Mukhosh
Mona Hossain { Part 5 } recap
এভাবে সেঁজেগুজেঁ ক্লাসে নয়,রাতে হোটেলের সামনে দাঁড়াইয়ো,নিজের চাহিদাও মিটাতে পাড়বে সাথে টাকাও পাবে।
৩ মাসের প্রেমের পর রাজের মুখ থেকে এই কথাগুলি শুনে রুহি নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পাড়ছে না।
রাজ,রুহির প্রেমের ৩ মাস হয়ে গেছে। প্রথম দিকে রাজ জোর করে রুহির সাথে প্রেম করেলেও এখন রুহি নিজেই রাজের প্রেমে হাবুডুবু খায়।
কারন রাজ রুহির খুব খেয়াল রাখে কোন ছেলেকে রুহির কাছে ঘেষঁতে দেয় না।রুহি যখন যা চায় তাই করে রাজ।
রাজ রুহির খুব খেয়াল রাখে রুহিও রাজের কথামত চলে। রুহি প্রতিদিন রাজের দেওয়া চুড়ি পড়েই ভার্সিটিতে আসে। রাজের পাশে বসে ক্লাস করে দুপুরে একসাথে খায়। রাজকে খায়িয়ে দেয় রাজ রুহিকে রুমে পৌছে দিয়ে আসে।প্রায়েই বাইরে ঘুরতে নিয়ে যায়।রুহির এখন শহরটাকে অনেক ভাল লাগে কারন সবাই তাকে রাজের জিএফ হিসেবে অনেক সম্মান করে।
রাজও তাকে খুব ভালবাসে ২ জনের মধ্যে বিশাল ভালবাসা।
রাজ হল সুপারকে বলে রুহির জন্য প্রাইভেট রুমের ব্যাবস্থা করেছে আর হল সুপারকে বলেছিল রুহিকে যেন বলে দেয় লাকি ড্রো এর মাধ্যমে রুহিকে সিলেক্ট করা হয়েছে তাই তার থাকা খাওয়া একদম ফ্রি।
এত কেয়ার দেখে রুহি রাজকে মন থেকে ভালবেসে ফেলেছিল....
কিন্তু আজ হঠাৎ করে সব পালটে গেছে
প্রতিদিনের মতই রুহি আজো সেজেগুজে ক্লাসে এসেছিল,
কিন্তু একি রুহির সিটে মিনি বসে আছে।
রুহিঃ মিনি প্রতিদিন তো আমি এখানে বসি...
মিনিঃ তো কি হয়েছে...???আজ থেকে আর বসবা না।
রুহিঃ রাজ এসে খুব রাগ করবে তুমি তোমার সিটে গিয়ে বসো না প্লিজ।
মিনিঃ রাজ রাগ করবে কেন?
রুহিঃ তুমি জানো না আমি রাজের গার্ল ফ্রেন্ড....ও অন্য কোনো মেয়ের পাশে বসে না।
ক্লাসের সবাই মিনি আর রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।
মিনিঃ হাস্যকর কথাবার্তা বলতেছো তুমি। নিজেকে কখনো আয়নায় দেখেছো?তুমি ত রাজের একরাতের বেড পাটর্নার হওয়ারও যোগ্য না আর তো গার্লফ্রেন্ড।
রুহিঃ তুমি বেশি বেশি বলতাছো মিনি।
পিছন থেকে রাজ বলে উঠল কি হচ্ছে এখানে?
রুহি রাজের কাছে গিয়ে বলল,দেখো না মিনি আমাকে অপমান করছে আমি নাকি তোমার গার্লফ্রেন্ড হওয়ার যোগ্য না....(অভিমানি কন্ঠ)
রাজঃ তো তুমি গার্লফ্রেন্ড কেন হতে যাবে?
রুহিঃ মানে....
রাজঃ মানেটা তো আমি বোঝতে পাড়তেছি না তোমার হঠাৎ কি দেখে কি মনে হল তুমি আমার জিএফ হতে পাড়ো?
রুহিঃ তুমিই তো বলেছিলে আমায় ভালবাসো সবার সামনেই তো বলেছিলে...
রাজঃ হা হা হা তাই নাকি?
সবাইকে জিজ্ঞাস করো তো এই জোকস টা তুমি ছাড়া অন্য কেউ বিশ্বাস করেছিল নাকি?আমি জাস্ট মজা করেছিলাম।তা না হলে তোমার মত একটা মেয়েকে আমি কেন প্রপোজ করতে যাব? তোমাকে তো দেখলেই হাসি পায় আমার।
রুহিঃ রাজ কি বলছো এগুলা....???
রাজঃ ভুল বল্লাম বোঝি....আচ্ছা দেখাচ্ছি বলে রুহির একটা হাত উপড়ে তুলে রুহির কাচের চুঁড়িগুলি সবাইকে দেখিয়ে বলল guys এমন অদ্ভুদ টাইপের কিছু কেউ কখনো দেখেছো?
তারপর রুহির ঠোঁটে হাত বুলিয়ে লিপস্টিক টা এবড়ো থেবড়ো করে দিয়ে বলল এই শেডের লিপস্টিক পড়ে কাউকে ক্লাসে আসতে আমিত কখনো দেখিনি।তোমরা দেখেছো?
গাইঁয়া কোথাকার।
এভাবে যে তুমি ক্লাসে আসো তোমাকে দেখে কি মনে হয় জানো?
মনে হয় যেন কোন মেয়ে না বরং ৩য় জেন্ডারের কিছু।
রাজের কথা শুনে সবাই হেসে দিল।
রুহি গ্রামের সাধারন মেয়ে হলেও তার যে আত্নসম্মান আছে রাজ সেটা ভুলে গেছে।
রুহির চোখ দুটি ভিজে আসছে...ঠোঁট কাঁপছে।
কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে বলল তাহলে এই ৩ মাসের এত কিছু, এত কাছাকাছি আসা এগুলা কি ছিল?
রাজ আচ্ছিলের হাসি দিয়ে বলল, বিড়ালের মুখে মাছ তুলে দিয়ে যদি বার বার বলো খাও খাও সে না খেয়ে পাড়বে? মজা তো তুমি নিয়েছো আমি শুধু দিয়েছি।
রাজের এই কথা টা শোনার পর রুহির মাথা চক্কর দিয়ে উঠল।কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে সে।
রাজ তবুও থেমে নেই,
এই ক্লাসে... সরি শুধু ক্লাসে না পুরু ভার্সিটিতেই তুমিই একমাত্র অদ্ভুদ প্রানি।এমন আজব প্রানি আর একটাও নেই।
সবাই বলত গ্রামের মেয়ের সাথে প্রেম করতে খুব মজা, সুযোগ পেলাম কাজে লাগালাম।তা নাহলে তোমার সাথে প্রেম ত দূর ফিরেও তাকাতাম না। তুমি দেখতে যেমন খারাপ তেমনি তোমার স্টাইল আর রুচিবোধ।
রাজের কথা শুনে ক্লাসের সবাই হাসতে লাগল সবার সাথে রাজও হাসছে।
রুহির এখনো সব কিছু বিশ্বাস হচ্ছে না। রাজ মনে হয় আমাকে বোকা বানাচ্ছে তাই সে সব অপমান সহ্য করে মিষ্টি হেসে বলল রাজ আমি কি কোন ভুল করেছি...???
রুহির কথা রুহির মুখে থাকতেই রাজ ঠাস করে রুহিকে একটা থাপ্পড় মারল রুহি ছিটকে গিয়ে সুডেন্ট ডেস্কের উপড়ে পড়ল।কপালে হালকা ছোট পেয়েছে রুহি।
রাজঃবেহায়া কত প্রকার তোকে না দেখলে জানতামেই না আত্নসম্মান বলতে কিছুই নেই এতকিছুর পড়েও দাঁত কেলিয়ে হাসছিস?
থাপ্পড় খেয়ে এবার রুহির বোধদয় হল যে রাজ সত্যিই এগুলা বলছে মজা করছে না।
রুহি তাল সামলে উঠে দাঁড়াতেই রাজ এসে বলল আমাকে নাম ধরে ডাকার সাহস হয় কি করে? নিজেকে কি অন্য সবার মত ভাবিস?যে অন্যরা নাম ধরে ডাকে বলে তুই ও ডাকবি। আজ থেকে আমাকে স্যার বলে ডাকবি বোঝেছিস।
এখন দূর হ সামনে থেকে।
তোকে দেখে মুড খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
রুহির খুব কান্না পাচ্ছে ওকে এভাবে কেউ কখনো অপমান করে নি।গরীব হলেও সে বাবা মার আদরের মেয়ে ছিল।
রুহি পিছন ফিরে চলে আসছিল তখন রাজ আবার বলল রুমে গিয়ে নিজেকে ভাল করে আয়নায় দেখিস।
এই কয়দিন যে তুই আমার সংজ্ঞ পেয়েছিস এটাই তোর ভাগ্য।ছি ছি ছি কি খারাপ দেখতে তুই....
রুহির আর সহ্য হল না দৌড়ে বাইরে চলে আসল।
ভার্সিটি থেকে রুম পর্যন্ত কাঁদতে কাঁদতে এসেছে সে। রুমে ঢুকেই আরও জোরে জোরে কাঁদতে লাগল।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঠোঁট ২টি জোরে জোরে ঘঁষতে ঘঁষতে বলতে লাগল,
মা তুমি মিথ্যে বলতে তোমার মেয়ে মোটেও পড়ীর মত দেখতে না।
আজ সবাই বলল আমি খারাপ দেখতে আর কখনো তোমার কথা বিশ্বাস করব না কখনো না
Related Story
রুহি কোনদিন আর সাজবে না কোনদিনও না। এগুলো বলতে বলতে রুহি নিজের হাত দিয়ে দেয়ালে জোরে জোরে আঘাত করতে করতে হাতের চুড়ি গুলি ভেংগে দিল।দেয়ালে জোরে আঘাত করায় আর কাচের চুড়ি হওয়ায় রুহির দুটো হাতেই কেটে গেছে।
রুহি বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগল।
কিছুক্ষন পর রাজ রুহির রুমে আসল,
রুহি তা লক্ষ করেনি।
রাজ দেখল রুহির হাতের চুরির ভাংগা অংশ গুলো মেঝেতে পড়ে আছে।দেখেই রাজের মেজাজ গরম হয়ে গেল।
রাজঃ আমার সাথে মেজাজ দেখানোর সাহস হয় কি করে এই মেয়ের?( মনে মনে)
ন্যাকামি শেষ হয়েছে?
রুহি চমকে উঠে রাজের দিকে তাকাল।
রুহির চোখ মুখের অবস্থা দেখে রাগে রাজের চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে।
রুহি কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে কপালেও কিছুটা কেটে গেছে।ঘষা ঘঁষিতে ঠোঁট ২ টি ফুলে গেছে।হাতে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ।
রাজঃ যাও ফ্রেশ হয়ে এসো এক্ষনি,খেতে যাব।
রুহি অবাক এর সাথে রাগ মিশিয়ে বলল,আপনি ভাবলেন কি করে আমি আপনার সাথে যাব?
রাজঃ অদ্ভুত ভাবে হেসে বলল আমাকে রাগতে বাধ্য করো না রুহি। সামলাতে পাড়বা না।
রুহিঃ আজব তো।
রাজ রুহির হাত ধরে টেনে তুলল।তারপর বলল এভাবেই টেনে নিয়ে যেতে পাড়ব এখন নিজেই ঠিক কর নাও ভালভাবে যাবে নাকি আমি নিয়ে যাব।
আর এগুলা কি....???
চুড়িগুলি ভাংগল কি করে?
লাস্ট বার বলছি রুহি, আমার সাথে জেদ দেখিও না।আমি রেগে গেলে তোমার কি অবস্থা করব নিজেই জানি না।
(রাজ কেন এমন করছে....???রহস্য ক্রমশ প্রকাশ্য)