Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ১৮ | মোনা হোসাইন

রুহিকে এভাবে বসে থাকতে দেখে আর ওর চোখ মুখের অবস্থা দেখে ম্যানেজারের সব ঠিক মনে হল না তাই রাজকে ফোন দিয়ে বলল,
রাজ ম্যানেজারকে বলল রুহিকে ডুবলিকেট চাবি দিয়ে দিতে

ম্যানেজার তাই করল।

রাত হয়ে গেছে,
জার্নি করে এসে সবাই ক্লান্ত। যে যার রুমে ঘুমোচ্ছে। বাইরে থেকে খেয়ে আসায় রাতে আর কেউ রুম থেকে বের হল না।

এদিকে সবাই ঘুমালেও মিনির চোখে ঘুম নেই তার গিলটি ফিল হচ্ছে।সে রাজকে পছন্দ করলেও তার এই ব্যাপারটা ভাল লাগছে না।

তাই মিনি রাজের রুমে গেল।রাজের চোখেও ঘুম নেই।
রাজঃ তুই এখানে কি করছিস ঘুমাস নি?

মিনিঃএকটু বেশি বেশিই হয়ে গেল না রাজ?

রাজঃ না ঠিকি আছে।

মিনিঃ এতটা কষ্ট না দিলেও পাড়তি।তুই তো ওকে ভালবাসিস আর বিয়েও করবি তাই না?

রাজঃ হুম তাত করবোই…তো কি হইছে…???

মিনিঃ ওর মন থেকে এই সন্দেহ টা কখনো দূর করতে পাড়বি?
আজ ও যা দেখে গেল সারাজীবন তোকে এটাই ভাব্বে। তোকে কখনো মন থেকে মেনে নিতে পাড়বে না।তুই হয়ত জোর করে বিয়েটা করতে পাড়বি ঠিকি।

রাজঃ কিন্তু আমি তো কিছু করি নি, সবটাই তো সাজানো ছিল শুধুমাত্র ওকে দেখানোর জন্য।

মিনিঃ সেটা তুই জানিস আর আমি জানি।রুহিত জানে না তাই রুহি এটা মানতে পাড়বে না।

রাজঃ ওকে সবটা খোলে বলে দিব তাহলেই তো হবে।

মিনিঃশুধু রুহি কেন,কোন মেয়েই নিজের চোখে দেখার পর আর কারো কথা বিশ্বাস করবে না।তাও আবার এমন সেন্সিটিভ একটা ইস্যু।

রাজঃ কি আর এমন দেখেছে? আমি তোকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি এই তো? আমাদের গায়ে কি জামা কাপড় ছিল না নাকি?

মিনিঃ এই সিন টাকেই রুহি শারীরিক সম্পর্ক নামে ব্যাখ্যা দিয়ে গেছে শুনিস নি…!! ছি ছি ছি রুহি আমায় কি ভাবল বলতো?তোর যা মন চায় তুই কর আমার আর ভাল লাগছে না রাজ। রুহিকে এভাবে কষ্ট দেওয়া মোটেও উচিত হয় নি।ওর চোখে তুই আমাকে কতটা খারাপ করে দিয়েছিস আর নিজেও কতটা হয়ে গেছিস তুই হয়ত বোঝতে পাড়ছিস না।

রুহিকে এখুনি সব বলতে হবে রাজ।চল রুহির কাছে যাই।কষ্ট পেয়ে ও যদি নিজের কোন ক্ষতি করে ফেলে…???

রাজ ব্যাপারটা এভাবে ভাবে নি, এখন সব এলোমেলো লাগছে কি করতে কি করে ফেললাম রুহি এটা কিভাবে মেনে নিবে?ও কিছু করে নি তো?

রাজঃ তুই ঠিক বলছিস মিনি,এক্ষুনি রুহিকে বোঝাতে হবে।
চল দোস্ত আমরা যাই মিনির হাত ধরে রাজ বলল প্লিজ তুই ওকে সবটা বোঝিয়ে বলিস।রাজের হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

মিনিঃ এখন আর ঢং করতে হবে না চল তাড়াতাড়ি।

রাজ আর মিনি মিলে রুহির রুমে গেল।
রাত তখন ১১ টা।

কিন্তু রুহির রুম ফাঁকা রুমে কেউ নেই….
রাজ কিছুক্ষন খোঁজা খোঁজি করে দেখল কিন্তু রুহি নেই।

মিনিঃ হায় আল্লাহ মেয়েটা উল্টো পালটা কিছু করে নি তো?

রাজঃ কি বলছিস তুই মিনি? না না এমন কিছু হতে পাড়ে না।

রাজ দৌড়ে নিচে গেল আর রিসিপশনে রুহির কথা জিজ্ঞাস করলো।

ম্যানেজার বলল জ্বি স্যার ম্যাম কিছুক্ষন আগে বাইরে গেছেন,এখুনি ফিরে নি।

রাজঃ ও শীট….কোনদিকে গেছে অস্থির হয়ে জিজ্ঞাস করতে লাগল রাজ।
ম্যানেজারঃ কোন সমস্যা স্যার….

রাজঃ হ্যা অনেক সমস্যা।রুহি যখন যাচ্ছিল কিছু কি বলে গেছে….কখন ফিরবে বা এমন কিছু?

ম্যানেজারঃ না স্যার তবে উনাকে দেখে কোন রকম অসাভাবিক তো লাগে নি উনি বেশ সাজ গোজ করেই বাইরে গেছেন। খুব সম্ভবত ক্লাবে বা ডিস্কে গেছেন।

রাজঃ আর ইউ সিওর?রুহি কোন ডিপ্রেশনে ছিল না?
ম্যানেজারঃ ডিপ্রেশন এর প্রশ্নই উঠে না।

রাজের মন তবুও মানছে না।সে রুহিকে খোঁজতে বের হবে তখনি ফোনে এমএমএস আসলো।
ফোন হাতে নিয়েই রাজের চোখে পানি চলে এসেছে,রুহি সেই ছেলেটার সাথে এক রুমে।ছবিতে সেটাই দেখা যাচ্ছে।

কার জন্য অস্থির হচ্ছিস রাজ? সেতো এখন অন্যকারো বুকে মাথা রেখে শান্তির নিশ্বাস নিচ্ছে রাজ নিজেই নিজেকে তীরষ্কার করে কথা গুলি বলছে।
এক মুহুর্তেই রাজের মাথায় আকাশটা ভেংগে পড়ছে বলে মনে হচ্ছে।রাজ হতাশ হয়ে রুহির রুমে ফিরে গেল।
রাজের চোখ থেকে টপ টপ পানি পড়ছে..

রাজঃ ভালই প্রতিশোধ নিলে রুহি… আসলে দোষটা তোমার নয় আমার… খেলাটা তো আমি সাজিয়ে ছিলাম যার শেষ চাল টা তুমি দিলে।
আবারো তুমিই জিতে গেলে রুহি।

বিশ্বাস করো আমার তাতে কোন আপত্তি নেই আমি আমার ভুলের শাস্তি পেলাম।
রুহি আমি তোমাকে শুধু কষ্ট দিতে চেয়েছিলাম, তোমাকে ঠকাই নি তো । তবে তুমি কেন আমায় ঠকালে বলতে পারো?তুমি কেন আমায় বোঝলে না?

তুমি এখন অন্যকারো বুকে মাথা রেখে ফুর্তিতে ব্যাস্ত কিন্তু আমার বুকে যে রক্তক্ষরন হচ্ছে তার আর্তনাত কি তোমার পাষান হৃদয় শুনতে পাচ্ছে………যানো রুহি আমার না খুব কষ্ট হচ্ছে। তুমি প্লিজ ফিরে এসো বিশ্বাস করো আমি তুমাকে একটা কথাও বলব না। তুমি হাজার ছেলের সাথে রাত কাটালেও আমার কাছে তুমি অপবিত্র হবে না, পবিত্রই থাকবে। আমি যে তোমায় ভালবাসি রুহি। তুমি আমার কাছে শুধু ফিরে এসো আমি তাতেই খুশি জান।

রাজ সারারাত ধরে রুহির ফিরার আশায় পথ চেয়ে বসে থাকল।কিন্তু রাজের অপেক্ষার অবষান ঘটয়ে রুহি আর ফিরল না।দেখতে দেখতে ভোর হয়ে গেল।কাঁদতে কাঁদতে রাজের চোখের পানি শুকিয়ে গেছে।সারারাত ১ মিনিটের জন্যও চোখের পাতা ১ করে নি সে।

 

ভোরের আলো ফুটে উঠেছে,রাজের এখন আর কান্না পাচ্ছে না।তার চোখে এখন আর পানি নেই বরং আগুন জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন।
সারারাত ধরে অনেক মজা করেছো রুহি আর না পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকো আজ তুমি বোঝবে রাজ কে আর সে কি করতে পাড়ে….!!!
আজ আমিও দেখতে চাই তোমাকে কে বাঁচাতে পাড়ে?তুমি যদি আমার না হও আমি তোমাকে অন্য কারোর হতেও দিব না প্রমিজ।

Leave a Comment