Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৭ | মোনা হোসাইন

Mukhosh

Mona Hossain { Part 7 } recap

রাজ এসে বলল,বাহ…..!!! বিনা টিকিটে এখানে বাংলা সিনেমার ইমোশনাল সিন দেখানো হচ্ছে নাকি?

রুহি রাজের দিকে তাকালো, তার চোখে অঝর ধারায় পানি পড়ছে সেটা দেখে রাজের মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেল।

রাজ এসে ছেলেটিকে টেনে তুলে বললছেড়ে দিয়েছিলাম…. কিন্তু ভাই তোর ত বাঁচার কোন ইচ্ছায় নাই।আমি আর কি করব বল তো?

রাজঃ এই কে আছিস এটাকে ছাদে নিয়ে যা আমি আসছি।কয়েকটা ছেলে এসে ছেলেটাকে নিয়ে গেল।ভয়ে রুহির গলা শুকিয়ে গেছে।রাজের পায়ে ধরে বলল প্লিজ ক্ষমা করে দিন আর হবে না।রাজ রুহির চুলের মুটি ধরে তুলে বলল, যা হওয়ার হয়ে গেছে….তুই একটা ছেলের গায়ে হাত দিয়েছিস আবার নিজের আশিকের জন্য চোখের জলে,নয়ন ভাসাচ্ছিস।কেঁদে কেঁদে সবার সামনে রোমান্টিক সিন ক্রিয়েট করার আগে মনে ছিল না আমার কথা?ভালবাসার আদান প্রদানের সময় মনে ছিল না……ওড়নায় লেগে থাকা রক্ত দেখিয়ে বলল তোর ওড়না এতই সস্তা হয়েছে যে যার তার গায়ে বুলিয়ে দিস।রাজ সবার সামনেই একটানে রুহির ওড়না টা ফেলে দিল।আর বলল দূর হ এখান থেকে।

রুহি ওড়নাটা তুলতে গেল, রাজ ওড়নায় পায় দিয়ে চেপে বলল ওটা ছাড়াই যাবি সবাই দেখুক তুই কত খারাপ।

রুহি ওড়না ছাড়াই বাইরে যেতে চাইল,

পিছন থেকে রাজ বলে উঠল তোকে ওড়না ছাড়া যেতে বলেছি, কিন্তু সবাইকে শরীর দেখিয়ে দেখিয়ে যেতে বলি নি।সবাই দেখবে তুই ভুল করেছিস কিন্তু তর শরীর দেখবে না বোঝেছিস?

রুহিঃ আপনি যা যা করছেন সেটা নিজের চোখে দেখার পড়েও বোঝতে পাড়ছি না। তাহলে মনে মনে কি বলছেন কি করে বোঝব?(কাঁদতে কাঁদতে)

রাজ পিছন থেকে এসে বলল তোকে বোঝতে হবে আমার নাবলা সব কথা তোকে বোঝতে হবে। নাহলে কপালে দুঃখ বাড়বে বলে একটানে রুহির চুল খোলে দিল আর চুলগুলি ছড়িয়ে দিল রুহির চুল বেশ লম্বা হওয়ায় সেটা দিয়ে শরির ভাল মতই ঢেকে গেল।

Short Story

রাজঃ এবার যা।

রুহি এবার যেতে চাইলরাজ পিছন থেকে আবার বললএই দাঁড়া….কাঁদছিস কেন আমি তোকে মেরেছি?এক্ষুনি চোখ মুচ বলছি

কিন্তু রুহির কান্না বন্ধ হচ্ছে না।

রাজঃজানতাম ভাল কথা তোর ভাল লাগবে না।আরে নিজের জন্য একটু কান্না জমিয়ে রাখ তোর জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করছে।তখন কান্নার জন্য চোখে পানি থাকবে না।

রুহি দৌড়ে চলে গেল।

স্নেহা এসে রাজকে বলল কি করছিস রাজ, যাকে ভালবাসিস তাকেই এভাবে কষ্ট দিচ্ছিস?

রাজঃ কি করব বলতো,ও কেন অধিকার নিয়ে আমার পাশে বসল না?কেন আমাকে জোর করল না। ও তো এমন ছিল না।তাহলে এখন কেন আমার সাথে এমন করছে ?ওকে এখানে যেমন দেখছিস ও মোটেও তেমন না।ও সবসময় আমার উপড় নিজের ইচ্ছে চাপিয়ে দিত আমাকে শাসন করত, যে মেয়ের স্টাইল দেখে সবাই হিংসা করত আজ সে এমন ভাবে থাকে যেন সে কিছুই চিনে না।ভাল করে বলেছিলাম ঠিক হয়ে যেতে আমার জীবনে ফিরে আসতে কিন্তু ও নিজের মুখোশ খুলতে রাজি না।ওকে ভাল মত বল্লে কখনোই নিজের পরিচয় দিবে না।কিন্তু অপমান করলে রাগে নিজের পরিচয় ঠিকি দিবে।আমিও দেখতে চাই ও কতদিন নিজেকে লুকাতে পাড়ে।ও কি বোঝে না ভালবাসার মানুষের সামনে মুখোশ পড়ে থাকা যায় না।

স্নেহাঃ তুই ওকে আগে থেকেই চিনিস?

রাজঃভাল লাগছে না রে…. আর কোন প্রশ্ন করিস না।আমি আর বলতে পাড়ব না। ও আমার সাথে যা যা অন্যায় করেছে সেগুলি মনে হলে নিজেকে ঠিক রাখতে পাড়ি না।

স্নেহাঃশান্ত হ রাজ.. সব ঠিক হয়ে যাবে।

রাজঃ কিছুই ঠিক হবে না।ঠিক হওয়ার হলে অনেক আগেই হত কিন্তু এখন যখন একবার খোঁজে পেয়েছি আমি নিজেই ঠিক করে নিব।আজ থেকে ও বোঝবে রাজ কি?আমার জীবন টা শেষ করে দিয়ে এখন সাধু সেজে থাকলেই আমি ওকে ছেড়ে দিব ভেবেছিস।কিছুতেই ন,ও নিজের মুখে স্বীকার করিয়ে ছাড়ব ও ভুল করেছে তারপর ক্ষমা করব।

খুব ভালবাতাম ওকে খুব বেশি….কেন আমাকে ঠকাল বলতে পাড়িস?এগুলা বলতে বলতে রাজ নিজের চোখের জল লুকাতে সেখান থেকে চলে গেল।স্নেহাও বোঝল বিশাল কোন ঘটনা আছে,না হলে রাজের কান্না করার কথা না।

এদিকে রুহি রুমে ঢুকে কান্না করছে আর ভাবছে উনি কি সত্যিই ছেলাটাকে মেরে ফেলবেন এইটুকু ভুলের এত বড় শাস্তি?

কিন্তু রাজ তখন ছেলেটাকে নিতে পাঠিয়েছিল, মারার জন্য না হাসপাতালে নেওয়ার জন্য। রাজ ক্লাস থেকে সোজা হাসপাতালে গেল।গিয়ে ছেলেটার হাত ধরব বলল সরি ব্রো আমি রুহির উপড় রেখে গেছিলাম ওকে মারতে পাড়িনি তার রাগ তোমার উপড় ঝেড়ে দিয়েছি।তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ।ছেলেটিও সব বোঝে রাজের সাথে হাত মিলিয়ে বন্ধুত্ব করে নিল।

বিকাল গড়িয়ে সন্ধযা হয়ে গেছে।রুহি ততক্ষনে কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে গেছে।

রাজ রুহির রুমে ঢুকে দেখে রুহি ঘুমোচ্ছে,রুহিকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে।রুহিকে দেখে মনে হচ্ছে যেন একটা কিউট বিড়ালের বাচ্চা গুটি শুটি হয়ে শুয়ে আছে।রাজের আর সহ্য হল না রুহির কাছে গিয়ে আলতো করে তার কপালে, গালে,ঠোঁটে নিজের আদুরি পরশ বুলিয়ে দিল।

আদো আদো ঘুমের মধ্যে রুহির মনে হল তার মুখে নরম কিছু একটা বিচরন করছে।ভয়ে চিৎকার করতে যাবে তখনি রাজ নিজের ঠোঁট দিয়ে রুহির ঠোঁট চেপে ধরল,

রুহিঃ উমমম ম ম ম…রাজকে ছাড়ানোর বৃথা চেস্টা করতে লাগল।

কে শুনে কার কথা রাজ নিজের কাজে ব্যস্ত। রুহির ঠোঁট ২ টি রাজের কাছে এতক্ষনে ললিপপ এ পরিণত হয়েছে… আর রাজ তার সবটুকু মিষ্টি চোষে নিচ্ছে।প্রায় ৫ মিনিট পর ছাড়ল।

রুহিঃ আপনি এত খারাপ কেন (হাঁপাতে হাঁপাতে)

রাজঃ তুমি বানিয়েছো তাই।

রুহিঃ আপনি কখন কি করেন আর কি বলেন আমি সত্যিই বোঝি না।

রাজঃ তাই…….আচ্ছা রুহি কেন করছো এমন?এত কষ্ট কেন দিচ্ছো….???

রুহিঃ ওয়েট ওয়েট কে কাকে কষ্ট দিচ্ছে বল্লেন? আমি দিচ্ছি? আপনাকে সত্যিই মেন্টাল হাসপাতালে রেখে আসা উচিত।

রাজঃ হতাশার হাসি হেসে বলল জানতাম তুমি ভাল কথার মানুষ না।

রুহিঃ জানেন যখন,তাহলে আমার পিছনে পড়ে আছেন কেন?

রাজঃ কেন পড়ে আছি সেটা হাড়ে হাড়ে বোঝাব এখন রুম থেকে বের হ….

রুহিঃ বের হব মানে কোথায় যাব?

রাজঃ স্টোর রুমে।

রুহি ওখানে গিয়ে কি করব?

রাজঃ আজ থেকে ওখানেই থাকবি…

রুহিঃ মানে কি?

রাজঃ সকালে যা যা করলি তার শাস্তি তো শুধু ছেলেটা পেল। ২ জনের মধ্যে এত ভালবাসা নিজের আশিকের কষ্টের ভাগ নিবি না?

রুহিঃ আপনি কি সোজাসোজি কথা বলতে পাড়েন না?রাজঃ বাঁকা কথা কই বল্লাম?আমি আজ থেকে এই রুমে থাকব আর তুই স্টোর রুমে।বেশি কথা না বলে নিজের জিনিসপত্র নিয়ে ভাগ।

রুহিঃ এই উগান্ডা এখানে থাকলে আমার জীবন নরক হতে বেশিক্ষন লাগবে না। আমি আজ রাতেই পালাব মনে মনে ভাবতে ভাবতে নিজের জিনিস গুছগাছ করছে।

হঠাৎ রুহির কিছু জিনিস নিচে পড়ে গেল রুহি সেগুলি নেওয়ার জন্য রাজের সামনে নিচু হল।

সেটা দেখে রাজের পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেল রুহিকে টেনে তুলে রুহির থুতনি তে ধরে রুহির মুখটা নিজের মুখের সামনে উঁচু করে ধরে বলল মারতে ইচ্ছা করছে না, তানাহলে একটা থাপ্পড় মেরে সবগুলি দাঁত হাতে ধরিয়ে দিতাম।

রুহি অবাক হয়ে বলল আবার কি করলাম? যা বলেছেন তাই তো করছি…

রাজঃ চোখের সামনে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে চোখে পড়ছে না? তার সামনে এভাবে নিচু হলি কেন?জামার ফাঁকে সব তো দেখা যাচ্ছিল।

রুহিঃ লজ্জায় আর ভয়ে তাড়াতাড়ি নিজের ওড়নার দিকে তাকাল আর ঠিক করে নিল।

রাজঃ আর কখনো কোনো ছেলের সামনে এভাবে নিচু হতে দেখলে কি হবে বোঝতেই পাড়ছো

রুহিঃ সাইকোর বাচ্চা আজকের পর আমাকে আর পেলে তো (মনেমনে)সব কিছু নিয়ে স্টোর রুমে গেল,

Related Story

রুহিঃখোদা এটা থাকার মত জায়গা? এখানে কিভাবে থাকব?সাইকোর বাচ্চা তোকে ডিসেম্বর মাসের রাতে বরফ জলে ভিজিয়ে রাখতে পাড়লে শান্তি পেতাম।

পিছন থেকে রাজঃ আমাকে কিছু বলছো মনে হচ্ছে?রুহিঃ পিছন ফিরে ইনোসেন্ট মার্কা হাসি দিয়ে বলল কই না তো আমি বলছিলাম রুমটা বেশ ভাল।রাজ ব্যাপারটা বোঝল আর হেসে চলে গেল।

রুহিঃ উগান্ডা,সাইকো,বদের হাড্ডি তোকে আমি আরশোলার স্যুপ বানিয়ে খাওয়াব।যদিও আমি আরশোলা ভয় পাই না তবু তাদের সাথে রুম শেয়ার করাটা কি অসম্মানের একটা বিষয়….যাক আমি তো আর এখানে থাকব না একটু পড়েই পালব।, রাতের খাবার খেয়ে সবাই যে যার নিজের রুমে চলে গেল। রাজ কোথায় জানি বের হয়েছে সেই ফাঁকেই রুহি সেখান থেকে পালিয়ে গেল।

রাজ রাতে ফিরে দেখে স্টোর রুমের দরজা লক করা ও ভাবল রুহি গুমিয়ে গেছে তাই আর ডাকল না নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।

পরদিন সকালে রাজ রুহির ঘরে গিয়ে দেখে রুহি নেই তার জামা কাপড়ো নেই।রাজে বোঝতে পাড়ল রুহি পালিয়েছে।

রাজঃ তোর সাহস হয় কি করে আমাকে আবার ছেড়ে যাওয়ার?যতই ছাড় দিচ্ছি ততই মাথায় চড়ে বসেছিস?রাজকে ছেড়ে মরার পারমিশনও তোর নাই। আর তো পালানো…??? এবার তোকে আমার হাত থেকে কে বাঁচায় দেখি।

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

Leave a Comment