Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৬ | মোনা হোসাইন

#মুখোশ
#সিজন_২
#পার্টঃ৬
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

রাজ নিজেকে শান্তনা দিতে দিতে বাড়ি ফিড়ল।
জানি আমার দেওয়া আঘাতের জন্যই আজ রুহির এই অবস্থা। আমি ওকে নর্দমায় ঠেলে দিয়েছি, ওকে ঠিক রাস্তায় ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব শুধুমাত্র আমার।
ভাবতে ভাবতে রাজ ঘুমের দেশে পাড়ি দিল।
পরদিন সকালে রাজ যথাসময়ে অফিসে পৌছে গেল কারন আজ নতুন প্রজেক্ট এর ডিল হবে।
অফিসের সবাই প্রজেক্ট টা নিয়ে খুব আশাবাদি অনেকদিন ধরে সবাই এর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
রাজ জানে প্রজেক্ট টা তার কম্পানিই পাবে তাই আগে থেকেই অনেক প্রডাক্ট রেডি করে ফেলেছে।

রাজ আপাদত প্রজেক্টের চিন্তায় নেই সে দেখছে রুহি আর রোজ এসেছে কিনা।

ঠিক ১০ টায় পিউ অফিসে আসল কিন্তু সে রোজ কে আনে নি দেখে রাজ এর মন খারাপ হল।

বেশ কিছুক্ষন পরে সবাই মিলে একসাথে মনিটারে চোখ রাখল রেজাল্টের সময় হয়ে গেছে।
কিন্তু রেজাল্ট দেখে সবাই মাথায় হাত দিল।
কারন মাত্র ১০০০ টাকা বেশি দর দিয়ে প্রজেক্ট টা অন্য কম্পানি পেয়েছে। রাজের কম্পানি পায় নি।

প্রজেক্টের জন্য আগে থেকে প্রডাক্ট তৈরি করায় মোটা অংকের লস গুনতে হবে কম্পানির।

ম্যানেজারঃ স্যার এটা কি করে হতে পাড়ে? নিশ্চুই কেউ আমাদের রেট ওদেরকে বলে দিয়েছে।না হলে আমাদের রেটের চেয়ে মাত্র ১ হাজার টাকা বেশি দর কি করে দিতে পাড়ে।

রাজ কাউকে কিছু না বলে মুচকি হেসে নিজের রুমে চলে গেল।
কারন সবার মুখে হতাশার চাপ থাকলেও রুহির মুখের বিজয়ের চাপা হাসি স্পষ্ট। সেই হাসি আর কেউ না দেখলেও রাজের চোখ এড়ায় নি।

রাজঃএটা রুহির এই কাজ।আমার লস করানোর জন্যই ও অফিসে চাকরি নিয়েছে।আচ্ছা করুক অনেক কষ্ট দিয়েছি আমার লস করে ও যদি একটু খুশি হয় আমি সেটাই করতে দিব।

এদিকে পিউঃ এ তো কেবল শুরু এই ১ বছরে তোমাকে আমি রাস্তার ভিখারি করে ছাড়ব রাজ।

সবার মুড অফ কিন্তু রাজের খারাপ লাগছে না।সে রুহিকে খোঁজে পেয়েছে তাতেই খুশি।সে একমনে রুহি কে দেখছে।তার মন আজ বেশ ভাল কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই রাজের মন খারাপ হয়ে গেল।

কারন রুহি তার অফিসের স্টাফ আলভির সাথে কথা বলছে।গ্লাসের এ পাশ থেকে রাজ শুধু দেখছে,কি বলছে শুনতে পাচ্ছে না।
কিন্তু রুহির কথা বলার ভংগি রাজের অসহ্য লাগছে।সে কিছুটা খারাপ ভাবে গায়ে পড়ে কথা বলছে এতক্ষন কথা বল্লেও এবার রুহি আলভির চুলে হাত দিয়ে স্লাইড করছে।রাজের আর সহ্য হল না।
রাজ রুম থেকে বেরিয়ে আলভির ডেস্কে গেল।

রাজঃএখানে কি হচ্ছে মিঃ আলভি?

আলভিঃ চমকে উঠে না মানে স্যার আমরা ফাইলের ব্যাপারে কথা বলছিলাম।

রাজঃ কি ব্যাপারে কথা বলছিলেন আমি দেখেছি ভুলে যাবেন না এটা অফিস ডেটিং প্লেস নয়।

পিউঃ আপনি আলভির সাথে এভাবে কথা বলতে পাড়েন না।

রাজঃ আমি আপনার সাথে কথা বলছি না মিসেস…. সরি আপনাকে মিসেস বলছি কেন আপনি তো মিসেস হওয়ার যোগ্যই না।

পিউঃ মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ অফিসের বস বলে যা খুশি তাই বলার রাইট আপনার নেই।

রাজঃসেদিন আপনি আমায় বলেছিলেন একটা ককর্পোরেট অফিসের বস কি করে এত জঘন্য হতে পাড়ে?
আজ আমি আপনাকে বলছি একটা ঘরের বউ কি করে এত নীচে নামতে পাড়ে।

পিউঃ আমি কি করব না করব সেটা বলার আপনি কে?
রাজঃ কেউ নই তবে খুব তাড়াতাড়ি হতে চলেছি।ছেলেদের সাথে মিলামিশা বন্ধ করুন।এটা অফিস আপনি যা খুশি তাই করতে পাড়বেন না।

আলভি অবাক হয়ে একবার রাজের দিকে আবার
রুহির দিকে দেখছে এরা কি অফিস স্টাফ নাকি প্রেমিক প্রেমিকা?যেভাবে জগড়া করছে এরা মনে হচ্চে তো প্রেমিক প্রেমিকা।বসের সাথে এভাবে নির্ভয়ে কি করে বলছে পিউ? আর স্যার ও তো বসের সীমা পেড়িয়ে গেছেন

পিউঃও আচ্ছা এটা অফিস ঠিক আছে আলভি বেবি যেটা বল্লাম সেটাই কথা রইল তাহলে আমরা আজ রাতে আউটিং এ যাচ্ছি।কথাটা বলেই পিউ আলভির গাল টেনে দিল।তারপর
রাজের দিকে তাকিয়ে বলল রাতে নিশ্চুই আমি আমার ইচ্ছামত সব করতে পাড়ি তাই না?

রাজ চোখ বন্ধ করে রাগ কন্ট্রোলের চেস্টা করল তারপর চোখ খুলে বলল,
মিঃ আলভি আপনি কি জানেন উনার একটা মেয়ে আছে?

পিউঃ অবশ্যই জানে জানবে না কেন?শুনুন আমার বাচ্চা থাকলেও আমার বয়স ততটাও নয় যে ছেলেরা মুখ ফিরিয়ে নিবে।আমি তো কাউকে বিয়ে করতে বলছি না জাস্ট এনজয় করতে বলছি।যার সাথে ফ্লাডিং করছি তার সমস্যা নেই তাহলে আপনি এমন কেন করছেন?

রাজঃ আপনি যা যা করছেন তাতে আপনার স্বামির বা আপনার……এদের কি নাম দিব বোঝতে পাড়ছি না যার সাথে ফ্লাডিং করছেন তাদের তো প্রেমিক বলা যাবে না।যাই হোক এদের সবার কোন সমস্যা না থাকলেও আমার অনেক সমস্যা।

পিউঃ তাই বোঝি…??? কিন্তু কেন কিসের সমস্যা?আমি কি আপনার সাথে ফ্লাডিং করছি?আপনি বাধাঁ দিচ্ছেন কেন?

রাজঃ কারন আপনার এই মাখামাখি করাটা আমার বুকে তীর হয়ে বিধঁছে বোঝেছেন?

পিউঃ কিন্তু আমি তো আপনার খারাপ লাগার কারন দেখছি না।নাত আমি আপনার বউ আর নাতো আপনার সাথে ফ্লাডিং করছি তাহলে কি সমস্যা?

রাজঃ আমার ১ম সমস্যা আপনার মেয়ের নাম রোজ।

পিউ হেসে বলল তাতে কি?পাগল হয়ে গেছেন নাকি?

রাজ হেসে বলল তাই বোঝি আমাকে পাগল মনে হচ্ছে? আচ্ছা এটা বলুন নীলয়ের মেয়ের নাম তো নীলা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তার মেয়ের নাম রাজের সাথে মিল করে রোজ কেন রাখা হয়েছে?

পিউ কিছু বলতে যাবে রাজ তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল রুহি নাটক করা বন্ধ করো। আজ আমার প্রজেক্ট মিস হওয়া প্রমান করছে তুমি পিউ নও রুহি।তারপর রাজ রুহির হাত টেনে দেখিয়ে বলল এই কাটা দাগ গুলি প্রমান দিচ্ছে তুমি রুহি।তোমার বিয়ে হলেও তোমার মেয়ের নাম টা প্রমান করছে তুমি এখনো রাজকেই ভালবাসো।আর রোজের মাঝে রাজ কে খোঁজ।

রুহিঃ যতসব ফালতু কথা।আমি পিউ হই বা রুহি তাতে কি? আমি কাউকে ভালবাসি না, আমার হাজবেন্ড আছে বোঝেছেন?বলেই রুহি সেখান থেকে চলে যেতে চাইল।

রাজঃএক মিনিট দাড়ান,হ্যা এটা ঠিক আপনার হাজবেন্ড আছে কিন্তু আর থাকবে না।আপনি আপনার মেয়ের সাথে থাকতে পাড়েন তাতে আমার কোন সমস্যা নেই।কিন্তু একটা কথা ভালভাবে মাথায় ঢুকিয়ে নিন আপনার হাজবেন্ডকে আপনার ছাড়তে হবে তার সাথে এই বাজে অভ্যাসগুলিও ছাড়তে হবে….
কোন ছেলের গায়ে হাত দেওয়া তো দূর এরপরে কারো সাথে কথা বলতেও যেন না দেখি মাইন্ড ইট।

রুহিঃ এটা কি মগে মুল্লক পেয়েছেন নাকি?

রাজ মুচকি হেসে বলল রাজ কে তো তুমি চিনই নতুন করে আর কি চিনাব বলতো? আমি যা চাই তা পেয়েই ছাড়ি ভালভাবে না পেলে ছিনিয়ে নেই।

রুহিঃ আপনিও ভুলে যাচ্ছেন রুহি এখন পিউ হয়ে গেছে আগের মত চুপচাপ সহ্য করার মেয়েটা আর নেই।
,
,
,
,
,
চলবে….!!!

Leave a Comment