ১৪ প্লেট খাবার অর্ডার দিল।
বোঝার বাকি রইল না যে রুহির জন্য অর্ডার দেয় নি।
স্নেহা যেই বলতে যাবে তখনি রুহি স্নেহাকে বলল আমার ঠোঁট কেটে গেছে খেলে জ্বালা করবে তাই আমিই উনাকে মানা করেছিলাম স্নেহা।

বানিয়ে মিথ্যা বলল সস্তায় যাকে বলে নিজের সম্মান নিজে বাঁচানো ক্ষুদায় পেট ছো ছো করলেও রুহি তা প্রকাশ করে নি।

সবাই নিজের মত করে খাচ্ছে রুহির খুব লোভ হচ্ছে কারন ঘুম থেকে উঠেই সে এখানে চলে এসেছে কিন্তু খাওয়ার কথা বল্লে অপমানিত হতে হবে তাই রুহি কিছু না বলে ফোনে মুখ গুঁজে দিল। কারুর খাবারের দিকে তাকিয়ে থাকা টা কেমন বিশ্রী ব্যাপার তাই রুহি ফোন থেকে মুখ তুলছে না একমনে তাকিয়ে আছে কিছু একটা দেখে সে মুচকি মুচকি হাসছে ।আসলে অসস্তিকর পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার সবচেয়ে ভাল উপায় ফোনে মনোযোগ দেওয়া। রুহি সেটাই করছে।

এটা দেখে রাজের মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেল।
কার সাথে এত ম্যাসেজ করছে?খেতে দেইনি তাও শিক্ষা হয় নি? হেসে হেসে এসমেস করছে তাও আমারি সামনে বসে (রাজ মনে মনে)

রাজ রাগে নিজের খাবার ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ওয়েটারকে বকাবকি করতে শুরু করল কি হয়েছে এটা?মুখে দেওয়া যায়? বকাবকি করে রাজ বেরিয়ে গেল।হোটেলের মালিক নতুন খাবার দিতে চাইলেও রাজ খায় নি।

স্নেহাঃ খাবার তো ভালই ছিল সাইকো এমন করল কেন? যবে থেকে রুহিকে দেখেছে রাজ কেমন যেন হয়ে গেছে। আসলে রুহি খায় নি জন্যে ও খায় নি।

মিনিঃ বাজে কথা রাখ তো ওর ভাল লাগে নি তাই খায় নি।

সবাই খাবার শেষ করে বাসে ফিরে গেল রুহি যেই তার সীটে বসতে যাবে তখন রাজ, রুহিকে একটানে নিজের কাছে এনে বলল এখানে বসো।

রুহিঃ আমি কি পুতুল নাকি যখন যা ইচ্ছা করা যায় আমার সাথে? কিন্তু আমার কিছু করার নাই। তাই বাধ্য হয়ে রাজের পাশেই বসলো।

রাজঃ ফোনটা দেখি….

রুহিঃ ফোন….কিসের ফোন?

রাজঃ তোমার ফোন।

রুহিঃ আমার ফোন দিয়ে আপনি কি করবেন?

রাজঃ কি করব দেখতেই পাবে।

রুহি সংকোচ না করেই ফোনটা দিল কিন্তু সে একবারো ভাবতেই পাড়ে নি যে এমন হবে।

রাজ ফোনটা হাতে নিয়েই জানালা দিয়ে ফেলে দিল। বাস তখন চলছে আর এটা হাইওয়ে হওয়ায় ফোনের যে ১২ টা বেজে গেছে যে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।

রুহিঃ এটা কি করলেন….

রাজঃ আমাত যা করতে ইচ্ছে করলো।

রুহিঃফোনে আমার ইম্পর্টেন্ট কত কিছু ছিল জানেন?

রাজঃওই জন্যই ফেলে দিয়েছি।

রুহি কিছু বলতে যাবে তখন
রাজঃ মার খেতে না চাইলে চুপচাপ বসে থাকো।

রুহিঃ আপনি আমার সাথে এমন কেন করছেন?

রাজঃ হাত জোর করে অনুরোধ করে ছিলাম মনে আছে? কি মুল্য দিলে তার?এতকিছুর পরেও তুমি এখনো হাসপাতালের বেডে নেই সেটাই যথেষ্ট নয় কি?

রুহি আর কিছু না বলে জানালার বাইরে চোখ রাখল।

রাজঃ মন চাইলে কাঁধটা ইউজ করতে পারো আমি কিছু মনে করব না।

রুহি রাজের দিকে একবার তাকাল
রাজ সাথে সাথে টেনে তার বুকের বাম পাশে রুহির মাথা রেখে দিল তারপর বলল এবার যা দেখার আছে দেখতে থাকো।

রুহি আর কি বলবে শুয়ে শুয়ে রাজের হৃদস্পন্দন অনুভব করতে লাগলো।

কিছুক্ষন পর রুহি বলল ফোন টা একটু দিবেন।
রাজ কোন প্রশ্ন না করেই ফোনটা দিয়ে জানলা খুলে দিল।

রুহিঃ জানলা খোলছেন কেন?

রাজঃ ফেলবা না?

রুহিঃ সবাই রাজ চৌধুরী না যে টাকা নষ্ট করবে😏 গেম খেলব।

রাজ অবাক হয়ে গেল।

রুহিঃ পাসওয়ার্ড বলুন।

রাজঃ তুমি জানো না?

রুহিঃ আমি কিভাবে জানব আজব তো নেন লাগবে না আপনার ফোন।

রাজঃ তোমার বার্থডের ডেইট ফোনের পাসওয়ার্ড যাতে উইস করতে ভুলে না যাই তাই এই ব্যবস্থা।আমার সব ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ডো ওটাই।

রুহিঃ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।এত ভালবাসা কই রাখেন আর এত রাগেই বা কোথায় রাখেন?(মনে মনে)

Leave a Comment