Golperjogot

Golperjogot

mukhosh season 2 romance love story part 8

মুখোশ সিজন ২ – রহস্যময় প্রেমের গল্প পর্ব ৮ | মোনা হোসাইন

Mukhosh 2

Mona Hossain { Part 8 }


রুহি সারা রুম তন্ন তন্ন করে খোঁজেও রোজ কে পেল না।তাই সে রহিম কে ধমকাতে শুরু করল। রোজ কোথায় রহিম? এই টুকু একটা বাচ্চাকে দেখে রাখতে পাড় না?
রুহি সারা বাড়ি খোঁজে দেখল কিন্তু কোথাও নেই।
রুহিঃমাম্মাম নিশ্চুই রাজ কে খোঁজতে বের হয়ে ছিল কিন্তু ও তো অফিস পর্যন্ত যেতে পাড়বে না তাই হারিয়ে গেছে।
হে খোদা আমি কি করব এখন?নীলয়ও তো বাসায় নেই।
আচ্ছা ও কোন দিক দিয়ে বাইরে গেল দরজা তো বন্ধ করে গেছিলাম।
সর্বনাশ জানলা দিয়ে লাফ দেয় নি তো?
রুহি দৌড়ে জানলার কাছে গিয়ে উঁকি দিল।
না। যা দেখল তাতে রুহি হতবাক হয়ে গেল।
,
,
,
,
,
,
সেখানে রোজ এর চিহ্ন নেই।
কিন্তু তার চেয়েও ভয়াবহ কিছু আছে।
ঘরের জানলা থেকে নিচ পর্যন্ত একটা দড়ি ঝুলছে।
রুহিঃ এটা রাজ ছাড়া অন্য কারোর কাজ হতে পাড়েনা।
আর কত জ্বালাবে আমায়? এক মুহুর্তের জন্য জানটা বের হয়ে গেছিল আমার।
তুমি কি আমায় বোকা পেয়েছো নাকি রাজ?
আর কত খেলবে আমায় নিয়ে?
অনেক হয়েছে আর না আমি এখুনি রোজ কে আমার কাছে নিয়ে আসব।তুমি আমাকে জেলের ভয় দেখাও তাই না এখন দেখো আমি তোমাকে কি করে জেলে পাঠাই।
যেমন ভাবনা তেমন কাজ রুহি পুলিশ ষ্টেশন গেল আর কমপ্লিন করল তারপর পুলিশ নিয়ে সোজা রাজের বাসায়।
বাসায় গিয়ে রুহি ডাকতে শুরু করল।
রোজ.....রোজ....
মাম্মাম কোথায় তুমি?বাইরে এসো
রুহির গলা শুনেই রোজ উপড় থেকে নিচে নেমে আসলো।আর রুহিকে জড়িয়ে ধরল।।রোজের পিছন পিছন রাজ ও আসল।
রুহিঃরোজ কে কোলে নিয়ে বলল আমি জানতাম ইনিই আমার মেয়ে কে নিয়ে এসেছেন।উনাকে এরেস্ট করুন অফিসার আর এমন শাস্তি দিন যেন আর কখনো আমার মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস না পায়।ভদ্রতার মুখোশ পড়া জঘন্য একটা লোক ইনি।
রাজ কিছুই বলছে না শুধু অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে....রুহি আমাকে পুলিশে দিচ্ছে....??? বাহ ভালই।
অফিসারঃ স্যার আপনি একজন ভি আই পি আমরা সেটা জানি কিন্তু আপনি যেটা করেছেন সেটা দন্ডনীয় তো বটেওই জঘন্য অপরাধ।আপনাকে জেলে যেতেই হবে। আর শাস্তিও পেতে হবে আমাদের কিছু করার নেই আইন সবার জন্য সমান।
রাজঃ হুম বোঝেছি আমাকে থানায় নিয়ে যেতে পাড়েন আমার কোন আপত্তি নেই।
একজন এসে রাজের হাতে হাতকড়া পড়িয়ে দিল।
রোজকে রুহি কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর পুলিশ রাজ কে ধরে নিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেই সময় সবাইকে অবাক করে দিয়ে রোজ বলে উঠল পাপা কোথায় যাচ্ছ আমরা আর খেলব না?
রোজের কথা শুনে সবাই থমকে গেল সবাই তো অবাক।অফিসারে গলা শুকিয়ে গেছে রোজের কথা শুনে।একজন মন্ত্রীর ছেলেকে তারই নিজের মেয়ের অপহরন মামলায় এরেস্ট করেছি আমি?আমার চাকরিটা এবার যাবে।
অফিসার ভয়ে ভয়ে বলল মামুনি কি বল্লে তুমি আবার বল একটু? উনি কে...???
রোজঃ পাপা...
অফিসার এর মাথায় আকাশ ভেংগে পড়ল।রাগান্বিত হয়ে রুহিকে কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি অফিসারের চোখ পড়ল দেয়ালে টাংগানু রুহি আর রাজের ছবির দিকে এগুলো সেই ৫ বছর আগের ছবি।যা রাজ এখুনো সযত্নে তুলে রেখেছে।
অফিসারঃ আমাদের এভাবে হ্যারেস করার মানে কি ম্যাডাম?হাজবেন্ডের সাথে আপনার যতই ঝামেলা হোক না কেন নিজের মেয়েকে নিজের কাছে রাখার সম্পুর্ন অধিকার আছে উনার। আপনার মেয়ের উপড় আপনার যতটা অধিকার আছে উনার ও ঠিক ততটাই আছে বোঝেছেন?
রুহিঃ আপনাদের ভুল হচ্ছে উনি আমার স্বামি নন।
অফিসারঃ বাহ বেশ বেশ বাচ্চা বলছে স্যার অর পাপা দেয়ালে আপনাদের ছবি দেখতে পাচ্ছি আর আপনি বলছেন আপনার স্বামি নয়।শুনোন ম্যাডাম আপনাদের মধ্যে কি হয়েছে জানি না তবে ছবিগুলি দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনাদের মধ্যে কত ভাল সম্পর্ক ছিল।
ছবি কয়েক বছর আগের হলেও আপনাদের ভালবাসার প্রমান বহন করছে।নিজেদের ভুল বোঝাবোঝি বাইরে টেনে আনবেন না ম্যাডাম সংসার ভাংগা খুব সহজ কিন্তু গড়া অনেক কঠিন।
যে বাচ্চাকে ভালবাসে সে অবশ্যই স্ত্রী কেও ভালবাসে।অনেক কথা বল্লাম একটু ভেবে দেখবেন আর অযথা পুলিশ কে হ্যারেস করবেন না প্লিজ।
অফিসার রাজের দিকে তাকিয়ে বলল সরি স্যার আপনাকে বিরক্ত করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত...আপনি আপনার মেয়েকে যতদিন ইচ্ছা আপনার কাছে রাখতে পাড়েন তাতে লিগেলি কোন বাঁধা নেই।বরং পুলিশ আপনাকে সাপোর্ট দিবে।
রুহিঃ স্যার আমার কথাটা তো একটু শুনোন।
পুলিশ রুহির কথার আর কোন গুরত্ব না দিয়ে চলে গেল।
রুহির প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।
পুলিশ চলে যাওয়ার পর রুহি রোজের দিকে তাকাল।আর ধমক দিয়ে বলল এই ফাযিল মেয়ে তুই উনাকে পাপা বল্লি কেন?
রোজঃ ছেলেটাই তো বলল ওর নাম পাপা।
তাই তো পাপা বলেছি।
রুহিঃ পাপা কারোর নাম হয় একটা থাপ্পড় মারব তোমায়।
রাজঃ আহ হা হা হা আমার মেয়েটাকে কে বকা দিচ্ছে হুম কার এত সাহস? বলতে বলতে এসে রাজ রোজ কে কোলে তুলে নিয়ে বলল মাম্মাম তুমি নিজের ঘরে যাও ডলিরা তোমাকে খোঁজছে।বলে কাজের লোক দিয়ে রোজ কে উপড়ে পাটিয়ে দিল।
রাজঃ যা বলার আমাকে বলুন ম্যাডাম বাচ্চার উপড় রাগ দেখাচ্ছেন কেন?
দোষ ত ওর নয় আপনার।
রুহিঃ তার মানে কি?
অফিসে যখন নিলয়ের সাথে কথা বলছিলে তখন তো নিজেই বল্লেন রোজকে কোথায় আটকে রেখেছেন? আর এটাও বল্লেন যে রোজ নিলয় কে বাবাই বলে ডাকে তাই একটু বুদ্ধি খাটালাম রোজ আমার নাম জিজ্ঞাস করল আমি বলে দিলাম পাপা। এইটুকু বাচ্চা পাপার মানে কি বোঝে নাকি ও তো ভেবেছে আমার নামই পাপা।
তুমি যদি না বলতে ও ওর বাবাকে কি বলে ডাকে তাহলে হয়ত আমার সমস্যা হত।
মজার বিষয় দেখো রোজ কোন রুমে আছে সেটাও তুমিই বলে দিলে আমি তো জানতাম না।
সব নিজে করে মেয়েকে দোষ দিচ্ছ কেন?
রুহিঃ এই ছেলের মাথায় এত বুদ্ধি কেন?খোদা আমাকেও তো একটু দিতে পারতে। বার বার ওকে জব্দ করতে গিয়ে নিজেই জব্দ হয়ে যাচ্ছি।
রাজঃ বোকা রুহি সারাজীবন বোকাই থাকবে নাকি?কার সাথে খেলছো বোঝে খেলতে হবে তো তাই না?
রুহিঃ কে বোকা আপনি বোকা আপনার পুরু ফেমলি বোকা যতসব ভাল লাগে না আমার মেয়েকে ফিড়িয়ে দিন। আমরা এই শহর ছেড়ে চলে যাব।
রাজঃ সরি সেটা তো সম্ভব না। রোজ যতদিন না আমাকে ওর বাবাই এর জায়গাটা দিচ্ছে ততদিন ও এখানেই আমার কাছে থাকবে। আর তোমাকে তো আমি......শহর ছাড়া তো দূর তোমাকে আমি আমার বেড রুমের বাইরে যেতেও দিব না অনেক প্যারা দিয়েছো আর না।
রুহিঃছিঃ.... কি মুখের ভাষা আপনার।শুনোন রোজ বা আমি কেউ এই এখানে একটাদিনও থাকবে না আমি এখুনি ওকে নিয়ে চলে যাব।
রাজঃ সেই ক্ষমতা আপনার নেই।
আমি বেঁচে থাকতে ওকে কেউ এখান থেকে নিয়ে যেতে পাড়বে না।
রুহি মনে মনে ভাবছে রোজ কোনদিন বাবার আদর পায় নি। শুধু আমার আদরেই বড় হয়েছে বাবা যে কি সেটাই তো রোজ জানে না।রাজ ওকে অনেক আদর করে ও যতই খারাপ হোক রোজের সাথে খারাপ কিছু করতে পাড়বে না বেশ আদরেই রাখবে।এখানে থেকে যদি বাবার আদর পায় তাহলে ক্ষতি কি?আমি চলে যাই।
রাজ রুহির মুখের সামনে তুরি বাজিয়ে বলল ভাবনা শেষ হলে যেতে পাড়েন।আমি রোজের সাথে খেলতে যাব।আর হে শুনুন রোজকে আমার সময় দিতে হবে তাই আপনার পিছনে সময় দিতে পারছি না ওকে ট্রেনিং দেওয়া শেষ হলেই আপনার পালা। খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে আমার সাথে থাকতে হবে তাই মাইন্ড সেট করুন এখন থেকেই।
রুহিঃ হা হা হা জীবনটা কি পুতুল খেলা নাকি?
রাজঃ সেটা তো সময় হলেই দেখতে পাবেন।আর শুনো আজ থেকে তোমার বাসার বাইরে বের হওয়া নিষেধ।কোন ছেলের সাথে কথা বলা ত দূর চোখ তুলে তাকাতে পাড়বে না বোঝেছো?আর শরির দেখা যায় এমন কোন ড্রেস পড়লে তার শাস্তি ভয়াবহ হবে।
রুহিঃ এসবের মানে কি?
রাজঃ মানেটা তো সিম্পল তোমার করা প্রতিটা ভুলের শাস্তি পাবে তোমার ছোট্ট মেয়েটা।
রুহিঃ রাজ এত নীচে নেমে গেছো তুমি....
রাজঃসারাজীবনেই ছিলাম আর এত কেবল শুরু....
রুহিঃ তুমি ওর গায়ে হাত তুলতে পাড়বে?
রাজঃ ছি ছি ছি রুহি তুমি কি বলছো এসব? তোমার মেয়ে আর আমার মেয়ের মধ্যে কোন তফাত আছে নাকি? আর এই ফুটফুটে মেয়েটাকে কি মারা যায় বলো?
তুমি কিছু ভুল করলে মেয়েটা এতিম হয়ে যাবে বেবি?
রুহিঃ আমি তো ৫ বছর আগেই মরে গেছি সবার কাছে মেরে ফেলো আমায়।সব মিটে যাক।
রাজঃ কি ভেজাল বলোতো তুমি আমার কোন কথাই বোঝতে পাড়ছো না?রোজ এতিম হবে মানে তুমি মরবে কে বলল? নীলয় উপড়ে চলে যাবে জানেমান।
রুহিঃ রাজ........
রাজঃ মুখ বন্ধ করো আমার কথা না শুনলে এটাই হবে বোঝেছো রোজের জন্য আমার ভালবাসা থাকলেও নিলয় এর জন্য কোন রলম সিম্পেথি আমাত নেই ওর বুকে ছুড়ি চালাতে আমার হাত একটুও কাঁপবে না বোঝেছো ....যাও এখন বাসায় যাও।কথা বলার সময় নাই আমার।
রুহিঃ আমার রোজ....
রাজঃঅহ আচ্ছা বেবি তোমার যেতে ইচ্ছা করছে না বোঝি? আচ্ছা থেকে যাও ২ জন কেই একসাথে ট্রেনিং দেওয়া যাবে সমস্যা নেই.....চলো উপড়ে চলো
রুহিঃ আমি নীলয় কে সব বলে দিব রাজ।


পড়ুন  ভিলেন পর্ব 61 - থ্রিলার প্রেমের গল্প | Romantic Premer Golpo
পরবর্তী পর্বের জন্য ক্লিক করুন :>> চলবে

Writer :- মোনা হোসাইন

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Home
Stories
Status
Account
Search
Scroll to Top