Golperjogot

Golperjogot

মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৭ | মোনা হোসাইন

মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৭ | মোনা হোসাইন

#মুখোশ
#সিজন_২
#পার্টঃ৭
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

রুহি রাজের সাথে পেড়ে উঠছে না তাই বাঁচার জন্য বলে উঠল আমি বাসায় যাব….!!!

রাজ হেসে দিল…. আপনাকে কি আমি বলেছিলাম এই অফিসে চাকরি করতে? আপনি নিজেই এসেছেন।চাকরি করলে যখন তখন বাসায় যাওয়া যায় না জানেন না?রুমে আসুন কাজ আছে।বলে হাঁটতে থাকল।
কিছুটা গিয়ে রাজ ফিরে তাকাল।কি হল দাঁড়িয়ে আছেন কেন হাত ধরে নিয়ে যেতে হবে নাকি?
রুহি একরাশ বিরক্ত নিয়ে রাজের পিছন পিছন গেল

রুহিঃ আমি চাকরি করতে চাই না।

রাজঃ তাহলে এসেছিলেন কেন?

রুহিঃ যে জন্য এসেছিলাম সেটা তো আর হবে না আপনি তো আমাকে চিনে ফেলেছেন।

রাজঃ আর কত হাসাবা…??? আমার লস করানোর জন্য তুমি এসেছিলে সেটা আবার নিজেই স্বীকার করতাছো।মেয়ের মা হয়ে গেলে তাও বুদ্ধি হল না বড় আর কবে হবে রুহি?

রুহিঃতোমার কি অবস্থা করব সেটা তো আমার মনেই আছে বোকার অভিনয় না করলে কি আর আমাকে ছাড়বে তুমি? মনে মনে।
চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সে।

রাজঃ১ বছরের আগে চাকরি তো ছাড়া যাবে না।

রুহিঃ চাকরি ছাড়ার জন্য কত টাকা ক্ষতিপুরন দিতে হবে বলুন নীলয় দিয়ে দিবে।

নিলয়ের কথা শুনেই রাজের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। তাই নাকি? ক্ষতিপুরন তো অনেক বেশি তুমি কি দিতে পাড়বে?
ক্ষতিপুরন হিসেবে বেশ কয়েক বছর তোমাকে জেলে থাকতে হবে।

তুমিই যে আমার প্রজেক্ট এর ফাইল অন্য কোম্পানিকে দিয়েছো সেটা প্রমান করতে আমার বেশি সময় লাগবে না। তাছাড়া এগ্রিমেন্ট তো আছেও ভেবে নাও কি করবে?চাকরি করবে নাকি জেলে থাকবে?

রুহিঃ এখনো সেই খারাপ এই আছেন একটি ভাল হলেও তো পাড়েন। ব্লেকমেইল করতে লজ্জা করছে না?

রাজঃ বাজে কথা রাখো নীলয় কে কবে ডিভোর্স দিচ্ছো সেটা বল?

রুহিঃ আমি কি আপনার ছোট বোন নাকি যে এভাবে কথা বলছেন?বস বসের মত কথা বলুল সীমা পেড়ুবেন না।

রাজঃ ও আচ্ছা…. বেশ তবে যান ড্রেস চেন্স করে আসুন
রুহিঃ মানে কি? এটাও অফিসের রুলের মধ্যে পড়ে না বোঝেছেন?

রাজঃঅবশ্যই পড়ে……!!! কি ড্রেস পড়েছেন পেট দেখা যাচ্ছে একজন ছেলে হিসেবে বলুন আর বস হিসেবেই বলুন আপনার দিকে তাকাতে আমার অস্বস্তি হচ্ছে।সো তাড়াতাড়ি ড্রেস চেঞ্জ করে আসুন।

পড়ুন  খুনশুটি প্রেমের গল্প – রাগী স্যার যখন ডেভিল হাসবেন্ড পর্ব 19

রুহিঃ পাড়ব না….

রাজঃ তুমি বদলালেও আমি কিন্তু বদলাই নি অভ্যাস কিন্তু আগের গুলিই আছে।

কথাটা শুনেই রুহি হাত দিয়ে পেট ঢাকল।

রুহিঃ আমি এখন বিবাহিত আ আআ আ আপনি এসব করতে পাড়েন না।

রাজঃ সে জন্যই তো ভাল ভাবে বল্লাম নিজে চেঞ্জ করে আসতে তানাহলে তো এতক্ষনে…. হি হি হি।
বাই দা ওয়ে তোমার বর কি জানে আমার সাথে আমার কেমন সম্পর্ক ছিল?

রুহি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

রাজঃ অহ সরি মিসেস পিউ এটা তো অফিস এখানে এসব বলা আমার উচিত হয় নি সরি, যান চেঞ্জ করুন।

রুহিঃ আমি কি ব্যাগ নিয়ে অফিসে আসি নাকি? ড্রেস কোথায় পাব?

রাজ নিজের কোর্ট খুলে বাড়িয়ে দিয়ে বলল তাহলে এটা পড়ুন।

রুহি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।

রাজ ধমক দিয়ে বলল পেট ঢাকুন,পড়ুন বলছি….

রুহি মনে মনে নিজেকে হাজার টা বকা দিচ্ছে, ভালই তো ছিলি নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মারতে এখানে এসেছিলি কেন? আগেই বোঝা উচিত ছিল রাজের সাথে তুই পাড়বি না।

রাজ চোখ বড় বড় করে রুহির দিকে তাকাল।
রুহি তাড়াতাড়ি কোর্টা নিয়ে পড়ে নিল।

রুহিঃ আমি এবার যাই।

রাজঃ উমম না….. সোফায় গিয়ে বসুন।

রুহিঃ মানে কি?

রাজঃ আপাদত এটাই আপনার কাজ।বসের অর্ডার পালন করা আপনার দায়িত্ব।

রুহি আর কিছু না বলে গিয়ে বসল
রাজ নিজের কাজে মন দিল।অনেক্ষন বসে থাকার পর রুহি বলল স্যার এবার যাব?

রাজ মুখ তুলে বলল কই যাবেন?

রুহিঃ নিজের ডেস্কে।

রাজঃনা….

রুহিঃ এখানে এভাবে বসে থাকতে আমার অসহ্য লাগছে।

রাজঃ আলভির সাথে কথা বলাটা আমারও অসহ্য লেগেছিল।

রুহিঃ কতক্ষন এভাবে রাখবেন আমাকে?অফিস শেষ করেই আমি ক্লাবে যাব….!!!

রাজঃ সেসব পড়ে দেখা যাবে।

রুহিঃ এতক্ষন আমি এখানে কি করব?

রাজঃ ফোন ইউজ করতে পাড়েন।

রুহিঃ তুমার মুখ দিয়ে এটাই তো বলাতে চেয়েছিলাম চান্দু,এখন দেখো তোমাকে কিভাবে জ্বালাই।
রুহি ফোন হাতে নিয়ে নীলয়কে ভিডিও কল দিল।
ফোন রিসিভ করার সাথে সাথেই

রুহিঃ জানেমান কেমন আছো…. খুব খুব খুব মিস করছি তোমায়….

অপর পাশ থেকেঃ আমিও মিস করছি বেবে….খুব তাড়াতাড়ি ফিড়ে আসব এবার লম্বা সময় কাটাব তোমাদের সাথে।রোজ কেমন আছে?

পড়ুন  প্রেম কাহিনী – স্কুল জীবনের প্রেমের গল্প পর্ব 14 | Golpo

রুহিঃ হুম ভাল আছে সারাদিন বাবাই বাবাই করে।

নীলয়ঃ তাই বোঝি? বাকি সব কেমন চলছে? তোমার অফিস?

রুহিঃ এই চলছে ভালই।

নীলয়ঃ কতবার বল্লাম আমাদের তো অভান নেই তোমার চাকরি করতে হবে না রোজ এখনো ছোট।তুমি শুনলেই না।

রুহিঃ হুম ঠিকি বলেছো রোজ আজ খুব কাঁদছিল ওকে উপড়ের ঘরে বন্দি করে রেখে এসেছি।

নীলয়ঃ মা মেয়ের ব্যাপার এর মধ্যে আমি কিছু বলব না বাবা।

রুহিঃ হুম তুমি ত কাজে তাই না? তাড়াতাড়ি ফিরে এসো। রাখি তাহলে উম্মা… বলে রুহি ফোন কাটল।

ফোন রেখে রুহি মুখ তুলে তাকাতেই দেখল হিংস্র সিংহের মত ২ টি চোখ তার দিকে তাকিয়ে আছে।
রাজকে দেখে মনে হচ্ছে সে এগুনি রুহিকে গিলে খাবে।
রুহি ন্যাকামি করে বলল আপনি তো বল্লেন ফোন ইউজ করা যাবে।তাহলে এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
রাজ উত্তর না দিয়ে বাইরে চলে গেল আর বাইরে থেকে দরজা লক করে দিল।

রুহিঃ আরে এই ইডিয়েট দরজা কেন লাগাচ্ছেন নিজে বাইরে যাচ্ছেন যান আমাকে আটকে যাচ্ছেন কেন?

কে শুনে কার কথা রাজ চলে গেল।
রুহি বসে বসে অপেক্ষা করতে করতে অফিসেই ঘুমিয়ে গেল।
কিছুক্ষন পর রাজ ফিরে আসল। রুহিকে ঘুমাতে দেখে রাজ আর তাকে ডাকল না।

অফিস টাইম শেষ হওয়ার আগে রাজ রুহিকে ডাকল।
রাজঃ এই যে মিসেস উঠুন অফিস শেষ।

রুহিঃ ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে বলল কে আপনি?ঘুম ভাংগালেন কেন?

রাজঃ বাহ পুরুনো অভ্যাস এখনো যায় নি।থেংক্স গড তুমি পুরুপুরি বদলাও নি।

রুহি ঘুম থেকে উঠে সব ভুলে যায় এটাই তার স্বভাব।বেশ কিছুক্ষন ভাল করে পর্যবেক্ষন করে রুহি চিৎকার করে উঠল। আ আ…..

রাজঃ চিৎকার করার কি হল?

রুহিঃ আপনার সাথে আমি একই রুমে কি করছি? আমার তো কিছুই মনে পড়ছে না আপনি আমার সাথে কিছু করেন নি তো?

রাজঃ হায় রে বোকা রুহি তুমি যে ছেলেদের সাথে মিশার অভিনয় করছিলে এখন সেটার প্রমান ও দিয়ে দিলে।হাজার ছেলের সাথে যে ক্লাবে যায় রুম ডেট করে সে নিজের সম্মান নিয়ে এত ভাব্বে না নিশ্চুই। মনে মনে রাজের খুব আনন্দ হল।কিন্তু প্রকাশ করল না।
ধমক দিয়ে বলল আরে ইডিয়েট এটা বেড রুম না অফিস রুম ওদিকে দেখো পুরোটাই গ্লাস সবাই কাজ করছে আমি তোমার সাথে কিছু করি নি।

পড়ুন  বেপরোয়া ভালোবাসা – পর্ব ৩৮ রোমান্টিক গল্প | মোনা হোসাইন

রুহি এবার বাস্তবে ফিরে আসল। না মানে আমি আপনাকে ঘৃনা করি সব ছেলেদের সাথে বেড শেয়ার করলেও আপনার সাথে পাড়ব না তাই একটু ঘাবড়ে গেছিলাম আর কি….

রাজঃ হুম বোঝেছি,শুনুন আমি একবারো বলি নি আপনি ভাল মেয়ে আপনি অত্যন্ত খারাপ চরিত্রের মেয়ে সেটা আমি বোঝেছি,আপনি ছেলেদের সাথে সব করেন শুধু আমাকে দেখলেই ভয় পেয়ে চিৎকার করেন ঠিক আছে…..

রুহিঃ হাহ,রুহি আবারো ভুল করলি তুই রাজের কাছে বারবার হেরে যাচ্ছিস কিছু একটা কর….
যা হবার হয়েছে, রাজকে আমি কষ্ট দিয়েই ছাড়ব।

রাজঃ এই যে কোথায় হারিয়ে গেলেন?ভাবনার জগত থেকে বাস্তবে আসুন। মেয়েটা অপেক্ষা করছে বাসায় যান।এইটুকু মেয়েটাকে আটকে রেখে এসেছেন কেমন মা আপনি খোদা জানে?
আমি কি দিয়ে আসব আপনাকে?

রুহিঃ অসম্ভব আমি তোমার মুখ ও দেখতে চাই না।

রাজঃ বাহ ভালতো আপনি থেকে এখন তুমি….

রুহিঃ সরি…. আসলে অফিস টাইম শেষ তাই তুমি বল্লেও সমস্যা নেই।

রুহি হন হন করে হেটে চলে গেল।

রাজ আজ কোথাও না গিয়ে বাসায় চলে গেল।

রুহি বাড়ি ফিরে রহিম কে জিজ্ঞাস করল
রোজ কি বেশি বায়না করেছিল?

রহিমঃ জ্বি ম্যাডাম খুব জেদ করছিল অফিসে যাওয়ার জন্য সারাদিন খায় নি কিছু।কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে।
রুহির খুব খারাপ লাগল, নিয়ে গেলেই তো পাড়তাম।উফফ এই রাজ আমাকে পাগল করে ছাড়বে।অফিসে নিজে প্যারা দেয় আর এখন রোজকেও নিজের দলে নিয়ে নিল।
বিরবির করতে করতে রুহি রোজ এর রুমে গেল।
কিন্তু একি রোজ কোথাও নেই।

রুহি সারা রুম তন্ন তন্ন করে খোঁজে রহিম কে ধমকাতে শুরু করল। রোজ কোথায় রহিম? এই টুকু একটা বাচ্চাকে দেখে রাখতে পাড় না?
,
,
,
,
চলবে….!!!

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top