Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৩ | মোনা হোসাইন

Mukhosh

Mona Hossain { Part 3 }

আরে আমি কি করছি?আমার সাথে এমন করছেন কেন?আর আমি যাই করি না কেন, আমাকে শাসন করার আপনি কে?আপনি আমার কেউ হন না তাই আমার গাঁয়ে আপনি হাত তুলতে পাড়েন না। কথাগুলি বলছিল মনা আরতার চুলের মুটি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল রাজ।

হুম সেটাই তো আমি তোর কে?আর রাজ কি করতে পাড়ে সেটাই তো এখন দেখাব একটু অপেক্ষা কর।(রাজ)

রাজ মনাকে টানতে টানতে ভার্সিটির মাঠে নিয়ে গেল তারপর বলল, hey guys attention please….

মনাঃ কি করতে চাইছেন?

রাজ মনার টিসির এপ্লিকেশন টা হাতে নিয়ে একটানে ছিড়ে ফেলে দিল। তারপর মনাকে একটানে নিজের সাথে মিশিয়ে দিয়ে মনার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিল। এক মনে মনার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চালিয়ে যাচ্ছে রাজ।

Short Story

মনা সাধ্য মত চেস্টা করছে রাজকে আটকাবার কিন্তু পাড়ছে না। কারন রাজ ছেলে তার উপড় মারামারি করে অভ্যস্থ মনার ধাক্কায় রাজ নিজের জায়গা থেকে ১ চুলও নড়ে নি।বরং সময়ের সাথে রাজের ঠোঁট চালানোর স্পীড বেড়ে যাচ্ছে। স্পীড বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে তা কামড়ে পরিণত হলো মনার ঠোঁট গুলো রক্তে ভিজে গেছে তাও রাজ ছাড়ার নাম নিচ্ছে না।

রাজের কান্ড দেখে সবাই অবাক।সবাই তাদের দেখছে,লজ্জায় মনার মাথা কাটা যাচ্ছে, একে ত মনার ঠোঁট যন্ত্রনা করছে তার উপড় সবার সামনে এই অবস্থায়, মনা রীতিমত কাঁপছে।

মাঠের মাঝখানে রাজ আর মনাসবাই তাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে।এক কথায় সবাই বিনে টিকিটে রোমান্টিক সিন দেখছে।কিছুক্ষন পর রাজ মনাকে ছাড়ল।

ছাড়া পাওয়া মাত্রই মনা দৌড় দিতে চাইল কিন্তু তা হল না রাজ মনার হাত ধরে ফেলল তারপর সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললguys lets introduce with my gf….এটা হল মনা, আমার একমাত্র প্রেমিকা।আজ থেকে এর উপড় যে চোখ তুলে তাকাবে তার চোখ আরাজ তুলে নিবে।আর ওর ব্যাপারে যে কোন নতুন খবর দিতে পাড়বে মানে কই যাচ্ছে কি করছে আমাকে বলতে পাড়বে তাকে খুশি করার দায়িত্ব আমি নিলাম।সবাই এর উপড় নজর রাখবা আর একটা কথা এখানে যেন ওর কোন সমস্যা না হয়।,,,,মনাঃ আমাকে যেতে দিন আমার শরীর খারাপ লাগছে।

রাজঃ আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা আর কখনো বলো না বেবি। আমি তোমাকে কস্ট দিতে চাইনি শুধু একটু শিক্ষা দিছি এরপর যেন আর এমন না করো সে জন্য বলেই মনাকে কোলে তোলে নিল তারপর মনার রুমের দিকে যেতে লাগল।

রাজের জন্য অনেক মেয়ে পাগল তাদের এসব ঠিক হজম হচ্ছে না।এদের মধ্যে একজন মিনি যে রাজকে পছন্দ করে তার ত এসব মোটেই সহ্য হচ্ছে না।

মিনিঃ এই গাঁইয়া মেয়েটার মধ্যে রাজ কি এমন দেখল যে সবার সামনে প্রেমিকার স্বীকৃতি দিয়ে দিল?কিছু একটা গন্ডগোল আছে রাজ কোন উদ্দেশ্য ছাড়া একে মেনে নিতেই পাড়ে না। এত এত স্মার্ট মেয়ে থাকতে এর সাথে প্রেম করবে এটা কোন ভাবেই ঠিক লাগছে না।

রাজ মনাকে কোলে নিয়েই চারতলা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগল।

মনাঃ আমার পায়েত কিছু হয়নি আপনি আমায় নামান আমি নিজেই যেতে পাড়ব।

রাজঃ তাহলে তো লিফটেই যেতে পারতাম সিঁড়ি বেয়ে উঠছি কেন?বোকা মেয়ে তোমাকে কোলে রাখতেই বেশি ভাল লাগছে তাই নামতে দিচ্ছি না।

মনাঃ আপনার কস্ট হবে।রাজঃ ততটাও হবে না যতটা ভাল লাগছে।

রাজ মনাকে নিজের রুমে নিয়ে গেল কারন মনার রুমে আরো ২ টা মেয়ে থাকে তাই।

রাজ মনাকে বিছানায় বসিয়ে দিল।কিছু একটা খোঁজতে খোঁজতে বলল, মনা তুমি অন্যদের সাথে রুম শেয়ার করে থাকো কেন? নিজে আলাদা থাকবে আমি ম্যাম কে বলে দিব তোমার রুম খালি করে দিতে।

মনাঃ না না আমার এত টাকা নেই। আমি ওদের সাথেই ঠিক আছি।

রাজ মুচকি হেসে এসে মনার পায়ের কাছে হাঁটু ঘেরে বসে মনার মুখ সামনের দিকে নামিয়ে এনে তুলো দিয়ে মনার ঠোঁটের রক্ত মুছতে মছুতে বলল আচ্ছা তুমি যা চাও তাই হবে।

আমি তোমাকে অনেক ভালবাসব বিশ্বাস করো তুমি প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না।

মনাঃআপনি সত্যিই আমায় ভালবাসেন….????

রাজঃ কি মনে হয়….???আচ্ছা ছাড়ো তুমি কিচাও আমি এখানে থাকি নাকি চলে যাব?

মনাঃ আপনার ইচ্ছা।

রাজঃ আমার তো খুব ইচ্ছা তোমার সাথে থাকা কিন্তু আমি জানি আমি এখানে আসায় তুমি ভয় পেয়েছো তাই তুমি এখান থেকে চলে যেতে চেয়েছিলে।আর একটু হলেই তোমায় হারিয়ে ফেলতাম আসলে কাল তোমাকে এভাবে বলা আমার উচিত হয় নি, বিশ্বাস করো আমি তোমার কোন ক্ষতি করব না তুমি এখান থেকে যেও না,আর জানই আমার পড়াশুনা ছাড়াও অনেক কাজ আছে।বাবার একমাত্র ছেলে হওয়ায় বাবার ব্যবস্যার দিক টাও দেখতে হয়।তাই আমি এখানে থাকতে পাড়ব না এসেছিলাম তোমাকে শাস্তি দিতে সেটা শেষ আমি কাল চলে যাব।তুমি তোমার মত করেই থাকতে পাড়বা কোন সমস্যা হলে আমাকে বলবা কেমন।মনা মাথা নাড়ল।

চলো রেডি হয়ে নাও বাইরে থেকে ঘুড়ে আসি।বলে রাজ মনাকে তার রুমে দিয়ে আসল মনাও রেডি হয়ে নিল কারন এখন না গেলে রাজ গন্ডগোল করবে।কিছুক্ষন পর রাজ আসল এই প্রথম রাজকে মনার সুন্দর লাগছে। রাজ একটা ডার্ক ব্লু কালার টিশার্ট পড়েছে সাথে ব্লেক জিন্স।একদমি ক্যাজুয়াল লুক।

মনাঃ উনি এত সুন্দর আগে ত লক্ষ করি নি।মনাকেউ আজ বেশ লাগছে মনা কি যেন মনে রে শাড়ি পড়েছে নীল শাড়ি সাথে চুড়ি পড়েছে।টিপ হালকা।গাঢ় কাজল,খোলা চুল আর লিপস্টিক পড়েছে ঠোঁটের দাগটা মুছার জন্য।

রাজঃ মাস আল্লাহ কারোর যেন নজর না পড়ে আমার পরীটার উপড়।মনা কিছুটা লজ্জা পেল।মনাকে নিয়ে রাজ বেরিয়ে পড়ল।

তারপর একটা বীচে নিয়ে গেল জায়গাটা কিছুটা মেলার মত। কিন্তু এখানে কাপল ছাড়া কাউকে দেখা যাচ্ছে না।যারা আছে সবাই জোড়া বেধে এসেছে।মনা সেটা দেখে বেশ অবাক হল,এখানে সবাই মেয়ে বন্ধু নিয়ে আসে?

রাজ হেসে বলল হুম আসে কেন আমি কি তোমার তেমন বন্ধু হতে পারি না?

মনাঃ আমি ঠিক তা বলি নি।রাজঃচলো ভিতরে যাই। ভিতরে ঢুকতেই প্রায় সবাই রাজ কে সালাম দিতে লাগল,কেউ আবার জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করছে কেমন আছে।

একজন বলল,রাজ তুমি এখানে…??? তারমানে ইনি আমাদের ভাবি?এমন প্রশ্নে মনা কিছুটা অস্বস্তিবোধ করল।রাজ মনার হাত ধরে বলল হুম এটাই আমার বউ,তবে এখুনো হয় নি, খুব তাড়াতাড়ি হবে। বেশি দেড়ি করব না বিয়ে করে ফেলব।

মনা রাজের কথায় অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকল।

মনাঃরাজ আমার হাত ধরেই হাঁটতে লাগল সবগুলি স্টল ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছিল আমার সত্যি ই ভাল লগছিল আমি এর আগে কখনো এভাবে ঘুরি নি।রাজ বেশ দামি একটা চুড়ি কিনে আমার হাতে পড়িয়ে দিল। আমি বল্লাম এত দামি কিছু আমি নিব না অন্যকিছু কিনে দিন যেমন কাচের চুড়ি।এটা লাগবে না।

রাজঃ থাক না আমি যখন পছন্দ করছি….মনাঃ আমি আর আপত্তি করলাম না।রাজ আমাকে নাগরদোলায় চড়তে বলল আমি বললাম আমার ভয় লাগে।রাজ হেসে বলল তাই?মাথা নিচু করে বল্লাম হুম।আচ্ছা চলো তবে অন্য একটা রাইডে চড়ি।বলে রাজ আমাকে কয়েকটা মেয়ের সাথে বসিয়ে দিল আর রাজ কিছুটা দূরে বসলকারন,ছেলে আর মেয়েদের সীট আলাদা।

আমি কিছু বোঝার আগেই রাইড চলতে শুরু করল একে তো স্পীড তার উপড় এই রাইডের নাম ভুতের ট্রেন চারদিকে অস্পষ্ট আলোয় ভুতের মত কিছু দেখা যাচ্ছে তার সাথে ভুতুরে আওয়াজ ভয়ে আমার জান জান যায় যায় অবস্থা, মনের অজান্তেই রাজ বলে চিৎকার করে উঠলাম।অস্পষ্ট আলোয় স্পস্ট দেখলাম আমার ডাকতে দেড়ি হয়েছে কিন্তু রাজের আসতে দেরি হল না এই স্পীডি রাইডে বেল্ট পড়ে বসে থাকাটাও যেখানে বিপজ্জনক সেখানে রাজ নিজের বেল্ট খুলে সীট ছেড়ে আমার দিকে এগিয়ে আসল,এসে আমার হাত শক্ত করে ধরে পাশেই দাঁড়িয়ে বলল

i am sorry jan আমি বোঝতে পাড়িনি তুমি সত্যিই ভয় পেয়ে যাবে। ভয় পেও না এই তো আমি আছি। রাজ অস্থির হয়ে গেছে দেখে বল্লাম আমি ঠিক আছি আপনি গিয়ে বসুন এখানে থাকলে পড়ে যাবেন।এরি মধ্যে কিছু একটা একদম আমার কাছে চলে এল ভুতের মত দেখতে কোন রোবট।আমি ভয়ে রাজকে আঁখড়ে ধরলাম। রাজ তার বুকের সাথে আমাকে জড়িয়ে বলল কেন যে এই রাইডে চড়েছিলাম আর কখনো এমন ফাযলামি করব না জান।সবাই রাজের দিকে তাকিয়ে আছে।রাজ কোন মেয়ের প্রতি এত কনসাল্ট এটা দেখে সবাই অবাক হল।রাইড শেষ হল আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে।রাজ আমায় কোলে নিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে এল।is it okey now? Are you fell confortable?

মনাঃ জ্বি ঠিক আছি,

রাজ ফুচকার দোকানে গিয়ে বলল ঝাল ছাঁড়া ফুচকা দাও বাচ্চা খাবে।

মনাঃ একটু (অবাক হয়ে) আমাদের সাথে ত কোন বেবি আসে নি।রাজঃ এই যে আমার পাশে জলজেন্ত দাঁড়িয়ে আছে। মনা কে ইশারা করে।মনা হেসে দিল

রাজঃ এই প্রথম মনাকে হাসতে দেখলাম।কি যে ভাল লাগছে।হাসিতে যেন মুক্তা ঝরছে।দোকানদার একপ্লেট ফুচকা দিল।

মনাঃ আপনি খাবেন না?

রাজঃ আমি এই ধরনের খাবার খাই না।

মনাঃ তা বল্লে হয় নাকি বলেই একটা ফুচকা রাজের মুখের দিকে এগিয়ে দিল।রাজও খেয়ে নিল যদিও সে এসব খায় না কিন্তু মনা খাইয়ে দিচ্ছে বলে কথা।

রাজঃ সেদিন এই খাইয়ে দেওয়া নিয়ে কত কাহিনি করলা আর আজ নিজেই জোর করে খাওয়াচ্ছ?

মনাঃ সেদিন ত ভেবিছিলাম আপনি খারাপ ছেলে আর আপনিও আমাকে অন্য কেউ ভেবে এত কথা শুনিয়ে দিলেন।

রাজঃ হুম আমারেই ভুল ছিল।আমি তোমাকে চিনতে পাড়িনি অন্যজনের সাথে গুলিয়ে ফেলছিলাম। আচ্ছা অতীত ভুলে যাওয়াই ভাল।আইস্ক্রিম খাবে?মনাঃ না আমার ফুচকাই প্রিয় আর কিছু খাব না।

রাজঃ হুম পঁচা তেতুল জল খেতে পাড়লেই শান্তি তাই না?মনা আবারো হাসল।রাজঃশুট করা শিখবা?

মনাঃ না না বাবা আমার এসব দরকার নাই।

রাজঃ আচ্ছা চল আমি করব তুমি দেখবে।রাজ গিয়ে একটা রিভেলবার নিল দোকানদার গিয়ে সাঁড়ি করে কাঁচের বোতল সাজিয়ে দিল।রাজ একদমে শুট করে সবগুলি বোতল ফাটিয়ে দিল একটা গুলিও মিস হয় নি। সবগুলির টার্গেট ঠিক ছিল ।এটা দেখে সবাই হাত তালি দিল।

Related Story

রাজ কি করবা নাকি?মনাঃইচ্ছা তো করছে কিন্তু ভয় লাগছে.রাজ আচ্ছা বোঝেছি দোকাদার কে বল্ল বেলুন সাজিয়ে দাও ম্যাম বেলুন ফাটাবে দোকানদার তাই করল।রাজ মনার হাতে রিভেলবার দিল,মনা আমিত পারিনা কিছু যদি গন্ডোগল হয়।রাজ এসে মনার পিছনে দাঁড়িয়ে নিজের হাত মনার হাতে আর মনার হাত বন্ধুকের উপড় রাগল।তারপর একটা বেলুন কে টার্গেট করে শুট করল গুলির শব্দ আর বেলুন ফাটার শব্দে মনা পিছনে ঘুরে গেল কিন্তু রাজ মনার একদম পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল তাই মনা পিছন ঘুড়তেই মনার কপালে রাজের ঠোঁট স্পর্শ করে গেল।মনা লজ্জায় সরে আসলরাজ ব্যাপারটা বোঝতে পেড়ে বলল চল এবার ফিরে যাই রাত হয়ে গেছে।

পিছন থেকে একজন এসে বলল স্যার ম্যাডামের চুড়িগুলিরাজঃহুম গাড়িতে তুলে দাও।আর ছেলেটাকে বেশ মোটা অংকের টাকা দিয়ে দিল।ছেলেটা একের পর এক চুড়ির ট্রে গাড়িতে তুলে যাচ্ছেমনাঃ এসব কার জন্যরাজঃ তুমি না বল্লা চুড়ি নিবামনাঃ তাই বলে এতগুলা?রাজঃ তো আমার বউয়ের পছন্দের জিনিস দোকানে রেখে যাব? যেন অন্য কেউ কিনতে পাড়ে?আজব কথা বল তোমার পছন্দের জিনিস শুধু তোমারেই থাকবে বোঝেছো? কখনও অন্য কাউকে দিবা না।

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

Leave a Comment