Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৩ | মোনা হোসাইন

মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৩ | মোনা হোসাইন

#মুখোশ
#সিজন_২
#পার্টঃ৩
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

যথারীতি ৫ টায় অফিস ছুটি হয়েছে।পিউ তার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে কিন্তু রাজ নিজের বাড়ি নয় বরং পিউ এর বাড়ি খোঁজার জন্য পিউ কে ফলো করা শুরু করল।
আর তাতে রাজ যা দেখল তাতে সে অবাক হয়ে গেল।
পিউ এক বিশাল বাড়িতে ঢুকছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার টাকা পয়সার কোন অভাব নেই কিন্তু বাড়িটা কার আর রুহি এখানে কি করছে?
রাজ কিছুক্ষন ভাবনার জগতে বিচরন করে বাস্তবে ফিড়ে আসল আর খোঁজ নেওয়ার চেস্টা করল বাড়িটা কার?
খোঁজ নিয়ে জানা গেল বাড়িটা নীলয় আহমেদ এর
যে কিনা বছরের বেশির ভাগ সময় লন্ডনে থাকে।
তখনি রাজের মনে পড়ল রুহি নিজেকে মিসেস আহমেদ বলে পরিচয় দিয়েছিল আর সে ডিগ্রিও নিয়েছে লন্ডনে তাহলে এই মেয়েটা সব সত্যি বলেছিল।
রুহি ছাড়া এই মেয়েটা কে হতে পাড়ে? দিয়াকে আমি নিজেই বিয়ে দিয়েছি তাও সেটা ১ বছর আগে।ওর সাথে আর ওর হাজবেন্ড এর সাথে আমার রেগুলার যোগাযোগ হয়। ধরে নিলাম ওরা আমার সাথে মজা করছে কিন্তু পিউ এর দেওয়া সার্টিফিকেট গুলো ত সব আসল ছিল।এটা দিয়া হতে পাড়ে না আবার সার্টিফিকেট এ নাম লিখা পিউ তাই এটা রুহিও হতে পাড়ে না।আর পৃথিবীতে টুইন হতে পাড়ে কিন্তু ৩ জন নিশ্চুই এক রকম দেখতে হতে পাড়ে না।কি হচ্ছে এসব হিসেব তো কিছুতেই মিলছে না।এই রহস্যের সমাধান কোথায়?
যদি এটা রুহি হয় তাহলে,ও কি করে ভুলে গেল ওর বাবা মা ওকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখেছিল কত কষ্টে আছেন তারা? আমি উনাদের পাশে না দাঁড়ালে ওরা হয়ত এতদিনে পথে বসত, রুহি সেসব ভুলে এখানে কি করছে? ও যে বেঁচে আছে সেটা অন্তত তাদের বলা উচিত ছিল।রুহি নাকি কারোর কষ্ট সহ্য করতে পাড়ে না? তাহলে যারা এত কষ্ট করে বড় করেছে তাদের কথাই তার মনে নেই?
কি হচ্ছে এসব কিছুই তো বোঝতে পারচ্ছিনা।
এগুলি ভাবতে ভাবতে রাজ বাড়ি ফিড়ে এল।

গভীর রাত তবুও রাজের চোখে ঘুম নেই।সে এখুনো রুহিকে নিয়ে ভাবছে।রাজের মন বলছে এটা রুহি।

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ১৫ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

আমি জানি তুমি রুহি অন্য কেউ নও কিন্তু কিভাবে প্রমাণ করব সেটা? তোমার যে সবকিছুই বদলে গেছে রুহি তুমি এখন বিবাহিতা। কিন্তু তুমি বেঁচে থেকেও আমার সাথে থাকবে না সেটা কি করে মানব আমি?না তোমাকে অন্য কারোর পাশে আমি কিছুতেই দেখতে পারব না।
তুমার বিয়ে হলেও আমার কিছু করার নেই, আমি যে তোমায় ছাড়তে পারব না। বরং তোমাকে তোমার হাজবেন্ডকে ছাড়তে হবে।আমি কিছুতেই তোমাকে অন্য কারো সাথে থাকতে দিব না রুহি।
এভাবেই কেটে গেল রাতটা।
ভোরের দিকে রাজ একটু ঘুমিয়েছিল তাই ঘুম থেকে উঠতে একটু দেড়ি হয়ে গেল অফিসে পৌছাতে ১১ঃ৩০ বেজে গেছে।
রাজ অফিসে ঢুকেই রুহিকে খোঁজতে লাগল। কিন্তু রুহি কোথাও নেই।
রাজ ম্যানেজার কে ডেকে জিজ্ঞাসা করল পিউ অফিসে আসেনি?
ম্যানেজারঃ জ্বি স্যার এসেছিল কিন্তু হঠাৎ কাউকে কিছু না বলে কোথায় জানি চলে গেছে।
রাজঃ আজব তো….
রুহিকি তবে আমার পিএ হয়ে চাকরি করতে চায় না তাই চলে গেল?
রাজ মন খারাপ করে এসে নিজের রুমে বসল।
রাজ রুহিকে নিয়ে চিন্তা করছিল হঠাৎ জানলার বাইরে তার চোখ পড়ল।অফিসের নিচে পিছন দিকে একটা ছোট্ট মেয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কান্না করছে।বয়স খুব বেশি হলে ২ বছর বা তার কিছু বেশি।
রাজ উপর থেকে চারপাশটা ভাল করে দেখল।
না আশে পাশে কেউ নেই। মেয়েটা ক্রমশো একটা ডোবার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

রাজঃ আরে এত ছোট বাচ্চাটাকে এখানে কি করে আসল আশে পাশেও কাউকে দেখতেও পাচ্ছিনা মেয়েটা তো পানিতে পড়ে যাবে।

রাজ তাড়াতাড়ি করে নিচে নেমে আসল আর অফিসের পিছন দিকে গেল ওখানটা বেশির ভাগ সময় নির্জন থাকে এখন সেখানে কেউ নেই আর একটু হলেই মেয়েটা পানিতে পড়ে যেত রাজ গিয়ে মেয়েটাকে ধরল।

রাজঃ তুমি এখানে কি করছো? কার সাথে এসেছো?
কিন্তু বাচ্চা মেয়েটা এতই ছোট যে কেবল আদো আদো কথা শিখেছে এই প্রশ্নের উত্তর গুলো হয়ত সে দিতে পাড়ত কিন্তু কান্না করাতে আর বলতে পাচ্ছে না। শুধু মাম্মাম মাম্মাম বলছে।

রাজ আশে পাশে কাউকে দেখতে না পেয়ে মেয়েটাকে কোলে তুলে নিল।মেয়েটা দেখতে ফুটফুটে পরীর মত।
রাজ ভাবল অফিসের কারোর মেয়ে হবে হয়ত তাছাড়া তো আর কেউ তো এখানে আসার কথা না তাই সে বাচ্চাটাকে নিয়ে রুমে আসল আর বাচ্চাটাকে শান্ত করতে অনেকগুলি চকলেট দিল।
বাচ্চাটা খুশি হয়ে কান্না বন্ধ করল।
রাজ নিজের চেয়ারে মেয়েটাকে বসিয়ে সামনে থেকে চেয়ার টেনে বসল।
এবার বলতো আম্মু তোমার নাম কি?
মেয়েটাঃ রোজ…
রাজঃ বাহ খুব সুন্দর নাম….
মেয়েটাঃ হুম মাম্মম বলেছে রোজ মানে গোলাপ।গোলাপ খুব সুন্দর হয় তাই আমার নাম রোজ।
রাজঃ যতটা ভেবেছিলাম ততটা ছোট না কথা ভালই বলতে পাড়ে।
বাহ বেশ বেশ তা তুমি এখানে কার সাথে এসেছো
রোজঃ মাম্মম এর সাথে দেখা করতে এসেছিলাম কিন্তু খোঁজেই পাইনি।
রাজঃ কার সাথে এসেছিলে সে কোথায়
রোজঃ রহিম চাচার সাথে এসেছিলাম উনি কোথায় জানি না।
রাজ বোঝল এই মেয়েটা হারিয়ে গেছে। ম্যানেজার কে বলে ওর মাকে খোঁজে বার করতে হবে।
এরিমধ্যে মেয়েটা বলল আমাকে কোলে নাও।
রাজ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল
রোজঃ আমার ঘুমের সময় হয়ে গেছে তোমার কোলে ঘুমাব।
কথাটা শুনে রাজের বাচ্চাটার জন্য একটা ভাল লাগা কাজ করছে।
সে বাচ্চাটাকে কোলে নিল।আর আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দিল।
বাচ্চাটা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর সোফায় শুয়িয়ে দিয়ে নিজের কোর্ট টা জড়িয়ে দিয়ে দিল।
বাচ্চাটাকে শুয়িয়ে সে ম্যানেজারকে বলতে যাবে তখনি সামনে তাকিয়ে দেখে পিউ নিজের ডেস্কে বসে কাঁদছে….
,
,
,
,
চলবে…!!!

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ৪৪ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top