Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ২ | মোনা হোসাইন

Mukhosh

Mona Hossain { Part 2 } recap

বলতে গেলে ভার্সিটির সব মেয়েই রাজের জন্য পাগল, কিন্তু রাজ তাঁদের ছেড়ে আমার মত একটা গাঁইয়া মেয়ের পিছনে পড়ল কেন সেটা আমার মাথায় কিছুতেই ডুকছে না।

আমি রাজকে এড়িয়ে যেতে চাইলেও,রাজ কিছুতেই আমার পিছু ছাড়ছে না।আমি যতই পিছিয়ে যাচ্ছি উনি ততই এগিয়ে আসছেন।

গতকাল কোন কথা ছাড়াই হুট করে এসে জড়িয়ে ধরে বলে গেল আমাকে নাকি উনি ভালবাসেন।

কিন্তু আমি কারো সাথে প্রেম বা জগড়া করতে এখানে আসি নি। এসেছি বাবা মাএ স্বপ্ন পুরন করতে, তাই যাই হয়ে যাক না কেন আমাকে ক্লাস এ যেতেই হবে।তবে যত সম্ভব লুকিয়ে লুকিয়ে থাকার চেস্টা করছি।

অতপর প্রতিদিনের মত আজকেউ চুপি চুপি পিছনের দরজা দিয়ে ক্লাসে ঢুকে পিছনের সিরিয়ালে বসে পড়লাম আর চোখ বন্ধ করে মনে মনে প্রার্থনা করতে থাকলাম,রাজ যেন আমায় দেখতে না পায়।কিন্তু প্রার্থনা শেষ করে চোখ খুলে দেখি একটা ছেলে আমার ক্লাসের এসাইমেন্ট গুলো নিয়ে চলে যাচ্ছে।

Short Story

আমিঃএকি আপনি আমার এসাইমেন্টগুলি নিয়ে যাচ্ছেন কেন?ছেলেটি কিছু না বলে চলে যাচ্ছে। একটি মেয়ে পিছন থেকে এসে আমার হাত ধরে টেনে সামনে নিয়ে গেল।ছেলেটা এসাইমেন্টগুলি জয়ের পাশে রেখে দিল।রাজঃ কি হল ভুত দেখার মত দাঁড়িয়ে আছো কেন।বসো….আজ থেকে কখনো যেন না দেখি তুমি আমার পাশে ছাড়া অন্য কারো পাশে বসেছো মনে থাকবে?

মনাঃ ছেলেটা অন্য সব খারাপ করলেও এটা কিন্তু ভালই করেছে, ফাস্টে বসলে স্যারের লেকচার ভাল করে বোঝতে পাড়ব তাই কিছু না বলে বসে পড়লাম।

রাজঃ দ্যাটস লাইকে গুড গার্ল,এভাবে কথা শুনলে অনেক আদরে রাখব আর বেয়েদবি করলে নরকে পাঠিয়ে দিব বোঝেছো

পরপর তিনটে ক্লাস শেষ হয়ে গেছে এতক্ষন স্যার থাকায় রাজ আমার সাথে তেমন কথা বলে নি।

এখন টিফিন টাইম,রাজঃ ক্যান্টিনে চলো।

মনাঃ আপনি জান,আমার ক্ষুদা পাইনি।

রাজঃ উফফ… এখানে কেউ আমার কথার উপড়ে কত বলে না তুমি কি সেটা দেখতে পাও না?তাহলে তোমার মত একটা ফুচকি মেয়ে কি করে আমার কথা অমান্য করো সেটাই বোঝতে পাচ্ছিনা।নিজে যাবা নাকি টেনে নিয়ে যাব….???

বাধ্য হয়ে চুপচাপ পিছনে পিছনে যেতে লাগল মনা।রাজ ক্যান্টিনে যেতেই রাজকে দেখে টেবিল খালি করে দেওয়া হল,রাজ অর্ডার দিল খাবার দিয়ে যেতেই রাজ বলল তাকে খায়িয়ে দিতে….মনাঃআ আ আ আ আমি আপনাকে কেন খাওয়াব কি বলছেন এগুলা? লোকে কি বলবে?আপনারা শহরের মানুষ আপনারা এতে অভ্যস্থ হলেও আমি অভ্যস্থ না।

রাজঃ হা হা হা….তাই নাকি? বেড শেয়ার করার সময় এই লজ্জা কই ছিল? বিছানায় যেতে পাড়িস আর এটা করতে পাড়ছিস না? ও আচ্ছা সেটাত রাতের অন্ধকার ছিল আর এটা সবার সামনে তাই সমস্যা হচ্ছে তাই না?

রাজের কথাটা মনার হজম হল না। সে ভুলে গেল যে রাজ কে? তাই কিছু না ভাবেই রাজ কে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল।

রাজের মাথায় আগুন জ্বলে গেল,রাজঃ ভাল মত বোঝায়ছিলাম, বলছিলাম অভিনয় বন্ধ করতে। শুনলি না তো এখন দেখ তোর কি হাল করি।

মনা দৌড়ে হলে ফিরে গেল।সারাদিন কেটে গেল এতক্ষন সব ঠিকি ছিল কিন্তু সন্ধ্যার ঠিক আগে আগে,হলে রাজ আর রাজের গ্যাং এর আগমন ঘটল হলো।না রাজ এখানে মনাকে নিতে আসেনি বরং সে এখানেই থাকতে এসেছে।

হলসুপার অবাক হয়ে গেল মন্ত্রীর ছেলে হলে থাকবে সেটা কি করে সম্ভব?

রাজঃ ম্যাম আমাকে ৩০৪ নাম্বার রুমটা দিন আর আদি,মাহির, স্নেহাকেও ১টা করে রুম দিন।

ম্যাডামের মাথায় কিছু ঢুকতেছে না তাও বাধ্য হয়েই অন্যদের সরিয়ে রাজ কে ৩০৪ রুমটা দিল।

ম্যাডাম হলের সবাইকে ডেকে বলে দিল রাজের সাথে ভাল ব্যবহার করতে।

হলের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,রাজ শয়তানি হাসি দিয়ে চাবি নিয়ে উপড়ে উঠতে লাগল ৪ তলায় তার রুম।তাও মনার পাশের রুমটাই রাজ নিয়েছে।

রাজকে রুমে ঢুকতে দেখে মনার আত্মা উড়ে গেল।আল্লাহ রক্ষা করো। কি চায় এই ছেলে?

রাজ তার ঘরে ঢুকে ব্যাগ টা ফেলে দিয়েই মনার রুমে ঢুকে গেল।মনার সাথে থাকা মেয়েগুলোকে বলল বাইরে যেতে।মনার ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে।মনাঃ দে দ দ দ দ দেখুন…..

রাজঃ দেখতেই তো আসলাম দেখাও…

মনাঃ কাঁপা কাঁপা গলায় বলল আপনি আমার সাথে এটা করতে পাড়েন না।

রাজঃ আমি ত কিছু করলামি না তুমি নিজেই দেখাতে চাইলে।

মনাঃ আ আ আ আপনি বাইরে যান।

রাজঃ বাইরে যাওয়ার জন্য এসেছি নাকি?

মনাঃ আমি কিন্তু চেঁচাব….

রাজঃ কোন লাভ নেই কেউ আসবে না….

মনার চোখ ছল ছল করছে…..আমার ভুল হয়ে গেছে ক্ষমা করে দিন প্লিজ।আর কখনো আপনার আশে পাশে যাব না কথা দিচ্ছি।

রাজঃ আমি তো তোকে সারাক্ষন আমার সাথে রাখতে চাই…. আচ্ছা ছাড় এসব কথা মেইন কথায় আসি,আজকের রাত টা তোর সাথে কাটাতে চাই, তার জন্য কত নিবি বল….???

মনাঃ কেঁদে দিল….আমাকে দেখে কি এমন মনে হয় যে এত বাজে প্রস্তাব দিচ্ছে।

রাজঃ আরে এত ন্যাকামি করছিস কেন? মনার কাছে এগিয়ে যেতে যেতে বলল যত চাইবি ততই দিব, টাকা আর সুখ ২ টাই। তাই চিন্তা না করে শুধু বলে ফেল কত টাকা চাস।আমি যেকোনো এমাউন্ট পে করতে রাজি আছি।

মনার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। শহরের ছেলেরা এত খারাপ হয় আমার জানা ছিল না। অনেক পড়াশোনা করেছি আর দরকার নাই,বড় কলেজে পড়ার শখ মিটে গেছে,আর ইচ্ছা নাই, আমি কাল সকালেই এখান থেকে চলে যাব (মনে মনে)কিন্তু এখন নিজেকে কি করে রক্ষা করব এই রাক্ষসের হাত থেকে?

রাজ এগিয়ে আসছে আর মনা পিছাচ্ছে।রাজ এগুতে এগুতে মনা কে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে দিল।তারপর মনার কোমড় জড়িয়ে চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলল বিশ্বাস করো খুব ভালবাসি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পাড়ব না।রাজ মনাকে জড়িয়ে ধরল তারপর কি যেন ভাবল আর মনাকে ছেড়ে দিয়ে চলে গেল।

Related Story

মনাঃ জীবনে কখনো দেখা হয় নাই কথা হয় নাই আর এখন বলছে নাকি ভালবাসে।বড়লোকের ছেলে কখন কাকে ভাল লাগে নিজেই জানে না। বিছানায় নিতে পাড়লেই এসব ভালবাসা উধাও হয়ে যায়। আজ আল্লাহ আমাকে সুযোগ দিয়েছেন আর একটা দিনও না,কাল সকালেই আমি টিসি নিয়ে এখান থেকে বিদায় হব।

যেমন কথা তেমন কাজ সকালে মনা একটা T.c application লিখে নিজের সাবজেক্ট এর অফিস রুম থেকে সব ফরমালিটি শেষ করে প্রিন্সিপালের রুমের দিকে যাচ্ছিল এখন শুধু এপ্লিকেশ্নটা জমা দিলেই টিসি গ্রান্টেড হয়ে যাবে বাকি সব কাজ শেষ।

রাস্তায় স্নেহা (রাজের বান্ধবি) মনাকে দেখে ফেলল।আর টিসির ব্যাপারটাও জেনে গেল স্নেহা তাড়াতাড়ি রাজকে ফোন করে বলে দিল।

রাজঃ স্নেহা যে করেই হোক তুই ওকে একটু আটকে রাখ ও যেন প্রিন্সিপালের রুমে কোনভাবেই না যেতে পারে আমি এক্ষুনি আসছি।

স্নেহাঃ আরে আমি ওকে কি করে আটকাব ও তো প্রায় চলে গেছে আচ্ছা ছাড় দেখতেছি।স্নেহা কিছু না বলেই মনার হাত ধরে টানতে শুরু করল।মনা আরে কে আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন।স্নেহা কোন উপায় না দেখে মনাকে জড়িয়ে ধরে বলল আরে আমাকে চিনতে পাড়ছো না ছোট বেলা কত খেলেছি একসাথে….

মনাঃ আমার সাথে?

স্নেহাঃতো কার সাথে?

মনাঃ আপু আমি এর আগে কখনো এই শহরে আসি নি আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে।কিছু যদি মনে না করেন আমার একটি তাড়া ছিল আমি যাই….স্নেহা কিছু বলার আগেই মনা চলে গেল।

মনা যখন প্রিন্সিপাল এর রুমে ঢুকতে যাবে ঠিক তখনি কেউ তার হাত ধরে টেনে নিচে ফেল দিল।তারপর চুলের মুটি ধরে প্রিন্সিপালের রুমের সামনে থেকে নিয়ে গেল।

স্নেহাঃ আহ আমার লাগছে….ছাডুন প্লিজ

রাজঃ আমার লাগে না বুঝি…আজ তোকে আমি বোঝাব রাজ কি জিনিস

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

Leave a Comment