Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ – রহস্যময়, রোমান্টিক প্রেমের গল্প পর্ব ৯ | মোনা হোসাইন

Mukhosh

Mona Hossain { Part 9 }


রুহি ফোন রেখে দিল,রাজ তখনো রুহির ভাবনায় বিভোর।

রুহিঃ বেয়াদব সাইকো কি ভেবেছিস আমি আর ওখানে ফিরে যাব?
হু সেগুড়ে বালি আমি যাব না, কিছুতেই যাব না।আর কি বল্লি ফিরে যেতে হবে তাই না? কেন রে আমি কি তর গোলাম নাকি যে তর কথায় উঠব আর তোর কথায় বসবো।অনেক হয়েছে আমি আর পড়াশুনায় করব না।তাও ওই নরকে ফিরে যাব না কথাগুলি রুহি একা একাই বিড়বিড় করছিল।
ট্রেন এসে থামল রুহির গন্তব্যে।
রুহি স্টেশন থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল।


কিন্তু বাড়িতে পৌছার সাথে সাথে রুহির মাথায় আকাশ ভেংগে পড়ল।রুহির বাড়ির সামনে অনেক লোকের জমায়েত রুহি কিছু বোঝতে পাড়ল না। এগিয়ে গিয়ে বিষয়টা আয়ত্তে আনার চেস্টা করল।সে ভিড়ের পিছনে দাঁড়িয়ে সব শুনল অবশেষে সে বোঝতে পাড়ল এখানে তার বিষয়েই মিটিং চলছে।রুহির বাবা তার একমাত্র সম্পদ বসতবাড়ি বাঁধা দিয়ে রুহিকে ভার্সিটিতে ভর্তি করেছিল।এখন পাওনাদার টাকার জন্য লোকজন নিয়ে এসে রুহির বাবাকে কথা শুনাচ্ছে।
রুহির চোখ ভিজে গেল,


আমাকে পড়ানোর জন্য বাবা কত অপমানিত হচ্ছে আর আমি কিনা একটু অপমান সহ্য করতে না পেড়ে পড়াশোনা ছেড়ে চলে আসলাম....??? এতই আত্নসম্মান আমার?
কিন্তু ওখানে থাকবই বা কি করে? ফিরে গেলে তো সাইকোর অত্যাচার সইতে হবে কি করব এখন...???না এই মুখ নিয়ে বাবা মার সামনে দাঁড়াব কি করে ।আমি এখনি ফিরে যাব।যত কষ্টই হোক আমার বাবার স্বপ্ন আমি পুরন করবই।

রুহি বাড়ির ভিতর না ঢুকেই আবারো ষ্টেশন এ ফিরে গেল।তারপর ট্রেনে চড়ল তার গন্তব্য অনেক দূর যেতে যেতে সারাদিন লাগবে।রুহির মন খুব খারাপ তারমধ্যে কিছুই খায়নি এত জার্নি করে এসেছে।আবারো সেই জার্নি।রুহি ক্লান্ত হয়ে ট্রেনে বসেই গা এলিয়ে দিল।

কিছুক্ষন পর রুহির ফোন বেজে উঠল,

রুহিঃ হ্যালো কে বলছেন?

রাজঃ কি ব্যাপার এখনো ট্রেনে কি করছো?এখনো বাসায় যাও নি।

রুহিঃ আপনি...??? আমাকে ফোন দিছেন কেন?

রাজঃআবার কি হল সমস্যা কি?একটু আগেও তো ভালভাবে কথা বললে।

পড়ুন  শেষ ঠিকানা তুমি – প্রেমের গল্প পর্ব 16 | Bangla Golpo

রুহিঃ যার জন্য আমার সবকিছু উলট পালট হয়ে গেছে তার সাথে এর চেয়ে ভালভাবে কিভাবে কথা বলা যায় আমার জানা নাই।

রাজঃ রুহি বেশি বেশি হয়ে গেল না?আচ্ছা যাক যে জন্য ফোন দিছি সেটাই বলি।

রুহিঃ কি আর বলবেন?

রাজঃ আপনি যদি ভেবে থাকেন আপনি এখানে আর ফিরবেন না তাহলে বলে দেই আপনি এত দিন যে রুমে ছিলেন তাতে আমার রাখা একটা স্পাই ক্যামেরা ছিল।যদিও আমি এখনো চেক করিনি কিন্তু সেখানে কোন না কোন অপ্রীতিকর ফুটেজ তো অবশ্যই আছে, হয়ত রুমে ড্রেস চেঞ্জ করেছেন তাই না?আর তাছাড়াও এই ৩ মাসের প্রেমে যতবার আমার ঠোঁটের স্বাদ আপনি নিয়েছন তার ভিডিও/ছবি তো আছেই, তাই যদি সমাজে মুখ দেখাতে চান আর বাবা মার সম্মান রাখতে চান তাহলে ফিরে আইসেন। তানাহলে সেগুলি সোস্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল করতে আমি ২ বার ভাবব না।

রুহিঃ ভয়ে রুহির গলা শুকিয়ে গেছে।এসবের মানে কি?

রাজঃ খুব সিম্পল, তোমাকে আমার করে নেওয়ার জন্য যা যা করার দরকার আমি সব করব,সে যত খারাপ কাজেই হোক না কেন, আমার কিছু যায় আসে না। তাই আমাকে ছেড়ে যাওয়ার আশা তুমি ছেড়ে দাও।

আর শোনেন আপনি যদি সোসাইটও করতে চান তাহলে মনে রাখুন মৃত্যুর পড়েও এই ভিডিওগুলি আপনার বাবা মার জন্য যন্ত্রনাদায়ক হবে তাই সে চিন্তা করিয়েন না।মোট কথা আমাকে ছেড়ে যাওয়া ত দূর আমাকে ছেড়ে মরার পারমিশনো আপনার নেই। got it?

রুহিঃ একটা মানুষ কতটা জঘন্য হতে পাড়ে আপনাকে না দেখলে জানতেই পাড়তাম না।

রাজঃ তো দেখে নেন আমি কি মানা করছি আমার দিকে তাকাতে?রাখছি বাই।

রুহিঃ এত অশান্তি আমার কপালেই ছিল?কি দোষ করছিলাম আল্লাহ জানে,

ভাবতে ভাবতে রুহি ঘুমিয়ে পড়ল।
রুহি যখন তার গন্তব্যে পৌছাল তখন রাত ১ টা বাজে।শীতের রাত রাস্তাঘাট পুরু ফাঁকা যানবাহন তো দূর কোন মানুষ জনও নেই। কুয়াশায় রাস্তাঘাট ঢাকা।

রুহি ষ্টেশনে কিছু বকাটে ছেলে দেখতে পেল তাই ভয়ে সে স্টেশন থেকে বেরিয়ে গেল।
কিন্তু রাস্তার নিয়ন আলোয় রুহি বেশ বোঝতে পাড়ল কয়েকটা ছায়া তাকে অনুসরন করছে।
ভয়ে রুহির প্রায় সেন্সলেস অবস্থা।

পড়ুন  হ্যাকার সিনিয়র বউ – রোমান্টিক গল্প পর্ব 1 | Hacker Senior Bou

রুহিঃ কি করব এখন এই শহরে কেই বা আছে আমার, যে আমাকে সাহার্য্য করবে? আর কেউ থাকলেই বা এখন এই মুহূর্তে আমাকে কিভাবে সাহার্য্য করবে?নিজেকে কি করে রক্ষা করব আমি....???
তবে শেষ চেস্টা আমার করতে হবে, রাজ কে ফোন দেই।

রুহিঃ রাজকে ফোন দিল,কিন্তু রাজ ফোন তুলছে না।কয়েকবার ফোন দেওয়ার পর রাজ ফোন ধরল।
রাজঃ কি হয়েছে এত রাতে ফোন করছো কেন?

রুহিঃ র র র রাজ....

রাজঃ হুম শুনতে পাচ্ছি। এত রাতে নাম ধরে ডাকার জন্য ফোন দেওয়ার দরকার ছিল না।

রুহিঃ আমতা আমতা করে বলল আমি একটু বিপদে পড়েছি।

রাজঃ কিসের বিপদ তুমি তো বাড়িতে আছো তাই না?

রুহিঃ আমি ফিরে এসেছি,

রাজঃ বাহ বেশ ভাল। গুড গার্ল।

রুহিঃ আমি এখন রাস্তায় আমাকে কেউ ফলো করছে।

রাজঃ করুক সমস্যা কি?

রুহিঃ আমাকে কয়েকটা বখাটে ছেলে ফলো করছে আপনি কি বোঝতে পাড়ছেন আমার কথা?

রাজঃ তো আমি কি করতে পাড়ি?এত রাতে একা মেয়ে বাইরে বের হওয়ার আগে এটা ভাবা উচিত ছিল না কি?

রুহি এবার কেঁদে দিল আমি এখন কি করব.....???
রাজঃ আমি কি জানি আজব তো?

রুহিঃ আমার ভয় করছে রাজ........

রাজঃ হুম বোঝেছি থাক আর কাঁদার দরকার নাই আমি পিছনেই আছি ভয় পাওয়ার দরকার নাই।

রুহি অবাক হয়ে পিছনে থাকল। আমি কি ঠিক দেখছি?
হ্যা সত্তিই এটা রাজ? কানে হেডফুল গুঁজে নিজের কোর্ট ঠিক করতে করতে রাজ পিছন থেকে রুহির দিকে হেঁটে আসছে আর ষ্টেশনের ছেলেগুলি তার কিছুটা পিছনে পড়ে আছে।তাদের অবস্থা বেশ খারাপ।রাজ তাদের এতক্ষন ধরে মারছিল আর রুহির সাথে কথা বলছিল।

রুহিঃ মারামারি করতে করতে এত শান্ত ভাবে কেউ কিভাবে কথা বলতে পাড়ে এটাও সম্ভব?

পড়ুন  লাভার নাকি ভিলেন - পর্ব ৭ থ্রিলার গল্প | মোনা হোসাইন

রুহি আর কিছু না ভেবেই দৌড়ে গিয়ে রাজকে জড়িয়ে ধরল।

রাজঃ বিড়ালের বাচ্চার মত কাঁপা কাঁপি করার কি হল? এত ভয় পাওয়ার ই বা কি আছে?

রুহিঃ ভয়ে রুহির অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে রাজ কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করল

রাজঃ এই মরেছে..... কান্না থামান ম্যাডাম এখন লোকে দেখে ভাব্বে আমি আপনার সাথে খারাপ কিছু করেছি।

রুহির কানে কিছু ঢুকছে না।সে আরো জোরে রাজকে আখরে ধরছে।

রাজঃ আরে ছাড়ুন বাসায় যাই এবার।

রুহি রাজের দিকে মুখ তুলে তাকাল।

রাজ রুহির কপালে চুমু খেয়ে বলল আমি আছি ত এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই চলো যাই।

রুহি রাজের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে ভাবছে ইনি কি আমার শত্রু নাকি আপনজন?
বিপদে যার কথা সবার আগে মনে পড়ে সে ত আপন জনেই হয়।
আমার এই পরিস্থিতিতে তো শুধু রাজের কথায় মাথায় আসছিল, আর রাজেই আমায় রক্ষা করল তাহলে কি রাজ আমার আপনজন নয়.......???

পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

Leave a Comment

Home
Stories
Status
Account
Search